মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কানাডার ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়ামের উপর শুল্ক বৃদ্ধির নির্দেশ দিয়েছেন এবং আরো শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছেন। অন্টারিও তিনটি মার্কিন রাজ্যে বিদ্যুৎ রপ্তানির উপর ২৫ শতাংশ সারচার্জ আরোপের পর মঙ্গলবার ট্রাম্প এ নির্দেশ দিয়েছেন।

ট্রুথ সোশ্যালে একটি দীর্ঘ পোস্টে, ট্রাম্প জানিয়েছেন, কানাডা যদি মার্কিন পণ্যের উপর আরোপিত অনির্দিষ্ট শুল্ক বন্ধ না করে তবে তিনি ‘কানাডায় অটোমোবাইল উৎপাদন ব্যবসা স্থায়ীভাবে বন্ধ করে দেবেন।’

ট্রাম্প লিখেছেন, “কানাডার অন্টারিও থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আসা বিদ্যুতের উপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের উপর ভিত্তি করে, আমি আমার বাণিজ্যমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছি যে কানাডা থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আসা সব ইস্পাত এবং অ্যালুমিনিয়ামের উপর অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হোক, যা বিশ্বের অন্যতম সর্বোচ্চ শুল্ক আরোপকারী দেশ। এটি আগামীকাল সকালে ১২ মার্চ থেকে কার্যকর হবে। এছাড়াও, কানাডাকে অবিলম্বে দুগ্ধজাতসহ বিভিন্ন মার্কিন পণ্যের উপর তাদের কৃষিবিরোধী শুল্ক ৩৯০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২৫০ শতাংশে নামিয়ে আনতে হবে, যা দীর্ঘদিন ধরেই অপমানজনক বলে বিবেচিত হয়ে আসছে। আমি শিগগিরই হুমকির মুখে থাকা এলাকার বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের জন্য জাতীয় জরুরি অবস্থা ঘোষণা করব। এর ফলে কানাডার এই অপমানজনক হুমকি দূর করার জন্য যা করা দরকার তা দ্রুত করতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে সুযোগ করে দেবে। যদি কানাডা অন্যান্য গুরুতর, দীর্ঘমেয়াদী শুল্ক প্রত্যাহার না করে, তাহলে আমি ২ এপ্রিল থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আসা গাড়ির উপর শুল্ক উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি করব। এটি মূলত কানাডায় অটোমোবাইল উৎপাদন ব্যবসা স্থায়ীভাবে বন্ধ করে দেবে। এই গাড়িগুলো সহজেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি করা যায়!”

ঢাকা/শাহেদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর শ ল ক আর প র উপর

এছাড়াও পড়ুন:

বালুর ব্যবসা নিয়ন্ত্রণসহ তিন কারণে হত্যাকাণ্ড

পুরোনো শত্রুতা, নদী থেকে বালু তোলার সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ ও হাটবাজারের দখল নিয়ে বিরোধের কারণে মাদারীপুর সদর উপজেলার খোয়াজপুরে দুই ভাইসহ তিনজনকে খুনের ঘটনা ঘটেছে বলে মনে করছে পুলিশ ও এলাকাবাসী। এ ঘটনায় মামলা হলে তিনজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। 

নিহত দুই ভাইয়ের মা সুফিয়া বেগম বাদী হয়ে রোববার সকালে মাদারীপুর সদর মডেল থানায় এ মামলা দায়ের করেন। মামলায় ৪৯ জনকে এজাহারভুক্ত ও ৮০ জনকে অজ্ঞাতপরিচয় আসামি করা হয়েছে। 
সরেজমিন জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে খোয়াজপুরে কীর্তিনাশা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে আসছিল ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুল সরদার। এলাকায় তিনি হিটার সাইফুল হিসেবে বেশি পরিচিত ছিলেন। বালু ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ ছাড়াও স্থানীয় হাটবাজারের ইজারা নিয়েছিলেন তিনি। বালু তোলার সিন্ডিকেট ও খোয়াজপুর-টেকেরহাট বাজারের ইজারা দখল নিয়ে হোসেন সরদার (৬০) নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে সাইফুলের বিরোধ সৃষ্টি হয়। তারা সম্পর্কে চাচা-ভাতিজা। এর জেরে গত বছরের ২ ফেব্রুয়ারি প্রকাশ্যে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে হোসেনের দুই পা ভেঙে দেন সাইফুল ও তাঁর সহযোগীরা। এ ঘটনা ছাড়া আরও কিছু  ঘটনায় সাইফুলের বিরুদ্ধে সাতটি মামলা হয়েছিল। এসব মামলায় গ্রেপ্তার হলে পরে জামিনে কারাগার থেকে বের হয়ে আবারও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড শুরু করতেন সাইফুল। এ নিয়ে এলাকার মানুষ তাঁর ওপর ক্ষুব্ধ ছিল। 

এ ছাড়া জেলার রাজনৈতিক বিরোধেও জড়িয়ে পড়েছিলেন হোসেন সরদার (৬০) ও সাইফুল (৩৫)। দীর্ঘদিন ধরে মাদারীপুর জেলা আওয়ামী লীগে দুটি বলয় তৈরি হয়েছিল। এক পক্ষের নেতৃত্ব দিতেন সাবেক নৌপরিবহন মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শাজাহান খান এবং অপর পক্ষের নেতা ছিলেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম। সাইফুল বাহাউদ্দিন নাছিম সমর্থিত খোয়াজপুর ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। তাঁর প্রতিপক্ষ হোসেন সরদার ছিলেন শাজাহান খান সমর্থিত আওয়ামী লীগ নেতা। ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সাইফুল বিএনপি নেতাদের সঙ্গে সখ্য বাড়ানোর চেষ্টা করেন। এতে আরও ক্ষুব্ধ হয় স্থানীয়রা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সাইফুলের এক ঘনিষ্ঠ আত্মীয় জানান, এক সময় এলাকায় খুব প্রভাব ছিল সাইফুলের। বিভিন্ন বিচার-সালিশও করতেন তিনি। মানুষ তাঁর কথা মানত। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকাকালীন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হন। হোসেন সরদারও তখন আওয়ামী লীগে ছিলেন। সম্প্রতি সাইফুল তাঁর লোকজন নিয়ে হোসেনের বাড়িঘরে হামলা চালিয়ে তাঁর লোকজনকে মারধর করে। হোসেনের লোকজন আবার সাইফুলের এক মামাকে তুলে নিয়ে মারধর করে। সেই ঘটনার মাসখানেক আগে মীমাংসাও হয়ে গেছে। তারপর বালু তোলার ড্রেজার ব্যবসা দখলে নিতে যান সাইফুল ও তাঁর লোকজন। এ নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে দ্বন্দ্ব বাড়তে থাকে। এর জেরে গত শনিবার সাইফুল ও তাঁর ভাই আতাউর সরদার (৪০) এবং চাচাতো ভাই পলাশ সরদারকে (১৫) কুপিয়ে হত্যা করা হয়।
নিহত সাইফুলের স্ত্রী সতি বেগম (২৬) অভিযোগ করেন, গত বছর তাঁর স্বামীর সঙ্গে হোসেন সরদারের একটা বিরোধ হয়েছিল। সেই ক্ষোভ ধরেই হোসেন ও তার লোকজন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে তিন দিক থেকে তাদের বাড়িতে হামলা চালায়। এ সময় তারা পালানোর চেষ্টা করেন। হামলাকারীরা তাদের বাড়িঘরে লুটপাট করে আগুন ধরিয়ে দেয়। তিনি বলেন, হামলার সময় তাঁর স্বামী ও ভাশুর মসজিদে গিয়ে আত্মগোপনের চেষ্টা করেন। সেখান থেকে তাদের ধরে এনে মেরে ফেলা হয়। এ সময় পলাশ নামে তাদের এক আত্মীয়কেও মেরে ফেলা হয়।  
সাইফুলের মা সুফিয়া বেগম বলেন, তাঁর দুই ছেলেকে যারা হত্যা করেছে, তাদের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। সরকারের কাছে ঘটনার বিচার ও হত্যাকারীদের ফাঁসি দাবি করেন তিনি। 
তিনজনকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করে মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ভাস্কর সাহা জানান, হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটি বালু ব্যবসা ও পূর্বশত্রুতার জের ধরেই ঘটেছে। আসামিদের গ্রেপ্তার করতে তাদের অভিযান অব্যাহত আছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ওই এলাকায় পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ট্রাম্পের নজরে পরা গ্রিনল্যান্ডের সাধারণ নির্বাচন আজ
  • ফরিদপুরে পুলিশের ওপর হামলা করে আসামি ছিনতাই, গ্রেপ্তার ৩
  • বালুর ব্যবসা নিয়ন্ত্রণসহ তিন কারণে হত্যাকাণ্ড
  • মাদারীপুরে ‘তিন কারণে’ তিন ভাইকে কুপিয়ে হত্যা