আন্দোলনে আহতদের চিকিৎসা দিলেন যুক্তরাজ্যের ২ চিকিৎসক
Published: 11th, March 2025 GMT
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহত জুলাই যোদ্ধাদের চিকিৎসা সেবা দিতে লন্ডনের মুরফিল্ড আই হাসপাতাল থেকে ২ জন বিশেষায়িত চক্ষু চিকিৎসক ঢাকায় এসেছেন। তারা হলেন- ডা. মাহি মুকিত এবং ডা. নিয়াজ ইসলাম। চিকিৎসকরা গত ৮ মার্চ থেকে আজ পর্যন্ত জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে চিকিৎসারত আহত চক্ষু রোগীদের চোখের ফলোআপ ও অপারেশন করেন। মঙ্গলবার (১১ মার্চ) স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এই তথ্য জানায়।
বিশেষজ্ঞ চিকিৎকরা জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে মোট ১১৫ জন রোগীকে চক্ষু চিকিৎসা সেবা দিয়েছেন এবং ২৩ জন রোগীর সার্জারি করেন।
চিকিৎসার নথিপত্র যাচাই করে চিকিৎসকরা কয়েকটি মতামত জানান। সেগুলো হলো -
১.
২. এই ধরনের রোগীদের লন্ডন, ইউকে’তে একইভাবে চিকিৎসা সেবা দেওয়া হয়ে থাকে।
৩. চোখের ভিতরের গুলি যে পদ্ধতিতে অপারেশনের মাধ্যমে অপসারণ করা হয়েছে তা সম্পূর্ণ সঠিক।
৪. কিছু পিলেট চোখের বাহিরে, মাথা, মুখমণ্ডল এবং শরীরের বিভিন্ন অংশে রয়েছে। সেগুলোর ব্যাপারে তারা বিশেষজ্ঞ মতামত দিয়েছেন।
৫. ভবিষ্যতে প্রয়োজনে তারা এই চিকিৎসাসেবা অব্যাহত রাখতে আগ্রহী।
চক্ষু বিশেষজ্ঞরা চক্ষুবিজ্ঞান হাসপাতালে সেবা দেওয়া শেষে আজ দুপুরে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগমের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। সাক্ষাতে তারা স্বাস্থ্য উপদেষ্টাকে তাদের কাজ সম্পর্কে সম্যকভাবে অবহিত করেন।
এ সময় চক্ষু চিকিৎসক ডা. মাহি মুকিত জানান, আন্দোলনে আহতদের যথাযথ মানসিক ট্রমার চিকিৎসার দেওয়ার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। এছাড়া অনেক রোগী পাঁচ মাসের বেশি সময় ধরে হাসপাতালে আছেন। এভাবে ইনস্টিটিউশনালাইজড হয়ে থাকা তাদের মানসিক স্বাস্থ্যে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। যাদের চিকিৎসা সম্পন্ন হয়েছে তারা তাদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যাতে পারেন। এ সময় যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি হসপিটাল বার্নিংহামের ডা. মোসলেহ উদ্দিন ফরিদ এবং জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের পরিচালক ডা. আবুল খায়ের উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা/আসাদ/এনএইচ
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
নড়াইলের কালিয়ায় দু’পক্ষের সংঘর্ষে নিহত ১
নড়াইলের কালিয়া উপজেলার বাবরা-হাচলা ইউনিয়নের কাঞ্চনপুর গ্রামে দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে ফরিদ মোল্যা (৫০) নামে একজন নিহত হয়েছে। নিহত ফরিদ মোল্যা কাঞ্চনপুর গ্রামের মৃত সুরত মোল্যার ছেলে।
শুক্রবার (১১ এপ্রিল) সন্ধ্যায় কালিয়া উপজেলার বাবরা-হাচলা ইউনিয়নের কাঞ্চনপুর গ্রামে এ সংঘর্ষ ঘটে।
পুলিশ ও স্থানীয়দের থেকে জানা যায়, সংঘর্ষের পর গুরুতর আহত অবস্থায় ফরিদ মোল্যাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে রাত সাড়ে ১০টার দিকে মারা যান।
এ সংঘর্ষে উভয়পক্ষের কমপক্ষে ৩০ জন আহত হয়েছে। আহতদের উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য নড়াইল আধুনিক সদর হাসপাতাল ও খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। আহতদের মধ্যে বশির মুন্সি নামে আরেকজনের অবস্থাও আশঙ্কাজনক।
জানা যায়, উপজেলার কাঞ্চনপুর গ্রামের মিলন মোল্যা ও আফতাব মোল্যার মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে গ্রাম্য আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। ইতোপূর্বে একাধিক সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে দু’পক্ষের মধ্যে। এ নিয়ে থানায় উভয়পক্ষের একাধিক মামলাও রয়েছে। ঈদের দিন থেকেই গ্রামটিতে উত্তেজনা বিরাজ করছিলো। নিহত ফরিদ মোল্যা আফতাব মোল্যা গ্রুপের সমর্থক ছিলেন।
পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) বিকালে মিলন মোল্যা পক্ষের সানোয়ার রহমান নড়াইল আদালত থেকে হাজিরা দিয়ে বাড়ি ফেরার পথে তাকে একা পেয়ে আফতাব মোল্যার লোকজন মারপিট করে। এ ঘটনার জের ধরে শুক্রবার সন্ধ্যায় কাঞ্চনপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে মিলন মোল্যা পক্ষের লোকজন আফতাব মোল্যার বাড়িতে হামলা করে। এ খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে উভয়পক্ষ স্কুল মাঠে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ঘণ্টাব্যাপি সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এসময় উভয় পক্ষের কমপক্ষে ৩০ জন আহত হয়।
আফতাব মোল্যা পক্ষের আহতদের মধ্যে রয়েছেন- করিম মুন্সি (৪৯), হুসাইন শেখ (১৮), আশরাফ মোল্যা (৫০), বশির মুন্সি (৪৫), করিম মুন্সী (৩৭), জালাল মুন্সি (৪৭), নাহিদ মোল্যা (২৫), করিম মোল্যা (১৬), সহিদ মুন্সি (৪০)।
মিলন মোল্যা পক্ষের দের মধ্যে রয়েছেন- তৌহিদ মোল্যা (৫০), আলমিস শেখ (৩৫) নিরব মোল্যা (১২), হাসিব মোল্যা (১৫), কিবরিয়া শেখ (২৮), ওসমান মোল্যা (১৫), কামাল কাজী (৪০), তরিক শেখ (২৪), জাকারিয়া শেখ (২৫) ও দিদার শেখ (১৮), হুমায়ন কাজী (৩৫), ওহাব কাজী (৪৫), পিয়ার মোল্যা (৩৪)।
ঘটনার পরপরই সেনাবাহিনী অভিযান চালিয়ে ১৫ জনকে গ্রেপ্তার করে কালিয়া থানায় হন্তান্তর করে।
শনিবার (১২ এপ্রিল) সকালে কালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রাশিদুল ইসলাম বলেন, “এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ ও সেনাবাহিনী মোতায়েন রয়েছে। পরিস্থিতি এখন শান্ত রয়েছে। এ ঘটনায় আইনুগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
ঢাকা/শরিফুল/টিপু