রূপগঞ্জে পূর্বশত্রুতার জের ধরে একদল সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে বাড়িঘর ভাংচুর, লুটপাট চালিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় ৮জনকে নামীয়সহ অজ্ঞাত আরো ১২জনকে আসামি করে রূপগঞ্জ থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।

জানা গেছে, রূপগঞ্জের পিতলগঞ্জ এলাকার কলমদার মিয়ার ছেলে শফিকুল ইসলামের বাড়ির সীমানা নিয়ে জাকির ভুঁইয়াগংদের সাথে বিরোধ রয়েছে। ওই বিরোধকে কেন্দ্র করে গত ৯ মার্চ সকালে রামদা, ছুরি, বটি, লাঠিসোটা নিয়ে শফিকুল ইসলামের বাড়িঘরে প্রতিপক্ষের লোকজন হামলা চালায়।

এ সময় জাকির ভুঁইয়া, জাহাঙ্গীর আলম, সালাউদ্দিন মিয়া, শাহজাহান মিয়া, রেজিয়া বেগম, নার্গিস আক্তার, শিউলি আক্তার, নুর জাহান বেগমসহ অজ্ঞাত আরো ১২জন দেশীয় অস্ত্রেশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে বসতঘর, সুকেছ, টিনের বেড়া ভাংচুর করে ও ৭ ভরি স্বর্ণালংকার লুটপাট করে নিয়ে গেছে। শফিকুল ইসলাম ও তার পরিবারের লোকজনের চিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে এলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। 

হামলার শিকার শফিকুল ইসলাম জানান, বাড়ির সীমানা সঠিক থাকা সত্ত্বেও পাশের বাড়ির জাকির হোসেন ও আওয়ামী লীগ নেতা সালাহউদ্দিনের নেতৃত্বে জোরপূর্বক জায়গা দখল নেয়ার চেষ্টা চালায়। এ সময় হামলাকারীরা ধারালো অস্ত্র নিয়ে বাড়িতে প্রবেশ করে ভাংচুর ও লুটপাট চালায়। হামলার ঘটনা ভিডিও ধারণ করা হলে সন্ত্রাসীরা আরো ক্ষিপ্ত হয়।

ভিডিওতে দেখা গেছে সালাউদ্দিনের দুই হাতে দুটি রামদা নিয়ে গালিগালাজ ও দৌড়ে ত্যাড়ে আসছেন। তখন মামলা না করার জন্যও হুমকি দিচ্ছেন। মামলা করা হলে পরিবারের সবাইকে টুকরো টুকরো করে লাশের খন্ড শীতলক্ষ্যা নদীতে ফেলে দেয়ার কথাও বলেন। 

অভিযুক্ত জাকির হোসেন বলেন, বহুদিন বলার পরও শফিকুল তাদের টিনের বেড়া খুলে না দেয়ায় তা ভেঙে ফেলা হয়েছে। বাড়ির সীমানা নিয়ে কিছুটা জটিলতা আছে।

রূপগঞ্জ থানার ওসি লিয়াকত আলী জানান, অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থাগ্রহণ করা হবে।  
 

.

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: র পগঞ জ ন র য়ণগঞ জ র পগঞ জ

এছাড়াও পড়ুন:

মারমাদের মৈত্রী পানিবর্ষণ উৎসব যে কারণে হয়, যেভাবে এল

মারমা জনগোষ্ঠীর সাংগ্রাইং উৎসবের এক গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ হয়ে আছে ‘মৈতা রিলং পোয়ে’ বা মৈত্রী পানিবর্ষণ উৎসব। এই উৎসবে পরস্পরের দিকে পানি ছিটিয়ে মৈত্রীর বন্ধনে আবদ্ধ হন মারমারা। ‘সাংগ্রাইংমা ঞি ঞি ঞা ঞা রিকোজাই পামে’(এসো হে সাংগ্রাইংয়ে সবাই মৈত্রী পানিবর্ষণে) গানটিও দীর্ঘদিন ধরে হয়ে আছে এই উৎসবের ‘থিম সং’।

গবেষক ও মারমা জনগোষ্ঠীর প্রবীণ ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বাংলাদেশে মৈত্রী পানিবর্ষণ উৎসবের শুরু গত শতকের সত্তরের দশকে। কিছু তরুণ মিয়ানমারে সাংগ্রাইং উৎসবে এ ধরনের আয়োজন দেখে দেশেও এর প্রচলন করেন। আর ‘সাংগ্রাইংমা ঞি ঞি ঞা ঞা রিকোজাই পামে’ উৎসবের থিম সং হয়েছে ১৯৮৪ সালে।

মৈত্রী পানিবর্ষণ উৎসবকে অনেকেই ‘জলকেলি’ ও ‘পানি খেলা’ বলে থাকেন। তবে এসব নাম আপত্তিকর বলে মনে করেন মারমা সমাজের অনেকেই। তাঁদের দাবি, এর মধ্য দিয়ে ধর্মের যোগ থাকা অনুষ্ঠানটি ভুলভাবে উপস্থাপন হয়।

এবারের সাংগ্রাইং উপলক্ষে আজ বুধবার থেকে বান্দরবান জেলা শহরে মৈত্রী পানিবর্ষণ উৎসব শুরু হয়েছে। তবে জেলার অন্যান্য জায়গায় গতকাল মঙ্গলবার এই উৎসব শুরু হয়। খাগড়াছড়িতে কোথাও কোথাও সোমবার শুরু হয়েছে মৈত্রী পানিবর্ষণ উৎসব।

মারমা জনগোষ্ঠীর প্রবীণদের একজন শিক্ষাবিদ থোয়াইংচ প্রু। তিনি প্রথম আলকে বলেন, সাংগ্রাইং আখ্যেয়া বা মূল সাংগ্রাই দিনে বুদ্ধমূর্তি স্নানের আগে মৈত্রী পানিবর্ষণ উৎসব হয় না। এটা প্রথাসিদ্ধ রীতি। তাই মৈত্রী পানিবর্ষণের সঙ্গে ধর্মের যোগ বেশ স্পষ্ট। তিনি বলেন, পানিকে মারমারা পবিত্র মনে করে। তাই সাংগ্রাইং উৎসবে বন্ধুত্বের বন্ধন এবং পরস্পরের প্রতি মৈত্রী ভাবনা নবায়ন ও সুদৃঢ় করার জন্য একে-অপরের দিকে পানি ছোড়েন। পানি ছিটানোর পর কেউ বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখালে বোঝা যাবে, বন্ধুত্বের সম্পর্কে ও বন্ধনে টানাপোড়েন আছে। এটিই মৈত্রী পানিবর্ষণের মূল্যবোধ। এ কারণে অনেক সময় অযাচিত কাউকে পানিবর্ষণ করলে আগে সালিসের মুখোমুখিও হতে হতো।

মৈত্রী পানিবর্ষণ উৎসবে মেতেছেন মারমা সম্প্রদায়ের তরুণ-তরুণীরা। গতকাল বান্দরবানের ডলুপাড়ায়

সম্পর্কিত নিবন্ধ