সোনারগাঁয়ে বিএনপির নাম ভাঙিয়ে প্রভাব বিস্তার, ভুক্তভোগীর থানায় অভিযোগ
Published: 11th, March 2025 GMT
বিএনপির নাম ভাঙিয়ে এলাকায় প্রভাব বিস্তার করার অভিযোগ উঠেছে সোনারগাঁ উপজেলা বিএনপির মৎস বিষয়ক সম্পাদক ও উপজেলা মৎসজীবি দলের সাবেক সভাপতি সানাউল্লাহ প্রধান এর বিরুদ্ধে। এলাকায় মাদক ব্যবসা ও চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রণ করতে বিএনপির পদ পদবী ব্যবহার করে সাধারণ মানুষের কাছে আতংকের নাম হয়ে উঠেছে সানাউল্লাহ প্রধান।
অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, গত শুক্রবার (৭ মার্চ) তুচ্ছ ঘটনা কে কেন্দ্র করে উপজেলার নোয়াগাঁও ইউনিয়নের চরকামালদী গ্রামের আবু বক্কর কে মারপিট করতে যায় অভিযুক্ত সানাউল্লাহ প্রধান, ফারুক, হাসান, কাদির ও রিফাত। আবু বক্কর কে বাঁচাতে তার চাচাতো ভাই হযরত আলী এগিয়ে এলে তাকেও এলোপাতাড়ি কিল ঘুষি, লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে আহত করে সানাউল্লাহ প্রধান রা। আহত হযরত আলী কে এলাকাবাসী উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, উপজেলার নোয়াগাঁও ইউনিয়নের চরকামালদী গ্রামের চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী জাকিরের সাথে মিলে রমরমা ইয়াবার ব্যবসা করে আসছে এই সানাউল্লাহ প্রধান। জুলাই বিপ্লব এর পরে বিএনপির পদ পদবী ব্যবহার করে নোয়াগাঁও ইউনিয়নের চৌড়াপাড়া পাঁচআনি পাড়া গ্রামের রহিম মিয়ার বাড়ি থেকে স্বর্নালংকার, নগদ অর্থ ও গরু লুটপাট করে নিয়ে আসে সানাউল্লাহ ও জাতীয় পার্টির নেতা ওয়াজ কুরুনী।
অনুসন্ধানে জানা যায়, চরকামালদী গ্রামের সুজিত কুমার সাহার জমিতে মাছের খামারের নাম করে মাদক, নারী নিয়ে পতিতা ব্যবসার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন বলেন, সানাউল্লাহ প্রধান এক সময় রাস্তায় গাছ ফেলে গাড়িতে ডাকাতি করতো, উপজেলার শান্তির বাজার এলাকায় ভুয়া ডিভির পরিচয় দিয়ে চাঁদাবাজি করতে গিয়ে জনতার হাতে গণধোলাইয়ের শিকার হয় সানাউল্লাহ প্রধান৷
এবিষয়ে জানতে সানাউল্লাহ প্রধান এর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি সেখানে বিচার করতে গেছি, হামলার সাথে আমি সরাসরি জড়িত না।
এবিষয়ে সোনারগাঁ থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোশারফ হোসেন বলেন, ঘটনা শুনে আমরা একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছি। তদন্ত কমিটি রেজাল্ট দেওয়ার পরে আমরা সিদ্ধান্ত নিবো।
এবিষয়ে সোনারগাঁ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ আব্দুল বারী জানান, মারামারির ঘটনায় একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: স ন রগ ও ব এনপ ন র য়ণগঞ জ ব এনপ র স ন রগ উপজ ল ব যবস
এছাড়াও পড়ুন:
ফুল ভাসিয়ে শুরু হলো বিজু উৎসব, সুন্দর পৃথিবীর প্রার্থনা
পুরোনো বছরকে বিদায় জানাতে আর নতুন বছরকে বরণ করে নিতে চাকমা সম্প্রদায়ের তিন দিনব্যাপী বিজু উৎসব আজ শনিবার শুরু হয়েছে; পাশাপাশি শুরু হয়েছে তঞ্চঙ্গ্যাদের বিষু উৎসব। উৎসবের প্রথম দিনে নদী, ছড়া, ঝরনাসহ বিভিন্ন স্থানে ফুল ভাসিয়ে সুন্দর পৃথিবীর জন্য মঙ্গল কামনা করেছেন নারী, পুরুষ আর শিশুরা। পাহাড়ের বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর বাসিন্দারা আগামী কয়েক দিন নানা নামে বর্ষবরণ ও বর্ষবিদায়ের উৎসব উদ্যাপন করবেন।
খাগড়াছড়িআজ ভোর থেকে জেলার নদী, ছড়া, ঝরনাসহ বিভিন্ন স্থানে ফুল ভাসানোর মধ্য দিয়ে ‘ফুল বিজু’ শুরু হয়। ফুল ভাসিয়ে সুন্দর পৃথিবীর জন্য প্রার্থনা করেন চাকমা নারী-পুরুষ ও শিশুরা। নারীরা ঐতিহ্যবাহী পোশাক পিনন-হাদি ও পুরুষেরা ধুতি পরে উৎসবে যোগ দেন।
ভোরে পানছড়ি উপজেলার রাবার ড্যাম এলাকায় চেঙ্গী নদীতে ফুল ভাসাতে ভিড় করেন স্থানীয় চাকমা জনগোষ্ঠীর বাসিন্দারা। তাঁদেরই একজন প্রবীণ মালতী দেবী চাকমা। চার কিলোমিটার দূরে রাঙাপানিছড়া এলাকা থেকে এসেছেন তিনি। তিনি বলেন, ‘একসময় সন্তানদের নিয়ে ফুল ভাসাতে আসতাম। এখন বয়স বাড়ায় কষ্ট হলেও নাতি-নাতনিদের সঙ্গে এসেছি মনের শান্তির জন্য। এবার প্রাণভরে প্রার্থনা করলাম, সবাই মিলেমিশে যেন ভালো থাকতে পারি, পৃথিবী যেন শান্তি থাকে।’
ফুল ভাসাতে আসা এক তরুণী মেমোরি চাকমা বলেন, ‘আমরা বন্ধুরা মিলে চেঙ্গী নদীতে ফুল ভাসিয়ে আগামী দিনের সুখশান্তি কামনা করেছি। এখানে শত শত নারী-পুরুষ উৎসবে যোগ দিয়েছেন। আমি ও সারা বছর অপেক্ষায় থাকি এ দিনটার জন্য।’
উৎসব দেখতে রাবার ড্যাম এলাকাটিতে ভিড় জমান সমতলের লোকজনও। রাজশাহী থেকে এ উৎসব দেখতে আসা মকবুল হোসেন ও সালমা আক্তার প্রথম আলোকে বলেন, ‘২০১৭ সালে একবার রাঙামাটিতে ফুল ভাসানো উৎসব দেখে মুগ্ধ হয়েছিলাম। এবার এসে আবারও মুগ্ধ হলাম।’
সরেজমিনে উল্টাছড়ি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক চেয়ারম্যান সুব্রত চাকমার সঙ্গেও কথা হয়। তিনি বলেন, বিজু আদিকাল থেকেই চলে আসছে। বিজু মানে আনন্দ, হইহুল্লোড়, বিজু মানে দল বেঁধে ঘুরে বেড়ানো। বিজু মানে ভ্রাতৃত্বের বন্ধন সৃষ্টি করা।
বাংলা বছরের শেষ দুই দিন ও নতুন বছরের প্রথম দিন চাকমারা বিজু পালন করেন। আজ ফুল বিজু, ১৩ এপ্রিল রোববার মূল বিজু, ১৪ এপ্রিল নু’অ বজর বা নতুন বছর, আর পয়লা বৈশাখের পর দিন পালিত হয় ‘গোজ্যেপোজ্যে দিন’ হিসেবে। উৎসবের প্রথম দিনে পূজা-অর্চনা ও বাড়িঘর পরিষ্কার করে সাজানো হয়। দ্বিতীয় দিনে অতিথি আপ্যায়ন ও খাওয়াদাওয়ার আয়োজন করা হয়। তৃতীয় দিনে হাঁস-মুরগি ও পশুপাখিদের খাবার দেওয়া, গরাইয়া নৃত্য ও বয়োজ্যেষ্ঠদের কাছ থেকে আশীর্বাদ নেওয়া হয়।
কাপ্তাই হ্রদে ফুল ভাসিয়ে ফুল বিজুকে বরণ করছে এক শিশু। আজ সকালে রাঙামাটি শহরের কেরানি পার্কের দক্ষিণ এলাকায়