যুদ্ধ বন্ধে সৌদি আরবের জেদ্দায় বৈঠকে বসেছেন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেনের কর্মকর্তারা। জেদ্দার এ বৈঠকে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওলাল্টজের সঙ্গে ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্দ্রি সিবিগা এবং প্রেসিডেন্ট কার্যালয়ের চিফ অব স্টাফ আন্দ্রে ইয়েরমাক অংশ নিচ্ছেন। তবে বৈঠকে রাশিয়ার কোনো প্রতিনিধি উপস্থিত থাকছেন না।

এ বৈঠকে ইউক্রেনের পক্ষ থেকে আংশিক যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা তোলা হতে পারে। এ প্রস্তাবে আকাশ ও নৌপথে রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধবিরতির বিষয়টি থাকছে বলে ইউক্রেনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

এ বৈঠকের আগে গত সোমবার ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি সৌদি আরব সফর করেন এবং যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে বৈঠক করেন। গতকাল মঙ্গলবার তাঁর প্রতিনিধিদের সঙ্গে মার্কিন কর্মকর্তাদের বৈঠক ফলপ্রসূ হবে বলে আশা করছেন তিনি।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইউক্রেনকে যুদ্ধ বন্ধে চাপ দিচ্ছেন। সম্প্রতি হোয়াইট হাউসে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে তাঁর বাগ্‌বিতণ্ডার পর কিয়েভকে সামরিক ও গোয়েন্দা সহায়তা বন্ধ করে দিয়েছেন। হোয়াইট হাউসে জেলেনস্কির ওই বৈঠকের পর প্রথমবার ইউক্রেনের কর্মকর্তারা যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বসছেন।

এর আগে গত ১৭ ফেব্রুয়ারি সৌদি আরবের রিয়াদে রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র বৈঠক করেছিল। ওই বৈঠক সফল বলে দুই পক্ষই দাবি করে।

আজকের বৈঠকের পর ইউক্রেন কর্তৃপক্ষ সামরিক ও গোয়েন্দা সহায়তা আবার চালুর আশা করছে।

আলোচনা শুরুর আগে ইয়েরমাক সাংবাদিকদের বলেন, ‘শান্তি অর্জনের জন্য আমরা সবকিছু করতে প্রস্তুত।

হোয়াইট হাউসের বৈঠকের পর ট্রাম্পের চাপে খনিজ চুক্তিতে স্বাক্ষর না করেই হোয়াইট হাউস ত্যাগ করেন জেলেনস্কি। তবে তিনি এখন বলছেন, ওই চুক্তিতে তিনি সই করতে ইচ্ছুক। তবে মার্কিন পররাষ্ট৶মন্ত্রী রুবিও বলেন, জেদ্দার আলোচনায় খনিজ চুক্তির বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ নয়। রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের পথ খুঁজে বের করতেই এ আলোচনা।

এদিকে, এ বৈঠকের আগে রাশিয়ার রাজধানী মস্কোয় বড় ধরনের ড্রোন হামলা চালিয়েছে ইউক্রেন। দেশটির কর্মকর্তা বলছেন, যুদ্ধবিরতির জন্য রুশ প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে চাপ দিতেই এ হামলা।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইউক র ন র প র কর মকর ত য দ ধ বন ধ র ইউক র ন

এছাড়াও পড়ুন:

স্বাধীন ফিলিস্তিনের প্রতি অটল সমর্থন অব্যাহত রাখবে বাংলাদেশ

জাতিসংঘের একাধিক প্রস্তাবের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে একটি স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ন্যায্য লক্ষ্যে বাংলাদেশ তার অটল সমর্থন অব্যাহত রাখবে।

শুক্রবার (১১ এপ্রিল) তুরস্কে ‘আনাতোলিয়া কূটনীতি ফোরাম (এডিএফ)-২০২৫’ এর ফাঁকে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) প্রসিকিউটর করিম এ.এ. খানের সঙ্গে এক বৈঠকে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন এবং তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো. মাহফুজ আলম এই আশ্বাস দিয়েছেন।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

বৈঠকে দুই উপদেষ্টা সাম্প্রতিক আগ্রাসনে ফিলিস্তিনের জনগণের দুর্দশায় গভীর সহানুভূতি প্রকাশ করেন। তারা রোহিঙ্গা সংকট ও গাজা পরিস্থিতি নিয়ে আইসিসির অবস্থানের জন্য সংস্থাটির প্রশংসা করেন।

দুই উপদেষ্টা রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে সংঘটিত মানবতা বিরোধী অপরাধের ন্যায়বিচার ও সংকটের চূড়ান্ত সমাধানের জন্য জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার ওপর জোর দেন।

বৈঠকে বাংলাদেশ ও আইসিসির মধ্যে সব ধরনের সম্পৃক্ততার দিক নিয়ে আলোচনা করা হয়।

আন্তর্জাতিক বিচার ব্যবস্থায় বাংলাদেশের অটল অবস্থানের প্রশংসা করেন আইসিসির প্রসিকিউটর করিম এ.এ. খান। পররাষ্ট্র উপদেষ্টা রোম সংবিধি ও আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের প্রতি বাংলাদেশের অব্যাহত সমর্থনের কথা ব্যক্ত করেন।

বিশেষজ্ঞ, শিক্ষাবিদ ও আইনজ্ঞদের প্রশিক্ষণ এবং দক্ষতা বৃদ্ধিতে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের সঙ্গে দৃশ্যমান সহযোগিতা অন্বেষণে বাংলাদেশের আগ্রহের কথা জানান তৌহিদ হোসেন।

উভয় পক্ষই আগামী দিনে বিদ্যমান সম্পৃক্ততার মাত্রা আরো বাড়ানোর ব্যাপারে সম্মত হয়েছে।

তুরস্কে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এবং উভয় পক্ষের  ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বৈঠকে অংশ নেন।

‘বিভক্ত বিশ্বে কূটনীতি পুনরুদ্ধার’ প্রতিপাদ্য নিয়ে আজ তুরস্কের আনাতোলিয়ায় তিন দিনব্যাপী ‘আনাতোলিয়া কূটনীতি ফোরাম (এডিএফ)-২০২৫’ শুরু হয়েছে। তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ানের পৃষ্ঠপোষকতায় দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই ফোরামের আয়োজন করেছে।

বিশ্ব নেতা, নীতিনির্ধারক, শিক্ষাবিদ, ব্যবসায়িক বিশেষজ্ঞদের পাশাপাশি গণমাধ্যম ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের একত্রিত করেছে এডিএফ। এই ফোরামের মাধ্যমে কীভাবে কূটনীতির পরিস্থিতির মোড় ঘুরিয়ে দেওয়া যায় এবং একটি বিভক্ত বিশ্বে সম্মিলিত পদক্ষেপের একটি সাধারণ ভিত্তি খুঁজে পাওয়া যায়, তা অনুসন্ধান করা হবে।

২০ জনেরও বেশি রাষ্ট্র ও সরকার প্রধান, ৫০ জনেরও বেশি পররাষ্ট্রমন্ত্রী, ৭০ জনেরও বেশি মন্ত্রী এবং আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রায় ৬০ জন সিনিয়র প্রতিনিধি, পাশাপাশি শিক্ষার্থীসহ ৪ হাজার জনেরও বেশি অতিথি ফোরামে অংশগ্রহণ করেছেন।

ঢাকা/এসবি

সম্পর্কিত নিবন্ধ