গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকার পতনের পর টাঙ্গাইলের অন্য সমন্বয়কদের থেকে আলাদা হয়ে যান মারইয়াম মুকাদ্দাস (মিষ্টি)। নিজের কিছু অনুসারী নিয়ে চলাচল শুরু করেন। তবে ‘সমন্বয়ক’ পরিচয়ে অংশ দিতেন প্রশাসনের বিভিন্ন সভায়। কথায় কথায় আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়ার হুমকি দিতেন। টাঙ্গাইলে আওয়ামী লীগ কার্যালয়সহ নেতাদের বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনায়ও নেতৃত্ব দেন।

সর্বশেষ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) জোয়াহেরুল ইসলামের বাড়ি দখল করে ‘পাগলের আশ্রম’ চালু করার ঘটনায় গত রোববার দিবাগত রাতে মারইয়ামকে গ্রেপ্তার করে সদর থানা–পুলিশের একটি দল। জোয়াহেরুল ইসলামের স্ত্রী রওশন আরা খানের করা মামলায় সোমবার (১০ মার্চ) তাঁর চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।

মারইয়াম মুকাদ্দাসের বাড়ি বাসাইল উপজেলার যশিহাটী গ্রামে। তিনি নিজেকে আল মুকাদ্দাস ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সংগঠক হিসেবে পরিচয় দেন। তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশগ্রহণ করলেও বর্তমানে প্ল্যাটফরমটির কোনো কমিটিতে নেই। ফলে তাঁর কোনো অপকর্মের দায় নিতে রাজি নন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত জুলাই মাসে কোটা বাতিলের আন্দোলন শুরু হলে মারইয়াম মুকাদ্দাস তাতে যোগ দেন। তবে শুরু থেকেই তাঁর আচরণ ছিল রহস্যজনক। নিজেকে কখনো মাদ্রাসার, কখনো সরকারি এম এম আলী কলেজের, আবার কখনো ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী বলে পরিচয় দিতেন।

আরও পড়ুনটাঙ্গাইলে সাবেক এমপির বাড়ি দখল করে ‘পাগলের আশ্রম’ চালু০৮ মার্চ ২০২৫

ছাত্র আন্দোলনে যুক্ত নেতারা বলছেন, আন্দোলে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর উগ্র বক্তৃতা দিয়ে সবার নজরে আসেন মারইয়াম মুকাদ্দাস। কথায় কথায় আইন নিজ হাতে তুলে নেওয়ার হুমকি দিতেন। এ নিয়ে আন্দোলনে সমন্বয়কদের সঙ্গে তাঁর দূরত্ব সৃষ্টি হয়। তবে সমন্বয়ক পরিচয়ে জেলা ও পুলিশ প্রশাসনের বিভিন্ন সভায় তাঁকে অংশ নিতে দেখা গেছে। সেসব ছবি তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করতেন। ছিন্নমূল মানুষকে নিয়ে মারইয়ামের একটি আশ্রম রয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, গত ৬ ফেব্রুয়ারি মারইয়াম নিজের কিছু অনুসারী নিয়ে জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয় এক্সকাভেটর দিয়ে গুঁড়িয়ে দেন। পরে জেলা আওয়ামী লীগের সদ্য প্রয়াত সভাপতি ফজলুর রহমান খান, সাধারণ সম্পাদক জোয়াহেরুল ইসলাম এবং সাবেক পৌর মেয়র জামিলুর রহমানের বাড়ি ভাঙচুর করেন। এ সময় ওই বাড়িগুলোর মালামাল লুটপাট হয়। পর্যায়ক্রমে অন্য নেতাদের বাড়ি ভাঙচুর করারও ঘোষণা দেন।

গত বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) মারইয়াম মুকাদ্দাস ফেসবুকে লিখেছিলেন, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জোয়াহেরুল ইসলামের  বাসা ‘পাগলের আশ্রম’, প্রয়াত সভাপতি ফজলুর রহমান খানের বাসা ‘প্রতিবন্ধীদের আশ্রম’, সাবেক সংসদ সদস্য তানভীর হাসান ওরফে ছোট মনিরের বাসা ‘অ্যানিমেল শেল্টার’, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুজ্জামানের বাসা ‘বৃদ্ধ আশ্রম’, সাবেক মন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাকের বাসা ‘এতিমখানা’ এবং আওয়ামী লীগ অফিস ‘পাবলিক টয়লেট’ করা হবে।

টাঙ্গাইলের সাবেক সংসদ সদস্য জোয়াহেরুল ইসলামের শহরের আকুরটাকুর পাড়ার ছয়তলা বাসভবন.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ম রইয় ম ম ক দ দ স জ য় হ র ল ইসল ম র সরক র আওয় ম

এছাড়াও পড়ুন:

তুরস্কের বাণিজ্য মন্ত্রীর সঙ্গে উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের সাক্ষাৎ

তুরস্কের বাণিজ্য মন্ত্রী অধ্যাপক ড. ওমর বোলাতের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো. মাহফুজ আলম। শুক্রবার তুরস্কে ‘আন্টালিয়া কূটনীতি ফোরাম, ২০২৫’-এর এক ফাঁকে এই সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়।

সাক্ষাতে তুরস্ক ও বাংলাদেশের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সম্পর্কের গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। এ সময় উপদেষ্টা মাহফুজ আলম বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগ করার জন্য তুরস্কের বিনিয়োগকারীদের আমন্ত্রণ জানান।

দুই দেশের বন্ধুত্ব ও ভ্রাতৃত্বের ঐতিহাসিক সম্পর্কের কথা উল্লেখ করে তুরস্কের বাণিজ্য মন্ত্রী অধ্যাপক ড. ওমর বোলাত বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে অর্থনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নে তুরস্ক সরকারের আগ্রহ রয়েছে।

সাক্ষাতে ড. ওমর বেলাত এ বছর ঢাকায় তুরস্ক-বাংলাদেশ যৌথ অর্থনৈতিক কমিশনের সভা করার আগ্রহ প্রকাশ করেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ