সাতক্ষীরায় উত্তেজিত জনতার (মব) পিটুনির হাত থেকে মো. আবুল হাসান (৩০) নামে একজনকে রক্ষা করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও পুলিশ।  

সোমবার সদর উপজেলার সীমান্তবর্তী তলুইগাছা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। গতকাল রাত সাড়ে ১০টা থেকে দিবাগত রাত দেড়টা পর্যন্ত উত্তেজনাকর পরিস্থিতি চলতে থাকে।

উদ্ধার হওয়া আবুল হাসান সদর উপজেলার ইন্দ্রিয়া গ্রামের আলতাফ হোসেনের ছেলে। ঘটনাস্থল তলুইগাছা গ্রামে আবুল হাসানের শ্বশুরবাড়ি।

বিজিবি, পুলিশ ও এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মো.

আবুল হাসান তলুইগাছা গ্রামের বিশু মোল্যার জামাতা। কয়েক দিন আগে হাসান শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে আসেন। এর মধ্যে দক্ষিণ তলুইগাছা গ্রামের মো. কামরুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তির সাইকেল চুরি হয়। এ চুরির ঘটনায় কামরুলসহ গ্রামবাসী হাসানকে সন্দেহ করেন। গতকাল রাতে একদল গ্রামবাসী হাসানকে আটক করে সাইকেল চুরির বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। একপর্যায়ে লোকজন উত্তেজিত হয়ে তাকে বেধড়ক মারধর শুরু করেন। খবর পেয়ে সাতক্ষীরা ৩৩ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধীনস্থ তলুইগাছা বিওপির টহল দল ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে তাকে নিজেদের হেফাজতে নেয়।

বিজিবি সাতক্ষীরা ৩৩ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশরাফুল হক জানান, কয়েক শ গ্রামবাসী ‘মব’ সৃষ্টি করে সাইকেল চুরির অভিযোগে আটক আবুল হাসানকে বিজিবির হেফাজত থেকে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে দেখে অতিরিক্ত তিন প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়।

সাতক্ষীরা সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সফিকুল ইসলাম জানান, খবর পাওয়ার পর কলারোয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সামছুল আরেফিনের নেতৃত্বে পুলিশের দুটি দল দিবাগত রাত সোয়া ১২টার দিকে ঘটনাস্থলে যায়। তারা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

পুলিশ কর্মকর্তা সফিকুল ইসলাম বলেন, স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে তিনি হ্যান্ডমাইকে ঘোষণা দেন, সাইকেলের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। অভিযুক্ত ব্যক্তি শ্বশুরবাড়ি তলুইগাছা গ্রামে আর আসবেন না। তাকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হবে। তিনটি শর্তে উত্তেজিত জনতা রাজি হওয়ার পর দিবাগত রাত দেড়টার দিকে বিজিবির সহযোগিতায় তাঁরা চুরির অভিযোগে আটক আবুল হাসানকে নিয়ে সাতক্ষীরা থানায় আসেন। 

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

নারায়ণগঞ্জে ছুরিকাঘাতে তরুণের মৃত্যু, আটক ১

নারায়ণগঞ্জ শহরের চাষাঢ়ায় বাগ্‌বিতণ্ডার জেরে ছুরিকাঘাতে এক তরুণ নিহত হয়েছেন। গতকাল রোববার রাত সাড়ে ১০টার দিকে বালুরমাঠ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

নিহত অপূর্ব (২৫) নারায়ণগঞ্জ শহরের মাসদাইর এলাকার খোকন মিয়ার ছেলে। তিনি রেস্তোরাঁর কর্মী বলে জানিয়েছে পুলিশ। তবে ছাত্রদলের নেতা দাবি করেছেন, নিহত তরুণ ছাত্রদলের কর্মী।

এ ঘটনায় সম্রাট (২৫) নামের একজনকে আটক করে পুলিশে দিয়েছেন স্থানীয় লোকজন। সম্রাট শহরের গলাচিপা এলাকার মো. হোসেনের ছেলে।

এ সম্পর্কে নারায়ণগঞ্জ মহানগর ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক আজিজুল ইসলাম বলেন, গতকাল রাত সাড়ে ৯টায় শহরের মাসদাইর কেন্দ্রীয় ঈদগাহ থেকে তাঁরা ধর্ষণবিরোধী মশালমিছিল বের করেন। মিছিলটি নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনে এসে শেষ হয়। নেতা-কর্মীরা যখন বাড়ি যাচ্ছিলেন, তখন শহরের চাষাঢ়া বালুরমাঠ এলাকায় ছাত্রদলের কর্মী অপূর্বকে একজন ছুরিকাঘাত করেন। আহত অপূর্বকে গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যান।

আজিজুল ইসলাম আরও বলেন, ‘এ সময় ছুরিকাঘাত করা এক যুবককে আশপাশের লোকজন আটক করে মারধর করেন। আমরা আইন নিজের হাতে তুলে না দিয়ে ছাড়ানোর চেষ্টা করি।’

এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নাছির আহমেদ প্রথম আলোকে জানান, রাতে মশালমিছিল করলে ওই মিছিলের পেছন থেকে কটূক্তি করায় চড় মারেন অপূর্ব। তখন সম্রাট ছুরি দিয়ে তাঁকে আঘাত করেন। এই ঘটনায় জড়িত একজনকে আটক করা হয়েছে। নিহত ব্যক্তির মরদেহ হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।

নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও অপারেশন) তারেক আল মেহেদী সাংবাদিকদের জানান, নিহত ব্যক্তি ছাত্রদলের কেউ নন। তিনি একটি রেস্তোরাঁয় কাজ করতেন। মূলত তাঁর সঙ্গে এক পোশাককর্মীর কথা-কাটাকাটির জেরে ওই ঘটনা ঘটেছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সাতক্ষীরায় ৩ শর্তে ‘মবকে’ রাজি করিয়ে একজনকে বাঁচাল বিজিবি ও পুলিশ
  • নারায়ণগঞ্জে ছুরিকাঘাতে তরুণের মৃত্যু, আটক ১
  • ইয়াবা রুট ঢাকা টু মালদ্বীপ