ছাত্র-জনতার সামনে ফাঁসির মঞ্চ। সেখানে দাঁড়িয়ে এক ‘ধর্ষক’। তার হাতে দড়ি বাঁধা, মাথায় পরানো কালো জমটুপি। নির্ধারিত সময়ে ‘ফাঁসিতে ঝুলিয়ে’ কার্যকর করা হলো মৃত্যুদণ্ড।

দেশব্যাপী অব্যাহত ধর্ষণের ঘটনার প্রতিবাদে ও জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে এভাবেই ‘প্রতীকী ফাঁসি’ কর্মসূচি পালন করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। আজ মঙ্গলবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডে ব্যতিক্রমী এ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।

কর্মসূচিতে শিক্ষার্থীরা চোখে-মুখে কালো কাপড় বেঁধে প্রতিবাদ জানান। সেই সঙ্গে বিভিন্ন দ্রোহের গান, কবিতা, একক অভিনয় পরিবেশন করা হয়। এ ছাড়া আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা ‘আমার বোনের কান্না, আর না আর না’, ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস, নো মোর রেপিস্ট’, ‘খুনি কেন বাহিরে ইন্টেরিয়ম জবাব চাই’ প্রভৃতি স্লোগান দেন।

কর্মসূচিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের শিক্ষার্থী ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক মাহায়ের ইসলাম বলেন, ‘আজকে প্রতীকী ফাঁসির মাধ্যমে আমরা উপস্থাপন করতে চেয়েছি, ধর্ষকদের সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসি হতে হবে। সেই সঙ্গে ধর্ষণকারীর প্রতি নিন্দা এবং চলমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির জন্য নিরাপত্তাহীনতার প্রতি আঙুল তুলে আমরা বেশ কিছু দ্রোহের কবিতা পাঠ করেছি।’

সমাজকর্ম বিভাগের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা বিগত দিনগুলোতে দেখেছি ধর্ষিতা সমাজে লাঞ্ছিত হয় অথচ ধর্ষক রাজনৈতিক ক্ষমতার বলে উচ্চভিলাষী জীবন যাপন করে। একজন ধর্ষিতার পরিবার থেকে শুরু করে সমাজ কেউ তাঁকে ভালো চোখে দেখে না। ২০২৫ সালে এসেও যদি ধর্ষণের মত ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটতে থাকে এবং আমরা প্রতিবাদ না জানাই তবে বুঝতে হবে এই সমাজের উন্নতি ঘটেনি। এই পরিস্থিতি থেকে দ্রুত উত্তনের জন্য আমরা সরকারের সক্রিয় ভূমিকা আশা করছি।’

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

মাদরাসাছাত্র হত্যা: সাবেক এমপি সোলাইমান সেলিম রিমান্ডে

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় লালবাগে মাদরাসাছাত্র হত্যা মামলায় ঢাকা-৭ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সোলায়মান সেলিমের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

বুধবার রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষের শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আওলাদ হোসাইন মুহাম্মদ জোনাইদ এ আদেশ দেন। এর আগে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আসামির পাঁচদিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন। রিমান্ড মঞ্জুরের পক্ষে শুনানি করেন ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী। অন্যদিকে রিমান্ড বাতিল ও আসামিদের জামিন চেয়ে আবেদন করেন আসামিপক্ষের আইনজীবী। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত আসামির জামিন নামঞ্জুর করে রিমান্ডের আদেশ দেন।

মামলার সূত্রে জানা যায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শেখ হাসিনার পলায়নের একদিন পর গত বছরের ৬ আগস্ট ভোরে লালবাগ থানাধীন বেড়িবাঁধ এলাকায় বিজয় মিছিল বের করে ছাত্র-জনতা। ওই মিছিলে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা গুলি চালালে মাদরাসাছাত্র শাহেনুর রহমান (১৯) গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। এ ঘটনায় গত ২৯ সেপ্টেম্বর নিহতের ভাই মো. মাজেদুল ইসলাম লালবাগ থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।
 
গত বছরের ১৪ নভেম্বর মধ্যরাতে ঢাকার গুলশান এলাকা থেকে সোলাইমান সেলিমকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এরপর থেকে অনেকগুলো হত্যা ও হত্যাচেষ্টা মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রিমান্ড ভোগ করছেন তিনি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ