ঢাবি উপাচার্যের সঙ্গে তুর্কি রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাৎ
Published: 11th, March 2025 GMT
বাংলাদেশে নিযুক্ত তুরস্কের রাষ্ট্রদূত মি. রামিস সেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন।
মঙ্গলবার (১১ মার্চ) ঢাবি উপাচার্যের কার্যালয়ে এ সাক্ষাৎকাল অনুষ্ঠিত হয়।
এ সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. এম. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী এবং বিশ্ব ধর্ম ও সংস্কৃতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড.
আরো পড়ুন:
ধর্ষণ-নিপীড়নের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান নেওয়ার দাবি ঢাবি সাদা দলের
ঢাবিতে ১৪ মার্চ থেকে অনলাইনে ক্লাস
সাক্ষাৎকালে তারা পারস্পরিক স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে বিশেষ করে ঢাবি ও তুরস্কের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে চলমান যৌথ সহযোগিতামূলক শিক্ষা ও গবেষণা কার্যক্রম আরো জোরদার করার সম্ভাব্যতা নিয়ে আলোচনা করেন। এছাড়া ঢাবি ও তুরস্কের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং গবেষক বিনিময় নিয়েও বৈঠকে আলোচনা করা হয়।
বৈঠকে তারা তুরস্কের দিয়ানেত ফাউন্ডেশনের আর্থিক সহায়তায় ঢাবির কেন্দ্রীয় মসজিদ কমপ্লেক্স পুননির্মাণের বিষয়ে আলোচনা করেন। এছাড়া তার্কিশ কো-অপারেশন অ্যান্ড কো-অর্ডিনেশন এজেন্সির (টিকা) আর্থিক ও কারিগরি সহায়তায় ঢাবির শহিদ বুদ্ধিজীবী ডা. মোহাম্মদ মোর্তজা মেডিকেল সেন্টার এবং বিভিন্ন গবেষণাগার উন্নয়নের বিষয়েও আলোচনা করা হয়।
রাষ্ট্রদূত মি. রামিস সেন তুরস্কে উচ্চশিক্ষার জন্য ঢাবি শিক্ষার্থীদের বৃত্তি প্রদানের ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করেন।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান বলেন, “বাংলাদেশ এবং তুরস্কের মধ্যে দীর্ঘদিন যাবৎ বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বিরাজ করছে। বিরাজমান এই বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ভবিষ্যতে আরো জোরদার হবে।”
এছাড়া তিনি ঢাবির কেন্দ্রীয় মসজিদ কমপ্লেক্স এবং মেডিকেল সেন্টার পুননির্মাণসহ বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে তিনি তুরস্কের রাষ্ট্রদূতের সহযোগিতা কামনা করেন। তুরস্কের রাষ্ট্রদূত এ বিষয়ে সম্ভাব্য সব সহায়তা প্রদানের আশ্বাস দেন।
ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
পুলিশের ডিজিটাইজেশনে ৪ উদ্যোগ, নারীর প্রতি সহিংসতা রোধে ‘শর্টকোড’ চালুর সিদ্ধান্ত
নারীর প্রতি সহিংসতা রোধে পুলিশের ‘হটলাইন’ সেবার পাশাপাশি ‘শর্টকোড’ চালুর সিদ্ধান্ত হয়েছে। পুলিশের ডিজিটাইজেশনে সরকারের চার উদ্যোগের মধ্যে এটি অন্যতম। আজ মঙ্গলবার প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব জানিয়েছেন, বাংলাদেশ পুলিশের সব ধরনের কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা ও অভ্যন্তরীণ যোগাযোগব্যবস্থার নিরাপত্তা নিশ্চিতে পুলিশ কমান্ড অ্যাপ তৈরির কাজ হাতে নিয়েছে সরকার। অভিযোগ ব্যবস্থাপনার জন্য ইন্সিডেন্টস ট্র্যাকিং সফটওয়্যার, নারীর প্রতি সহিংসতা রোধে শর্টকোড, অনলাইনে সাধারণ ডায়েরি (জিডি), অনলাইনে বা শর্টকোডের মাধ্যমে মামলা বা এফআইআরসহ বহুবিধ আধুনিকায়নের কাজও শুরু হয়েছে।
ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, বর্তমানে যে জাতীয় হেল্পলাইন ‘৩৩৩’ রয়েছে, তার সঙ্গে আরেকটি ৩ যোগ করে ‘৩৩৩৩’ ডায়াল করে নারী নির্যাতনবিষয়ক যেকোনো অভিযোগ করা যাবে। অথবা ‘৩৩৩’ নম্বরে ফোন করে সেবা অপশনে গিয়ে ৩ চাপলেও পুলিশের কল সেন্টারে ফরোয়ার্ড হয়ে যাবে। নারীরা যাতে নিঃসংকোচে অভিযোগ জানাতে পারেন, সে লক্ষ্যে কল সেন্টারে শতভাগ নারী সদস্য রাখার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। তবে যেহেতু ‘৯৯৯’ জীবন রক্ষাকারী এসওএস সেবা এবং এর কল সেন্টার ক্যাপাসিটি (সক্ষমতা) বৃদ্ধির প্রক্রিয়া সময়সাপেক্ষ, তাই আপাতত এই ‘৩৩৩৩’ সেবাকে ‘৯৯৯ ’-এ অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে না। পাশাপাশি ‘৩৩৩৩ ’-এর কল সেন্টারের রিসিভার হিসেবে শতভাগ নারী কর্মী রাখারও চিন্তা সরকারের বিবেচনায় রয়েছে।
অনলাইনে সাধারণ ডায়েরি করার পদ্ধতিতে পরিবর্তন আসছে বলে জানান প্রধান উপদেষ্টার এই বিশেষ সহকারী। তিনি বলেন, যুক্ত হচ্ছে অনলাইন এফআইআর পদ্ধতি। এ ক্ষেত্রে কল সেন্টারে প্রোফাইল ডাউনলোড হওয়ার পর কলটি সরাসরি সংশ্লিষ্ট থানায় চলে যাবে। বর্তমানে থানার দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদের ফোন নম্বরের ডেটাবেজ নিয়ে কাজ করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
উদ্যোগগুলো বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে সব ধরনের কারিগরি সহায়তা আইসিটি বিভাগ থেকে করা হবে বলে জানান ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। তিনি বলেন, পুলিশের কমান্ড অ্যাপের প্রটোটাইপ তৈরির কাজ ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে। আলোচনা করে অ্যাপ্লিকেশনটির আরও উন্নয়নের কাজ চলছে।
প্রধান উপদেষ্টার এই বিশেষ সহকারী বলেন, বর্তমানে পুলিশ সদস্যরা অভ্যন্তরীণ যোগাযোগের জন্য হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহার করে থাকেন। এতে অনেক সময় নষ্ট হয়। তা ছাড়া তথ্য পাচারের ঝুঁকিও খুব বেশি। যেকোনো সদস্য আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) ব্যবহার করে সব আলোচনা কপি করে নিয়ে যেতে পারেন। এ কারণে পুলিশ কর্মকর্তাদের জন্য তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের পক্ষ থেকে ‘পুশ টু টক’ অ্যাপ তৈরি করা হচ্ছে। সেখানে তথ্য পাচার রোধে কার্যকর ব্যবস্থা থাকবে।
বাহিনীর সদস্যদের নিজেদের মধ্যে যোগাযোগের ক্ষেত্রে পুলিশ কমান্ড অ্যাপে কর্মকর্তাদের বেশ কয়েকটি স্তরে থাকবে বলে জানান ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। তিনি বলেন, টিয়ার-১-এ থাকবেন পুলিশের আইজিসহ শীর্ষ কর্মকর্তারা। পরের স্তরে থাকবেন পুলিশ হেডকোয়ার্টার, রেঞ্জ ডিআইজি, পুলিশ সুপারসহ জেলা পর্যায়ের পুলিশ কর্মকর্তারা। আর সবশেষে থাকবেন দেশের সব থানার পুলিশ কর্মকর্তারা।
তবে থানা পর্যায়ের কর্মকর্তাদের এখনই কমান্ড অ্যাপে সংযুক্ত করা হবে না বলে জানান প্রধান উপদেষ্টার এই বিশেষ সহকারী। তিনি বলেন, বর্তমানে যেকোনো অভিযোগ তদন্ত বা কোনো ঘটনা ঘটলে সব ধরনের যোগাযোগের ক্ষেত্রে হোয়াটসঅ্যাপ ও প্রচলিত অন্যান্য পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়। পুলিশ কমান্ড সেন্টারের দায়িত্বে থাকা সদস্যরা সারা দিন এসব কাজেই ব্যস্ত থাকেন। এ ধরনের যোগাযোগের পুরো বিষয়কে একটি প্ল্যাটফর্মে নিয়ে আসতে মোবাইল কোম্পানিগুলোর কাস্টমার ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের আদলে একটি ইন্সিডেন্টস ট্র্যাকিং সিস্টেম তৈরি করা হচ্ছে। এই ট্র্যাকিং সিস্টেমে সব ধরনের মেসেজ আদান-প্রদান ও যোগাযোগ সংরক্ষণ করা হবে। ফলে যেকোনো অপরাধের ঘটনায় কী কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, সেটি একটি সফটওয়্যারের মাধ্যমেই জানা যাবে। এর ফলে সেবা প্রদান সহজ ও সময় সাশ্রয়ের পাশাপাশি পুলিশ সদস্যদের কাজের চাপও কমবে।