রাজশাহীতে চিকিৎসাসেবা কার্যত বন্ধ, রোগীদের ভোগান্তি
Published: 11th, March 2025 GMT
রাজশাহীতে পাঁচদফা দাবিতে আন্দোলনরত ইন্টার্ন ও ট্রেইনি চিকিৎসকদের সঙ্গে এবার একাত্মতা প্রকাশ করেছেন জ্যেষ্ঠ চিকিৎসকরাও। মঙ্গলবার (১১ মার্চ) সকাল ১১টা থেকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালসহ পুরো শহরের সরকারি ও বেসরকারি চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান কার্যত অচল হয়ে পড়েছে। চিকিৎসকদের এই কর্মবিরতির ফলে দূর-দূরান্ত থেকে আসা রোগীরা দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন।
রামেক হাসপাতালে বহির্বিভাগ, ওয়ার্ড এবং বেসরকারি হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, চিকিৎসকরা কর্মবিরতিতে থাকায় রোগীরা সেবা পাচ্ছেন না। রোগীরা অভিযোগ করেন, সকাল থেকে ওয়ার্ডে কোনো চিকিৎসক আসেননি। অনেক রোগীর অবস্থা খারাপ হলেও চিকিৎসা পরামর্শ নেওয়ার কেউ নেই। নার্সদের কাছে গেলে তারা বলছেন, তাদের কিছু করার নেই।
সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন দূর-দূরান্ত থেকে আসা রোগীরা। লক্ষ্মীপুর এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, রোগীরা চিকিৎসকের সন্ধানে ছোটাছুটি করছেন, কিন্তু কোথাও চিকিৎসক বসেননি। পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারের নিরাপত্তাকর্মী হ্যান্ডমাইকে ঘোষণা দিচ্ছিলেন, “আজ কোনো ডাক্তার বসবেন না, হটলাইনে ফোন করে পরে আসবেন।” হতাশ রোগী ও স্বজনরা তখন তাকে ঘিরে দাঁড়িয়ে ছিলেন।
আরো পড়ুন:
ডিজিটাল দর্শনার্থী কার্ড চালু হচ্ছে শেবাচিমে
‘মাদক সেবন’ দেখে ফেলায় উপড়ে ফেলা হলো ২ চোখ
মঙ্গলবার দুপুরে মেহেরপুর থেকে রাজশাহীর পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারে আসা কিডনি রোগী আনোয়ারা খাতুনের ছেলে আবদুল আলিম বলেন, ‘১ হাজার ৬০০ টাকা মাইক্রোবাস ভাড়া দিয়ে এসেছি, এসে শুনছি ডাক্তার বসবেন না। এখন ফিরেও যেতে পারছি না।”
চুয়াডাঙ্গা থেকে হৃদরোগে আক্রান্ত মেয়ে তানিয়াকে নিয়ে আসা হাসিনা বেগম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘‘সকাল ৭টায় বাড়ি থেকে বের হয়েছি, ট্রেনে এসে পৌঁছেছি দুপুরে। এখন এসে শুনি ডাক্তার বসবে না। এটা আগেই জানালে অন্তত আসতাম না।’’
একই অবস্থা গ্রীণ ডায়াগনস্টিক সেন্টারসহ অন্যান্য বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকেও। গ্রীণ ডায়াগনস্টিক সেন্টারের কাউন্টার ব্যবস্থাপক শামীম আহমেদ বলেন, ‘‘সকালে আমরা রোগীদের সিরিয়াল নিয়েছিলাম, কিন্তু চিকিৎসকরা না বসায় এখন রোগীরা হয়রানির শিকার হচ্ছেন।’’
চিকিৎসকদের পাঁচদফা দাবির মধ্যে অন্যতম হলো, এমবিবিএস ও বিডিএস ব্যতীত কেউ যেন নামের আগে ‘ডাক্তার’ লিখতে না পারেন এবং বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল (বিএমডিসি) রেজিস্ট্রেশন শুধুমাত্র এমবিবিএস ও বিডিএস ডিগ্রিধারীদের দেওয়া হয়। এই দাবির পক্ষে তারা আন্দোলন করে আসছেন, যা চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে। এই কর্মবিরতির ফলে রাজশাহীর চিকিৎসা ব্যবস্থা কার্যত অচল হয়ে পড়েছে। আর রোগীরা চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন।
রামেক হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসকদের প্রতিনিধি ডা.
রামেক হাসপাতালের মুখপাত্র ডা. শংকর কে বিশ্বাস বলেন, ‘‘শুধু জরুরি বিভাগ ও নতুন ভর্তি রোগীদের সেবা দেওয়া হচ্ছে। আন্দোলন দীর্ঘস্থায়ী হবে কি-না, তা নির্ভর করছে হাইকোর্টের আসন্ন রায়ের ওপর।’’
চিকিৎসকরা বুধবার হাইকোর্টে ঘোষণা হতে যাওয়া একটি রায়ের দিকে তাকিয়ে আছেন বলেও জানান তিনি।
ঢাকা/কেয়া/বকুল
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ড য় গনস ট ক স ন ট র চ ক ৎসকদ র চ ক ৎসকর সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
মাগুরার শিশুটি চোখের পাতা নেড়েছে
প্রধান উপদেষ্টার ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি আব্দুল কালাম আজাদ মজুমদার জানিয়েছেন, মাগুরায় ধর্ষণের শিকার শিশুটি চোখের পাতা নেড়েছে। তার অবস্থার সামান্য উন্নতি হয়েছে।
সোমবার দুপুরে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
আব্দুল কালাম আজাদ মজুমদার বলেন, প্রধান উপদেষ্টার প্রতিরক্ষা বিষয়ক বিশেষ সহকারী লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) আব্দুল হাফিজ শিশুটির বিষয়ে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন। আজও তিনি চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলেছেন। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন শিশুটির শারীরিক অবস্থার খুব সামান্য উন্নতি হয়েছে। হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর প্রথমবারের মতো শিশুটি চোখের পাতা নেড়েছে। তবে শ্বাসরোধের কারণে তার মস্তিকে অক্সিজেন সরবরাহ বিঘ্নিত হয়েছিল। মস্তিষ্কে পানি জমে গিয়েছিল, যেটা অপসারণ করা সম্ভব হয়নি। তার বুকের মধ্যে যে বাতাস জমে ছিল সেটা দূর করা গেছে। চিকিৎসকরা আশাবাদী দুই এক দিনের মধ্যে শিশুটির অবস্থার আরও উন্নতি হবে।
উল্লেখ্য, মাগুরায় ধর্ষণের শিকার শিশুটির চিকিৎসা চলছে রাজধানীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের (সিএমএইচ) প্যাডিয়াট্রিক আইসিইউতে।