জামালখানে শিশুকে ধর্ষণের পর হত্যা, তিন বছর ধরে বিচারের জন্য ঘুরছে পরিবার
Published: 11th, March 2025 GMT
২০২২ সালের ২৪ অক্টোবর চট্টগ্রাম নগরের জামালখান এলাকায় চিপস কিনতে গিয়ে নিখোঁজ হয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থী (৭)। এর তিন দিন পর ওই শিশুর লাশ পাওয়া যায়। পরে তদন্তে জানা যায়, তাকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়। এ মামলায় লক্ষ্মণ দাশ নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। আসামি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দিয়েছেন।
তবে এ ঘটনার তিন বছরেও মামলার অভিযোগপত্র (চার্জশিট) পৌঁছায়নি আদালতে। ডিএনএ প্রতিবেদন না আসার অজুহাত দেখিয়ে অভিযোগপত্র জমা দেননি তদন্তকারী কর্মকর্তা। এ নিয়ে আজ মঙ্গলবার সকালে এক সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করে নিহত শিশুর পরিবার। এতে অবিলম্বে ধর্ষণ মামলার চার্জশিট দিয়ে ধর্ষকের শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন হত্যার শিকার শিশুর মা, বোন, বাংলাদেশ নারীমুক্তি কেন্দ্রের আহ্বায়ক আসমা আক্তার, শিক্ষার্থী পুষ্পিতা নাথ, সাদিয়া আফরিন, হামিদ উদ্দিন প্রমুখ।
সংবাদ সম্মেলনে বিচারের দাবিতে ওই শিশুর বোন বলেন, ‘তিন বছর ধরে আমার পরিবার শুধু থানা-পুলিশ করছে। এখনো ডিএনএ প্রতিবেদন আসেনি। আমাদের দাবি, অন্তত আদালতে মামলাটা উঠুক।’
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন শিক্ষার্থী পুষ্পিতা নাথ। লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, আসামির স্বীকারোক্তির পর ওই শিশুর পরিবারের প্রত্যাশা ছিল, তাঁরা দ্রুত ও সুষ্ঠু বিচার পাবেন। কিন্তু গত তিন বছর শিশুটির পরিবার বিচার দূরে থাকুক, এখনো মামলার কোনো অগ্রগতিরই মুখ দেখতে পায়নি। তদন্তকারী পুলিশ মামলাটির চার্জশিট দিতে পারেনি। এই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তাকে বারবার তাগিদ দেওয়া হলেও নানা অজুহাতে পরিবারের সদস্যদের ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
আইনজীবীদের বক্তব্যের বরাতে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, আইনজীবীদের অভিমত, ধর্ষণ মামলার বিচারপ্রক্রিয়ায় ডিএনএ রিপোর্ট বাধ্যতামূলক করা হলেও, চার্জশিট দিতে ডিএনএ রিপোর্ট প্রয়োজন নেই। আসামির স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির ভিত্তিতেই এ মামলায় পুলিশ চার্জশিট দেওয়া যায়। ডিএনএ রিপোর্ট না আসাকে অজুহাত দেখিয়ে চার্জশিট না দেওয়া তদন্তকারী কর্মকর্তার দায়িত্বজ্ঞানহীনতা ছাড়া কিছু নয়।
শিশুটির পরিবার ও শিক্ষার্থীরা প্রধান উপদেষ্টা বরাবর চার দফা দাবি তুলে ধরেন। সেগুলো হলো, আগামী এক বছরের মধ্যে এই ধর্ষণ ও হত্যা মামলার চার্জশিট ও ডিএনএ রিপোর্ট প্রদান করতে হবে; ধর্ষণ, ধর্ষণচেষ্টা, হত্যাকাণ্ড ও নারীর প্রতি সহিংসতার সঙ্গে জড়িত অপরাধীদের দ্রুত শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে; ধর্ষণ, নিপীড়ন বন্ধ ও বিচারে ব্যর্থ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে অবিলম্বে অপসারণ করতে হবে; বিভাগীয় পর্যায়ে পর্যন্ত, মানসম্মত পূর্ণাঙ্গ ডিএনএ ল্যাব স্থাপন করতে হবে এবং ধর্ষণ মামলায় নমুনা সংগ্রহ ও সংরক্ষণ পদ্ধতি আধুনিকায়ন করতে হবে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ড এনএ র প র ট র পর ব র ত ন বছর তদন ত
এছাড়াও পড়ুন:
বিএনপিকর্মী নিহতের ঘটনায় মানহানি মামলা
রংপুরের বদরগঞ্জে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিএনপিকর্মী নিহতের ঘটনায় বহিষ্কৃত ৮ নেতার বিরুদ্ধে মানহানি মামলা করেছে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম। বুধবার বিকেলে সিনিয়র জুডিশিয়াল আমলী আদালতে (বদরগঞ্জ) মামলা দায়ের করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা বিএনপির সদস্য অ্যাডভোকেট শফি কামাল।
মামলার আসামি হলেন- জেলা বিএনপির সাবেক সদস্য মোহাম্মদ আলী সরকার, বদরগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাবেক সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক হুমায়ুন কবির মানিক, সাবেক যুগ্ম সম্পাদক শহিদুল হক মানিক, মধুপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এনামুল হক, বদরগঞ্জ পৌর যুবদলের সাবেক ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক সুমন সরদার, উপজেলা যুবদলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক এমদাদুল হক কয়েল, বিষ্ণুপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম কিবরিয়া, কালুপাড়া ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ছামছুল হক। এছাড়াও অজ্ঞাতপরিচয় ১০০-১৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
মামলায় উল্লেখ করা হয়, আসামিরা দলীয় পরিচয় ব্যবহার করে শৃঙ্খলা বিরোধী কাজ করেছে। আসামিদের হামলায় লাবলু মিয়া নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় গত ৫ এপ্রিল তাদের কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে এবং ৬ এপ্রিল তাদের দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। তাই তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম কেন্দ্রীয় কমিটির মহাসচিব ব্যারিস্টার কায়সার কামাল নির্দেশ দিলে রংপুর জেলা বিএনপির নেতৃবৃন্দকে নিয়ে আদালতে মামলা করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, দোকান ভাড়াকে কেন্দ্র করে গত শনিবার সকালে সাবেক বিএনপি নেতা মোহাম্মদ আলী সরকার, হুমায়ুন কবির মানিকের কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে সাবেক বিএনপি নেতা ও কালুপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শহিদুল হক মানিকের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে মোহাম্মদ আলী সরকারের অনুসারী বিএনপিকর্মী লাবলু মিয়া নিহত হন এবং সাংবাদিকসহ অন্তত ১৫ জন আহত হন।