চলমান ধর্ষণ ও নারীদের ওপর নিপীড়নের ঘটনাগুলোতে সাতদিনের মধ্যে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ও আইজিপিকে শক্তভাবে অবস্থান নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সাদা দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক মোর্শেদ হাসান খান।

তিনি বলেন, “একটা জরিপে দেখা গেছে, এ দেশের ৭০ শতাংশ নারী নিরাপত্তাহীনতায় বসবাস করে। মাত্র ৩০ শতাংশ নারী নিরাপদে রয়েছে। অথচ বাংলাদেশে আমরা নারীদের সুরক্ষা দিতে পারছি না। তাই ধর্ষকদের বিরুদ্ধে দ্রুত দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানাচ্ছি। আমরা স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ও আইজিপিকে সাতদিন সময় দিচ্ছি। এর মধ্যে শক্তভাবে অবস্থান নিন। না হলে আমরা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আসবো। আমাদের এ প্রতিবাদ অব্যাহত থাকবে।”

মঙ্গলবার (১১ মার্চ) ঢাবির অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে সাদা দলের মানববন্ধনে এ কথা বলেন তিনি।

আরো পড়ুন:

ঢাবিতে ১৪ মার্চ থেকে অনলাইনে ক্লাস

ছাত্রদল সম্পাদকের বক্তব্যের নিন্দা ঢাবি শাখা শিবিরের

তিনি বলেন, “আজ ৫ আগস্টের পর সরকারের প্রতি এত দ্রুত সময়ে আমাদের দাবি নিয়ে দাঁড়াতে হবে আমরা চিন্তা করিনি। তারপরও আমাদের দাঁড়াতে বাধ্য করা হয়েছে। মৃত্যুশয্যায় পতিত আছিয়া মেয়েটির মেডিকেল রিপোর্টটা যদি ব্যাখ্যা করি, কত নির্মমভাবে তারা রিপোর্টটি তৈরি করেছে। তাই আমি এ প্রসঙ্গে আসব না। দেশের প্রতিটি জেলায় আমাদের মা-বোন ও শিশুরা নানা দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে। এটা আমার মনে হচ্ছে একটা প্ল্যান।”

তিনি আরো বলেন, “আমরা ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে আমরা দেখেছি প্রায় ২ লাখ মা- বোন তাদের জীবনকে আত্মত্যাগ দিয়েছে। এমনকি ২৪ সালের আন্দোলনেও নারীরা অগ্রভাগে থেকে আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছে। কিন্তু আজ আমরা তাদের নিরাপত্তা দিতে পারছি না। এটা সরকারের লজ্জা, আমাদের লজ্জা।”

সাদা দলের সাবেক আহ্বায়ক ও উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক লুৎফর রহমান বলেন, “একটা দেশ যখন গণ-অভ্যুত্থানের পর যাত্রা শুরু করে, তখন সব থেকে খারাপ পরিস্থিতির মধ্যে থাকে। তবে অভ্যুত্থানের ৬ মাস পরেও এমন পরিস্থিতি অপ্রত্যাশিত। আমরা দেখছি প্রতিদিন আমাদের নারীরা আজ লাঞ্চিত হচ্ছে। তাই স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে বলতে চাই, আইনের সংস্কার করে নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবেন।”

সাদা দলের সদস্য অধ্যাপক নাসরিন সুলতানা বলেন, “দেশে আজ নারীরা নিরাপদ না। নারীরা বিভিন্ন জায়গায় হেনস্তা, ধর্ষণ ও নিপীড়নের শিকার হচ্ছে। যে এদেশের নারীদের ক্ষমতায়নের বাধা। তাই সব দলের নারীদের ক্ষমতায়নের বিষয়ে তাদের ম্যানিফেস্টোতে সংযুক্ত করতে হবে।”

কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক সিদ্দিকুর রহমান খান বলেন, “বর্তমানে বাংলাদেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির কারণে চুরি, চিনতাই, নারীদের ওপর ধর্ষণের বিরুদ্ধে আমরা এখানে এসে উপস্থিত হয়েছি। অতীতে পালিয়ে যাওয়া ফ্যাসিস্ট শক্তি বিভিন্ন তাদের নেতাকর্মীদের উষ্কানি দিচ্ছে। গত সাত মাস ধরে তারা এ সরকারকে বিঘ্নিত করার জন্য নানা পায়তারা করছে।”

তিনি বলেন, “আমরা দেখছি গত ২ মাসে অন্তত ২০০ ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। বিগত ৬ মাসে প্রায় ৫০০ নারী, শিশু, কন্যা ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। যেখানে সংখ্যাগরিষ্ঠ ধর্ষণের শিকার হয়েছে শিশুরা। তাই, জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সরকারের দায়িত্ব। জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা না গেলে আমাদের এ প্রতিবাদ অব্যাহত থাকবে।”

ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ন শ চ ত কর স বর ষ ট র আম দ র সরক র র ঘটন

এছাড়াও পড়ুন:

প্রাগ চলচ্চিত্র উৎসবে ‘নট আ ফিকশন’

 

চেক প্রজাতন্ত্রের রাজধানী প্রাগের কিনো পাইলট থিয়েটারে আগামী ২৩ থেকে ২৬ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে প্রাগ চলচ্চিত্র উৎসব ২০২৫। যেখানে বাংলাদেশ থেকে নির্বাচিত হয়েছে তিনটি অস্কার এবং দুটি কানাডিয়ান স্ক্রিন এওয়ার্ডস কোয়ালিফাইং উৎসব ঘুরে আসা চলচ্চিত্র ‘নট আ ফিকশন’।

এ উৎসবের মধ্য দিয়ে এক শটের এই সিনেমাটির ইউরোপিয়ান প্রিমিয়ার হবে; যার প্রযোজক, পরিচালক এবং চিত্রগ্রাহক হিসেবে কাজ করেছেন তরুণ নির্মাতা শাহনেওয়াজ খান সিজু। পুরস্কারের জন্য ‘নট আ ফিকশন’কে লড়তে হবে ২০২৫ সালের অস্কারজয়ী সেরা লাইভ অ্যাকশন স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘আই অ্যাম নট অ্যা রোবট’ এবং অন্যান্য দেশের ছবিগুলোর বিপরীতে। 

ইউরোপের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এই উৎসবের বিশেষ একটি বিভাগ হচ্ছে ‘ভয়েসেস অব ডিসট্যান্ট ল্যান্ডস’– এই বিভাগটি এমন সিনেমাগুলোকে সম্মান জানায়, যা প্রচলিত ধারা থেকে বেরিয়ে এসে বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক ও মানবিক ইস্যুগুলো নিয়ে নতুন দৃষ্টিভঙ্গি উপস্থাপন করে। এ বছর সারাবিশ্ব থেকে মোট ৫টি দেশের চলচ্চিত্র এই বিভাগে মনোনীত হয়েছে, যেখানে ‘নট আ ফিকশন’-এর সুবাদে এশিয়া মহাদেশের একমাত্র প্রতিনিধি হিসেবে রয়েছে বাংলাদেশের নাম। সত্য ঘটনা অবলম্বনে নির্মিত ‘নট আ ফিকশন’ মূলত একটি ঐতিহাসিক দলিল, যা গত দুই যুগে বাংলাদেশের আনাচে-কানাচে ঘটে যাওয়া অসংখ্য বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে কথা বলে।

নির্মাতা সিজুর সঙ্গে নট আ ফিকশনের সহপ্রযোজক হিসেবে কাজ করছেন চলচ্চিত্র সমালোচক ও সাংবাদিক সাদিয়া খালিদ রীতি এবং লাইলি বেগম। সিনেমায় অভিনয় করেছেন জউদয়ন রাজীব, নাঈমুল আলম মিশু, ঐশিক সামি আহমেদ, রুদ্রনীল আহমেদ, জাওয়াদ সৌধ এবং মিথুন। ভয়েস আর্টিস্ট হিসেবে কাজ করেছেন আহসান স্বরণ এবং সৈয়দ তামুর হাসান। 
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ