এলডিসি থেকে উত্তরণ পেছাতে জাতিসংঘে আবেদন করা হতে পারে
Published: 11th, March 2025 GMT
২০২৬ সালে স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে উত্তরণের কথা রয়েছে বাংলাদেশের। তবে প্রধান উপদেষ্টার নতুন বিশেষ সহকারী ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী জানিয়েছেন, ভুয়া তথ্যের ভিত্তিতে এলডিসি উত্তরণের অবেদন করা হয়েছিল। তাই মুখ্য সচিবকে প্রধান করে উত্তরণ অগ্রগতি মূল্যায়ন কমিটি করা হয়েছে। কমিটি জাতিসংঘের কাছে সময় পিছিয়ে দেওয়ার আবেদন করতে পারে। তবে এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।
মঙ্গলবার অর্থ মন্ত্রণালয়ে তার প্রথম কর্মদিবসে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি। এর আগে মন্ত্রণালয়ে তাকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান অর্থ উপদেষ্টা ড.
আনিসুজ্জামান চৌধুরী বলেন, দেশ একটি অর্থনৈতিক ভঙ্গুরতার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। যা এর আগে কখনো হয়নি। তৎকালীন সরকার ভুয়া তথ্যের ভিত্তিতে স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে উত্তরণের আবেদন করেছিল। তাই মুখ্য সচিবকে প্রধান করে উত্তরণ অগ্রগতি মূল্যায়ন কমিটি করা হয়েছে। কমিটি জাতিসংঘের কাছে সময় পিছিয়ে দেওয়ার আবেদন করতে পারে। এটা বাংলাদেশের অধিকার রয়েছে। তবে আবেদন করার বিষয়টি এখনও চূড়ান্ত হয়নি।
তিনি আরও বলেন, অর্থ পাচার সহজে রোধ করা সম্ভব। দেশ থেকে কোথায় কী যাচ্ছে তার হিসাব স্বচ্ছতার সঙ্গে নিশ্চিত করা হলে পাচার বন্ধ হবে। তাছাড়া বাজেটে ঋণ ব্যবস্থাপনা চ্যালেঞ্জ বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
তিনি বলেন, পাচার হওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনা সম্ভব। ড. ইউনূসের সুনামের ওপর ভিত্তি করে বেশ কিছু দেশ টাকা ফিরিয়ে দেওয়ার আগ্রহ জানিয়েছে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: স ল হউদ দ ন আহম দ এলড স এলড স
এছাড়াও পড়ুন:
রাশিয়া সফরে ট্রাম্পের দূত, ইউরোপের উদ্বেগ
ইউক্রেন সংকট ঘিরে বিশ্বজুড়ে কূটনৈতিক ও সামরিক তৎপরতা আরও জোরদার হয়েছে। যুক্তরাজ্য ও জার্মানির উদ্যোগে শুক্রবার ব্রাসেলসে ৫০টি দেশের প্রতিনিধিদের নিয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে ইউক্রেন প্রতিরক্ষা যোগাযোগ গ্রুপের গুরুত্বপূর্ণ এক বৈঠক। ব্রিটেনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী জন হিলি জানিয়েছেন, এ বৈঠকের মূল লক্ষ্য ছিল রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ওপর চাপ আরও বাড়ানো।
বৈঠকে ইউক্রেনকে অতিরিক্ত ৫৮ কোটি ডলারের সামরিক সহায়তা দেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়। এই প্যাকেজের আওতায় রাডার সিস্টেম, অ্যান্টি-ট্যাঙ্ক মাইন এবং বিপুল পরিমাণ ড্রোন সরবরাহ করা হবে। এ ছাড়া ইউক্রেনের যুদ্ধক্ষেত্রে থাকা সামরিক যান ও সরঞ্জাম মেরামতেও ব্যয় করা হবে এ অর্থের একটি অংশ।
এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ শুক্রবার রাশিয়ায় পৌঁছেছেন। ক্রেমলিন জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে তাঁর সাক্ষাৎ হতে পারে। এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হলে তা হবে উইটকফ ও পুতিনের মধ্যে তৃতীয় বৈঠক। এর আগে ফেব্রুয়ারিতে উইটকফ পুতিনের সঙ্গে তিন ঘণ্টারও বেশি সময় বৈঠক করে আমেরিকান শিক্ষক মার্ক ফোগেলকে মুক্ত করিয়েছিলেন। রাশিয়া সফরের আগে তিনি ওয়াশিংটনে রুশ আলোচক কিরিল দিমিত্রিয়েভের সঙ্গে বৈঠক করেন। দু’পক্ষের মধ্যে যুদ্ধবিরতি নিয়ে ‘একটি সমঝোতা’ হয়েছে বলে জানা গেছে।
তবে এই আলোচনার মধ্যেই রাশিয়ার বিরুদ্ধে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ এনেছে ইউক্রেন। ইউক্রেনের মানবাধিকার কমিশনার দিমিত্র লুবিনেৎস জানিয়েছেন, রুশ সেনারা ১৩ মার্চ জাপোরিঝিয়া অঞ্চলের পিয়াতিখাতকি গ্রামে চারজন নিরস্ত্র ইউক্রেনীয় যুদ্ধবন্দিকে গুলি করে হত্যা করেছে। ইউক্রেন ও রাশিয়ার ড্রোন ফুটেজ বিশ্লেষণ করে অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস এই ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছে। লুবিনেৎস আন্তর্জাতিক রেড ক্রস ও জাতিসংঘের কাছে বিষয়টি তদন্তের আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘এটি বিচ্ছিন্ন কোনো ঘটনা নয়, বরং রাশিয়ার একটি প্রাতিষ্ঠানিক নীতি, যা সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে উৎসাহিত হচ্ছে।’ এ ঘটনায় যুদ্ধাপরাধের তদন্ত শুরু হয়েছে।
এরই মধ্যে রাশিয়ার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের আলোচিত একটি বন্দিবিনিময় হয়েছে। বিশ্বাসঘাতকতার মামলায় রাশিয়ায় কারাবন্দি আমেরিকান নাগরিক ক্সেনিয়া কারেলিনাকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। তাঁর বিনিময়ে যুক্তরাষ্ট্র আর্থার পেত্রভ নামে এক রুশ-জার্মান নাগরিককে রাশিয়ার হাতে তুলে দিয়েছে। এই বিনিময় প্রক্রিয়ায় মধ্যস্থতা করেছে সংযুক্ত আরব আমিরাত। কারেলিনার বাগদত্তা ক্রিস ভ্যান হেরডেন এই মুক্তির জন্য প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। তবে আরও কয়েকজন মার্কিন নাগরিক এখনও রাশিয়ার হেফাজতে আছেন, যাদের মুক্তির জন্য চেষ্টা করছে যুক্তরাষ্ট্র।
যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক পুনঃস্থাপনের অংশ হিসেবে সম্প্রতি তুরস্ক ও ইস্তাম্বুলে বিভিন্ন পর্যায়ে আলোচনা হয়েছে। আলোচনায় কূটনৈতিক সম্পত্তি ফেরত দেওয়া, নিষেধাজ্ঞা শিথিলকরণ ও সরাসরি বিমান চলাচল শুরু করার মতো বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত ছিল। বিশ্লেষকদের মতে, যুদ্ধক্ষেত্র ও কূটনৈতিক পরিসরে এই নতুন আলোচনাপ্রবাহ ইউক্রেন সংকটের সমাধানের পথ তৈরি করতে পারে, তবে এখনও বড় ধরনের অগ্রগতি অনিশ্চিত।