ধর্ষকের প্রতীকী ফাঁসি দিলেন রাবি শিক্ষার্থীরা
Published: 11th, March 2025 GMT
ধর্ষকের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করে নারীসহ জনসাধারণের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) ধর্ষকের প্রতীকী ফাঁসি ও দ্রোহের কবিতা পাঠ অনুষ্ঠিত হয়েছে৷
মঙ্গলবার (১১ মার্চ) সকাল সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডে এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডে ফাঁসির মঞ্চ তৈরি করে সেখানে প্রতিকী ফাঁসি দেওয়া হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক সমন্বয়ক সালাউদ্দিন আম্মারকে।
ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী নাজিফা আনজুম মিম বলেন, “ধর্ষকের কঠিন বিচার অর্থাৎ মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করতে হবে। আমাদের ইন্টারিম সরকার ধর্ষকের বিচারে ১৮০ দিনের টালবাহানা করছে, ততদিনে বাংলাদেশে আরও হাজার হাজার ইস্যু চলে আসবে এবং এটি ধামাচাপা পড়ে যাবে।”
আরো পড়ুন:
অবরোধ-মানববন্ধনসহ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদী কর্মসূচি অব্যহত
রাবিতে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের কুরআন উপহার কর্মসূচি
তিনি বলেন, “আমরা তনুকে ভুলে গেছি, তেমনি এই ১৮০ দিনে আমরা আছিয়াকেও ভুলে যাব। তাই যত দ্রুত সম্ভব, ধর্ষকদের বিচার নিশ্চিত করতে হবে। প্রশাসনের কাছে আমাদের একটাই দাবি, আমরা যেন সন্ধ্যার পরে ক্যাম্পাস ও হলপাড়ায় স্বাচ্ছন্দ্যে এবং নিরাপদে চলাচল করতে পারি। সেই পদক্ষেপ যেন দ্রুত নেওয়া হয় এবং এটি যেন শুধু হল বন্ধের সময়সীমার মধ্যে সীমাবদ্ধ না থাকে।”
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক কামরুল ইসলাম সজিব বলেন, “ধর্ষকের বিরুদ্ধে আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় আজকের এই প্রতীকী ফাঁসি ও দ্রোহের কবিতা পাঠ আয়োজন। আমরা এই ফাঁসির মঞ্চ থেকে সরকারকে একটা মেসেজ দিতে চাই, বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী ধর্ষকের যে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড, তারা যেন সেটা দ্রুত বাস্তবায়ন করে একটা নজির সৃষ্টি করে। ধর্ষণের তদন্তের জন্য যে ডিএনএ স্যাম্পলিং মেশিন দরকার, সেটা ঢাকা ছাড়াও যেন প্রত্যেক বিভাগে দেওয়া হয়।”
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক সালাউদ্দিন আম্মার বলেন, “আজকের এই মঞ্চকে আমরা বাংলাদেশের সব ধর্ষকের ফাঁসির মঞ্চ হিসেবে রিপ্রেজেন্ট করতে চাচ্ছি। এখানে একটা দলকে এলিট শ্রেণি দেখে তাদের বিচারকার্য স্থগিত করা, র্যাব আলেপের বিচারকার্য এই ফাঁসির মঞ্চে সম্পন্ন করতে হবে। তেমনি আছিয়ার ধর্ষকের বিচারকার্য এ মঞ্চেই সম্পন্ন করতে হবে। পররাষ্ট্র ক্যাডারের বাবার বিচারও এই মঞ্চেই করতে হবে।”
তিনি বলেন, “বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যানের ছেলে সায়েম সোবহান আনভীরসহ তনু হত্যায় জড়িত সেনাবাহিনী কর্মকর্তার ও বিচার করতে হবে। এ ফাঁসির মঞ্চ কোন ধনী গরীব ভেদাভেদ করবে না। আমরা যেমন আসিয়ার ধর্ষকের জন্য সরব হচ্ছি, তেমনি যেন রোজাদার মহিলাকে ধর্ষণ করা আলেপের বিচারের জন্যও সরব হই।”
ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
বন্দরে পুলিশ পাহাড়ায় যুবলীগ নেতার অনুমোদন বিহীন হাসপাতাল উদ্বোধন
নানা বিতর্কের মধ্য দিয়ে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের উপর প্রকাশ্যে গুলিবর্ষণকারি বন্দরে যুবলীগ নেতা অহিদুজ্জামান অহিদের মালিকানাধীন নবনির্মিত বহুতল ভবনে অনুমোদন বিহীন হাসপাতালটি অবশেষে পুলিশ পাহাড়ায় উদ্বোধন করা হয়েছে।
সোমবার (১৫ এপ্রিল) বিকালে স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ)র একাধিক নেতৃবৃন্দ পরিচালনায় মদনপুর স্পেশালাইজড হসপিটাল নামে এ হাসপাতালটি শুভ উদ্বোধন করা হয়।
বন্দর উত্তরাঞ্চলের শীর্ষ সন্ত্রাসী যুবলীগ নেতা অহিদের অবৈধ অর্থে গড়ে তোলা এ বহুতল ভবন উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর বিএনপির শীর্ষ নেতারা আমন্ত্রিত অতিথি হিসাবে উপস্থিতি বিষয়ে তৃণমূল বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে বিতর্কের সৃষ্টি হওয়ায় শীর্ষ নেতারা এ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত হননি।
আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন অঙ্গ সংগঠন স্বাচিপ নেতৃবৃন্দের পরিচালিত অনুমোদন বিহীন হাসপাতালটি উদ্বোধন করেন, ধামগড় পুলিশ ফাঁড়ি ইনচার্জ ইন্সপেক্টর মফিজুর রহমান। পুলিশ পাহাড়ায় যুবলীগ নেতার ভবন উদ্বোধনী এ অনুষ্ঠান ঘিরে স্থানীয় লোকজন ও তৃণমূল বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে বইছে সমালোচনার ঝড়।
জানাগেছে, নারায়ণগঞ্জের ওসমান পরিবারের সহচর ও ছাত্র-জনতা হত্যা সহ একাধিক মামলার আসামি অহিদুজ্জামান অহিদের অবৈধ অর্থে নবনির্মিত মদনপুর স্পেশালাইজ্ হসপিটাল লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আজমল খাঁনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, বন্দর উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মাসুম আহম্মেদের সহধর্মিণী জোসনা বেগম, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ) নেতা , শিশু কিশোর ও নবজাতক রোগ বিশেষজ্ঞ সহকারী অধ্যাপক (শিশু বিভাগ) ডাঃ এম. করিম, মেডিসিন, ডায়াবেটিস, লিভার এবং পরিপাকতন্ত্র রোগ বিশেষজ্ঞ স্বাচিপ নেতা ডাঃ রাজ দত্ত, গাইনী বিশেষজ্ঞ ও সার্জন বন্ধ্যাত্ব, গাইনী ক্যান্সার রোগে বিশেষ অভিজ্ঞ, স্বাচিপ নেতা ডাঃ তাহমিনা খাঁন ও সমাজ সেবক বারেক মেম্বার প্রমুখ।
স্থানীয় ও বিএনপির একাধিক নেতাকর্মী জানান, বিগত আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় ক্ষমতাবলে অহিদুজ্জামান অহিদ মদনপুর এলাকায় গড়ে তোলে এক অস্ত্রধারি সন্ত্রাসী বাহিনী। অহিদের নেতৃত্বে এ বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে মদনপুর এলাকা সহ উত্তরাঞ্চলের মদক, চাঁদাবাজি, দখল, ছিনতাই সহ নানা অপকর্ম।
৫ আগস্টের পর বন্দর উপজেলা বিএনপির সভাপতি মাজহারুল ইসলাম হিরণের সেল্টারে যুবলীগ নেতা অহিদুজ্জামান অহিদ পুণবহালে। ইয়াবা দিয়ে প্রতিপক্ষকে ফাঁসানো পূর্বের ঘটনা পূনরায় ঘটনার আশঙ্কায় আতঙ্কিত স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীরা।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র জনতার উপর হামলা ও ছাত্র হত্যা সহ একাধিক মামলার আসামি যুবলীগ নেতা অহিদুজ্জামান অহিদ অদৃশ্য ইশারায় বহাল তবিয়তে। এ অদৃশ্য শক্তিতে পূর্বের ন্যায় ধামগড় পুলিশ ফাঁড়ি তার নিয়ন্ত্রণে নিয়ন্ত্রিত বলে অভিযোগ উঠেছে।
বন্দর উপজেলা বিএনপির সভাপতির হিরণ বলেন, বিএনপি শীর্ষ নেতাদের নাম পদবি লিখে অহিদ নিজেই দাওয়াত কার্ড ছাপিয়ে ফেসবুকে ছড়িয়ে দেয়। তারপর থেকে বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। এ অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথি বিষয়ে বিএনপির নেতারা কেউ অবগত ছিলেন না বলে তিনি জানিয়েছেন।
হাসপাতালের ব্যবস্থাপক মাহাবুব জানান, মদনপুর স্পেশালাইজড হসপিটাল নামে হাসপাতালটির অনুমোদনের জন্য অনলাইনে আবেদন করা হয়েছে। পর্যায়ে ক্রমে অনুমোদনের আশাবাদী।
বন্দর থানার অফিসার ইনচার্জ ইন্সপেক্টর ওসি তরিকুল ইসলাম বলেন, উদ্বোধন অনুষ্ঠানকে ঘিরে হাসপাতাল ভাংচুর হামলা হতে পারে এমন একটি তথ্যের ভিত্তিতে আপত্তিকর ঘটনা এড়াতে পাহাড়ায় ছিলেন।
নারায়ণগঞ্জ জেলা সিভিল সার্জন, ডাঃ এ এফ এম মশিউর রহমান বলেন, বন্দরের মদনপুর এলাকায় স্পেশালাইজ্ হসপিটাল লিমিটেড হাসপাতালের অনুমোদন দেওয়া হয়নি। তবে অনুমোদনের জন্য আবেদন করেছে কি না খোঁজ নিয়ে বলা যাবে।