‘আমার হক এতিমখানায় দেব, তবু নিমকহারামকে দেব না’
Published: 11th, March 2025 GMT
পারিবারিক বিরোধের জেরে সম্প্রতি আলোচনায় আসেন চিত্রনায়িকা পপি। বাবার ছয় কাঠা জমি দখলের চেষ্টার অভিযোগে পপির নামে গত ৩ ফেব্রুয়ারি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন তার ছোট বোন ফিরোজা পারভিন। পরে পপিও একই থানায় মা, ভাই ও বোনের নামে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। এ ঘটনার পর এক মাস পেরিয়ে গেছে।
সাধারণ ডায়েরির সর্বশেষ অবস্থা জানতে চাইলে পপি বলেন, “আমার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়নি। আমার করা সাধারণ ডায়েরি তদন্তাধীন। আইনিভাবেই লড়াই করব। বর্তমানে মামলার প্রস্তুতি চলছে। অন্যায়ভাবে আমার জমি দখলে রেখেছে। ছয় কাঠা জমির দলিল আমার নামে। সামনের অংশের জমিতে ভাগ পাব। কিন্তু সব কিছু মা-বোনেরা দখলে রেখেছে। সামনে যে ঘর তুলেছিলাম, তা থেকে প্রায় ৬০ হাজার টাকা ভাড়া আসে। সব তারাই নেয়।”
মায়ের বিরুদ্ধে সংসার ভাঙার অভিযোগ এনে পপি বলেন, “নিজের কোনো শখ-আহ্লাদও পূরণ করিনি। নিজের সবটা দিয়ে পরিবারকে দেখেছি। সেই মা আমার স্বামী ও সন্তানকে মিডিয়ায় ছোট করেছে। আমি চেয়েছিলাম সময়-সুযোগ বুঝে স্বামী-সন্তান নিয়ে কথা বলব। কিন্তু খুব বাজেভাবে স্বামী ও সন্তানকে উপস্থাপন করেছে। আমি বিয়ে করে সংসারী হয়েছি। আমার শেষ আশ্রয় যেটা ছিল, যে আমাকে আশ্রয় দিয়েছে; জীবন বাঁচাতে দায়িত্ব নিয়েছে। কিন্তু সেই মানুষটাকেও অসম্মান করেছে। সংসার নষ্ট করার চেষ্টা করছে। এটা পৃথিবীর কোনো মা করতে পারে না। শ্বশুরবাড়ি ফোন করে নানা মিথ্যাচার করেছে। আমাকে ডিভোর্স দেওয়ার জন্য বলেছে। যাদের উপকার করেছি, তারা আমার ক্ষতি করছে। শ্বশুরবাড়িতে যে সম্মানে থাকব তা-ও দিচ্ছে না। প্রতিনিয়ত অসম্মানিত করছে। এ জন্য উঠতে-বসতে কথা শুনতে হয়। বিয়ে করেছি, সামনে আনিনি। এটা আমার ব্যক্তিগত বিষয়। অন্যায় কিছু করিনি। প্রতিটি মানুষের একট ব্যক্তিগত বিষয় থাকে। আমি চাইনি আমার ব্যক্তিগত বিষয় মিডিয়ায় আসুক।”
আরো পড়ুন:
ওমরা করতে মক্কায় বর্ষা
সরকারি অনুদানে চলচ্চিত্র নির্মাণে বড় পরিবর্তন
ছাড় দিতে দিতে নিঃস্ব হয়ে গেছেন পপি। তা জানিয়ে এই অভিনেত্রী বলেন, “যেহেতু মা, ভাই ও বোনেরা আমার মান-সম্মানের কথা একবারও ভাবেনি এবং আমার সঙ্গে কোনো সম্পর্ক রাখেনি, তাই আমার প্রাপ্য জমি কখনোই ছেড়ে দেব না। প্রয়োজনে আমার হক এতিমখানা কিংবা মাদ্রাসায় দেব। কিন্তু তাদের আর নয়। কোনো নিমকহারামকে দেব না। আমার ৩০ বছরের কষ্টের মূল্য তারা দেয়নি। আমার সম্মান নিয়ে ছিনিমিনি খেলছে। তাদের এখন ছাড় দেওয়ার প্রশ্নই আসে না। অনেক ছাড় দিয়েছি। ছাড় দিতে দিতে এবং পরিবারের চাহিদা পূরণ করতে করতে আজ আমি নিঃস্ব। আমার কষ্টার্জিত টাকা দিয়ে কেনা জমি ফেরত পেতে মামলা করব।”
ঢাকা/রাহাত/শান্ত
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চলচ চ ত র
এছাড়াও পড়ুন:
জীবন বদলে দিচ্ছে ব্র্যাক ব্যাংকের উদ্যোগ
স্পষ্ট দৃষ্টিশক্তি মানুষের জীবনে একটি মৌলিক চাহিদা। দৃষ্টির স্বচ্ছতা ছাড়া কোনো কাজ সঠিকভাবে করা সম্ভব নয়। এরপরও, দৃষ্টিশক্তির স্পষ্টতার অভাবে অনেকে উন্নত জীবনযাপনের সুযোগ হারাচ্ছেন; ক্ষুণ্ন হচ্ছে তাদের ব্যক্তিস্বাধীনতা আর সামাজিক মর্যাদা। দৃষ্টিশক্তি যেন কখনোই জীবনে চলার পথে বাধা না হয়ে দাঁড়ায়, সেই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় কাজ করছে ব্র্যাক ব্যাংক।
ব্যাংকটি এর অনন্য করপোরেট সামাজিক দায়বদ্ধতা (সিএসআর) উদ্যোগ ‘অপরাজেয় আমি’-এর মাধ্যমে, ভিশনস্প্রিং এবং গ্রামীণ হেলথকেয়ার সার্ভিসেস লিমিটেডের সহযোগিতায় পরিচালনা করছে বিনামূল্যে চোখ স্ক্রিনিং এবং চশমা প্রদান কর্মসূচি। সেইসঙ্গে শিল্পকারখানা ও গ্রামবাংলার মানুষের জীবনের মানোন্নয়নে দিচ্ছে ছানি অস্ত্রোপচারের সুবিধা।
ব্র্যাক ব্যাংকের এ প্রতিশ্রুতি কেবল কোনো নির্দিষ্ট এলাকা বা পেশার মানুষের জন্য নয়। তৈরি পোশাকশিল্পের কর্মী থেকে শুরু করে গ্রামাঞ্চলের সুবিধাবঞ্চিত অনেকের জীবনকে উন্নত করেছে; সামাজিক অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করেছে এবং মানুষকে নিজের মূল্য বোঝাতে শিখিয়েছে।
ভিশনস্প্রিংয়ের মাধ্যমে ব্র্যাক ব্যাংক শিল্পকারখানায় শ্রমিকদের দৃষ্টিশক্তির সংশোধনে সহায়তা করছে। আপাতদৃষ্টিতে এটি কারও কাছে উল্লেখযোগ্য সমস্যা মনে না হলেও, এর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাবে মানুষের কর্মক্ষমতা হ্রাস পায়, তারা আর্থিক বঞ্চনার শিকার হতে পারেন এবং তাদের জীবনযাত্রার মানও ব্যাহত হয়। এই যৌথ উদ্যোগের মাধ্যমে ২০২৪ সালের অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত মোট ১৫,৬২৫ জন কর্মীর চোখ পরীক্ষা করা হয়েছে, যার মধ্যে ৮৪% এর আগে কখনও চশমা পরেননি। প্রায় ৬,০০০ কর্মী, যার বেশির ভাগই নারীশ্রমিক, সংশোধনমূলক চশমা পেয়েছেন, যা তাদের আরও সঠিকভাবে ও দক্ষতার সঙ্গে কাজ করার সুযোগ করে দিয়েছে। এর ফলে তাদের আয় বেড়েছে, বেড়েছে ওই কারখানাগুলোর উৎপাদনশীলতাও।
সুস্থ দৃষ্টিশক্তিকে একটি বহুমুখী চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়ে ব্র্যাক ব্যাংক, গ্রামীণ হেলথকেয়ারের মাধ্যমে প্রত্যন্ত এলাকায় সুবিধাবঞ্চিত মানুষের জীবনেও পরিবর্তন নিয়ে এসেছে। শুধু ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারি ও মার্চে ব্যাংকটির সহায়তায় গ্রামীণ হেলথকেয়ার ৭১৮টি ছানি অস্ত্রোপচার পরিচালনা করে স্থায়ী অন্ধত্বের ঝুঁকিতে থাকা ব্যক্তিদের দৃষ্টিশক্তি ফিরিয়ে আনা হয়েছে; ৫৩ জনের চোখে অন্যান্য অস্ত্রোপচার সম্পন্ন হয়েছে। মোট ২৪০ জনকে চশমা দেওয়া হয়েছে এবং ২৭৩ জন মানুষের মাঝে প্রয়োজনীয় ওষুধ সরবরাহ করা হয়েছে। বগুড়া এবং ঠাকুরগাঁওয়ে ১০টি কমিউনিটি চক্ষু শিবিরের মাধ্যমে এ সেবাগুলো সরাসরি সেই সব মানুষের কাছে পৌঁছেছে, যাদের কখনও উন্নতমানের চক্ষু চিকিৎসার সুযোগ হয়ে ওঠেনি। মাত্র দুই মাসে ৪,৭৬২ জন মানুষ এ উদ্যোগ থেকে উপকৃত হয়েছেন। এ উদ্যোগগুলোর অর্থনৈতিক প্রভাবও অনেক। পরিষ্কার দৃষ্টিশক্তির মাধ্যমে কর্মীদের সর্বোচ্চ উৎপাদনশীলতা নিশ্চিত হচ্ছে; কমছে কাজে ত্রুটির হার, বাড়ছে কর্মক্ষমতা এবং আত্মবিশ্বাস। গবেষণায় দেখা গেছে, উন্নত দৃষ্টিশক্তি কর্মীদের উৎপাদনশীলতা ২২% পর্যন্ত বাড়াতে পারে। যদি চশমাপ্রাপ্ত ৫,৯১৬ জন কর্মীর অর্ধেকেরও ১০% করে কাজের দক্ষতা বেড়ে যায়, তাহলে কারখানাগুলোর সার্বিক আয় বাড়বে।