কক্সবাজারের ঈদগাঁও উপজেলায় আবারো গুলি ছুড়ে গরু লুট করা হয়েছে। সোমবার (১০ মার্চ) রাত ১টার দিকে উপজেলার ঈদগাঁও ইউনিয়নের কালিরছড়া উত্তর পাড়ায় গরু লুট করা হয়। 

ভুক্তভোগী নুরুল আলম জানান, গভীর রাতে সশস্ত্র ডাকাত দল তার বাড়ির আঙিনার গোয়ালঘরে হানা দেয় এবং গরু লুট করতে শুরু করে। তখন ঘরের ভেতর থেকে তার ছেলে জয়নাল আবেদীন বের হলে ডাকাতরা তাকে মারধর করে। পরে ভীতি সৃষ্টি করতে ১০-১৫ মিনিট টানা গুলি ছুড়ে তারা দুটি গরু নিয়ে মহাসড়কের দিকে পালিয়ে যায়। এ সময় তাদের সঙ্গে মোটরসাইকেলও ছিল। লুট হওয়া গরুর আনুমানিক মূল্য প্রায় আড়াই লক্ষাধিক টাকা।

নুরুল আলম বলেন, ‘‘থানা থেকে আমাদের এলাকায় পৌঁছাতে ১০-১৫ মিনিট লাগে, কিন্তু ডাকাত পড়ার খবর দেওয়ার প্রায় দুই ঘণ্টা পর পুলিশ আসে।’’

আরো পড়ুন:

‘ভুয়া সমন্বয়ক’ পরিচয়ে স্বর্ণালঙ্কার ও টাকা লুট, গ্রেপ্তার ২

টেকনাফে স্থানীয়দের বাড়িতে রোহিঙ্গাদের ডাকাতি, সংঘর্ষ-গুলি

ঈদগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মছিউর রহমান বলেন, ‘‘গুলি করে গোয়ালঘর থেকে গরু লুটের খবর পেয়ে পুলিশের একটি টহল দল ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। তবে পুলিশ পৌঁছানোর আগেই দুষ্কৃতকারীরা পালিয়ে যায়।’’

স্থানীয়দের অভিযোগ, এই এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে চিহ্নিত কিছু অপরাধীর ছত্রছায়ায় মিয়ানমারে চোরাই গরু পাচার হয়। তাদের সন্দেহ, একই চক্র নুরুল আলমের পালিত গরুগুলো লুট করে থাকতে পারে। 

কিছুদিন আগে চকবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহেদুল কবির বলেন, ‘‘চট্টগ্রাম শহর থেকে কক্সবাজারের গরুচোর সিন্ডিকেটের প্রধানকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর কয়েকদিন পর, গত ৩ ফেব্রুয়ারি কক্সবাজারের পেকুয়ার সদর ইউনিয়নের পেকুয়া-বরইতলী সড়কের পূর্ব মেহেরনামা সালাহউদ্দিন ব্রিজ এলাকায় গুলি ছুড়ে আমার বাড়ি থেকে তিনটি গরু লুট করা হয়।’’

ঢাকা/তারেকুর/বকুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ল ট কর

এছাড়াও পড়ুন:

বায়ুদূষণ কমাতে ব্যবস্থা নিন

দেশের বড় শহরগুলো দিন দিন সম্প্রসারিত হচ্ছে। জেলা–উপজেলা বা মফস্‌সল শহরগুলোতেও দ্রুত নগরায়ণ ঘটছে। ফলে সিটি করপোরেশান ও পৌরসভার সংখ্যাও বেড়েছে। কিন্তু সেই অর্থে টেকসই বা কার্যকর বর্জ্য ব্যবস্থাপনা গড়ে ওঠেনি। আইন ও নিয়ম থাকলেও অনেক কিছুই মানা হয় না। আগুনে পুড়িয়ে বর্জ্য ধ্বংসের প্রবণতাই এখানে কাজ করছে। ঢাকা শহরে তো ময়লার ভাগাড়ে ও রাস্তাঘাটে আগুন ধরিয়ে দেওয়া নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনায় পরিণত হয়েছে। এভাবে বর্জ্য পোড়ানো বায়ুদূষণের মাত্রাকে চরমভাবে বাড়িয়ে তুলছে, যা খুবই উদ্বেগজনক।

সম্প্রতি প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক আমিনবাজারে গিয়ে সরেজমিনে দেখতে পান, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) ময়লার ভাগাড়ের অন্তত ২০টি জায়গায় আগুন জ্বলছে। ধোঁয়া উড়ে যাচ্ছে আকাশে। আমিনবাজারের ভাগাড়ের মতো মাতুয়াইলের ভাগাড়েও একই চিত্র দেখা গেছে। এই দুই ভাগাড় ছাড়াও ঢাকার কয়েকটি জায়গা, ঢাকা-আরিচা মহাসড়কসহ বিভিন্ন সড়কের অনেক স্থানে ময়লা পোড়াতে দেখা গেছে। ভাগাড় ও সড়কে এভাবে ময়লা পোড়ানো নিত্যদিনের চিত্র হয়ে দাঁড়িয়েছে।

বর্জ্যে কারা কেন আগুন ধরিয়ে দিচ্ছে? আমিনবাজারের ভাগাড়ে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা এক আনসার সদস্যের বক্তব্য, ‘ময়লার দায়িত্বে যারা আছে, তারাই আগুন ধরাইয়া দেয়। একেক দিন একেক দিকে আগুন লাগায়।’ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি এবং ভাগাড়ে কাজ করা কর্মীরা বলছেন, ময়লা পোড়ানো হয় পরিমাণ কমাতে। প্লাস্টিক–জাতীয় আবর্জনা পুড়ে ছাই হয়ে যায়। ফলে স্তূপ ছোট হয়। অন্যদিকে শহরের ভেতরের আর্বজনা সংগ্রহ করে দূরে নিয়ে ফেলার ঝামেলা এড়াতে পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা তা পুড়িয়ে দেন বলে অভিযোগ রয়েছে। অথচ বিধিমালা অনুযায়ী রাস্তা, সড়ক, মহাসড়কের পাশে কোনো অবস্থায় বর্জ্য পোড়ানোর সুযোগ নেই। এটি ভঙ্গ করলে দুই বছরের কারাদণ্ড বা দুই লাখ টাকা অর্থদণ্ডের বিধান রয়েছে।

ময়লা বা বর্জ্য পোড়ার কারণে ঢাকার দূষিত বায়ু আরও দূষিত হচ্ছে। ২০২৪ সালের নভেম্বরে প্রকাশিত বিশ্বব্যাংকের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঢাকার বায়ুদূষণে উন্মুক্ত স্থানে বর্জ্য পোড়ানোর অবদান ১১ শতাংশ। অথচ বছরের পর বছর ধরে এভাবে ময়লা পোড়ানো হলেও ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের তেমন কোনো উদ্যোগ নেই। গত শনিবার মাতুয়াইলের ভাগাড় পরিদর্শনে গিয়ে পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বর্জ্য না পোড়ানোর নির্দেশনা দেন। দুঃখজনক হচ্ছে, নির্দেশনার পরও পরিস্থিতি আগের মতোই রয়েছে।

আমরা আশা করব, দুই সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখবে। পরিবেশ অধিদপ্তর ও অন্যান্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নিয়ে সমন্বিতভাবে এ ব্যাপারে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হোক। ঢাকার বায়ুদূষণ কমাতে এভাবে ময়লা পোড়ানো বন্ধ করতেই হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ