মন্দার কবলে পড়তে পারে যুক্তরাষ্ট্র, ট্রাম্পের এমন কথায় শেয়ারসূচকের পতন
Published: 11th, March 2025 GMT
দেশে সম্পদ ফিরিয়ে আনা হচ্ছে বলে দাবি করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এটা অনেক বড় বিষয় তাঁর কাছে। তিনি বলেছেন, মার্কিন অর্থনীতি একধরনের ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। তবে যে শুল্ক আরোপ করা হয়েছে বা হবে, তাতে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি মন্দার কবলেও পড়তে পারে।
এ সাক্ষাৎকার প্রচারিত হওয়ার পরপরই যা হওয়ার তা–ই হলো। বাজার খোলার পরেই পড়ে গেছে মার্কিন বাজারের প্রধান প্রধান সূচক। ছাড় পায়নি চীনের বাজারও। খবর বিবিসির।
সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের এসঅ্যান্ডপি ৫০০ সূচক পড়েছে ২ দশমিক ৭ শতাংশ। শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোর সূচক ডাও জোন্স ইন্ডাস্ট্রিয়াল পড়েছে ২ শতাংশ। সবচেয়ে বেশি পড়েছে প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর সূচক নাসডাক; সেদিন এ সূচকের পতন হয়েছে ৪ শতাংশ। ইলন মাস্কের টেসলার শেয়ারের দাম পড়েছে ১৫ দশমিক ৪ শতাংশ; কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রাণ হিসেবে পরিচিত চিপ কোম্পানি এনভিডিয়ারের শেয়ারের দাম পড়েছে ৫ শতাংশের বেশি। মেটা, অ্যামাজন ও অ্যালফাবেটের শেয়ারের দামও অনেকটা কমেছে।
এর জেরে আজ মঙ্গলবার এশিয়ার শেয়ারবাজারের পতন হয়েছে। সকালে জাপানের নিক্কেই এশিয়া সূচকের পতন হয়েছে ১ দশমিক ৭ শতাংশ। দক্ষিণ কোরিয়ার কোসপির পতন হয়েছে ১ দশমিক ৭ শতাংশ আর হংকংয়ের হ্যাং সেং সূচকের পতন হয়েছে শূন্য দশমিক ৭ শতাংশ।
এদিকে সোমবার পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে একাধিক মার্কিন কৃষিজ পণ্যের ওপর শুল্ক বাড়িয়েছে চীন। সমেই সঙ্গে কানাডাও অনেক মার্কিন পণ্য বর্জন শুরু করেছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এসব কারণে মার্কিন অর্থনীতিও ক্ষতির মুখে পড়বে।
ফক্স নিউজের সাক্ষাৎকারে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, এ রকম ঘন ঘন বাণিজ্যনীতি বদলের ফলে মার্কিন অর্থনীতিতে কি ‘মন্দা’ আসতে পারে? ঢাক ঢাক গুড় গুড় না করে স্বভাবসিদ্ধ ভাষায় ট্রাম্প জানিয়ে দেন, ‘আমি এসব বিষয় নিয়ে ভবিষ্যদ্বাণী করা অপছন্দ করি। তবে মার্কিন অর্থনীতি এখন ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। আমরা যা শুরু করেছি, তার প্রভাব সুদূরপ্রসারী। আমরা বিশ্বের সব প্রান্ত থেকে দেশে সম্পদ ফিরিয়ে আনছি। এটা অনেক বড় ব্যাপার। এতে একাধিক পর্যায় রয়েছে; সেগুলো পেরোতে কিছুটা সময় লাগবে। তবে আমার মনে হয়, শেষে আমাদের জন্য সব ভালোই হবে।’
মার্কিন অর্থনীতি বাইডেনের জমানায় খারাপ ছিল না। নীতি সুদ অনেকটা বাড়ানো হলেও নানা কারণে বেকারত্ব বাড়েনি। কিন্তু ট্রাম্প যেভাবে একের পর বাণিজ্যযুদ্ধের ফ্রন্ট খুলছেন, তাতে তিনি নিজেই ‘মন্দার’ সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছেন না। ফলে ডাও জোন্স-ন্যাসড্যাক-ও এসঅ্যান্ডপি ৫০০ সূচক হুড়মুড় করে নামল ১ থেকে ৩ শতাংশ।
এদিকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের পক্ষ থেকে সোমবার জানানো হয়েছে, ট্রাম্প প্রশাসনের যে মতিগতি, তাতে মনে হচ্ছে না যে ইউরোপীয় ইউনিয়ন শুল্কযুদ্ধ এড়াতে পারবে। বিষয়টিকে তারা দুর্ভাগ্যজনক আখ্যা দিয়েছেন। পাশাপাশি বিশ্বের বৃহত্তম দুই অর্থনীতির এই হালের খবর বাজারে ছড়িয়ে পড়ার পর সামগ্রিক অনিশ্চয়তা বেড়ে যাওয়ায় লন্ডন-প্যারিস-ফ্র্যাঙ্কফুর্টসহ ইউরোপের একাধিক প্রধান বাজারে গতকাল সোমবার সূচকের পতন হয়েছে। জার্মানির চ্যান্সেলর পদে পরিবর্তন আসছে। ফলে জার্মানির বাজারই বেশি রক্তাক্ত হয়েছে।
বিশেষজ্ঞমহলের একাংশের দাবি, ১২ ডিসেম্বর ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়ামের ওপর বর্ধিত হারে আমদানি শুল্ক কার্যকর করার হুমকি আগেই দিয়ে রেখেছেন ট্রাম্প। ফলে পরিস্থিতির আশু সমাধান হওয়ার বদলে জটিল হওয়ার আশঙ্কাই বেশি।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স মব র ন হয় ছ হওয় র
এছাড়াও পড়ুন:
নতুন প্রবাসীকে নিয়ে কৌতূহল
ইংল্যান্ড প্রবাসী হামজা চৌধুরীকে নিয়েই সবার আকর্ষণ। ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে খেলা কোনো ফুটবলার লাল-সবুজের জার্সি গায়ে জড়াবেন, তা ভাবতেই রোমাঞ্চিত বাংলাদেশের ফুটবলপ্রেমীরা। শেফিল্ড ইউনাইটেডের এ ডিফেন্ডারকে নিয়ে আলোচনার মধ্যেই বড় চমক হয়ে আসে ইতালিয়ান প্রবাসী ফাহামেদুল ইসলামের নামটি।
২৫ মার্চ এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বে ভারতের বিপক্ষে ম্যাচের জন্য বাংলাদেশ জাতীয় দলের প্রাথমিক স্কোয়াডে ফাহামেদুলকে রাখেন কোচ হ্যাভিয়ের ক্যাবরেরা। আগেই সৌদি আরবে ক্যাম্প করতে যাওয়া জামাল ভূঁইয়াদের সঙ্গী হতে সোমবার ইতালি থেকে মধ্যপ্রাচ্যের দেশে যান তিনি।
গতকাল তায়েফে দলের সঙ্গে ট্রেনিংও করেছেন ইতালির চতুর্থ স্তরের ক্লাব অলিভিয়াতে খেলা এ ফরোয়ার্ড। তাঁকে পেয়ে আরও বেশি উজ্জীবিত বাংলাদেশ দল।
বাফুফে লুকোচুরি খেলায় ফাহামেদুলকে নিয়ে খুব বেশি জানা যায়নি। তবে যতটুকু জানা গেছে ইতালিতে খেলা এ ফরোয়ার্ডের জন্ম ফেনীতে। বিশ্বের অন্যতম সেরা একটি দেশের লিগে খেলা ফাহামেদুল এখন সতীর্থদের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছেন। তাঁকে ক্যাম্পে পেয়ে ফুটবলাররাও বেশ রোমাঞ্চিত।
বাংলাদেশি হলেও এ দেশের ফুটবল সংস্কৃতি খুব একটা জানা নেই তাঁর। তাইতো রাকিব হোসেন-শেখ মোরসালিনরা তরুণ এ ফুটবলারের সঙ্গে অনেক বিষয় নিয়েই খোলামেলা আলোচনা করছেন। একই সঙ্গে ডেনমার্ক প্রবাসী জামাল ভূঁইয়া, ফিনল্যান্ড প্রবাসী তারিক রায়হান কাজী ও ফাহামেদুলকে বাংলাদেশের ফুটবল সম্পর্কে ধারণা দিয়েছেন।
ভারত ম্যাচের সেরা একাদশে ফাহামেদুলকে লড়তে হবে রাকিব হোসেন, শেখ মোরসালিন, অভিষেকের অপেক্ষায় থাকা পিয়াস আহমেদ নোভার মতো আক্রমণভাগের ফুটবলারদের সঙ্গে। শুরু থেকেই দলের সঙ্গে অনুশীলন করা ফর্টিস এফসির তারকা নোভার কাছে দলে সুযোগ পাওয়াটা বড় চ্যালেঞ্জের।
গতকাল বাফুফের পাঠানো ভিডিও বার্তায় নোভা বলেন, ‘সব কিছু এখন পর্যন্ত ঠিক আছে। কোচের পরিকল্পনা অনুযায়ী আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি। আশা করি ভারতের বিপক্ষে ম্যাচটা ভালো হবে। আক্রমণভাগে রাকিব ভাই, মোরসালিন, নতুন প্লেয়ার আল আমিন এবং আমি আছে। একজন নাম্বার নাইন হিসেবে আমি এখানে ফাইট করব। ইনশাআল্লাহ খেলার চেষ্টা করব।’
আক্রমণে যেমন পিয়াসের চ্যালেঞ্জ, রক্ষণে তেমনি করে চ্যালেঞ্জ শাকিল আহাদ তপুর জন্য বেস্ট ইলেভেনে জায়গা পাওয়া। কারণ লিস্টার সিটি এবং শেফিল্ডে রক্ষণভাগে খেলা হামজাকে ভারত ম্যাচেও হয়তো এ দায়িত্ব দিবেন কোচ। সেই হিসেবে হামজার সঙ্গে দেখা যাবে তপু বর্মন, তারিক কাজীর মতো অভিজ্ঞদের।
জাতীয় দলের জার্সিতে দুটি ম্যাচ খেলা শাকিল আহাদ তপু দলে সুযোগ পাওয়ার জন্য অনুশীলনে প্রতিনিয়ত ঘাম ঝরাচ্ছেন, ‘আমার পজিশনে সিনিয়র প্লেয়ার আছেন। তারা অনেক দিন ধরে খেলতেছেন। তাদের অভিজ্ঞতা অনেক। আমি চেষ্টা করব সর্বোচ্চটা দিয়ে খেলার এবং টিমে জায়গা করে নেওয়ার।’