ওয়ালটন ডিজি-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড দেশের বাজারে নিয়ে এসেছে নতুন তিনটি অত্যাধুনিক ফিচারসমৃদ্ধ সাউন্ডবার। কোরাস ব্র্যান্ডের সাউন্ডবারগুলোর মডেল ডব্লিউএসবি১৮০১, ডব্লিউএসবি১৮০২ এবং ডব্লিউএসবি২০০।

উন্নতমানের সাউন্ড কোয়ালিটি, প্রিমিয়াম ডিজাইন ও আধুনিক প্রযুক্তির সমন্বয়ে তৈরি এই সাউন্ডবারগুলো সংগীত ও বিনোদনপ্রেমীদের জন্য এক অনন্য অভিজ্ঞতা নিশ্চিত করবে। সিনেমা দেখা, গেমিং কিংবা পার্টির জন্য ওয়ালটনের এই সাউন্ডবারগুলো হতে পারে পারফেক্ট চয়েস।

ওয়ালটনের নতুন সাউন্ডবারগুলোর মধ্যে ডব্লিউএসবি১৮০১ ও ডব্লিউএসবি১৮০২ মডেল দুটি ১৮০ ওয়াট আরএমএস আউটপুট ক্ষমতাসম্পন্ন। সাবউফার ও সাউন্ডবারের সমন্বয়ে তৈরি এই দুটি মডেল গভীর বেজ ও স্পষ্ট সাউন্ড প্রদান করে। সাউন্ডবারের স্পিকারগুলোর আকার ৫৫×৮৫ মিলিমিটার, যা ব্যালান্সড ও ডিটেইলড সাউন্ড নিশ্চিত করে। ফ্রিকোয়েন্সি রেসপন্স ৪০ হার্জ থেকে ২০ কিলোহার্জ পর্যন্ত হওয়ায় উচ্চ ও নিম্নমাত্রার শব্দ নিখুঁতভাবে শোনা যায়। এতে রয়েছে ব্লুটুথ ৫.

৩, এইউএক্স (৩.৫মিমি), অপটিক্যাল ইন এবং টিভি এআরসি কানেক্টিভিটি, যা বিভিন্ন ডিভাইসের সঙ্গে সহজেই সংযুক্ত করার সুবিধা দেয়। মিউজিক বা অডিও ফাইল প্লেব্যাকের জন্য এতে ইউএসবি পোর্ট ও ৩২ জিবি পর্যন্ত স্টোরেজ সাপোর্ট রয়েছে।

আরো পড়ুন:

ওয়ালটন ফ্রিজ কিনে মিলিয়নিয়ার হলেন নেত্রকোণার খোকন

ওয়ালটন ফ্রিজ কিনে মিলিয়নিয়ার ফরিদপুরের কলেজছাত্র রাসেল ফকির

শক্তিশালী পারফরম্যান্স প্রত্যাশী ব্যবহারকারীদের জন্য ওয়ালটনের ডব্লিউএসবি২০০ মডেলের সাউন্ডবারটি পারফেক্ট চয়েজ। এটি ২০০ ওয়াট আরএমএস আউটপুট ক্ষমতাসম্পন্ন। এতে ব্যবহার করা হয়েছে উন্নত মানের সাবউফার এবং মাল্টি-স্পিকার সেটআপ, যা গভীর বেজ ও স্পষ্ট অডিও প্রদান করে। ডব্লিউএসবি২০০ মডেলটির ফ্রিকোয়েন্সি রেসপন্স ৩০ হার্জ থেকে ১৮ কিলোহার্জ পর্যন্ত, যা আরো বিস্তৃত ও উন্নত সাউন্ড রেঞ্জ নিশ্চিত করে। এতে ৭৫ ডেসিবল পর্যন্ত এস/এন রেশিও এবং ৪০ ডেসিবল পর্যন্ত সেপারেশন থাকায় শব্দের স্বচ্ছতা আরো উন্নত হয়েছে।

ওয়ালটন কম্পিউটারের চিফ বিজনেস অফিসার তৌহিদুর রহমান রাদ বলেন, “ওয়ালটনের নতুন এই সাউন্ডবার সিরিজ আধুনিক প্রযুক্তির সমন্বয়ে তৈরি, যা গ্রাহকদের অসাধারণ অডিও অভিজ্ঞতা দেবে। উন্নতমানের বেজ, নিখুঁত সাউন্ড ব্যালান্স ও মাল্টিপল কানেক্টিভিটি অপশনের কারণে এই সাউন্ডবারগুলো সব ধরনের বিনোদনের জন্য আদর্শ।”

তিনি জানান, সাউন্ডবারগুলোর রেগুলার মূল্য যথাক্রমে ১৪,৭৫০ টাকা, ১৩,৯৫০ টাকা এবং ১৫,৭৫০ টাকা। নতুন এই ৩ মডেলের সাউন্ডবারে বর্তমানে ১০ শতাংশ বিশেষ ছাড় চলছে।

নতুন সাউন্ডবারগুলোর ডিজাইন অত্যন্ত প্রিমিয়াম, যা ঘরের যেকোনো ইন্টেরিয়রের সঙ্গে মানিয়ে যাবে। ডব্লিউএসবি১৮০১ ও ডব্লিউএসবি১৮০২ মডেলগুলোর সাবউফারের ডাইমেনশন ১৯০ × ৩০৬ × ৩৬৮ মিমি এবং সাউন্ডবারের ডাইমেনশন ৯০০ × ১০৫ × ৭০ মিমি, যা কম্প্যাক্ট এবং স্টাইলিশ লুক প্রদান করে। অন্যদিকে, ডব্লিউএসবি২০০ মডেলের সাবউফারের আকার ১৯০ × ৩৭৩ × ৩২০ মিমি এবং সাউন্ডবারের আকার ৯০০ × ৭২ × ৯৩ মিমি, যা আরো শক্তিশালী অডিও আউটপুট নিশ্চিত করতে সহায়ক।

ওয়ালটনের নতুন এই সাউন্ডবার সিরিজ এখন ওয়ালটন প্লাজা ও ওয়ালটনের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট (https://waltondigitech.com/products/music/speaker) থেকে ক্রয় করা যাবে। প্রতিটি মডেলের সাথেই থাকছে ১ বছরের ওয়ারেন্টি, যা গ্রাহকদের জন্য দিচ্ছে বাড়তি নির্ভরযোগ্যতা।

ঢাকা/অগাস্টিন সুজন/ফিরোজ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ন শ চ ত কর র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

বাঙালির প্রাণের উৎসব আজ

রৌদ্রকরোজ্জ্বল বৈশাখী দিন ফিরে এল আবার। সুরে-বাণীতে, সাজসজ্জায়, আহারে-বিহারে, আনন্দ-উল্লাসে আজ সোমবার বাংলার নতুন বছর ১৪৩২ বরণ করে নেবে ধর্ম-বর্ণনির্বিশেষে দেশের সব মানুষ। পুরোনো ব্যর্থতা ঝেরে ফেলে সবার কল্যাণ কামনায় উদ্‌যাপিত হবে নববর্ষের উৎসব। নববর্ষকে আবাহন জানিয়ে বহুকণ্ঠে ধ্বনিত হবে ‘এসো হে বৈশাখ এসো এসো...।’

বাংলা নববর্ষের চেয়ে বড় কোনো সর্বজনীন উৎসব দেশে আর নেই। এ কারণে মানুষে মানুষে মহাপ্রাণের মিলন ঘটানোর বর্ষবরণের এই উৎসব গভীর তাৎপর্যময় হয়ে আছে আমাদের জীবনে। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ফ্যাসিবাদী সরকারের পতনের পর এবার নতুন পরিবেশে বর্ষবরণ উৎসব বিশেষ মাত্রা পেয়েছে। উৎসবের মূল প্রতিপাদ্য তাই ‘নববর্ষের ঐকতান, ফ্যাসিবাদের অবসান’।

মূল প্রতিপাদ্য সামনে রেখে জাতীয়ভাবে রাজধানীসহ সারা দেশে ব্যাপক আয়োজনের মধ্য দিয়ে নববর্ষ উদ্‌যাপনের কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে বলে আগেই জানিয়েছে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়। উৎসব অন্তর্ভুক্তিমূলক করতে সব জাতিসত্তার প্রতিনিধিদের নিজ নিজ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য তুলে ধরার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। রমনার বটমূলে বর্ষবরণের ঐতিহ্যবাহী অন্যতম প্রধান অনুষ্ঠান আয়োজন করবে ছায়ানট।

রাজধানীর বর্ষবরণের অন্যতম বর্ণাঢ্য আয়োজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের শোভাযাত্রা। ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’র বদলে এবার ‘বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা’ নামকরণ করা হয়েছে। এই শোভাযাত্রার যে মোটিফগুলো তৈরি করা হয়েছিল, তার মধ্যে

২০ ফুট উচ্চতার ‘স্বৈরাচারের মুখাকৃতি’ নামের মোটিফটি শনিবার ভোররাতে কে বা কারা আগুনে পুড়িয়ে দেয়। চারুকলা অনুষদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এ ঘটনার পরও তাদের শোভাযাত্রা বর্ণাঢ্যভাবেই পথে নামবে পয়লা বৈশাখ সকালে।

পয়লা বৈশাখের উৎসব গত শতকের পঞ্চাশ ও ষাটের দশকে বাঙালি জাতিসত্তার বিকাশে অনুপ্রেরণার উৎস হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে বাঙালি জাতীয়তাবোধের যে উন্মেষ ঘটেছিল, তার বিকাশে সহায়ক ভূমিকা রেখেছে সাংস্কৃতিক আন্দোলন। আইয়ুব খানের সামরিক শাসনামলে সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হলে তার প্রতিবাদে বিপুল উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে বৈশাখী উৎসব উদ্‌যাপিত হয়। রমনার বটমূলে ১৯৬৭ সালে ছায়ানট প্রথমবারের মতো আয়োজন করে তাদের ঐতিহ্যবাহী অনুষ্ঠান। কালক্রমে বর্ষবরণ উৎসবে যুক্ত হয় আরও অনেক সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন। চারুকলার শোভাযাত্রা বর্ণাঢ্য করে তোলে আয়োজন। বহু সংগঠনের অংশগ্রহণে বর্ষবরণ বহু প্রাণের বিপুল উৎসবে পরিণত হয়।

বাংলা বর্ষবরণের উৎসব যত আড়ম্বর, উৎসাহের সঙ্গে উদ্‌যাপিত হয়, ব্যবহারিক জীবনে বাংলা সনের প্রয়োগ তেমন ব্যাপক নয়। প্রাত্যহিক জীবনের কাজকর্ম, শিক্ষা, ব্যবসা—সবই গ্রেগরিয়ান দিনপঞ্জি অনুসরণ করেই সম্পন্ন হয়ে থাকে। তবে বাংলা দিনপঞ্জি পুরোপুরি অব্যবহৃতও নয়। কৃষকেরা চাষাবাদ, ফসল রোপণ, ফসল তোলার ক্ষেত্রে বাংলা সনের হিসাব অনুসরণ করেন। অনেক ধর্ম সম্প্রদায়ও তাদের ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠানের জন্য বাংলা বর্ষপঞ্জি ব্যবহার করে। কাজেই সমাজে নানা ক্ষেত্রে বাংলা বর্ষপঞ্জির প্রয়োগ রয়েছে। সে কারণে নতুন বছর শুরু হলে নতুন প্রত্যাশা নিয়েই মানুষ তাকে বরণ করে নেয়।

নতুন বছরকে বরণ করার রীতি পৃথিবীর বহু দেশের সংস্কৃতিতে বহমান। আমাদের দেশে বছরের পয়লা দিনটিকে কেন্দ্র করে এই উৎসবে তুলে ধরা হয় দেশের গৌরবময় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য। এবারও তার ব্যতিক্রম হবে না। রাজধানীতে রমনার বটমূলে এবার ৫৮তম বারের মতো ছায়ানট আয়োজন করবে তাদের বর্ষবরণের প্রভাতি অনুষ্ঠান। এবার তাদের অনুষ্ঠানের মূল প্রতিপাদ্য ‘আমার মুক্তি আলোয় আলোয়’। সকাল ৬টা ১৫ মিনিটে ভৈরবীতে রাগালাপের মধ্য দিয়ে শুরু হবে প্রায় দুই ঘণ্টার এ অনুষ্ঠান।

এ ছাড়া ধানমন্ডির রবীন্দ্রসরোবর মঞ্চে সংগীত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সুরের ধারার আয়োজনে সকাল ৬টায় শুরু হবে সহস্রকণ্ঠের গানে গানে বর্ষবরণ অনুষ্ঠান।

চারুকলা অনুষদের আনন্দ শোভাযাত্রা শুরু হবে সকাল নয়টায়। আগেই জানানো হয়েছে, এবার শোভাযাত্রায় বিভিন্ন জাতিসত্তার প্রতিনিধিরা তাঁদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের প্রতীকগুলো নিয়ে অংশ নেবেন। শোভাযাত্রাটি টিএসসি, শহীদ মিনার, শারীরিক শিক্ষাকেন্দ্র, দোয়েল চত্বর, বাংলা একাডেমি হয়ে আবার চারুকলার সামনে এসে শেষ হবে।

সকাল থেকেই বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে শুরু হবে বিসিকের সঙ্গে যৌথ আয়োজনে সপ্তাহব্যাপী লোক ও কারুশিল্প মেলা। এ ছাড়া বেলা সাড়ে তিনটা থেকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শুরু হবে বাংলাদেশ গণসঙ্গীত সমন্বয় পরিষদের আয়োজনে ‘ঐ নূতনের কেতন ওড়ে কালবোশেখীর ঝড়’ প্রতিপাদ্য নিয়ে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এতে থাকবে একক ও দলীয় আবৃত্তি, সংগীত ও নৃত্য পরিবেশনা।

সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে বেলা তিনটা থেকে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে চলবে বৈশাখী ব্যান্ড শো ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। সন্ধ্যা সাতটায় জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় চীনা কারিগরি দলের পরিবেশনায় শুরু হবে বর্ণাঢ্য ড্রোন শো।

এসব প্রধান অনুষ্ঠান ছাড়াও অনেক এলাকাভিত্তিক এবং বহুতল আবাসিক ভবনগুলোতে ছোট ছোট অনুষ্ঠানের আয়োজন রয়েছে। বরাবরের মতো ট্রাকে ভ্রাম্যমাণ মঞ্চ করে অনেক সংগঠন শহর ঘুরে সংগীত, আবৃত্তি পরিবেশন করবে।

রাজধানীর পাশাপাশি সারা দেশেই বর্ষবরণের অনুষ্ঠান হবে। দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশেও প্রবাসী বাঙালিরা নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে বাংলা নতুন বছরকে বরণ করে নেবেন। তথ্যপ্রযুক্তির কল্যাণে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সেসব অনুষ্ঠানের সঙ্গেও দেশবাসীর এক রকমের সংযোগ ঘটে। এমন নানা আয়োজন উদ্যোগের ভেতর দিয়ে কালক্রমে বাংলা নববর্ষের উৎসব আরও প্রাণবন্ত হয়ে উঠছে। প্রসারিত হচ্ছে বিপুল পরিসরে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ