খুলনা বিভাগের বৈদ্যুতিক বিতরণ ব্যবস্থা আধুনিকায়ন ও ক্ষমতাবর্ধণ প্রকল্পের আওতায় পৃথক ৩টি প্রস্তাবে মোট ৭২ হাজার ৮৯৭টি এসপিসি পোল ক্রয়ের প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি। এতে মোট ব্যয় হবে ২২৯ কোটি ৯৪ লাখ ৭০ হাজার ১৯২ টাকা।

মঙ্গলবার (১১ মার্চ) বাংলাদেশ সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে অর্থ উপদেষ্টা ড.

সালেহউদ্দিন আহমদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কমিটির সভায় প্রস্তাব ৩টিতে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। সভায় কমিটির সদস্য ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

সভা সূত্রে জানা গেছে, ‘বাপবিবো’র বৈদ্যুতিক বিতরণ ব্যবস্থার আধুনিকায়ন এবং ক্ষমতাবর্ধন (খুলনা বিভাগ)’ প্রকল্পের প্যাকেজ নম্বর কেডি-জি-৩২, লটঃ-১: এর আওতায় ২৪ হাজার ৩০০টি এসপিসি পোল ক্রয়ের প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। প্রকল্পের আওতায় ২৪ হাজার ৩০০টি এসপিসি পোল ক্রয়ের জন্য এক ধাপ দুই খাম পদ্ধতিতে দরপত্র আহ্বান করা হলে ৩টি প্রতিষ্ঠান দরপত্র দাখিল করে।সবগুলো প্রস্তাবই কারিগরিভাবে রেসপনসিভ হয়। দরপত্রের সব প্রক্রিয়া শেষে টিইসির সুপারিশকৃত রেসপনসিভ সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরি লিমিটেড সরবরাহ করবে। এতে ব্যয় হবে ৭৬ কোটি ৬৮ লাখ ১১ হাজার ৮৭৭ টাকা।

সভায় ‘বাপবিবো’র বৈদ্যুতিক বিতরণ ব্যবস্থার আধুনিকায়ন এবং ক্ষমতাবর্ধন (খুলনা বিভাগ)’ প্রকল্পের একই প্যাকে নম্বর কেডি-জে-২৩, লট-২- এর আওতায় ২৪ হাজার ৩০০টি এসপিসি পোল ক্রয়ের প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। প্রকল্পের আওতায় ২৪ হাজার ৩০০টি এসপিসি পোল ক্রয়ের জন্য এক ধাপ দুই খাম পদ্ধতিতে দরপত্র আহ্বান করা হলে ৩টি প্রতিষ্ঠান দরপত্র দাখিল করে। সবগুলি প্রস্তাবই কারিগরিভাবে রেসপনসিভ হয়। দরপত্রের সব প্রক্রিয়া শেষে টিইসির সুপারিশকৃত রেসপনসিভ সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠান যৌথভাবে চরকা এসপিসি পোলস লিমিটেড, দাদা ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড, টিএসসিও পাওয়ার লিমিটেড এবং পাশা পোলস লি. এই এসপিসি পোলগুলো সরবরাহ করবে। এতে ব্যয় হবে ৭৬ কোটি ৬৫ লাখ ১ হাজার ৩৭২ টাকা।

সভায় একই প্রকল্পের লট-৩ এর আওতায় ২৪ হাজার ২৯৭টি এসপিসি পোল ক্রয়ের আরো একটি প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। প্রকল্পের আওতায় ২৪ হাজার ২৯৭টি এসপিসি পোল ক্রয়ের জন্য এক ধাপ দুই খাম পদ্ধতিতে দরপত্র আহ্বান করা হলে ৩টি প্রতিষ্ঠান দরপত্র দাখিল করে। সবগুলো প্রস্তাবই কারিগরিভাবে রেসপনসিভ হয়।দরপত্রের সব প্রক্রিয়া শেষে টিইসির সুপারিশকৃত রেসপনসিভ সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠান যৌথভাবে পোলস অ্যান্ড কক্রিট লিমিটেড, কনটেক কন্সট্রাকশন লিমিটেড, রয়েল গ্রীণ প্রডাক্টস লিমিটেড এবং শেলটেক টেকনোলজি এই এসপি পোলগুলো সরবরাহ করবে। এতে মোট ব্যয় হবে ৭৬ কোটি ৬১ লাখ ৫৬ হাজার ৯৪৩ টাকা।

ঢাকা/হাসনাত/এসবি

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর প রকল প র আওত য় র সপনস ভ দরপত র এসপ স

এছাড়াও পড়ুন:

কুষ্টিয়ায় চালকলমালিক নেতার বাড়িতে গুলি: অভিযোগের তির বিএনপি নেতার দিকে, নেপথ্যে হাটের ইজারা

কুষ্টিয়ার চালকলমালিক ও ব্যবসায়ী আবদুর রশিদের বাড়ি লক্ষ্য করে গুলি ছুড়েছে দুর্বৃত্তরা। একটি পশুহাটের ইজারা পাওয়াকে কেন্দ্র করে সদর উপজেলা বিএনপির সদস্যসচিব জাহিদুল ইসলাম (বিপ্লব) চরমপন্থী সংগঠনের নেতাদের দিয়ে এ ঘটনা ঘটিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন আবদুর রশিদ। তবে বিএনপি নেতা জাহিদুল ইসলাম সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

বুধবার বেলা পৌনে দুইটার দিকে শহরের গোশালা সড়কে রশিদের বাড়ি লক্ষ্য করে গুলি করা হয়। গুলিতে তাঁর বাড়ির তৃতীয় তলার একটি কাচ ভেঙে যায়। তবে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। ঘটনার সময় রশিদ খাজানগর এলাকায় নিজের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে ছিলেন। তিনি বাংলাদেশ অটো মেজর অ্যান্ড হাসকিং মিল মালিক সমিতির কেন্দ্রীয় সভাপতি। সদর উপজেলার খাজানগর এলাকায় তাঁর বড় কয়েকটি চালকল আছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গোশালা সড়কের প্রবেশমুখে কয়েকটি বাড়ির পরেই রশিদের ডুপ্লেক্স বাড়ি। বাড়িটি এখনোর নির্মাণকাজ শেষ হয়নি। এর মধ্যে দোতলায় তিনি পরিবার নিয়ে বাস করেন। ঘটনার সময় বাড়িতে রশিদের স্ত্রী, ছেলে ও পুত্রবধূ ছিলেন। আবদুর রশিদ এ সময় খাজানগর এলাকায় তাঁর ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে ছিলেন। গুলির খবর পেয়ে রশিদ বাড়িতে যান। খবর পেয়ে পুলিশ ও র‍্যাবের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং গুলির খোসা জব্দ করে নিয়ে যান। পরে তাঁরা রশিদের সঙ্গে কথা বলেন।

রশিদের ছেলে শাহরিয়ার রশিদ প্রথম আলোকে বলেন, দুপুরের দিকে তিনি বাড়িতেই ছিলেন। ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। হঠাৎ একটি বিকট শব্দ শুনতে পান। নিচ থেকে বাড়ির দারোয়ান গুলি ছোড়ার বিষয়টি জানান। পরে দেখা যায়, তৃতীয়তলার কাচ ভেদ করে গুলি ভেতরে ঢুকে গেছে এবং কাচের টুকরা নিচে ও আশপাশে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়েছে। তিনি বলেন, ‘বিষয়টি সঙ্গে সঙ্গে বাবাকে জানাই এবং পুলিশকে ফোন করেন। এরপর পুলিশ, ডিবি ও র‍্যাবের টিম বাড়িতে আসে। ঘটনা জানার পর খাজানগরে চাল ফ্যাক্টরিতে থাকা বাবাও বাড়িতে চলে আসেন।’

বাড়ির সামনে থাকা সিসিটিভি ক্যামেরার ভিডিওতে দেখা যায়, বেলা ১টা ৪০ মিনিটের দিকে একটি মোটরসাইকেলে দুজন ব্যক্তি আসেন। তাঁদের দুজনের মুখে সার্জিক্যাল মাস্ক ও মাথায় হেলমেট পরা ছিল। বাড়ির সামনে দাঁড়ানোর ১০ সেকেন্ড পর পেছনে বসে থাকা এক ব্যক্তি বাড়ি লক্ষ্য করে গুলি ছোড়েন। এরপর শহরের দিকে চলে যান। এ সময় সড়কে মানুষ চলাচল করছিল।

আবদুর রশিদ সাংবাদিকদের বলেন, তিনি ও তাঁর পরিবার দীর্ঘদিন ধরে চাল ব্যবসার পাশাপাশি হাটবাজার ইজারা নেওয়ার ঠিকাদারি করেন। কয়েক দিন আগে সদর উপজেলার আইলচারা পশুহাটের ইজারা পেয়েছেন তাঁর ভাতিজা জিহাদুজ্জামান। ওই হাটের দরপত্র কেনার পর থেকে চরমপন্থী সংগঠনের নেতা পরিচয় দিয়ে দরপত্র জমা না দিতে হুমকি দেওয়া হচ্ছিল। কয়েক দিন আগে প্রায় ১ কোটি ৬২ লাখ টাকায় হাটের ইজারা পান জিহাদুজ্জামান। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওই চরমপন্থী নেতা স্বপন ঠাকুর পরিচয় দিয়ে হুমকি দেন। বলেন, ‘বিএনপি নেতা জাহিদুল ইসলাম বিপ্লব ও মুন্না নামের দুজন এই হাট পরিচালনা করবে।’ এ জন্য ইজারা প্রত্যাহার করে নিতে হবে। না হলে মেরে ফেলার হুমকি দেন।

হুমকি পাওয়ার পর থেকে আত্মগোপনে আছেন রশিদের ভাতিজা খাজানগর এলাকার গোল্ডেন অটো রাইস মিলের মালিক জিহাদুজ্জামান। তিনি বাংলাদেশ অটো মেজর অ্যান্ড হাসকিং মিল মালিক সমিতির কুষ্টিয়া শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক ও জেলা যুবদলের সাবেক শিল্পবিষয়ক সম্পাদক। মুঠোফোনে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, সদর উপজেলার একটি হাটের দরপত্রে অংশ না নিতে তাঁকে হুমকি দেওয়া হয়। সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে হাট ইজারা পাওয়ার পর হুমকি বেড়ে যায়। এই হুমকির সঙ্গে চরমপন্থী ও বিএনপির দলীয় লোকজন জড়িত। নেপথ্যে থেকে বিএনপি নেতা বিপ্লব (জাহিদুল ইসলাম) কাজ করছেন। তিনি বলেন, ‘যেহেতু চাচা (রশিদ) আমাদের প্রধান অভিভাবক। তাঁর পরামর্শেই ব্যবসা-বাণিজ্য করা হয়। তাঁর বাসায় গুলির ঘটনাটি দরপত্রকেন্দ্রিক মনে করছি।’

তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সদর উপজেলা বিএনপির সদস্যসচিব জাহিদুল ইসলাম। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘আবদুর রশিদ ও তাঁর ভাতিজা আওয়ামী লীগের দোসর। তাঁরা বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে হানিফের সঙ্গে আঁতাত করে ব্যবসা-বাণিজ্য ও হাটঘাট ইজারা নিয়ে চলেছে। চলতি মৌসুমে এই হাটের দরপত্র কিনেছিলাম। চরমপন্থীরা আমাকেও অংশ না নিতে হুমকি দিয়েছিল। এ জন্য আর এগোয়নি। এখন কেন আমার নাম আসছে?’ তিনি বলেন, ‘এলাকায় রশিদদের সঙ্গে কিছু বিষয়ে মতপার্থক্য রয়েছে। এ জন্য আমার রাজনীতিকে হেয় করতে আমার নাম ব্যবহার করছে। এসব ঘটনার সঙ্গে আমি বিন্দুমাত্র সংশ্লিষ্ট নই। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তদন্ত করতে পারে।’

জানতে চাইলে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কুতুব উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, প্রকাশ্যে দিনের বেলায় যে ঘটনা ঘটেছে, তা আতঙ্কের বিষয়। তবে যে বা যারা পরিচয় দিয়ে হুমকি দিয়েছে, সঠিক তদন্তের মাধ্যমে খুঁজে বের করতে হবে। যাদের নাম ব্যবহার করা হচ্ছে, কেউ তো ফাঁসানোর জন্যও করতে পারে। সব বিষয়ই দ্রুত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে উদ্‌ঘাটন করার দাবি জানান তিনি।

কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোশাররফ হোসেন বলেন, গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। গুলির খোসা জব্দ করা হয়েছে। গুলিটি ভবনের তৃতীয় তলার কাচ ভেদ করেছে। তবে সেখানে কোনো বাসিন্দা থাকেন না। পুরো বিষয়টি নিয়ে পুলিশের একাধিক দল ইতিমধ্যে কাজ শুরু করেছে। মামলার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।

আরও পড়ুনকুষ্টিয়ায় দিনদুপুরে চালকল মালিক সমিতির কেন্দ্রীয় সভাপতি রশিদের বাড়িতে গুলি৩ ঘণ্টা আগে

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • রোগা গরু সরবরাহ, তোপের মুখে বিতরণ স্থগিত
  • কুষ্টিয়ায় চালকলমালিক নেতার বাড়িতে গুলি: অভিযোগের তির বিএনপি নেতার দিকে, নেপথ্যে হাটের ইজারা