বারবার নিজেকে ভাঙার চেষ্টা করছি: কর্ণিয়া
Published: 11th, March 2025 GMT
জাকিয়া সুলাতানা কর্ণিয়া। কণ্ঠশিল্পী। গতকাল প্রকাশ হয়েছে তাঁর গাওয়া দ্বৈত গান ‘আদর’। এ গানে তাঁর সঙ্গে কণ্ঠ দিয়েছেন অশোক সিং। পাশাপাশি সিনেমায়ও গান করছেন তিনি। নতুন এ গান ও অন্যান্য প্রসঙ্গে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
‘আদর’ গানটি গেয়ে কেমন লাগল?
খুবই ভালো। শ্রোতারা এই সময় যেমন গান শুনতে চান এটি তেমনই। রোমান্টিক গানটি বেশ আগে গেয়েছিলাম। আমার সহশিল্পী ভারতের অশোক সিং। গানটি বাংলাদেশের একটি প্রজেক্টের জন্য করা হয়েছিল; পরে কাজটি হয়নি। এখন সহশিল্পীর ইউটিউব চ্যানেলে গানটির লিরিক্যাল ভিডিও প্রকাশ হয়েছে। গানটির সংগীতায়োজন করেছেন লিংকন রায় চৌধুরী।
গান মানেই তো মিউজিক ভিডিও। ভিডিও ছাড়া গান সাদামাটা মনে হবে না?
হ্যাঁ, এটি সত্য যে, লিরিক্যাল ভিডিওতে বেশি ভিউ আসে না। কিন্তু অশোক সিং এর সঙ্গে আমি যখন এ কথাটি শেয়ার করি, তিনি তা মানতে চাইলেন না। বললেন, ভারতে নাকি লিরিক্যাল ভিডিওর ভিউ বেশি হয়। এ কারণে আগে তারা লিরিক্যাল ভিডিও প্রকাশ করেছেন। পরবর্তী সময়ে এর ভিডিও হবে।
আজকাল একক গানের চেয়ে দ্বৈত গানে প্রাধান্য দিচ্ছেন। এর কারণ কী?
আমার কণ্ঠে শ্রোতারা রোমান্টিক গান শুনতে বেশি পছন্দ করেন। রোমান্টিক গান মানেই তো দ্বৈত গান। দর্শক-শ্রোতার পাশাপাশি প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানও চাচ্ছিল আমি যেন বেশি দ্বৈত গান করি। তা ছাড়া ভক্তদের চাওয়া রয়েছে। আসল কথা হলো, দ্বৈত গান প্রকাশের মধ্য দিয়ে ভক্তদের কথা রাখার চেষ্টা করছি। অশোক সিং-এর এই গানটির আগে বেলাল খানের সঙ্গে দুটি গান করা হয়েছে।
ইদানীং রিয়েলিটি শো থেকে উঠে আসা শিল্পীরা নিজেদের মেলে ধরতে পারছেন না বলে অনেকেই মনে করেন। আপনার কী মনে হয়?
আমাদের এখানে রিয়েলিটি শোগুলোতে আসে মধ্যবিত্ত পরিবারের শিল্পীরা। প্রথম দিকে তাদের চেষ্টা থাকলেও পরে চেষ্টা কমে যায়। তাদের নিয়ে বাবা-মায়ের স্বপ্নের কমতি থাকে না। গানটা আসলে ধরে রাখতে হয়। ভেঙে পড়লে হবে না। স্বপ্ন অনুযায়ী তাকে এগিয়ে চলতে হবে। আমার মনে হয়, নিয়মিত চর্চার মধ্যে থাকলে একদিন না একদিন ওঠে আসবেই।
প্রতিটি আয়োজনেই নিজেকে নতুন রূপে তুলে ধরেন। নিজেকে ভার্সেটাই শিল্পী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতেই কী এমন ভাবনা?
ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই চেয়েছি, নানা ধরনের গানের মধ্য দিয়ে পরিচিতি গড়ে তোলার। এ কারণেই কখনও টেকনো, কখনও হার্ডরক, আবার কখনও ফোক ফিউশনের মতো মেলোডি গান কণ্ঠে তুলেছি। গায়কীর মধ্য দিয়ে নিজেকে বারবার ভাঙার চেষ্টা করছি। সবসময়ই নিরীক্ষাধর্মী গান করতে ভালো লাগে। একই ধরনের কাজ বারবার করতে চাই না বলেই নানা ধরনের গান করছি। নিজেকে ভেঙে সবসময়ই নতুনভাবে উপস্থাপন করার চেষ্টা জারি রাখছি।
এই সময়ের ব্যস্ততা কী নিয়ে?
ঈদের আর বেশি বাকি নেই। টিভি চ্যানেলের কিছু আয়োজনে হাজির হওয়ার ইচ্ছা রয়েছে। পাশাপাশি, নতুন কিছু একক ও দ্বৈত গান প্রকাশ করারও পরিকল্পনা করছি। আশা করছি, নতুন গানগুলো শ্রোতাদের মন ভরাবে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: জ ক য় স ল ত ন কর ণ য় গ ন কর
এছাড়াও পড়ুন:
কিডনি সুস্থ রাখার উপায়
আপনার কিডনি কি ঠিক আছে? তাড়াতাড়ি শনাক্ত করুন, কিডনিস্বাস্থ্য রক্ষা করুন। এবার এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে পালিত হচ্ছে বিশ্ব কিডনি দিবস। কিডনি মানবদেহের গুরুত্বপূর্ণ একটি অঙ্গ। দুটি কিডনি অনবরত মানবদেহের ছাঁকন যন্ত্র হিসেবে মূত্রের মাধ্যমে দূষিত পদার্থ নিষ্কাশন করছে। মানবদেহে পানি ও অম্ল-ক্ষারের সমতা রক্ষা করা এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে কিডনির ভূমিকা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
কিডনির অনেক ধরনের অসুখ হতে পারে। তবে কিডনি বিকল হওয়ার সঙ্গে আমরা সবচেয়ে বেশি পরিচিত। কখনও খুব দ্রুতগতিতে কিডনি বিকল হতে পারে, আবার কখনও ধীরগতিতে। ডায়রিয়াজনিত পানিশূন্যতা, অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ, অতিরিক্ত শারীরিক কসরৎ, শারীরিক আঘাত, ওষুধের প্রতিক্রিয়ায় অতি দ্রুত কিডনি বিকল হতে পারে। মানবদেহে রেচনতন্ত্রের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হলো কিডনি। কিডনির প্রধান কাজ হলো রক্তে থাকা দূষিত পদার্থ ছেঁকে বের করা। এ ছাড়াও কিডনি রক্তে লবণ এবং পটাশিয়ামের ভারসাম্য রক্ষা করে, ক্যালসিয়াম শোষণেও সহায়তা করে। দীর্ঘদিন ধরে অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ কিডনির ক্ষতি করে। কিডনি ঠিক মতো কাজ না করলে নানা রকম শারীরিক জটিলতার সৃষ্টি হয়।
ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, কিডনির নিজস্ব রোগ, জন্মগত ত্রুটি, হৃদরোগ, স্ট্রোক, রক্তনালির ব্যাধি, বেদনানাশক ওষুধসহ কিছু ওষুধের যথেচ্ছ সেবন এবং কতিপয় বাত রোগের কারণে ধীরে ধীরে কিডনি বিকল হয়ে যায়।
কিডনি সুস্থ রাখার জন্য যে বিষয়গুলোর দিকে নজর দিতে হবে সেগুলো হলো–
l নিয়মিত শরীরচর্চার মাধ্যমে শরীরকে সক্রিয় রাখা: পরিমিত পরিমাণ শরীরচর্চা কিডনির সুস্থতার জন্য জরুরি। তবে গরমের মাঝে অতিরিক্ত শরীরচর্চা ক্ষেত্র বিশেষে কিডনির ক্ষতি ডেকে আনতে পারে।
l রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা বাগে রাখা: প্রতি তিনজন ডায়াবেটিক রোগীর একজন কিডনিসংক্রান্ত জটিলতায় আক্রান্ত হন। সারা বিশ্বে কিডনি বিকল হওয়ার অন্যতম প্রধান কারণ হচ্ছে ডায়াবেটিস। সেজন্য নিয়মিত রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা তদারকি করা এবং নিয়ন্ত্রণে রাখা জরুরি।
l রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা: প্রতি পাঁচজন উচ্চ রক্তচাপের রোগীর মাঝে একজন কিডনি জটিলতায় আক্রান্ত হন। এজন্য যাপিত জীবনে পরিবর্তনের পাশাপাশি ওষুধ গ্রহণের মাধ্যমে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।
lওজন নিয়ন্ত্রণ: অতিরিক্ত ওজন কিডনির ওপরও চাপ প্রয়োগ করে। অতিরিক্ত ওজন থেকেই হতে পারে উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস এবং উচ্চ কোলেস্টেরল।
l সুষম খাদ্য গ্রহণ: সুস্থ জীবনের জন্য সুষম খাদ্য গ্রহণের কোনো বিকল্প নেই।
l পর্যাপ্ত পানি পান: কিডনি সুস্থতার জন্য প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি গ্রহণ করতে হবে। পানি শূন্যতা যাতে না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে বিশেষত ডায়রিয়া, বমি, অতিরিক্ত ঘাম এবং শরীরচর্চার সময় পর্যাপ্ত পানি পান করতে হবে।
l.ধূমপান পরিহার করা: ধূমপান শরীরের প্রতিটি অঙ্গের জন্য ক্ষতিকর। কিডনি ও এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম নয়।
l বেদনানাশক ওষুধসহ অন্যান্য ওষুধ সেবনে সাবধানতা: বেশ কিছু ওষুধকে বলা হয় নেফ্রো টক্সিক। অর্থাৎ এগুলো কিডনির জন্য ক্ষতিকর। ব্যথা-বেদনানাশক ওষুধের মাঝে অন্যতম।
lলবণ পরিমাণমতো গ্রহণ: অতিরিক্ত লবণ শরীরের জন্য ক্ষতিকর। সেজন্য মনে রাখতে হবে ভাতের পাতে লবণ নয়। যেসব খাদ্যে লবণ বেশি সেগুলো পরিহার করতে হবে।
lনিয়মিত কিডনি পরীক্ষার মাধ্যমে জেনে নিতে হবে কিডনি কেমন আছে। v
[মেডিসিন স্পেশালিস্ট ও এন্ডোক্রাইনোলজিস্ট সিএমএইচ, বরিশাল]