হোয়াটসঅ্যাপে বার্তা ও ছবি নিরাপদ রাখতে ব্যবহার করতে হবে এই ৫ সুবিধা
Published: 11th, March 2025 GMT
বিনা মূল্যে অডিও-ভিডিও কল করার পাশাপাশি বার্তা, ছবি ও ভিডিও আদান-প্রদানের সুযোগ থাকায় নিয়মিত হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহার করেন অনেকেই। ব্যবহারকারীদের আদান-প্রদান করা তথ্য সাইবার হামলা থেকে রক্ষার জন্য বেশ কিছু নিরাপত্তাসুবিধা রয়েছে হোয়াটসঅ্যাপে। নিরাপত্তাসুবিধাগুলো সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
১. এন্ড-টু-এন্ড এনক্রিপশনএন্ড-টু-এন্ড এনক্রিপশন মূলত অনলাইনে নিরাপদে যোগাযোগের পদ্ধতি। এ পদ্ধতিতে প্রেরকের কাছ থেকেই বার্তাতে বিশেষ সংকেত (কোড) যুক্ত করে প্রাপকের কাছে পাঠানো হয়। প্রাপকের কাছে পৌঁছানোর পর কোডযুক্ত বার্তাকে আবার সাধারণ বার্তায় পরিণত করে। এতে নির্দিষ্ট ব্যক্তি ছাড়া অন্য কেউ বার্তায় থাকা তথ্য জানতে পারেন না। আর তাই হোয়াটসঅ্যাপে এন্ড–টু–এন্ড এনক্রিপশন সুবিধা চালু থাকলে পাঠানো বার্তা প্রাপক ছাড়া অন্য কেউ পড়তে পারেন না। সুবিধাটি চালুর জন্য হোয়াটসঅ্যাপের সেটিংসে প্রবেশ করে চ্যাটস অপশনে ক্লিক করতে হবে। এরপর চ্যাট ব্যাকআপে গিয়ে এন্ড-টু-এন্ড এনক্রিপটেড ব্যাকআপ অপশন চালু করতে হবে।
২.চ্যাট লক
হোয়াটসঅ্যাপের চ্যাট লক-সুবিধা কাজে লাগিয়ে ব্যবহারকারীরা আঙুলের ছাপ ব্যবহার করে নির্দিষ্ট ব্যক্তির সঙ্গে আদান-প্রদান করা তথ্য ‘লক’ করে রাখা যায়। ফলে ব্যবহারকারীদের অজান্তে অন্য কেউ ফোন ব্যবহার করলেও সেই বার্তা বা ছবি দেখতে পারেন না। চ্যাট লক করার জন্য যে চ্যাটটি লক করতে হবে, সেটির ওপরে ট্যাপ করে কিছুক্ষণ ধরে রাখতে হবে। এরপর তিনটি ডট মেনুতে ট্যাপ করে লক চ্যাট অপশন নির্বাচন করলেই সেটি লক হয়ে যাবে। পরবর্তী সময়ে আঙুলের ছাপ বা চেহারা চিহ্নিতকরণ প্রযুক্তির (ফেসিয়াল রিকগনিশন) মাধ্যমে সহজেই চ্যাটটি আনলক করা যাবে।
আরও পড়ুনকম্পিউটারে হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহারকারীদের জন্য সুখবর২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫৩. ডিসঅ্যাপিয়ারিং মেসেজগোপনীয়তা বজায় রাখতে ডিসঅ্যাপিয়ারিং মেসেজ সুবিধা বেশ কার্যকর। এটি চালু থাকলে নির্দিষ্ট সময় পর হোয়াটসঅ্যাপে স্বয়ংক্রিয়ভাবে আদান-প্রদান করা বার্তা ও মাল্টিমিডিয়া ফাইল মুছে যায়। এ সুবিধা কাজে লাগিয়ে এক দিন, সাত দিন বা নব্বই দিন আগে নির্দিষ্ট বার্তা বা ফাইল মুছে যাওয়ার সময়সীমা নির্ধারণ করা যায়।
৪. টু-স্টেপ ভেরিফিকেশনঅ্যাকাউন্টের নিরাপত্তা বাড়াতে টু-স্টেপ ভেরিফিকেশন চালু করা জরুরি। এটি চালু থাকলে নতুন কোনো যন্ত্রে হোয়াটসঅ্যাপ অ্যাকাউন্টে লগ ইন করতে ছয় সংখ্যার একটি গোপন পিন দিতে হয়। এর ফলে ফোন হারিয়ে বা চুরি হলেও অন্য কেউ সহজে হোয়াটসঅ্যাপ অ্যাকাউন্টটি ব্যবহার করতে পারে না।
আরও পড়ুনহোয়াটসঅ্যাপে যে ৮ কাজ কখনো করবেন না ১০ জুন ২০২৪৫. প্রাইভেসি সেটিংস নিয়ন্ত্রণহোয়াটসঅ্যাপের প্রাইভেসি কন্ট্রোল সুবিধা কাজে লাগিয়ে ব্যবহারকারীরা সহজেই নিজেদের ব্যক্তিগত তথ্যের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে পারেন। এ সুবিধা কাজে লাগিয়ে হোয়াটসঅ্যাপে স্ট্যাটাস, লাস্ট সিন, রিড রিসিটস ও প্রোফাইল ছবি কোন কোন ব্যক্তি দেখতে পারবেন, তা–ও নির্ধারণ করা সম্ভব।
সূত্র: নিউজ ১৮
আরও পড়ুনহোয়াটসঅ্যাপে কল করার নতুন চার সুবিধা১৪ ডিসেম্বর ২০২৪উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: হ য় টসঅ য প ব যবহ র কর অন য ক উ র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
তৃতীয় দিনে বেক্সিমকোর আরও ১১ হাজার শ্রমিক পাওনা বুঝে পেলেন
গাজীপুরে বেক্সিমকো শিল্পপার্কের বন্ধ ঘোষণা করা ১৪টি কারখানার আরও ১১ হাজার ২৯৩ শ্রমিককে পাওনা বাবদ ৫১ কোটি ৯৬ লাখ টাকা পরিশোধ করা হয়েছে। কোম্পানির পক্ষ থেকে পাওনা পরিশোধের তৃতীয় দিনে গতকাল মঙ্গলবার এ বকেয়া পাওনা পরিশোধ করা হয়। এ নিয়ে গত তিন দিনে ২৭ হাজার ৬৮০ জন শ্রমিকের পাওনা পরিশোধ করা হয়েছে।
বেক্সিমকোর মানবসম্পদ বিভাগের প্রধান খালিদ শাহরিয়ার স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সব শ্রমিকের পাওনা পরিশোধ না হওয়া পর্যন্ত এই প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকবে।
বেক্সিমকো শিল্পপার্কে গতকাল দুপুরে সরেজমিনে দেখা যায়, নারী-পুরুষ শ্রমিকেরা দলে দলে কারখানায় প্রবেশ করে তাঁদের পরিচয়পত্রের ফটোকপি জমা দিচ্ছেন। এরপর হিসাব শাখায় গিয়ে তাঁদের বকেয়া পাওনার হিসাব করছেন। পরে সেই হিসাব অনুযায়ী টাকা তাঁদের ব্যাংক হিসাবে স্থানান্তর করা হচ্ছে। বকেয়া পাওনা পেয়ে অনেক শ্রমিক খুশি। আবার অনেকে অভিযোগ করেছেন, তাঁরা যে পাওনা পাওয়ার কথা, সে অনুযায়ী পাচ্ছেন না। বেক্সিমকোর বন্ধ এক কারখানার অপারেটর হাবিবুর রহমান বলেন, তিনি সোমবার ব্যাংক হিসাবে টাকা পেয়েছেন। তাঁর পাওয়ার কথা ছিল ৮২ হাজার টাকা; কিন্তু পেয়েছেন ৬৮ হাজার ৯০০ টাকা।
বেক্সিমকো কর্তৃপক্ষ ও শিল্প পুলিশ সূত্রে জানা যায়, শিল্পপার্কের বন্ধ ঘোষণা করা ১৪টি প্রতিষ্ঠানের মোট শ্রমিকসংখ্যা ৩১ হাজার ৬৭৯। আর কর্মচারীর সংখ্যা ১ হাজার ৫৬৫। গত ২৮ ফেব্রুয়ারি এসব কারখানা বন্ধ ঘোষণা করা হয়। ৬ মার্চ বেক্সিমকোর বন্ধ ঘোষিত এসব প্রতিষ্ঠানের শ্রমিক-কর্মচারীদের পাওনা পরিশোধে ৫২৫ কোটি ৪৬ লাখ টাকার চেক হস্তান্তর করেছে সরকার। ঋণ হিসেবে কোম্পানিটিকে এই অর্থ দিয়েছে সরকার। ওই দিন বেক্সিমকো লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ওসমান কায়সার চৌধুরীর কাছে ওই চেক হস্তান্তর করেন শ্রমসচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামান। ওই সময় জানানো হয়, ৯ মার্চ থেকে শ্রমিকদের বকেয়া পাওনা পরিশোধ শুরু হবে। সেই অনুযায়ী গত রোববার পাওনা পরিশোধের প্রথম দিনে ২৪৫ জন শ্রমিককে প্রায় ৮০ লাখ টাকা পরিশোধ করা হয়।
কোম্পানি কর্তৃপক্ষ জানায়, শ্রমিকদের পাওনা বাবদ দেওয়া অর্থ নগদে পরিশোধ করা হয়নি। পাওনার পুরো অর্থ মোবাইলে আর্থিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান বা এমএফএস হিসাবে বা ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে প্রদান করা হয়েছে।
গাজীপুর শিল্পাঞ্চলের পুলিশ সুপার এ কে এম জহিরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, বেক্সিমকো তার শ্রমিকদের সব বকেয়া পরিশোধ অব্যাহত রেখেছে। গতকাল ১১ হাজার ২৯৩ জন শ্রমিকের পাওনার চূড়ান্ত নিষ্পত্তি করা করেছে। সব মিলিয়ে গত তিন দিনে মোট ২৭ হাজার ৬৮০ জন শ্রমিকের পাওনা পরিশোধ করা হয়েছে।
বেক্সিমকো গ্রুপের অন্যতম কর্ণধার সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গ্রেপ্তার হন সালমান এফ রহমান। ১৩ আগস্ট থেকে তিনি কারাগারে রয়েছেন। ২৯ আগস্ট সালমান এফ রহমান, তাঁর ছেলে আহমেদ শায়ান ফজলুর রহমান, পুত্রবধূ শাজরেহ রহমানের ব্যাংক হিসাব জব্দ করে বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)। এ ছাড়া খেলাপি ঋণের কারণে ব্যাংকগুলো প্রতিষ্ঠানটির ঋণপত্র বা এলসি-সুবিধাও বন্ধ করে দেয়। এতে বিপাকে পড়ে বেক্সিমকো শিল্পপার্কের প্রতিষ্ঠানগুলো। কাঁচামালের সংকটে কারখানাগুলোর উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। এরপর এসব প্রতিষ্ঠানের শ্রমিকেরা বিক্ষোভ শুরু করেন। এমন পটভূমিতে সরকারের পক্ষ থেকে বেক্সিমকো গ্রুপের বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণে সাখাওয়াত হোসেনের নেতৃত্বে উপদেষ্টা কমিটি গঠন করা হয়। সেই কমিটির সিদ্ধান্তে সরকারের পক্ষ থেকে দেওয়া অর্থে শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধ করা হচ্ছে।