বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত ২০ শহরের মধ্যে ১৩টিই ভারতে
Published: 11th, March 2025 GMT
বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত ২০টি শহরের ১৩টিই রয়েছে ভারতে। সুইজারল্যান্ডভিত্তিক সংস্থা আইকিউএয়ার-এর রিপোর্টে এই তথ্য উঠে এসেছে।
মঙ্গলবার (১১ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে এনডিটিভি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মঙ্গলবার (১১ মার্চ) প্রকাশিত আইকিউএয়ার-এর নতুন রিপোর্ট অনুসারে, বিশ্বের শীর্ষ ২০টি দূষিত শহরের মধ্যে ১৩টি ভারতে অবস্থিত। উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য আসামের বাইরনিহাট এই তালিকার শীর্ষে রয়েছে।
আরো পড়ুন:
বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে যা বললেন ভারতীয় সেনাপ্রধান
ভারত থেকে জাহাজে এলো ৬ হাজার মেট্রিক টন চাল
সুইস বায়ু মান প্রযুক্তি সংস্থা আইকিউএয়ারের ২০২৪ সালের বিশ্ব বায়ু মান রিপোর্টে বলা হয়েছে, দিল্লি এখনও বিশ্বব্যাপী সবচেয়ে দূষিত রাজধানী শহর হিসাবে রয়ে গেছে।
সবচেয়ে দূষিত ২০ শহরের তালিকায় ভারতের ১৩টি শহর হলো- বাইরনিহাট, মুলানপুর (পাঞ্জাব), ফরিদাবাদ, লোনি, নয়াদিল্লি, গুরুগ্রাম, গঙ্গানগর, গ্রেটার নয়ডা, মুজাফফনগর, হনুমানগড় এবং নয়ডা।
ওই রিপোর্ট অনুসারে ২০২৩ সালে সবচেয়ে বেশি দূষিত দেশের তালিকায় ভারত ছিল তৃতীয় স্থানে। এখন বিশ্বের দূষিত দেশগুলোর তালিকায় ভারতের স্থান পঞ্চম।
দূষিত দেশগুলোর তালিকায় শীর্ষে রয়েছে চাড, দ্বিতীয় স্থানে বাংলাদেশ, তৃতীয় স্থানে পাকিস্তান, চতুর্থ স্থানে রয়েছে কঙ্গো।
কী কারণে ভারতে বাতাসের মান এত খারাপ হচ্ছে তার কারণও তুলে ধরা হয়েছে আইকিউএয়ার রিপোর্টে। এতে বলা হয়েছে, গত বছরে ভারতে বাতাসে পিএম২.
তবে দিল্লির বাতাসে পিএম২.৫-এর পরিমাণ প্রতি কিউবিকমিটারে ৯১.৬ মাইক্রোগ্রাম। এই কারণেই দিল্লির বাতাসের দূষণের পরিমাণ সবচেয়ে বেশি।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মানদণ্ড অনুসারে, প্রতি কিউবিক মিটারে পিএম ২.৫-এর পরিমাণ ৫ মাইক্রোগ্রাম হওয়া উচিত। কিন্তু ভারতের প্রায় ৩৫ শতাংশ শহরেই এই মান তার ১০ গুণের বেশি।
ঢাকা/ফিরোজ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র পর ম ণ শহর র সবচ য়
এছাড়াও পড়ুন:
হঠাৎ বাড়ছে হাইডেলবার্গ সিমেন্টে শেয়ারদর, চার দিনে বাড়ল ৬৩ টাকা
দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গত সপ্তাহে মূল্যবৃদ্ধিতে চমক দেখিয়েছে সিমেন্ট খাতের বহুজাতিক কোম্পানি হাইডেলবার্গ সিমেন্ট। মাত্র চার কার্যদিবসে ঢাকার বাজারে কোম্পানিটির শেয়ারের দাম ৬৩ টাকা বা প্রায় ৩০ শতাংশ বেড়েছে। তাতে গত ছয় মাসের মধ্যে কোম্পানিটির শেয়ারের দাম সর্বোচ্চ পর্যায়ে উঠেছে। ডিএসইর সাপ্তাহিক বাজার তথ্য পর্যালোচনা করে এ চিত্র পাওয়া গেছে।
ডিএসইর তথ্য অনুযায়ী, ঈদের ছুটির আগে সর্বশেষ গত ২৭ মার্চ হাইডেলবার্গ সিমেন্টের শেয়ারের বাজারমূল্য ছিল ২১৪ টাকা। ঈদের ছুটির পর শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয় গত রোববার। ওই দিন বাজারে কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের দাম সাড়ে তিন টাকা কমেছিল। এর পরের চার দিন মূল্যবৃদ্ধিতে কোম্পানিটি বড় চমক দেখায়। চার দিনেই কোম্পানিটির শেয়ারের দাম বেড়েছে ৬৩ টাকা। তাতেই সপ্তাহ শেষে ঢাকার বাজারে কোম্পানিটি মূল্যবৃদ্ধির শীর্ষে জায়গা করে নেয়। সপ্তাহ শেষে কোম্পানিটির শেয়ারের বাজারমূল্য বেড়ে দাঁড়ায় প্রায় ২৭৪ টাকায়।
হঠাৎ গত সপ্তাহে কোম্পানিটি মূল্যবৃদ্ধির কারণ জানতে বাজারসংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সামনে বছর শেষের লভ্যাংশ ঘোষণা করবে কোম্পানিটি। গত ডিসেম্বরে কোম্পানিটির আর্থিক বছর শেষ হয়েছে। শেয়ারবাজারের নিয়ম অনুযায়ী, বিমা খাতের কোম্পানি ব্যতীত অন্যান্য কোম্পানির ক্ষেত্রে হিসাব বছর শেষ হওয়ার ১২০ দিন বা চার মাসের মধ্যে বার্ষিক আর্থিক প্রতিবেদন চূড়ান্ত করে তা পরিচালনা পর্ষদে অনুমোদন করতে হয়। সাধারণত পরিচালনা পর্ষদের যে সভায় বার্ষিক আর্থিক প্রতিবেদন অনুমোদন করা হয়, সেই সভা থেকেই বছর শেষে শেয়ারধারীদের জন্য লভ্যাংশ ঘোষণা করা হয়। এই নিয়ম অনুযায়ী, হাইডেলবার্গ সিমেন্টকে চলতি মাসের মধ্যে ২০২৪ সালের আর্থিক প্রতিবেদন চূড়ান্ত করে লভ্যাংশের ঘোষণা দিতে হবে। এই ঘোষণা সামনে রেখে কোম্পানিটির শেয়ারের প্রতি হঠাৎ বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ বেড়ে থাকতে পারে বলে মনে করছেন বাজারসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
* চলতি মাসের মধ্যে লভ্যাংশ ঘোষণা করতে হবে কোম্পানিটিকে।* সিমেন্ট খাতের ৭ কোম্পানির মধ্যে এটিই সর্বোচ্চ দামি শেয়ার।
* ছয় মাসের মধ্যে শেয়ারের দাম সর্বোচ্চ, ২৭৪ টাকা।
নেদারল্যান্ডসভিত্তিক বহুজাতিক কোম্পানি হাইডেলবার্গ স্ক্যান ও রুবি ব্র্যান্ডের সিমেন্ট বাজারজাত করে থাকে। শেয়ারবাজারে সিমেন্ট খাতের কোম্পানিগুলোর মধ্যে এটিই সর্বোচ্চ দামি শেয়ার। ঢাকার শেয়ারবাজারে বর্তমানে দেশি-বিদেশি সাতটি কোম্পানি তালিকাভুক্ত রয়েছে। এর মধ্যে পাঁচটি দেশীয় মালিকানাধীন আর বাকি দুটি বিদেশি বহুজাতিক কোম্পানি। সিমেন্ট খাতের দেশীয় কোম্পানিগুলোর হিসাব বছর গণনা হয় দেশের অর্থবছরের সঙ্গে সংগতি রেখে, অর্থাৎ জুলাই-জুনকেন্দ্রিক। আর বিদেশি কোম্পানিগুলোর হিসাব বছর মূলত ক্যালেন্ডার বছর বা জানুয়ারি-ডিসেম্বরকেন্দ্রিক।
গত বছরের প্রথম ৯ মাসের (জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর) আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, এ সময়ে হাইডেলবার্গ সিমেন্ট ৪১ কোটি টাকার মুনাফা করেছে, যা ২০২৩ সালের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ১০ কোটি টাকা কম। ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর—এই সময়ে কোম্পানিটি মুনাফা করেছিল ৫১ কোটি টাকা। গত বছর কোম্পানিটির মুনাফা কমে যাওয়ার কারণ বিক্রি বা ব্যবসা কমে যাওয়া। গত বছরের প্রথম ৯ মাসে হাইডেলবার্গ সিমেন্ট ১ হাজার ১১৫ কোটি টাকার ব্যবসা করেছে। ২০২৩ সালের একই সময়ে যার পরিমাণ ছিল ১ হাজার ৩৮৬ কোটি টাকা। সেই হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটি ব্যবসা কমেছে ২৭১ কোটি টাকার। একদিকে ব্যবসা কমেছে, অন্যদিকে উৎপাদন খরচ বেড়েছে। সেই কারণে মুনাফা কমে গেছে।
কোম্পানিটির আর্থিক প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের প্রথম তিন প্রান্তিক বা ৯ মাসের মধ্যে শেষ ৩ মাস (জুলাই-সেপ্টেম্বর) কোম্পানিটি লোকসান করেছে। ওই প্রান্তিকে কোম্পানিটির লোকসানের পরিমাণ ছিল প্রায় ৮০ লাখ টাকা। এক প্রান্তিকে লোকসানের পরও আগের দুই প্রান্তিকের মুনাফার কারণে এটি শেষ পর্যন্ত মুনাফার ধারাতেই ছিল।
ডিএসইর তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালে কোম্পানিটি শেয়ারধারীদের ২৫ শতাংশ বা শেয়ারপ্রতি আড়াই টাকা নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল। তার আগের বছর এই লভ্যাংশের পরিমাণ ছিল নগদ ১০ শতাংশ। এখন শেয়ারধারীরা অপেক্ষায় আছেন গত বছরের লভ্যাংশের জন্য। যে লভ্যাংশ সামনে রেখে কোম্পানির শেয়ারের হঠাৎ মূল্যবৃদ্ধি ঘটেছে গত সপ্তাহে।
হাইডেলবার্গ সিমেন্ট ১৯৮৯ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। এটি মাঝারি মূলধনের একটি কোম্পানি। কোম্পানিটির মূলধন ৫৬ কোটি টাকা। গত ডিসেম্বর শেষে এটির শেয়ারের প্রায় ৬১ শতাংশেরই মালিকানায় ছিলেন উদ্যোক্তা-পরিচালকেরা। বাকি ৩৯ শতাংশ শেয়ারের মধ্যে ২৬ শতাংশ রয়েছে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের হাতে। আর ১৩ শতাংশ শেয়ার রয়েছে ব্যক্তিশ্রেণির সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে।
হাইডেলবার্গ সিমেন্টের শেয়ারধারণ-সংক্রান্ত তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের ডিসেম্বর শেষে কোম্পানিটির শেয়ারধারীর সংখ্যা ছিল মোট ১০ হাজার ১৯১ জন। এর মধ্যে ৯ হাজার ৯১৭ জন ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী, যাঁদের হাতে কোম্পানিটির ৫ হাজারের কম শেয়ার রয়েছে। এসব বিনিয়োগকারী কোম্পানিটির মোট শেয়ারের প্রায় ৬ শতাংশ ধারণ করেন। আর ৫ হাজার থেকে ৫০ হাজার শেয়ার ধারণ করেন এমন বিনিয়োগকারী রয়েছেন ২২৬ জন। ৫০ হাজার থেকে ২ লাখ শেয়ার রয়েছে এমন বিনিয়োগকারীর সংখ্যা ৩৮ জন। আর ২ লাখ থেকে ৫ লাখ পর্যন্ত শেয়ার রয়েছে ৮ জন বিনিয়োগকারীর হাতে। ৫ লাখ থেকে ১ কোটি শেয়ার ধারণ করেন এমন বিনিয়োগকারী রয়েছেন ৬ জন। এক কোটির বেশি শেয়ার রয়েছে শুধু কোম্পানিটির উদ্যোক্তাদের হাতে।