প্রবাসীদের ভোটাধিকার প্রয়োগ নিশ্চিত করতে তিনটি বিকল্প পদ্ধতি নিয়ে এগোচ্ছে নির্বাচন কমিশন। সেগুলো হলো সময়ের মধ্যে সম্পাদনযোগ্য একটি পোস্টাল ব্যালট পদ্ধতি, অনলাইন পদ্ধতি এবং প্রক্সি ভোটিং।

সব প্রক্রিয়া শেষ করা সম্ভব হলে প্রক্সি ভোট পদ্ধতিটি মোটামুটি পরিসরে আর বাকি দুটি পরীক্ষামূলকভাবে বাস্তবায়ন করতে পারবে বলে ধারণা করছে ইসি।

আজ মঙ্গলবার নির্বাচন কমিশনার আবুল ফজল মো.

সানাউল্লাহ নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের এ কথাগুলো জানান।

এই নির্বাচন কমিশনার বলেন, গত ১৬ ডিসেম্বর জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা সুনির্দিষ্টভাবে বলেছেন এবার প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভোট নিশ্চিত করতে চান। এর আলোকে নির্বাচন কমিশন নিজেদের সংশ্লিষ্ট কমিটিকে প্রস্তাব দেওয়ার দায়িত্ব দেয়। তিনি বলেন, ডাক বিভাগ, বিভিন্ন দেশি বিদেশি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আলোচনা করা হয় ও সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবও বিশ্লেষণ করে প্রস্তাব তৈরি করা হয়।

বিদ্যমান পোস্টাল ব্যালট পদ্ধতি অচল। এ ক্ষেত্রে কমিটি তিনটি পদ্ধতি সুপারিশ করেছে জানিয়ে আবুল ফজল বলেন, একটি হচ্ছে সময়ের মধ্যে সম্পাদনযোগ্য পোস্টাল ব্যালট সিস্টেম, আরেকটি হলো অনলাইন ভোটিং। তবে অনলাইন ভোটিং তেমন জনপ্রিয় হয়ে ওঠেনি।

আবুল ফজল বলেন, ‘আমরা চারটা দেশে দেখেছি। যেমন যুক্তরাষ্ট্র, ফিলিপাইন, এস্তোনিয়া এবং মেক্সিকো। পাশাপাশি আমাদের উপমহাদেশে ভারত, পাকিস্তানসহ কয়েকটি দেশে পাইলটিং হিসেবে অনলাইন সিস্টেমে করছে। তবে ইউএনডিপির সঙ্গেও আমরা আলোচনা করেছি। তারা বলেছে, এটা অনেকেই সফল হতে পারেনি। ফলে পূর্বের নিয়মে তারা ফিরে গেছে।’

এই নির্বাচন কমিশনার বলেন, আরেকটি প্রস্তাব হলো প্রক্সি ভোট। অর্থাৎ একজন প্রবাসী বাংলাদেশির হয়ে কেউ একজন তাঁর এলাকায় ভোটটা দিয়ে দেওয়া। আমাদের কমিটির কাছে বিষয় ছিল ভোটারের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া, ভোটের গোপনীয়তা ও নিরাপত্তা, প্রেপার ট্রেইল, সাশ্রয়ী ও সর্বজনীন পদ্ধতি হতে হবে; যাতে করে সব ধরনের প্রবাসী ভোটটা দিতে পারে৷ সব বিবেচনায় নিয়ে কমিটি পোস্টাল ও অনলাইন পদ্ধতি ডেভেলপ করে ট্রায়ালের জন্য সাজেস্ট করেছে, যাতে করে টেস্ট করে দেখা যায় কোনটি বাস্তবায়নযোগ্য। পাশাপাশি তারা এটাও সাজেস্ট করেছে যদি আগামী নির্বাচনে সত্যিকার অর্থেই প্রত্যাশা পূরণ করতে চাই তবে প্রক্সি ভোটিংয়ে যেতে হবে।

আবুল ফজল বলেন, বর্তমানে কয়েকটি দেশে বিভিন্ন পরিসরে প্রক্সি ভোটিং প্রচলিত আছে। তার মধ্যে ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়া অন্যতম। আর ভারতে শুধুমাত্র সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের জন্য প্রচলিত আছে।

আগামী ৭-৮ এপ্রিলের মধ্যে একটা কর্মশালা হবে বলে জানান আবুল ফজল। সেখানে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও ইনস্টিটিউটকে আমন্ত্রণ জানানো হবে। ইসি প্রথমে এই তিন পদ্ধতির তিনটা ‘সিস্টেম আর্কিটেকচার’ করতে চায়। এরপর রাজনৈতিক দল ও অন্য অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা করতে চায়। যদি কোনোটা সবার কাছে গ্রহণযোগ্য হয় সেটার ডেভেলপমেন্ট করা হবে। এ ছাড়া আইনেও পরিবর্তন আনতে হবে।

আবুল ফজল বলেন, ‘এখানে সবার সম্মতির ব্যাপার রয়েছে। সিস্টেম ডেভেলপের বিষয় রয়েছে। যদি এগুলো করতে পারি তাহলে ইনশা আল্লাহ আগামী নির্বাচনে প্রক্সি ভোটটা মোটামুটি একটা পরিসরে, আর বাকিগুলো ট্রায়াল ফেইজে ইমপ্লিমেন্ট করতে পারব বলে আমাদের ধারণা।’

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: প রব স

এছাড়াও পড়ুন:

হিন্দু ব্যক্তির আইডি হ্যাক: ফোন জমা থানায়, তবু ইসলামবিরোধী পোস্ট

ফেসবুক আইডি হ্যাক করে ধর্মীয় উস্কানিমূলক পোস্টের জেরে ছয় মাস আগে অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল থানায় জমা দিয়েছেন মিঠুন বিশ্বাস (৪০) নামের এক হিন্দু কাঠমিস্ত্রি। তারপর থেকে সাধারণ ফোন ব্যবহার করছেন তিনি। তবুও বর্তমানে তার ফেসবুক আইডি থেকে দেওয়া হচ্ছে ইসলামবিরোধী নানা উস্কানিমূলক পোস্ট। যা নিয়ে বিপাকে পড়েছেন ঐ কাঠমিস্ত্রি।

এমন ঘটনা ঘটেছে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া উপজেলার ডুমুরিয়া ইউনিয়নের তারাইল এলাকায়। বুধবার (৯ এপ্রিল) দুপুরে গণঅধিকার পরিষদ টুঙ্গিপাড়া উপজেলা শাখা কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে একথা জানান ঐ ব্যক্তি।

ভুক্তভোগী মিঠুন বিশ্বাস বলেন, “আমি পেশায় একজন কাঠমিস্ত্রি। শখের বশে প্রায় এক বছর আগে একটি এন্ড্রয়েড মোবাইল কিনে একজনকে দিয়ে একটি ফেসবুক একাউন্ট খুলি। কিছুদিন পর আইডিটা হ্যাক করে কে বা কারা আমার আইডি থেকে ইসলামবিরোধী উস্কানিমূলক পোস্ট করতে থাকে। তখন ইউএনও, ওসি সাহেব এবং এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ জানালে তারা থানায় সাধারণ ডায়েরি করতে বলে। পরে গত ২০২৪ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর টুঙ্গিপাড়া থানায় জিডি করি। এছাড়া ওয়ার্ডের সাবেক মেম্বারের কথায় মোবাইলটি থানায় জমা দিয়ে আসি। এরপর থেকে সাধারণ মোবাইল ব্যবহার করে আসছি।”

তিনি আরও বলেন, “তারপর থেকে কয়েকমাস বিরত থাকার পর হটাৎ ঈদের তিন দিন পর থেকে আমার নামের সেই ফেসবুক একাউন্ট থেকে ইসলামধর্ম নিয়ে উস্কানিমূলক পোস্ট করতে থাকে। যা নিয়ে এলাকায় ব্যাপক সমস্যার মধ্যে পড়তে হয়। পরে আবার থানায় সাধারণ ডায়েরি করি। আমি একজন অতি সাধারণ মানুষ কিন্তু আমাকে ফাঁসাতে যারা এই কাজ করছে আমি তাদের বিচার চাই। এছাড়া এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।”

এ বিষয়ে তারাইল এলাকার সাবেক ইউপি সদস্য মিজান শিকদার বলেন, “হিন্দু ছেলেটি সামান্য পড়াশোনা জানে, আর কাঠমিস্ত্রির কাজ করে। আগের ঝামেলার পর আমার পরামর্শে তার এন্ড্রয়েড ফোনটি থানায় জমা দেয়। কিন্তু তারপরেও নিরীহ ছেলেটিকে ফাঁসাতে কে বা কারা যেন ধর্মীয় উস্কানিমূলক পোস্ট করে যাচ্ছে। এর আগেও ইউএনও, ওসি সহ এলাকার ইসলামধর্মের মুরব্বিদের নিয়ে বসার পর সে নির্দোষ প্রমাণিত হয়। ধর্ম নিয়ে উস্কানিমূলক
পোস্ট যে দিচ্ছে আইনের মাধ্যমে তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।”

টুঙ্গিপাড়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আকরাম হোসেন বলেন, “মিঠুন বিশ্বাস নামের কাঠমিস্ত্রির অ্যান্ড্রয়েড মোবাইলটি কয়েকমাস ধরে থানায় জব্দ রয়েছে। কিন্তু তারপরও তার নামের আইডি থেকে ধর্মীয় উস্কানিমূলক পোস্ট করছে কেউ। এ ঘটনায় তিনি দুইবার সাধারণ ডায়েরি করেছেন। বিষয়টির তদন্ত চলমান রয়েছে।”

ঢাকা/বাদল/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বিলাসপুরে কারা–কীভাবে–কোথায় ককটেল বানান, কত টাকা পান
  • জীবনে বহু কিছু করার পর ‘ধৈর্য-সহ্যে’ কপাল খুলছে গোলাম রসুলের
  • টরন্টোর গো ট্রেনে কিছুক্ষণ
  • ‘ইউক্রেনের বিরুদ্ধে লড়াই করছে চীনের ১৫৫ জন নাগরিক’
  • মেয়ের বয়স ১৮ হলে সম্পর্কে জড়াব: পবন কল্যাণের প্রাক্তন স্ত্রী
  • ঠান্ডা-কাশি হলে কি টুথব্রাশ বদলানো জরুরি
  • কিহাক সাংয়ের সম্মাননায় কেইপিজেডে আনন্দের ঢেউ
  • কামরাঙ্গীরচরে গণপিটুনিতে ২ ‘চাঁদাবাজ’ নিহত
  • চাঁদাবাজি করতে গিয়ে কামরাঙ্গীরচরে গণপিটুনিতে ২ জন নিহত
  • হিন্দু ব্যক্তির আইডি হ্যাক: ফোন জমা থানায়, তবু ইসলামবিরোধী পোস্ট