শরীয়তপুরে মেঘনা নদী থেকে অজ্ঞাত নারী ও শিশুর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে গোসাইরহাট উপজেলার কুচাইপট্টি ইউনিয়নের মসুরগাঁও এলাকা থেকে লাশ দুটি উদ্ধার করা হয়েছে। নারীর বয়স আনুমানিক ৩০ বছর ও মেয়েশিশুর বয়স ৪ থেকে ৫ বছর।

গোসাইরহাট থানা সূত্র জানায়, গোসাইরহাট উপজেলার ওপর দিয়ে মেঘনা নদী প্রবাহিত হয়েছে। ওই নদী দিয়ে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের পণ্যবাহী ও যাত্রীবাহী নৌযান ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ ও চাঁদপুরে যাতায়াত করে। আজ সকালে উপজেলার কুচাইপট্টি ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের মসুরগাঁও এলাকায় মেঘনা নদীর তীরে দুটি মরদেহ পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয় লোকজন। পরে স্থানীয় জেলেরা বিষয়টি গোসাইরহাট থানা–পুলিশকে জানান।

গোসাইরহাট থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মাহাবুবুর রহমান বলেন, ‘মরদেহ দুটি উদ্ধারের পর আমরা আশপাশের এলাকায় মাইকিং করেছি, খোঁজ নিয়েছি। কিন্তু কেউ ওই নারী ও শিশুর পরিচয় বলতে পারেননি। নারীর মরদেহটি নদীর তীরে পানির কাছে পাওয়া গেছে আর শিশুর মরদেহটি নদীর তীর থেকে ২০০ মিটার দূরে পানিতে ছিল।’

গোসাইরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাকসুদ আলম বলেন, ‘মেঘনা নদীর যে স্থানে এক নারী ও এক শিশুর লাশ পাওয়া গেছে, সেখান দিয়ে দক্ষিণাঞ্চলের নানা ধরনের নৌযান চলাচল করে। কোনো নৌযান থেকে ওই দুজনকে হয় নদীতে ফেলে দেওয়া হয়েছে অথবা তাঁরা নদীতে পড়ে গেছেন। বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে। আমাদের ধারণা, ওই নারী ও শিশু সম্পর্কে মা–মেয়ে হতে পারেন। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ দুটি শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: মরদ হ

এছাড়াও পড়ুন:

মারমাদের মৈত্রী পানিবর্ষণ উৎসব যে কারণে হয়, যেভাবে এল

মারমা জনগোষ্ঠীর সাংগ্রাইং উৎসবের এক গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ হয়ে আছে ‘মৈতা রিলং পোয়ে’ বা মৈত্রী পানিবর্ষণ উৎসব। এই উৎসবে পরস্পরের দিকে পানি ছিটিয়ে মৈত্রীর বন্ধনে আবদ্ধ হন মারমারা। ‘সাংগ্রাইংমা ঞি ঞি ঞা ঞা রিকোজাই পামে’(এসো হে সাংগ্রাইংয়ে সবাই মৈত্রী পানিবর্ষণে) গানটিও দীর্ঘদিন ধরে হয়ে আছে এই উৎসবের ‘থিম সং’।

গবেষক ও মারমা জনগোষ্ঠীর প্রবীণ ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বাংলাদেশে মৈত্রী পানিবর্ষণ উৎসবের শুরু গত শতকের সত্তরের দশকে। কিছু তরুণ মিয়ানমারে সাংগ্রাইং উৎসবে এ ধরনের আয়োজন দেখে দেশেও এর প্রচলন করেন। আর ‘সাংগ্রাইংমা ঞি ঞি ঞা ঞা রিকোজাই পামে’ উৎসবের থিম সং হয়েছে ১৯৮৪ সালে।

মৈত্রী পানিবর্ষণ উৎসবকে অনেকেই ‘জলকেলি’ ও ‘পানি খেলা’ বলে থাকেন। তবে এসব নাম আপত্তিকর বলে মনে করেন মারমা সমাজের অনেকেই। তাঁদের দাবি, এর মধ্য দিয়ে ধর্মের যোগ থাকা অনুষ্ঠানটি ভুলভাবে উপস্থাপন হয়।

এবারের সাংগ্রাইং উপলক্ষে আজ বুধবার থেকে বান্দরবান জেলা শহরে মৈত্রী পানিবর্ষণ উৎসব শুরু হয়েছে। তবে জেলার অন্যান্য জায়গায় গতকাল মঙ্গলবার এই উৎসব শুরু হয়। খাগড়াছড়িতে কোথাও কোথাও সোমবার শুরু হয়েছে মৈত্রী পানিবর্ষণ উৎসব।

মারমা জনগোষ্ঠীর প্রবীণদের একজন শিক্ষাবিদ থোয়াইংচ প্রু। তিনি প্রথম আলকে বলেন, সাংগ্রাইং আখ্যেয়া বা মূল সাংগ্রাই দিনে বুদ্ধমূর্তি স্নানের আগে মৈত্রী পানিবর্ষণ উৎসব হয় না। এটা প্রথাসিদ্ধ রীতি। তাই মৈত্রী পানিবর্ষণের সঙ্গে ধর্মের যোগ বেশ স্পষ্ট। তিনি বলেন, পানিকে মারমারা পবিত্র মনে করে। তাই সাংগ্রাইং উৎসবে বন্ধুত্বের বন্ধন এবং পরস্পরের প্রতি মৈত্রী ভাবনা নবায়ন ও সুদৃঢ় করার জন্য একে-অপরের দিকে পানি ছোড়েন। পানি ছিটানোর পর কেউ বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখালে বোঝা যাবে, বন্ধুত্বের সম্পর্কে ও বন্ধনে টানাপোড়েন আছে। এটিই মৈত্রী পানিবর্ষণের মূল্যবোধ। এ কারণে অনেক সময় অযাচিত কাউকে পানিবর্ষণ করলে আগে সালিসের মুখোমুখিও হতে হতো।

মৈত্রী পানিবর্ষণ উৎসবে মেতেছেন মারমা সম্প্রদায়ের তরুণ-তরুণীরা। গতকাল বান্দরবানের ডলুপাড়ায়

সম্পর্কিত নিবন্ধ