ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের দাবিতে শাহবাগে শিক্ষার্থীরা
Published: 11th, March 2025 GMT
নারীর প্রতি সহিংসতা, ধর্ষণের প্রতিবাদ ও ধর্ষকদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড নিশ্চিত করার দাবিতে রাজধানীর শাহবাগের জাতীয় জাদুঘরের সামনের সড়কে ‘সকাল-সন্ধ্যা অবস্থান কর্মসূচি’ পালন করছেন রাজধানীর বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টা থেকে ছোট-ছোট মিছিল নিয়ে এসে তারা শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে অবস্থান নেন।
কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন ভিকারুন্নেসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ, বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সী আব্দুর রউফ পাবলিক কলেজ, বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ পাবলিক কলেজ, ঢাকা সিটি কলেজ, ধানমন্ডি আইডিয়াল কলেজ, ঢাকা রেসিডেন্সিয়াল মডেল কলেজ, নটরডেম কলেজ, ঢাকা কলেজ, সরকারি বিজ্ঞান কলেজ, সরকারি মোহাম্মদপুর মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, লালবাগ মডেল কলেজ, উইলস্ লিটল ফ্লাওয়ার স্কুল অ্যান্ড কলেজ, জলসিঁড়ি ক্যান্টনমেন্ট কলেজ, আজিমপুর গভর্নমেন্ট গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ঢাকা ইম্পেরিয়াল কলেজ, শেখ বোরহানউদ্দিন পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কলেজ, ইঞ্জিনিয়ারিং ইউনিভার্সিটি স্কুল অ্যান্ড কলেজ, সবুজবাগ সরকারি কলেজ, মোহাম্মদপুর কেন্দ্রীয় কলেজ ও হামদর্দ কলেজের শিক্ষার্থীরা।
এছাড়া, মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, নৌবাহিনী কলেজ, সেন্ট জোসেফ স্কুল অ্যান্ড কলেজ, বিএএফ শাহীন ঢাকা, বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ, উদয়ন উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, আদমজী ক্যান্টনমেন্ট কলেজ, গভর্নমেন্ট ল্যাবরেটরি হাইস্কুলসহ মোট ৩০টি কলেজের শিক্ষার্থীরা কর্মসূচিতে অংশ নেওয়ার কথা রয়েছে বলে জানিয়েছেন উপস্থিত শিক্ষার্থীরা।
এ সময় তাদের ‘তুমি কে, আমি কে, আছিয়া আছিয়া’, ‘জাস্টিস জাস্টিস, উই ওয়ান্ট জাস্টিস’, ‘ফাঁসি ফাঁসি ফাঁসি চাই, ধর্ষকদের ফাঁসি চাই’, ‘আমার সোনার বাংলায়, ধর্ষকদের ঠাঁই নাই’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে দেখা যায়।
উপস্থিত শিক্ষার্থীরা বলেন, নারী নিপীড়নের প্রতিবাদে আমরা শাহবাগ অবরোধের ঘোষণা দিয়েছিলাম। কিন্তু রমজানে জনগণের ভোগান্তির কথা চিন্তা করে ব্লকেড কর্মসূচির পরিবর্তে জাতীয় যাদুঘরের সামনে ফাঁকা রাস্তায় অবস্থান নিয়েছি। এই কর্মসূচি সন্ধ্যা পর্যন্ত চলবে।
কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সী আব্দুর রউফ পাবলিক কলেজের শিক্ষার্থী রাকিবুল হাসান বলেন, তারা ছয়টি দাবিতে বিক্ষোভ করছেন। বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা আজ নিজেদের সুবিধা অনুযায়ী শাহবাগে আসবেন। আজ ইফতারের আগ পর্যন্ত এই কর্মসূচি চলবে।
বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ পাবলিক কলেজের শিক্ষার্থী মিথিলা রহমান বলেন, একের পর এক ধর্ষণের ঘটনা প্রমাণ করে, এ দেশে নারীরা কতটা অনিরাপদ। রাষ্ট্রকে নিরাপদ করতে তারা এই অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন।
শিক্ষার্থীদের কর্মসূচি ঘিরে শাহবাগে সতর্ক অবস্থান নিয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। সেখানে বাড়তি পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।
শিক্ষার্থীদের ছয় দফা দাবি হলো—
১.
২. ধর্ষণের বিরুদ্ধে প্রশাসনকে সম্পূর্ণ ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি অনুসরণ করতে হবে। প্রয়োজনে ধর্ষকদের বিচারের জন্য আলাদা ট্রাইব্যুনাল গঠন করা যেতে পারে।
৩. দ্রুত বিচারপ্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে। যদি কোথাও ধর্ষণের ঘটনা ঘটে, তাহলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ধর্ষককে গ্রেপ্তার করা, মেডিকেল রিপোর্ট তৈরি করা এবং ভিকটিম ও সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে। পরবর্তী ১৫ কার্যদিবস সময়ে যথাযথ প্রমাণের ভিত্তিতে ধর্ষকের ফাঁসি নিশ্চিত করতে হবে। এই প্রক্রিয়ার মধ্যে একটিতেও অসামঞ্জস্য থাকলে, সেটি গ্রহণযোগ্য হবে না। বিচার দ্রুত নিষ্পত্তি করতে পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য ল্যাবরেটরির সংখ্যা বৃদ্ধি করতে হবে।
৪. ধর্ষণের ঘটনায় সালিশি বিচার নিষিদ্ধ করতে হবে। বিচার নিশ্চিত করবে শুধু রাষ্ট্র। পাশাপাশি অনৈতিক পন্থায় প্রশাসনের কারও সহযোগিতায় যদি ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেপ্তার আসামি ছাড়া পায়, তবে তদন্ত অনুযায়ী তাকে চাকরিচ্যুত করতে হবে। ধর্ষণে জড়িত ব্যক্তি অপ্রাপ্তবয়স্ক হলেও শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। এ ক্ষেত্রে আমৃত্যু কারাদণ্ডের বিধান করা যেতে পারে।
৬. চলমান মামলাগুলোর বিচার দ্রুত সম্পন্ন করতে হবে। প্রয়োজনে আলাদা ট্রাইব্যুনাল গঠন করে ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে বিচার সম্পন্ন করতে হবে। এ বিষয়ে আইন ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: স ক ল অ য ন ড কল জ কল জ র শ ক ষ র থ ন শ চ ত কর অবস থ ন ল কল জ ত করত সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
সহকারীর লাশ উত্তোলন নিয়ে যা বললেন তানজিন তিশা
অভিনেত্রী তানজিন তিশার ব্যক্তিগত সহকারী আল-আমিন জুলাই অভ্যুত্থানে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যায়। ঘটনার ৭ মাস পর ময়নাতদন্তের জন্য কবর থেকে লাশ উত্তোলন করা হয়েছে।
সোমবার (১০ মার্চ) মুন্সীগঞ্জ জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাসুদ পারভেজের নেতৃত্বে এবং উত্তরা পশ্চিম থানা ও শ্রীনগর থানা পুলিশের তত্ত্বাবধানে শ্রীনগর উপজেলার বালাসুর কাশেমনগর কবরস্থান থেকে তার মরদেহ উত্তোলন করা হয়।
বিষয়টি নিয়ে ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছেন তানজিন তিশা। স্ট্যাটাসে তিনি লিখেছেন, “আল-আমিন শুধু সহকারী নয়, সে আমার ভাই যে আমার সাথে পাঁচটি বছর ছিল। যে ছিল নিষ্পাপ একটি ছেলে এবং সে জুলাই ও আগস্টের আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ হয়ে শহীদ হয়। সাত মাস পর আল আমিনের মরদেহ কবর থেকে ওঠানোর মতো নির্মম বিষয়টি আমি মোটেও সমর্থন করছি না।”
আরো পড়ুন:
একজন তানজিন তিশা আর ভিউ বাণিজ্য
তিশার স্ট্যাটাসে ফারহানের নাম নিয়ে ধোঁয়াশা
প্রশ্ন তুলে এই অভিনেত্রী লিখেছেন, “এই কর্মের মাধ্যমে কি লাভ হবে? শুধু ওর আত্মাটা কষ্ট পাচ্ছে। খবরটি পাওয়ার পর বিষয়টি আমার কাছে মেনে নেওয়া অনেক কষ্টদায়ক। এর পেছনে যে বা যারা জড়িত তারা কোন উদ্দেশ্যে এই কাজটি করেছে আমি চিন্তা করে খুবই হতবাক। ভাইয়া তুই ভালো থাকিস।”
আল-আমিনের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গত বছরের ১৯ জুলাই রাজধানীর উত্তরায় গুলিতে নিহত হন আল আমিন। পরে তাকে উত্তরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন। পরবর্তীতে ময়নাতদন্ত ছাড়াই ২০ জুলাই শ্রীনগর উপজেলার কাশেমনগর কবরস্থানে তার গ্রামের বাড়িতে দাফন করা হয়।
ঘটনার চার মাস পর ডিসেম্বরে নিহতের বড় ভাই বাদল খলিফা বাদী হয়ে উত্তরা পশ্চিম থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। তারই পরিপ্রেক্ষিতে আল-আমিনের বাবা আইয়ুব খলিফার সম্মতিতে কবর থেকে লাশ উত্তোলন করে ময়নাতদন্তের জন্য মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে প্রেরণ করেছে পুলিশ।
এ বিষয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শাহীন মাহমুদ গণমাধ্যমকে বলেন, “ময়নাতদন্তের জন্য কবর থেকে ৭ মাস পর শহীদ আল-আমিনের মরদেহ তোলা হয়েছে। মরদেহ উত্তোলন করে ময়নাতদন্তের জন্য মুন্সিগঞ্জ সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।”
ঢাকা/শান্ত