চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সেরা একাদশে ভারতের আধিপত্য, নেই বাংলাদেশের কেউ
Published: 11th, March 2025 GMT
সদ্য শেষ হওয়া আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সেরা একাদশ ঘোষণা করেছে আইসিসি। চ্যাম্পিয়ন ভারত থেকে সর্বাধিক পাঁচ ক্রিকেটার জায়গা পেয়েছেন দলে, যদিও অধিনায়ক রোহিত শর্মা জায়গা করে নিতে পারেননি।
রানার্সআপ নিউজিল্যান্ড থেকে চারজন অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন এই একাদশে। দলের অধিনায়ক মিচেল স্যান্টনারকে করা হয়েছে সেরা একাদশেরও অধিনায়ক। এছাড়া আফগানিস্তানের দুজন ক্রিকেটার আছেন এই তালিকায়। তবে জায়গা হয়নি অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা, বাংলাদেশ কিংবা স্বাগতিক পাকিস্তানের কোনো ক্রিকেটারের।
রোববার ফাইনালে নিউ জিল্যান্ডকে ৪ উইকেটে হারিয়ে ২০১৩ সালের পর দ্বিতীয়বারের মতো চ্যাম্পিয়ন হয় ভারত। সোমবার আইসিসি এই সেরা একাদশ প্রকাশ করে। টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হয়েছেন নিউজিল্যান্ডের রাচীন রবীন্দ্র, যিনি ৪ ম্যাচে করেন ২৬৩ রান। তার সঙ্গে ওপেনার হিসেবে আছেন আফগানিস্তানের ইব্রাহিম জাদরান, যিনি ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ১৭৭ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলেন।
ভারতের বিরাট কোহলি (২১৮ রান), শ্রেয়াস আইয়ার (২৪৩ রান) ও লোকেশ রাহুল (১৪০ রান) ব্যাটিংয়ে অবদান রেখে জায়গা পেয়েছেন একাদশে। রাহুল থাকছেন উইকেটরক্ষক হিসেবেও। নিউজিল্যান্ডের গ্লেন ফিলিপস ১৭৭ রান ও দুর্দান্ত ফিল্ডিংয়ে নজর কেড়ে জায়গা করে নেন দলে। পেস অলরাউন্ডার হিসেবে আছেন আফগানিস্তানের আজমতউল্লাহ উমারজাই (১২৬ রান ও ৭ উইকেট)। বোলিং বিভাগে আছেন মিচেল স্যান্টনার (৯ উইকেট), মোহাম্মদ শামি (৯ উইকেট), বরুণ চক্রবর্তী (৯ উইকেট) ও ম্যাট হেনরি (সর্বোচ্চ ১০ উইকেট)।
দলটির দ্বাদশ ক্রিকেটার হিসেবে আছেন ভারতের অক্ষর প্যাটেল, যিনি ৫ উইকেটের সঙ্গে ১০৯ রানও করেছেন।
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সেরা একাদশ: রাচীন রবীন্দ্র, ইব্রাহিম জাদরান, বিরাট কোহলি, শ্রেয়াস আইয়ার, লোকেশ রাহুল (উইকেটরক্ষক), গ্লেন ফিলিপস, আজমতউল্লাহ উমারজাই, মিচেল স্যান্টনার (অধিনায়ক), মোহাম্মদ শামি, ম্যাট হেনরি, বরুণ চক্রবর্তী। দ্বাদশ ক্রিকেটার: অক্ষর প্যাটেল।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: উইক ট
এছাড়াও পড়ুন:
প্রসূতির মৃত্যুতে হাসপাতালে ভাঙচুর, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ-সেনাবাহিনী
লক্ষ্মীপুরে কর্তব্যরত ভিজিটরের অবহেলায় একটি স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শাহিদা বেগম (৩২) নামে এক প্রসূতি মায়ের মৃত্যুর অভিযোগে গ্রামবাসী বিক্ষুব্ধ হয়ে স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভাঙচুর চালিয়েছে। এসময় অবরুদ্ধ করে রাখা হয় ভিজিটর আকলিমাকে।
লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার উত্তর জয়পুর ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে এ ঘটনাটি ঘটে।
বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) রাত ৮টার দিকে খবর পেয়ে চন্দ্রগঞ্জ থানা পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে ও অবরুদ্ধ ভিজিটরকে উদ্ধার করে।
পরে স্বামীর আবেদনের প্রেক্ষিতে মৃত প্রসূতির লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছে পুলিশ ।
প্রসূতির পরিবারের ভাষ্য অনুযায়ী, বুধবার বিকালে পশ্চিম চৌপল্লী গ্রামের কাঠ ব্যবসায়ী মহসিন তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী শাহিদা বেগমের প্রসব বেদনা দেখা দিলে উত্তর জয়পুর ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের নিরাপদ প্রসব সেন্টারে নিয়ে আসেন। কর্তব্যরত ভিজিটর আকলিমা বেগমের সহায়তায় রাতে নরমাল ডেলিভারির মাধ্যমে শাহিদার একটি কন্যা সন্তান জন্ম নেয়। বাচ্চা প্রসবের পর থেকে শাহিদা বেগমের অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ শুরু হয়। স্ত্রীর ব্যথা যন্ত্রণা সহ্য না করতে পেরে স্বামী মহসিন বারবার স্বাস্থ্য কেন্দ্রের ভিজিটরকে অনুরোধ করেন জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার। কিন্তু ভিজিটর আকলিমা তাকে অন্য হাসপাতালে নিতে দেননি। নিজেই শাহিদা বেগমকে চিকিৎসা দিতে থাকেন। এক পর্যায়ে ভোর রাতে সাহিদার মৃত্যু হয়।
বিষয়টি গোপন করে আকলিমা সাহিদার স্বামীকে পার্শ্ববর্তী শামসুল হুদা জেনারেল হসপিটালে নিয়ে যাওয়ার জন্য পরামর্শ দেন। শাহিদার স্বামী তার স্ত্রীকে শামসুল হুদা জেনারেল হসপিটালে নিয়ে গেলে তারা উক্ত রোগী গ্রহণ করতে রাজি হননি।
পরবর্তীতে নোয়াখালীর প্রাইভেট হসপিটালে নিয়ে গেলে হাসপাতালে কর্মরত চিকিৎসক জানান রাতেই শাহিদার মৃত্যু হয়েছে। এতে ক্ষুব্ধ স্বজনরা শাহিদার লাশ নিয়ে স্বাস্থ্য কেন্দ্রে মিছিল করে। একপর্যায়ে বিক্ষুব্ধ জনতা হাসপাতালে ভাঙচুর করে।
খবর পেয়ে স্থানীয় দত্তপাড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশ সদস্যরা এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হলে চন্দ্রগঞ্জ থানা ওসির নেতৃত্বে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা এসে রাত ৮টার দিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। অবরুদ্ধ ইউনিয়ন পরিবার-পরিকল্পনার পরিদর্শক আকলিমা আক্তারসহ অন্য নারী নার্সদের সেনাবাহিনী ক্যাম্পে নিয়ে যায়।
চন্দ্রগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফয়জুল আজিম নোমান জানান, নিহতের লাশ পরিবার নিয়ে গেছে। অবরুদ্ধ ভিজিটরসহ অন্যদের সেনা হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। মামলা অথবা লিখিত অভিযোগ দেওয়া হলে সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন ব্যক্তিদের সঙ্গে আলাপ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বর্তমানে পরিবেশ শান্ত রয়েছে।
লক্ষ্মীপুর পরিবার-পরিকল্পনা বিভাগের ভারপ্রাপ্ত উপ-পরিচালক নাজমুল হাসান মুঠোফোনে বলেন, “প্রসূতি মা শাহিদা ডেলিভারি ব্যথা নিয়ে যখন এসেছে, তখন তার প্রচুর জ্বর ছিল। আমাদের স্বাস্থ্য কেন্দ্রের দায়িত্বরত ভিজিটর আকলিমা রোগীর স্বজনদের বলছে আপনারা লক্ষ্মীপুর নিয়ে যান। তারা বলছে আপনারা চেষ্টা করেন। কারণ এ রোগীর আগের দুইটি সন্তান এ স্বাস্থ্য কেন্দ্রে হয়েছে। এটি ওই-অঞ্চলের নারীদের আস্থার সেবা কেন্দ্র। প্রতি মাসে প্রায় ৪০টি ডেলিভারি হয় এ স্বাস্থ্য কেন্দ্রে। রোগীর বাচ্চা নরমালে হয়েছে। কিন্তু অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ দেখা দিলে সকালে প্রসূতি মাকে স্বজনরা নোয়াখালী নিয়ে যায়। এরপর তারা লাশ নিয়ে এসে হাসপাতালে ভাঙচুর করে। ভিজিটরকে অবরুদ্ধ করে রাখে, পুলিশ, সেনাবাহিনীর সদস্যরা তাদেরকে উদ্ধার করে সেনা ক্যাম্পে নিয়ে যায় বলে আমি শুনেছি।”
ঢাকা/লিটন/টিপু