জামালপুরে এক শিশুকে ধর্ষণ ও অন্যজনকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে মামলা
Published: 11th, March 2025 GMT
জামালপুরের মাদারগঞ্জ উপজেলায় গান শোনানোর কথা বলে পাঁচ বছর বয়সী এক শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে প্রতিবেশী এক কিশোরের বিরুদ্ধে। এ ছাড়া মেলান্দহে দাদার বিরুদ্ধে ছয় বছর বয়সী শিশুকে শাক তোলার কথা বলে নদীর পাড়ে নিয়ে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এই দুই ঘটনায় গতকাল সোমবার মাদারগঞ্জ ও মেলান্দহ থানায় পৃথক দুটি মামলা হয়েছে।
পুলিশ ও মামলার এজাহার থেকে জানা গেছে, গতকাল দুপুরে মাদারগঞ্জ উপজেলার শিশুটিকে গান শোনানোর কথা বলে নিজের ঘরে নিয়ে যায় এক কিশোর। সেখানে সে শিশুটিকে ধর্ষণ করে। এ সময় শিশুটির চিৎকার শুনে ঘটনাস্থলে যান শিশুটির মা। তখন ওই কিশোর পালিয়ে যায়।
আরও পড়ুন৯ বছরের শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগ, গণপিটুনির পর বৃদ্ধ গ্রেপ্তার৩৪ মিনিট আগেএ ঘটনায় শিশুটির মা বাদী হয়ে থানায় একটি মামলা করেছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করে মাদারগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাসান আল মামুন বলেন, শারীরিক পরীক্ষার জন্য শিশুটিকে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আসামিকে গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
আরও পড়ুনতরুণের বিরুদ্ধে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ, বাড়িতে তালা লাগিয়ে দিলেন গ্রামবাসী২ ঘণ্টা আগেঅন্যদিকে গত ১৭ ফেব্রুয়ারি মেলান্দহ উপজেলায় এক শিশুকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে দাদার বিরুদ্ধে গতকাল মামলা হয়। এ বিষয়ে মেলান্দহ থানার ওসি শফিকুল ইসলাম বলেন, ঘটনার পর শিশুটির পরিবার থানায় আসেনি এবং কোনো অভিযোগও করেনি। পরে শিশুটির মা বাদী হয়ে মামলা করেন। অভিযুক্ত ব্যক্তিকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
আরও পড়ুন৬ বছরের শিশুকে ধর্ষণের পরদিন অসুস্থ বাবার মৃত্যু, দুই কিশোর গ্রেপ্তার১২ ঘণ্টা আগে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ম দ রগঞ জ
এছাড়াও পড়ুন:
ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে গুমের ঢেউ, বেড়েছে রহস্যজনক মৃত্যু
শওকত আহমেদের মৃতদেহ যখন পাওয়া গেল, তখন তাঁর চোখ দুটি ছিল রক্তাক্ত। তাঁর চুল খসে পড়ছে। ১৮ বছর বয়সী এ যুবকের হাত-পায়ের চামড়া উঠে যাচ্ছিল। তাঁর বাবা মোহাম্মদ সাদিক এসব তথ্য জানান। ঘটনাটি গত ১৬ মার্চের। এর তিন দিন পরই সাদিক জানতে পারেন তাঁর বড় ছেলে রিয়াজও (২৫) মারা গেছেন। তারা দু’জনই এক মাস আগে নিখোঁজ হয়েছিলেন।
ভারত শাসিত কাশ্মীরের গুজ্জার সম্প্রদায়ের মানুষ তারা। স্থানীয় আইন প্রয়োগ সংস্থার কর্মকর্তারা জানান, শওকত ও রিয়াজ কাশ্মীরের কুলগাম অঞ্চলের একটি নালায় ডুবে গিয়েছিলেন, যা তাদের বাড়ি থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরে। তাদের ময়নাতদন্ত রিপোর্টে ‘সম্ভাব্য আত্মহত্যা’ বলে উল্লেখ করা হয়।
কিন্তু সাদিক ও গুজ্জার সম্প্রদায়ের অধিকাংশ মানুষ ভারতের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর এ বয়ান মানতে নারাজ। সাদিক জানেন না তাঁর দুই ছেলের গুম হওয়া ও পরে মারা যাওয়ার আসল কারণ কী; এটি নিরাপত্তা বাহিনী করেছে, নাকি সশস্ত্র বিদ্রোহীরা। আলজাজিরাকে তিনি বলেন, তাদের নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে।
সরকারি বাহিনী এ হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করছে। কিন্তু আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বয়ানের ওপর গভীর অবিশ্বাস রয়েছে ওই অঞ্চলের মানুষের, যেখানে সম্প্রতি ব্যাপক হারে বেড়েছে গুম। এসব গুমের কিছুদিন পরই মিলছে মৃতদেহ। মুখতার আহমদ আওয়ান নামে ২৪ বছরের আরেক যুবক নিখোঁজ রয়েছেন, যার খোঁজ এখনও মেলেনি। তারা বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে বের হয়ে আর ফেরেননি।
সরকারের ওপর অনাস্থা কাশ্মীরের ইতিহাসের সঙ্গে সংযুক্ত। অ্যাসোসিয়েশন অব প্যারেন্টস অব ডিসঅ্যাপিয়ার্ড পারসন্সের (এপিডিপি) তথ্য অনুযায়ী, ১৯৮৯ সালে ভারত শাসিত এলাকাটিতে সশস্ত্র বিদ্রোহ শুরু হলে এ পর্যন্ত ৮ থেকে ১০ হাজার কাশ্মীরি নিখোঁজ হয়েছেন।
কেবল এ তিনজনই নয়, কাশ্মীরে যেন গুমের ঢেউ বয়ে যাচ্ছে। গত ৫ মার্চ কুলগামের পাশের কাঠুয়া জেলা থেকে যুগেশ সিং (৩২), দর্শন সিং (৪০) ও ১৫ বছরের বরুণ সিং নিখোঁজ হন। তারা বিয়ের অনুষ্ঠান থেকে ফিরছিলেন। তিন দিন পর তাদের মরদেহ পাওয়া যায়। কয়েকদিন পর কাঠুয়া থেকেই মোহাম্মদ দিন ও রহমান আলি নামে আরও দুই কিশোর গুম হয়। এক মাস পার হলেও এখনও তাদের খোঁজ মেলেনি।
২০২০ সালে ভারতের এক সেনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে রাজৌরি জেলায় গুজ্জার সম্প্রদায়ের তিন তরুণকে অপহরণ ও হত্যার অভিযোগ ওঠে। পরে পুলিশ এ ঘটনায় ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে চার্জশিট গঠন করে। এতে সেনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বন্দুকযুদ্ধের নাটক সাজানোর অভিযোগ আনা হয়। কোর্ট মার্শালে ওই কর্মকর্তা দোষী সাব্যস্ত ও সাজাপ্রাপ্ত হন। তবে পরে তিনি জামিন পেয়ে যান।