নার্সিংয়ে ভর্তি পরীক্ষা, আবেদন শেষ বুধবার
Published: 11th, March 2025 GMT
সরকারি, স্বায়ত্বশাসিত (সামরিক–বেসামরিক) ও বেসরকারি নার্সিং ও মিডওয়াইফারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে ভর্তিতে আবেদন চলছে। সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত (সামরিক-বেসামরিক) ও বেসরকারি নার্সিং ও মিডওয়াইফারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ৪ বছর মেয়াদি বিএসসি ইন নার্সিং, ৩ বছর মেয়াদি ডিপ্লোমা ইন নার্সিং সায়েন্স অ্যান্ড মিডওয়াইফারি এবং ৩ বছর মেয়াদি ডিপ্লোমা ইন মিডওয়াইফারি কোর্সে শিক্ষার্থীরা ভর্তি হতে পারবেন।
প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, ১৩ ফেব্রুয়ারি থেকে আবেদন চলছে। অনলাইনে আবেদন করা যাবে আগামীকাল বুধবার (১২ মার্চ) রাত ১১.
আবেদনের শর্তাবলি—
প্রার্থীকে বাংলাদেশের স্থায়ী নাগরিক হতে হবে
আবেদনকারীকে ২০২২, ২০২৩ অথবা ২০২৪ সালের এইচএসসি/সমমান এবং ২০২০, ২০২১ অথবা ২০২২ সালের এসএসসি/সমমান পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে
এসএসসি ও এইচএসসি দুই পরীক্ষার মধ্যে ব্যবধান কোনোভাবেই ৩ বছরের অধিক হতে পারবে না।
ব্যাচেলর অব সায়েন্স ইন নার্সিং ও ডিপ্লোমা ইন নার্সিং সায়েন্স অ্যান্ড মিডওয়াইফারি কোর্সে ভর্তির ক্ষেত্রে সরকারি প্রতিষ্ঠানে নির্দিষ্ট আসনের ১০ শতাংশ পুরুষ প্রার্থীর জন্য সংরক্ষিত থাকবে। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট আসনের সর্বোচ্চ ২০ শতাংশ পুরুষ প্রার্থী ভর্তি করা যাবে। ডিপ্লোমা ইন মিডওয়াইফারি কোর্সে শুধু নারী প্রার্থী আবেদনের যোগ্য হবে।
আরও পড়ুনতুরস্কে বিলকেন্ট ইউনিভার্সিটির বৃত্তি, আইইএলটিএসে ৬.৫ হলে আবেদন ০৮ মার্চ ২০২৫(ক) চার বছর মেয়াদি ব্যাচেলর অব সায়েন্স ইন নার্সিং (বিএসসি ইন নার্সিং কোর্স): প্রার্থীকে বিজ্ঞান বিভাগে এসএসসি বা সমমান ও এইচএসসি বা সমমানের দুটি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে। দুটি পরীক্ষায় মোট জিপিএ ন্যূনতম ৭.০০ থাকতে হবে। তবে কোনো পরীক্ষায় জিপিএ–৩.০০–এর কম হবে না। প্রার্থীকে এইচএসসি/সমমান পরীক্ষায় জীববিজ্ঞানে ন্যূনতম জিপিএ–২.৫০ থাকতে হবে।
খ) তিন বছর মেয়াদি ডিপ্লোমা ইন নার্সিং সায়েন্স অ্যান্ড মিডওয়াইফারি ও ডিপ্লোমা ইন মিডওয়াইফারি: প্রার্থীকে যেকোনো বিভাগে এসএসসি বা সমমান ও এইচএসসি বা সমমানের দুটি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে। দুটি পরীক্ষায় মোট জিপিএ ন্যূনতম ৬.০০ থাকতে হবে। তবে কোনো একটি পরীক্ষায় জিপিএ–২.৫০–এর কম হবে না।
পরীক্ষার বিষয়ভিত্তিক নম্বর—
বিএসসি ও ডিপ্লোমা কোর্সের জন্য পৃথক পৃথক প্রশ্নপত্রে ১ ঘণ্টার ১০০ (একশত) নম্বরের এমসিকিউ পদ্ধতিতে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। (ক) বিএসসি ইন নার্সিং: বাংলা-২০, ইংরেজি-২০, গণিত-১০, বিজ্ঞান-৪০ (জীববিজ্ঞান, পদার্থবিদ্যা ও রসায়ন) এবং সাধারণ জ্ঞান-১০। (খ) ডিপ্লোমা ইন নার্সিং সায়েন্স অ্যান্ড মিডওয়াইফারি ও ডিপ্লোমা ইন মিডওয়াইফারি: বাংলা-২০, ইংরেজি-২০, সাধারণ গণিত-১০, সাধারণ বিজ্ঞান-৩০ এবং সাধারণ জ্ঞান-২০।
আরও পড়ুনদেশের আরও তিনটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় সরকারি হলো৪৮ মিনিট আগেপ্রার্থী নির্বাচন যেভাবে
এসএসসি বা সমমান ও এইচএসসি বা সমমান পরীক্ষায় প্রাপ্ত জিপিএ এবং প্রার্থীর এমসিকিউ পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে প্রার্থী নির্বাচন করা হবে। এসএসসি বা সমমান পরীক্ষায় প্রাপ্ত জিপিএর ৫ গুণিতক = ২৫ নম্বর (সর্বোচ্চ)। এইচএসসি বা সমমান পরীক্ষায় প্রাপ্ত জিপিএর ৫ গুণিতক = ২৫ নম্বর (সর্বোচ্চ)। এমসিকিউ পরীক্ষা: ১০০ নম্বর, সর্বমোট = (২৫+২৫+১০০) = ১৫০ নম্বর। এ পরীক্ষায় ৪০ (চল্লিশ) বা তদূর্ধ্ব নম্বরপ্রাপ্ত প্রার্থীরা উত্তীর্ণ হয়েছেন বলে বিবেচিত হবেন। জাতীয় মেধার ভিত্তিতে প্রার্থী নির্বাচন করা হবে। সরকারি প্রতিষ্ঠানে ভর্তির ক্ষেত্রে প্রার্থীর নির্বাচনী পরীক্ষার মেধাক্রম ও প্রার্থী কর্তৃক প্রদত্ত পছন্দের ক্রমানুসারে প্রার্থী কোনো প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হবে তা নির্ধারিত হবে। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে ভর্তির ক্ষেত্রে ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীদের মধ্য থেকে মেধাক্রম অনুসারে গভর্নিং বডি/ম্যানেজিং কমিটি ভর্তির অনুমোদন প্রদান করবে।
ভর্তি পরীক্ষার ফি
বিএসসি ইন নার্সিং কোর্সের জন্য ৭০০/- (সাতশত) টাকা, ডিপ্লোমা ইন নার্সিং সায়েন্স অ্যান্ড মিডওয়াইফারি এবং ডিপ্লোমা ইন মিডওয়াইফারি কোর্সের জন্য ৫০০/- (পাঁচশত) টাকা আবেদন ফি হিসেবে টেলিটক প্রিপেইড মুঠোফোনের মাধ্যমে জমা দিতে হবে। অনলাইনে ফি জমা হলেই আবেদন চূড়ান্তভাবে গৃহীত হবে।
আবেদনের গুরুত্বপূর্ণ তারিখ
অনলাইনে আবেদন শুরু হয়েছে: ১৩ ফেব্রুয়ারি (বৃহস্পতিবার, দুপুর ১২.০০)
অনলাইনে আবেদনের শেষ: ১২ মার্চ ২০২৫ (বুধবার, রাত ১১.৫৯)
অনলাইনে আবেদনের ফি জমার শেষ তারিখ: ১৩ মার্চ ২০২৫ (বৃহস্পতিবার, রাত ১১.৫৯)
অনলাইন প্রবেশপত্র ডাউনলোড শুরু: ১৫ এপ্রিল ২০২৫ (মঙ্গলবার, দুপুর ১২.০০)
ভর্তি পরীক্ষার তারিখ ও সময়: ২৫ এপ্রিল ২০২৫ (শুক্রবার, সকাল ১০টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত)
সংরক্ষিত আসনের ক্ষেত্রে যা করণীয়
মুক্তিযোদ্ধা ও ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীসহ প্রযোজ্য সংরক্ষিত আসনের ক্ষেত্রে ভর্তি পরীক্ষার দিন কার্যকর সরকার কর্তৃক জারিকৃত সর্বশেষ বিধিবিধান প্রযোজ্য হবে। তবে সংরক্ষিত আসনে উপযুক্ত প্রার্থী পাওয়া না গেলে সাধারণ মেধাক্রমের ভিত্তিতে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হবে।
ফরম পূরণের নির্দেশিকা ও ভর্তির বিস্তারিত তথ্য
নার্সিং ও মিডওয়াইফারি কোর্সে ভর্তির জন্য অনলাইনে ফরম পূরণের নির্দেশিকা ও ভর্তিসংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য এবং ভর্তির নীতিমালা স্বাস্থ্যশিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের ওয়েবসাইট, নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তরের ওয়েবসাইট এবং বাংলাদেশ নার্সিং ও মিডওয়াইফারি কাউন্সিলের ওয়েবসাইট এর মাধ্যমে জানা যাবে।
নার্সিংয়ে ভর্তির বিস্তারিত তথ্য দেখতে এখানে ক্লিক করুন।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ম র চ ২০২৫ ও এইচএসস পর ক ষ র ইন ন র স ব সরক র র জন য র ত ১১ আসন র বছর ম ব এসস
এছাড়াও পড়ুন:
ট্রাক্টরচালক হৃদয়ের ইংরেজিতে কথা বলার ভিডিও ভাইরাল
পেশায় ট্রাক্টরচালক কিন্তু কথা বলেন ইংরেজিতে। অনলাইনে ৭০ জন আর বাড়িতে ৭-৮ জনকে করান ইংরেজিতে পাঠদান। তার ইংরেজিতে তৈরি ব্লগ এখন ব্যাপক ভাইরাল। সবাই তাকে চেনেন ইংলিশম্যান নামে। বলছি দিনাজপুরের বোচাগঞ্জ উপজেলার হৃদয় চন্দ্র রায়ের কথা। তিনি উপজেলার মুর্শিদহাট ইউনিয়নের হরিশচন্দ্রপুর সাধুপাড়া এলাকার সুধীর চন্দ্র রায়ের ছেলে তিনি।
বুধবার সরেজমিনে দেখা যায়, বাড়ির পাশের একটি রাস্তায় ট্রাক্টরের চালকের সিটে বসে ব্লগ তৈরি করছেন। কথা বলছেন ইংরেজিতে। তার ব্লগের বেশিরভাগই শিক্ষামূলক। একটি ইংরেজি বাক্যে কোথায় সাহায্যকারী ভার্ব বসবে, উচ্চারণ কেমন হবে এসব নিয়েই তার ব্লগ।
তার সাথে কথা বলে জানা যায়, হৃদয় ২০১৮ সালে এসএসসি পরীক্ষায় পাস করেন। ২০২০ সালে এইচএসসি পাস করেন। এরপর করোনার সময়ে অর্থাভাবে তার পড়ালেখা বন্ধ হয়ে যায়। অভাব-অনটনে আর ভর্তি হতে পারেন নি অনার্সে। এরই মধ্যে বাবা অসুস্থ হয়ে পড়লে বড় ভাই নয়ন চন্দ্র রায়ের সঙ্গে হাল ধরেন সংসারের। হয়ে যান ট্রাক্টর চালক। তবে পড়ালেখা বন্ধ হলেও বই-পুস্তক নিয়ে থাকেন অবসর সময়ে। বিশেষ করে ইংরেজির ওপর তার বেশ আগ্রহ। একা একাই কথা বলেন ইংরেজিতে। ইউটিউব দেখে দেখে শিখে নেন ইংরেজিতে দক্ষ হওয়ার কৌশল। হৃদয় চন্দ্র রায়ের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি পেজ রয়েছে। যেটির নাম হৃদয় চন্দ্র। সেখানেই তিনি ইংরেজিতে কথা বলে বেশ ভাইরাল।
হৃদয়ের বন্ধু জানান, হৃদয় ট্রাকে কাজ করে এবং ইংরেজি সম্পর্কে শেখানোর চেষ্টা করে। আমি দেখেছি যে সে গবীর হলেও পড়ালেখায় বেশ আগ্রহী। ছোট থেকেই ইংরেজিতে দক্ষ। তার এলাকার ছেলে-মেয়েদেরকে ইংরেজি শেখায়।
স্থানীয় মাগফুর রহমান বলেন, তার ব্যবহার খুবই ভালো। সে ইংরেজিতে কথা বলে, আমাদেরকে বেশ ভালই লাগে। সে এখন ফেসবুকে ভাইরাল। তাকে নিয়ে আমাদের গর্ব হয়। আমরা না পারলেও আমাদের এলাকার ছেলে আমাদের নাম উজ্জ্বল করেছে, এলাকার পরিচিতি বাড়িয়েছে।
হৃদয়ের বড় ভাই নয়ন চন্দ্র রায় বলেন, আমি ইংলিশম্যান হৃদয়ের বড়ভাই। যে একটি পজিশনে গেছে তাতে আমাকে খুব ভালো লাগে। তার অক্লান্ত পরিশ্রমের কারণে এখন বেশ পরিচিত। তার একটি কর্মের ফল, তার এই সাফল্যে আমরা আনন্দিত। তার এলাকায় জনপ্রিয়তা রয়েছে। মানুষ তাকে খুব ভালোবাসে। আমাদের আর্থিক অনটনের কারণে তার পড়ালেখা বন্ধ হয়ে যায়। আমরা দুইভাই এখন কাজ করি। সরকারের কাছে আবেদন, যদি হৃদয়ের পড়ালেখার ব্যবস্থা করে দিতে পারে তাহলে সে দেশের জন্য ভালো কিছু করতে পারবে।
বাবা সুধীর চন্দ্র রায় বলেন, আমার ছেলেকে কষ্ট করে মানুষ করেছি। আমার আশা-আকাঙ্খা ছিল ছেলেকে পড়ালেখা করাবো। কিন্তু এইচএসসি পাশ করার পর আর সংসার চালাতে পারছিলাম না। আমার আয়-উপার্জন বন্ধ হয়ে যায়। পরে তাকে ট্রাক্টর চালনা শিখিয়ে দেই। এখন সে তার বড় ভাইয়ের সাথে কাজ-কর্ম করে সংসার চালাচ্ছে। তার ইংরেজিতে কথা বলার কারণে এলাকার সবাই চিনে। এখন আমাকে অনেকেই হৃদয়ের বাবা হিসেবে চেনে। এটা আমাকে খুব ভালো লাগে, আমি গর্বিত হই।
সাবেক ইউপি সদস্য আনোয়ার হোসেন নান্নু বলেন, হৃদয় আমাদের ভাতিজা ও প্রতিবেশি। হৃদয়ের ব্যাপারে অনেক শুনেছি। তার যে চর্চা তা সত্যিই প্রশংসার দাবিদার। আমাদের গ্রামের উজ্জ্বল আলো হৃদয়।