গাজীপুরের টঙ্গীতে বকেয়া বেতনের দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করা শ্রমিকরা সরে গেছেন। মঙ্গলবার সকাল ৭টা থেকে টঙ্গীর হোসেন মার্কেট এলাকায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের উভয় পাশে অবরোধ সৃষ্টি করে শ্রমিকরা বিক্ষোভ শুরু করেন। পরে যৌথবাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে, এরপর সকাল ১১টার দিকে তারা সড়ক থেকে সরে যান।

টঙ্গী পূর্ব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফরিদুল ইসলাম সমকালকে বলেন, যৌথবাহিনী শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে বোঝানোর পর তারা সড়ক থেকে সরে গেছে। তারা সরে যাওয়ার পরেই মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।

শ্রমিকরা জানান, টঙ্গীর হোসেন মার্কেট এলাকায় বি এইচ আই এস অ্যাপারেলস লিমিটেড কারখানায় প্রায় ১ হাজার ৩০০ শ্রমিক কাজ করেন। সোমবার তাদের ফেব্রুয়ারি মাসের বকেয়া বেতন পরিশোধের কথা ছিল। কিন্তু বিকেলে মালিকপক্ষ কোনো সিদ্ধান্ত না নিয়েই গোপনে কারখানা ত্যাগ করেন। এরপর শ্রমিকরাও বাসায় ফিরে যান। তবে মঙ্গলবার সকালে কাজে যোগ দিতে এসে শ্রমিকরা কারখানার প্রধান ফটকে ‘অনির্দিষ্টকালের জন্য কারখানা বন্ধ’ লিখিত নোটিশ দেখতে পান। এতে তারা ক্ষুব্ধ হয়ে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের দুই পাশ অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন।

এর আগে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা মঙ্গলবার সকালে আশপাশের কয়েকটি কারখানাও বন্ধ করে দেন। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধের ফলে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়, চরম ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রীরা। তবে যান চলাচল স্বাভাবিক হলে যাত্রীদের মধ্যে প্রশান্তি দেখা দেয়।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: অবর ধ

এছাড়াও পড়ুন:

সৌদিতে বাংলাদেশি শ্রমিকের মৃত্যু, লাশ আনা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পরিবার

সংসারের অভাব ঘুচাতে ধারকর্য করে এক নির্মাণ শ্রমিক তাঁর ছেলেকে পাঠিয়েছিলেন সৌদি আরবে। দেড় বছরের মাথায় সব স্বপ্ন ভেঙে চুরমার হয়ে গেল। সচ্ছলতা দূরের কথা, ঋণ পরিশোধ করার আগেই গত ৩ মার্চ দাম্মাম শহরের একটি এলাকায় গ্যাস সঞ্চালন লাইনের কাজ করতে গিয়ে এক দুর্ঘটনায় মারা যান কাউছার। ৬ দিন আগে মৃত্যুর খবর পেলেও এখনও স্বজন জানেন না কবে দেশে ফিরবে তাঁর লাশ। তাঁর বাড়ি ময়মনসিংহের ত্রিশালের জয়দা গ্রামে।

জানা গেছে, মঠবাড়ী ইউনিয়নের অলহরী জয়দা গ্রামের বাসিন্দা নির্মাণ শ্রমিক মোতাহার আলী। ৮ ছেলেমেয়ের মধ্যে বড় ছেলে কাউছারও নির্মাণ শ্রমিকের কাজ করতেন। সংসারে একটু সচ্ছলতার মুখ দেখতে বছর দেড়েক আগে ছেলে কাউছারকে সৌদি আরবে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেন বাবা মোতাহার। নুন আনতে যার পান্তা ফুরায়, তাঁকে জোগাড় করতে হয় ৬ লাখ টাকা। ঋণ নিয়ে ছেলেকে পাঠান সৌদি আরবে। দাম্মাম শহরের সাক্কো নামে একটি কোম্পানিতে শ্রমিকের কাজ করতেন কাউছার। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস গত ৩ মার্চ স্থানীয় সময় বেলা ১১টার দিকে দাম্মাম শহরের আল হাসা জাফরা এলাকার গ্যাস সঞ্চালন লাইনের কাজ করতে গিয়ে দুর্ঘটনায় মারা যান কাউছার।

তাঁর মৃত্যুর খবর নিশ্চিত হন প্রতিবেশী এক প্রবাসীর কাছ থেকে। কিন্তু ৬ দিন পেরিয়ে গেলেও ছেলের লাশ বাংলাদেশি কোন সংস্থার মাধ্যমে দেশে ফিরবে, কবে ফিরবে– এসব বিষয়ে কিছুই জানেন না স্বজন। পরিবারের দাবি, সরকার যেন তাদের পাশে দাঁড়ানোর পাশাপাশি দ্রুত লাশ দেশে আনতে পদক্ষেপ নেয়।

সরেজমিন দেখা গেছে, কাউছারের স্ত্রী জেসমিন তাঁর ১৫ মাসের মেয়েকে জড়িয়ে ধরে কাঁদছেন। মেঝেতে বসে আছেন বাকরুদ্ধ বাবা। ছেলের খোঁজখবর জানতে চাইতেই হাউমাউ করে কাঁদতে শুরু করেন মোতাহার। তিনি বলেন, ‘আমার সব স্বপ্ন শেষ। এত কষ্ট, ঋণ-কর্য যার জন্য করলাম, তাকেই আল্লাহ নিয়ে গেল। আমি এখন কী করব? একদিকে ঋণের চাপ, অন্যদিকে ছেলের বউ, নাতনি ও আমার পরিবারের খরচ কীভাবে চালাব সেই চিন্তা।’

কাউছারের স্ত্রী জেসমিন বলেন, ‘তিন বছর আগে আমাদের বিয়ে হয়েছে। ওরে বলছিলাম, ঋণ কইরা বিদেশ যাওয়ার দরকার নাই। কোনো আপদ-বিপদ হইলে মানুষ টেহা ছাড় দিত না। ওর বিদেশ যাওয়ার আট দিন পর জন্ম হইছে মেয়েটার। এখন মেয়ের ভবিষ্যৎ দেখব কে?’

এ বিষয়ে বৈদেশিক কর্মসংস্থান ও শ্রম মন্ত্রণালয়ের অধিনস্থ ওয়েল ফেয়ার সেন্টার ময়মনসিংহের সহকারী পরিচালক মাহবুবুল হাসান তাহেরি জানান, পরিবার আবেদন করলে তা পাঠিয়ে দেবেন ওয়েজ অর্নার কল্যাণ বোর্ডে। এর পর সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সব ধরনের ব্যবস্থা নেবেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গাজীপুরের ২ মহাসড়ক যান চলাচল স্বাভাবিক
  • নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে, প্রতিবাদে মহাসড়ক অবরোধ
  • টঙ্গীতে বকেয়া বেতনের দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ করে শ্রমিকদের বিক্ষোভ
  • ময়মনসিংহে ট্রাক-অটোরিকশা সংঘর্ষ, নিহত ৩
  • ময়মনসিংহে ট্রাক-অটোরিকশার সংঘর্ষ, নিহত ৩
  • ময়মনসিংহে ট্রাক ও অটোরিকশার সংঘর্ষে তিনজন নিহত
  • ময়মনসিংহে ট্রাকচাপায় অটোরিকশার ৩ যাত্রী নিহত
  • ঈদে চলবে ৫ জোড়া বিশেষ ট্রেন
  • সৌদিতে বাংলাদেশি শ্রমিকের মৃত্যু, লাশ আনা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পরিবার