গণ-অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধ শক্তি একটি ছদ্ম–যুদ্ধ চালাচ্ছে: মাহফুজ আলম
Published: 11th, March 2025 GMT
গণ-অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধ শক্তি একটি ছদ্ম–যুদ্ধ চালাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো. মাহফুজ আলম।
গতকাল সোমবার রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে মাহফুজ আলম এই মন্তব্য করেন। তাঁর পোস্টের শিরোনাম: ‘গণ-অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধ শক্তি একটি ছদ্ম-যুদ্ধ চালাচ্ছে’।
মাহফুজ আলম তাঁর পোস্টে লিখেছেন, গতকাল (রোববার) প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে একটি পর্যালোচনা সভায় নারী ও শিশুর বিরুদ্ধে নিপীড়ন-সহিংসতা নিরোধে ব্যবস্থা গ্রহণ, নিষিদ্ধ সংগঠনের কার্যক্রমের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান গ্রহণ ও সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি নিয়ে আলোচনা হয়েছিল। তাঁরা সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলেন, সরকার কঠোর অবস্থানে যাবে। গতকাল থেকে আজ পর্যন্ত বিভিন্ন জায়গায় অপরাধীদের গ্রেপ্তার চলমান। বিচারের কাজ দ্রুত ও সুষ্ঠু করার লক্ষ্যেও সরকার তৎপর।
ছাত্র-যুবকদের জন্য লক্ষাধিক চাকরির ব্যবস্থাসহ তরুণদের জন্য জাতীয় কর্মসূচি গ্রহণের বিষয়ও আলোচনায় উত্থাপিত হয় বলে উল্লেখ করেন মাহফুজ আলম। তিনি লিখেছেন, শিগগিরই এ বিষয়ে দৃশ্যমান পদক্ষেপ নেওয়া হবে। সরকার জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ দেখাবে। সে লক্ষ্যে সমন্বিত তৎপরতা ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে।
মাহফুজ আলম তাঁর পোস্টে লিখেছেন, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ, সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার ও বিচার, প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালী করা, জুলাই শহীদ ও আহত ব্যক্তিদের জন্য ইতিবাচক উদ্যোগ গ্রহণ থেকে শুরু করে বিভিন্ন ইস্যুতে সরকার সক্রিয় ও সফল। কিন্তু সামরিক-বেসামরিক আমলাতন্ত্র, ব্যবসায়ী শ্রেণি ও মিডিয়ার মধ্যকার গণ-অভ্যুত্থানের শক্তিগুলোর বিরোধ; স্বার্থান্বেষা ও মতান্ধতা; অন্যদিকে গণ-অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধশক্তির ঐক্যবদ্ধ হয়ে ক্রমশ উত্থান সরকারকে বেকায়দায় ফেলছে।
গণ-অভ্যুত্থানে পরাজিত একটি শক্তিশালী জোটের বিরুদ্ধে অন্তর্বর্তী সরকার যুদ্ধ লড়ছে বলে মন্তব্য করেন মাহফুজ আলম। তিনি লিখেছেন, ‘সরকার যুদ্ধ লড়ছে গণ-অভ্যুত্থানে পরাজিত একটি শক্তিশালী দেশি-বিদেশী জোটের বিরুদ্ধে। কিন্তু স্বার্থান্বেষী মহল জনগণের মধ্যকার অভ্যুত্থানের ঐক্যকে নস্যাত করতে উঠে পড়ে লেগেছে। সফল ও হচ্ছে। সেনাবাহিনী, রাজনৈতিক দল ও অভ্যুত্থানের বিভিন্ন শক্তিকে মুখোমুখী না করাই আমাদের জন্য আখেরে ভালো হবে।’
মাহফুজ আলম লিখেছেন, ‘আমাদের মনে রাখতে হবে, দেশে এখন যুদ্ধ পরিস্থিতি বিরাজ করছে এবং সে যুদ্ধ অন্য জায়গা থেকে আমাদের উপর চাপিয়ে দেয়া হয়েছে। একটা কন্ট্রোল রুম থেকে সে যুদ্ধের প্রতি সপ্তাহ ও দিনের কর্মসূচি চালু করা হয় ও মনিটর করা হয়। আমাদের সে যুদ্ধের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রতিরোধ গড়তে হবে।’
নির্বাচন যথাসময়েই হবে বলে উল্লেখ করেন মাহফুজ আলম। তিনি তাঁর পোস্টে লিখেছেন, ‘রাষ্ট্র সংস্কার, গণহত্যা ও লুটপাটের বিচার, প্রতিষ্ঠানসমূহের পুনরুজ্জীবন ও গণতান্ত্রিক রূপান্তর সহ নানা বিষয় আমাদের লক্ষ্য থেকে হারিয়ে যাচ্ছে। এ সরকারের আমলে এ দেশকে গড়ে তোলার সুযোগ ও সক্ষমতা তৈরি হয়েছে বলেই ভিনদেশ থেকে দ্রুততার সাথে সরকার পরিবর্তনের প্রেস্ক্রিপশন আসছে। কিন্তু, নির্বাচন যথাসময়েই হবে এবং জুলাই সনদের ভিত্তিতে এ দেশে নির্বাচনের আগেই রাষ্ট্র সংস্কারের দৃশ্যমান অগ্রগতি ঘটবে এবং খুনী, ধর্ষক ও লুটেরাদের বিচার হবে।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: দ র জন য আম দ র সরক র গ রহণ
এছাড়াও পড়ুন:
বিশ্বে স্বর্ণের দাম রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছেছে
বিশ্বে স্বর্ণের দাম রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছেছে। যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে বাণিজ্য যুদ্ধের প্রভাব নিয়ে উদ্বেগ বাড়ার পর শুক্রবার মার্কিন ডলারের দাম কমতে শুরু করে। এর মধ্যে বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগের নিরাপদ আশ্রয় হিসেবে স্বর্ণের দাম বেড়ে গেছে।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ডলার ও মার্কিন ট্রেজারিগুলোর দাম কমে যাওয়ার পর সোনার দাম নতুন উচ্চতায় পৌঁছে গেছে। মার্কিন সরকারি বন্ডের বিক্রি আবার শুরু হয়েছে।
বিনিয়োগকারীরা সুইস ফ্রাঙ্ক এবং সোনার মতো তথাকথিত নিরাপদ আশ্রয়স্থল সম্পদের দিকে ঝুঁকছেন। প্রথমবারের মতো সোনার দাম প্রতি ট্রয় আউন্সে ৩,২০০ ডলারের উপরে উঠে গেছে। অন্যদিকে সুইস ফ্রাঙ্ক সর্বোচ্চ উচ্চতায় পৌঁছেছে। শুক্রবার এশিয়ার শেয়ারবাজারে পতন ঘটে।
এদিকে বিশ্ব বাজারে দাম বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দেশের বাজারেও সোনার দাম সর্বোচ্চ দরে পৌঁছেছে। প্রতি ভরি সোনার দাম বেড়েছে সর্বোচ্চ ২ হাজার ৪০৩ টাকা। এর ফলে ভালো মানের ২২ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম পড়বে ১ লাখ ৫৯ হাজার ২৭ টাকা। দেশের বাজারে এটিই এখন পর্যন্ত সোনার সর্বোচ্চ দাম। বৃহস্পতিবার রাতে বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে। এতে বলা হয়েছে, স্থানীয় বাজারে তেজাবি সোনার (পিওর গোল্ড) দাম বেড়ে যাওয়ায় দাম সমন্বয় করা হয়েছে। নতুন দাম আজ শুক্রবার থেকে কার্যকর হবে।
বাজুসের নতুন সিদ্ধান্তের ফলে আজ শুক্রবার থেকে দেশের বাজারে হলমার্ক করা প্রতি ভরি (১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রাম) ২২ ক্যারেট মানের সোনা ১ লাখ ৫৯ হাজার ২৭ টাকা, ২১ ক্যারেট ১ লাখ ৫১ হাজার ৭৯৫ টাকা, ১৮ ক্যারেট ১ লাখ ৩০ হাজার ১১২ টাকায় বিক্রি হবে। এ ছাড়া সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি সোনার দাম বেড়ে হবে ১ লাখ ৭ হাজার ৩৪৪ টাকা।
আগের দিন বৃহস্পতিবার পর্যন্ত প্রতি ভরি ২২ ক্যারেট সোনা ১ লাখ ৫৬ হাজার ৬২৪ টাকা, ২১ ক্যারেট ১ লাখ ৪৯ হাজার ৪৯৮ টাকা, ১৮ ক্যারেট ১ লাখ ২৮ হাজার ১৪১ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির সোনা ১ লাখ ৫ হাজার ৬৬৪ টাকায় বিক্রি হয়েছে। আজ থেকে প্রতি ভরি ২২ ক্যারেট সোনায় ২ হাজার ৪০৩ টাকা, ২১ ক্যারেটে ২ হাজার ২৯৭ টাকা, ১৮ ক্যারেটে ১ হাজার ৯৭১ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির সোনায় ১ হাজার ৬৮০ টাকা দাম বাড়বে।
৮ এপ্রিল রাতে সোনার দাম ভরিপ্রতি ১ হাজার ২৪৮ টাকা কমানোর কথা জানিয়েছিল বাজুস। এতে বলা হয়, বিশ্ববাজারে কমার কারণে দেশেও কিছুটা কমেছে স্বর্ণের দাম। সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি (১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রাম) স্বর্ণের দাম এক হাজার ২৪৮ টাকা কমিয়ে নির্ধারণ করা হয়েছে এক লাখ ৫৬ হাজার ৬২৪ টাকা।
বাজুস বলেছে, স্থানীয় বাজারে তেজাবী স্বর্ণের (পাকা স্বর্ণ) দাম কমার পরিপ্রেক্ষিতে এই দাম কমানো হয়েছে। টানা চারদফা বাড়ার পর এবার কিছুটা কমেছে মূল্যবান এই ধাতুর দাম। আগামীকাল বুধবার থেকে নতুন দাম কার্যকর হবে।
এতদিন দেশের বাজারে ভালো মানের এক ভরি স্বর্ণের দাম ছিল এক লাখ ৫৭ হাজার ৮৭২ টাকা। গত ২৯ মার্চ থেকে এ দর ছিল। এটি ছিল স্বর্ণের সর্বোচ্চ দর। এ দর কমে এখন হয়েছে এক লাখ ৫৬ হাজার ৬২৪ টাকা।
নতুন দাম অনুযায়ী, প্রতি ভরি ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণের দর এক লাখ ৪৯ হাজার ৪৯৭ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি এক লাখ ২৮ হাজার ১৪১ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম এক লাখ ৫ হাজার ৬৬৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।