বুড়ো হওয়ার পর ৪৬৪ গোল হলে, বুড়ো হওয়াটাই ভালো!
Published: 11th, March 2025 GMT
কোথা থেকে করব শুরু আর কোথায় গিয়েই বা শেষ। ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো, এই নামটাই যে এক রেশ। বয়স যে এই পর্তুগিজ মহাতারকার জন্য কোনো সমস্যায় না। ৪০ বছর বয়সী এই ফরোয়ার্ড ফুড়িয়ে যাওয়ার কোন সংকেতই দিচ্ছেন না। এএফসি চ্যাম্পিয়নস লিগের ম্যাচে সোমবার (১০ মার্চ, ২০২৫) দিবাগত রাতে তিনি গোল করে যে দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন, এরপর তো বলাই যায় যৌবনের রোনালদোর চেয়ে বুড়িয়ে যাওয়া রোনালদোই গোল করার সক্ষমতা বেশি রাখেন।
এএফসি চ্যাম্পিয়নস লিগের শেষ ষোলোর প্রথম লেগটা ইরানি ক্লাব এস্তেগলালের বিপক্ষে গোলশূন্য ড্র করেছিল আল নাসর। সেই ম্যাচে স্কোয়াডে ছিলেন না সৌদি ক্লাবটির সবচেয়ে বড় তারকা রোনালদো। তবে গত রাতে ঘরের মাঠ আল আওয়াল পার্কে এস্তেগলালকে ৩-০ গোলে উড়িয়ে দিয়েছে আল নাসর। ম্যাচে একটা গোল করেছেন রোনালদো। অন্য দুটি গোল করেছেন এই শীতকালীন দলবদলে আল নাসরে যোগ দেওয়া কলম্বিয়ান ফরোয়ার্ড জন ডুরান।
নাসরের হয়ে প্রথম গোলটি করেন ডুরান। ম্যাচের নবম মিনিটে দলকে এগিয়ে নেন এই কলম্বিয়ান। ম্যাচের ২৭ মিনিটে রোনালদো পেনাল্টি থেকে গোল করে স্কোরশিটে নাম লেখান। বিরতির আগে আর কোন গোল হয়নি। ম্যাচের ৮৪ মিনিটে ডুরান এস্তেগলালের কফাইন শেষ পেরাকটি ঠুকেন। নিশ্চিত হয় আল নাসরের কোয়ার্টারফাইনাল।
আরো পড়ুন:
শীর্ষে উঠার সুযোগ হারাল অ্যাতলেটিকো
৩০ পেরিয়ে আরও শক্তিশালী রোনালদো
রোনালদোর ক্যারিয়ার গোল সংখ্যা ৯২৭টি। পাঁচ বারের ব্যালন ডি-অর জয়ী তারকা প্রথম ফুটবলার হিসেবে ক্যারিয়ার ‘১০০০’ থেকে আর ৭৩ গোল দূরে। তাছাড়া এই ম্যাচে গোল পাওয়ায় ‘বয়স ৩০’ পেরিয়ে যাওয়ার পর রোনালদোর গোল সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪৬৪। অর্থাৎ ৩০ এর আগের বা তরুণ রোনালদোর গোল সংখ্যার চেয়েও একটি বেশি।
ঢাকা/নাভিদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ফ টবল গ ল কর
এছাড়াও পড়ুন:
নদীতে ফুল ভাসিয়ে পাহাড়ে বর্ষবরণ উৎসব শুরু
দেশের সমৃদ্ধি, পার্বত্য চট্টগ্রামের সুখ শান্তি ও মঙ্গল কামনা করে নদীতে ফুল নিবেদনের মধ্য দিয়ে আজ শনিবার থেকে তিনদিনব্যাপী পাহাড়ের প্রধান সামাজিক উৎসব বিজু-সাংগ্রাই-বৈসু-বিষু-বিহু সাংক্রাইন, সাংক্রান, পাতা’র আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছে। ভোরে শিশু ও নারী-পুরুষ ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরে গঙ্গা মা’র উদ্দেশে উৎসবমুখর পরিবেশে পানিতে কলাপাতায় ফুল নিবেদন করেন।
শনিবার প্রথম দিন ফুল বিজুর দিনে বিজু-সাংগ্রাই-বৈসু-বিষু-বিহু সাংক্রাইন, সাংক্রান, পাতা- উদযাপন কমিটির উদ্যোগে রাঙামাটিতে কেন্দ্রীয়ভাবে সকাল ৭টায় রাজ বন বিহার পূর্বঘাটে পানিতে ফুল নিবেদন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সহ-সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য উষাতন তালুকদার। এ সময় উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক প্রকৃতি রঞ্জন চাকমাসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন। এর আগে একটি নৃত্য পরিবেশন করা হয়। পরে শোভাযাত্রাসহ ঘাটে গিয়ে পানিতে ফুল নিবেদন করা হয়। এ সময় শিশুসহ নারী-পুরুষ অংশ নেন।
এছাড়া পৃথকভাবে রাঙামাটি শহরে কোরানী পাহাড়, আসামবস্তি, গর্জনতলীসহ উপজেলার বিভিন্ন স্থানে পানিতে ফুল নিবেদন করেছেন পাহাড়ি সম্প্রদায়ের লোকজন। শহরের কোরানী পাহাড় এলাকায় ভোর থেকে শতশত নারী-পুরুষ ঐতিহ্যবাহী নিজস্ব পোশাকে কলাপাতায় করে কাপ্তাই হ্রদের পানিতে ফুল নিবেদন করেছেন। তারা জানিয়েছেন, উৎসবের প্রথম দিনে ফুল বিজুতে পুরাতন বছরের সমস্ত দুঃখ,কষ্ট, গ্লানি বেদনা, ভয়, অন্তরায় উপদ্রবকে মুছে ফেলে দিয়ে নতুন বছর যাতে সুখ-শান্তি, পার্বত্য চট্টগ্রামের পরিস্থিতি যেন অনাবিল শান্তি বয়ে আনে সেই উদ্দেশ্য নিয়ে কলাপাতার মাধ্যম নদীতে গঙ্গা মা’র উদ্দেশ্যে ফুল নিবেদন করেছেন। ফুল বিজুর দিনে ফুল দিয়ে বাড়ির ঘর সাজায়, ঘর পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করে। তরুণ-তরুণীরা পাড়ায় পাহাড় বৃদ্ধদের শ্রদ্ধার সঙ্গে স্নান করায়। সন্ধ্যায় বৌদ্ধ মন্দির, নদীর ঘাটে, বাড়িতে প্রদীপ প্রজ্জ্বালন করে থাকে।
আগামীকাল রোববার উৎসবের দ্বিতীয় দিন মূল বিজু। এ দিনে বাড়িতে বাড়িতে শুধু চলে খাওয়া-দাওয়ার পর্ব ও আনন্দ-ফুর্তি। ৩০ থেকে ৪০ প্রকারের তরকারি দিয়ে রান্না করা হয় ঐতিহ্যবাহী পাজন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে উষাতন তালুকদার বলেন, আগামী দিনে একে অপরকে ভ্রাতৃত্ব বন্ধনে আবদ্ধ করে বাংলাদেশকে আরও এগিয়ে নিতে হবে। পাশাপাশি পার্বত্য চট্টগ্রাম পরিস্থিতির স্থায়ী একটি সমাধান এবং উপনিবেশিক শোষন বন্ধ করে আগামী দিনের নতুন সুন্দর ভষিব্যৎ কামনা করেন তিনি।
পুরাতন বছরের দুঃখ কষ্ট ও গ্লানি মুছে ফেলে নতুন বছরে নব উদ্যোগের শুভকামনা জানাতে বাংলা বর্ষের শেষ দুইদিন ও নতুন বছরের প্রথম দিন এ উৎসব পালন করে থাকে পাহাড়ে বসবাসরত বিভিন্ন সম্প্রদায়ের লোকজন। পার্বত্য চট্টগ্রামের রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানের ১৩ ভাষাভাষী ১৪টি ক্ষুদ্র পাহাড়ি জাতিসত্ত্বার বসবাস। এসব জাতি গোষ্ঠীদের রয়েছে ঐতিহ্যবাহী প্রধান সামাজিক উৎসব হিসেবে বিজু, সাংগ্রাই, বৈসু, বিষু, বিহু, সাংক্রাই, পাতা। তবে এ উৎসবকে চাকমা সম্প্রদায় বিজু, মারমারা সাংগ্রাই, ত্রিপুরা বৈসু, তংচংগ্যারা বিষু, অহমিয়ারা বিহু, খুমিরা সাংক্রাই, সাঁওতালরা পাতা হিসেবে অভিহিত করে থাকলেও এর নিবেদন কিন্তু একই। তাই এ উৎসবটি আদিবাসী পাহাড়িদের শুধু আনন্দের নয়, পার্বত্য চট্টগ্রামের সকল সম্প্রদায়ের সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ঐক্য ও মৈত্রী বন্ধনের প্রতীকও বটে।