নিহত ছাত্রদল কর্মী অপূর্বের পরিবারকে তারেক রহমানের ফোন, দিলেন শান্তনা
Published: 11th, March 2025 GMT
নারায়ণগঞ্জ শহরের চাষাড়ায় ছুরিকাঘাতে নিহত ছাত্রদল কর্মী অপূর্বের (২৫) পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ফোনে কথা বলে খোঁজ-খবর ও শান্তনা দিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
এসময় তিনি অপূর্বের পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দেন।
গতকাল সোমবার (১০ মার্চ) রাত সাড়ে ১১টার দিকে শহরের মাসদাইর এলাকায় নিহত অপূর্বর বাড়িতে যান ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শ্যামল মালুম।
এসময় তার সঙ্গে আরো উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সহ- সভাপতি আশিক রহমান, নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের সদস্য সচিব শাহেদ আহমেদ, মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আজিজুল ইসলাম রাজীবসহ ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ফোনে ছাত্রদলকর্মী নিহত অপূর্বের মা-বাবাকে বলেন, আপনাদের সান্ত্বনা দেওয়ার ভাষা আমার নেই। আমিও আমার ভাইকে হারিয়েছি। সন্তান হারানোর বেদনার চেয়ে বেশি তো কিছু নেই।
আমরা আমাদের দলের পক্ষ থেকে চেষ্টা করব এই ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের যেন আইনের আওতায় নিয়ে আসা হয়। আমরা আমাদের দলের পক্ষ থেকে আপনাদের পাশে থাকার চেষ্টা করব।
তারেক রহমান আরো বলেন, বিগত ১৬ বছরে আমাদের দলের বহু নেতাকর্মী নির্যাতনের শিকার হয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। যেকোনো প্রয়োজনে আপনারা আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করবেন আমাদের পক্ষ থেকে আমরা আপনার পরিবারের পাশে থাকার চেষ্টা করব।
উল্লেখ্য, গত রবিবার চাষাড়ার বালুর মাঠ এলাকায় তুচ্ছ ঘটনায় বাক-বিতন্ডায় জড়ায় সম্রাট। একপর্যায়ে অপূর্ব'র বুকে ছুরিকাঘাত করে সম্রাট।
এসময় সে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে।
পরে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এসময় উত্তেজিত জনতা সম্রাটকে মারধর শুরু করে করে পুলিশে সোপর্দ করে। ছাত্রদল কর্মী অপূর্ব (২০), মাসদাইর এলাকার খোকন মিয়ার ছেলে।
.উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: ব এনপ ন র য়ণগঞ জ ত র ক রহম ন ছ ত র দল
এছাড়াও পড়ুন:
কাঠগড়ায় হাতকড়া না খোলায় ক্ষুব্ধ ইনু-জর্জ, উত্তপ্ত এজলাস
কুষ্টিয়া মডেল থানায় দায়ের হওয়া একটি হত্যাচেষ্টা মামলায় হাজিরা দিয়েছন দুই সাবেক সংসদ সদস্য হাসানুল হক ইনু ও সেলিম আলতাফ র্জজ। মঙ্গলবার দুপুরে তারা কুষ্টিয়া সদর আমলি আদালতে হাজির হন। এ সময় আদালতের এজলাসে ইনু ও জর্জকে কঠাগড়ায় তোলা হয় হাতকড়াসহ। এসময় ইনুর আইনজীবী তার জামিন আবেদন করেন। তবে আদালত জামিন না মঞ্জুর করে ইনুসহ দ্জুনকেই কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
হাসানুল হক ইনুকে হাতকড়া পরিহিত অবস্থায় কাঠগোড়ায় তোলা নিয়ে প্রতিবাদ জানান ইনুর আইনজীবীরা। এ নিয়ে অল্প সময়ের জন্য আদালত কক্ষ উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। পুলিশের এমন আচরণের বিষয়টি আদালতের কাছে তুলে ধরেন ইনু ও জর্জ। পরে পরিস্থিতি শান্ত হয়। ইনুর আইনজীবীসহ কয়েকজন আইনজীবীর সাথে কথা বলে এই তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে।
আদালত সূত্র জানায়, গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনে কুষ্টিয়া শহরে আমলাপাড়া এলাকার বাসিন্দা শরিফুল ইসলাম শরিফ নামে এক যুবক গুলিতে আহত হন। তার হাতে ও পায়ের মধ্যে এখনো গুলি রয়েছে। বিচারের আশায় একই বছরের ৩ সেপ্টেম্বর তিনি বাদী হয়ে কুষ্টিয়া মডেল থানায় হত্যাচেষ্টার অভিযোগে মামলা দায়ের করেন। মামলায় ৬৪ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে আরও ৭০ থেকে ৮০ জনকে। এই মামলায় কুষ্টিয়া-২(মিরপুর-ভেড়ামারা) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য হাসানুল হক ইনু এজাহারভুক্ত ৩৭ নম্বর আসামি। আর কুষ্টিয়া-৪(কুমারখালী-খোকসা) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সেলিম আলতাফ জর্জ ৩৩ নম্বর আসামি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মঙ্গলবার দুপুর ২টার দিকে তাদের দুজনকে হাজিরা দিতে আদালতে নেওয়া হয়। কুষ্টিয়া কারাগার থেকে কড়া নিরাপত্তায় প্রিজনভ্যানে তাদের আদালত ভবনের দোতলায় সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মাহমুদা সুলতানার আদালতে নেওয়া হয়। এসময় ইনু ও জর্জের দুই হাতে সামনে রেখে হাতকড়া পড়ানো ছিল। দুজনের মাথায় পুলিশের হেলমেট ও শরীরে পুলিশের ভেস্ট পরানো ছিল।
২টা ১০ মিনিটের দিকে দুজনকেই এজলাসে নেওয়া হয়। এসময় হাসানুল হক ইনু হাতকড়া পরা অবস্থায় কাঠগড়ায় উঠতে আপত্তি জানান। তার আইনজীবী তানজিলুর রহমান এনাম ও আকরাম হোসেন দুলাল বলেন, কাঠগড়ায় তোলার পর এক পুলিশ কর্মকর্তা তাদেরকে বসতে বলেন। তবে সেসময় আদালতে বিচারক উপস্থিত ছিলেন না। বসার কথা শোনার সাথে সাথে হাসানুল হক ইনু উত্তেজিত হয়ে পড়েন এবং তিনি হাতকড়া খুলে দিতে বলেন। তবে পুলিশ কর্মকর্তারা চুপচাপ থাকেন।
একপর্যায়ে ইনু বলতে থাকেন,‘হাতকড়া খোলেন, হাতকড়া খোলেন। কেন কাঠগড়াতে হাতকড়া পরা থাকবো।’ তবে পুরো সময় সেলিম আলতাফ জর্জ চুপ ছিলেন।
এই নিয়ে পুলিশ কর্মকর্তাদের সাথে হাসানুল হক ইনু ও তার আইনজীবীদের বাকবিতন্ডা হয়। উত্তপ্ত পরিবেশ সৃষ্টি হয়। কয়েক মিনিট এমন হবার পর এক পুলিশ কর্মকর্তা বিচারকের খাস কামরায় যান। সেখান থেকে ফিরে এসে হাসানুল হক ইনুর হাতকড়া একহাত খুলে রাখেন। পুলিশের উপ-পরিদর্শক জিলানী ওই সময় সেলিম আলতাফের হাতকড়া খুলতে গেলে তিনি খুলবেন না বলে তাকে জানান। পুলিশ জোর করলেও খুলতে দেন না তিনি।
কয়েক মিনিট পর আদালত শুরু হলে সিনিয়র আইনজীবী আকরাম হোসেন দুলাল সাবেক মন্ত্রী হাসানুল হক ইনুর জামিন আবেদন করেন। শুনানি শেষে উপপরিদর্শক জিলানী আসামিকে জামিন না দেবার যুক্তি তুলে ধরেন।
সিনিয়র আইনজীবী আকরাম হোসেন দুলাল বলেন, একপর্যায়ে সেলিম আলতাফ জর্জ কথা বলার অনুমতি চান বিচারকের কাছে। অনুমতি নিয়ে তিনি সামনে দুই হাত হাতকড়া পরা অবস্থায় তুলে বলতে থাকেন,‘আদালতের সামনে যখন কোন আসামির হাতে হাতকড়া অবস্থায় উপাস্থাপন করা হয় এবং আদালত যদি সেটা দেখেন তাহলে এটা বুঝতে হবে টোটাল জুডিসিয়ালের হাতেই হাতকড়া।’
এসময় আদালত হাতকড়া খুলে দিতে বলেন। তবে জর্জ আর হাতকড়া খুলতে দেননি। বিচারক তাদেরকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। সবমিলিয়ে প্রায় ২০মিনিট তারা কাঠগড়াতে দাঁড়িয়ে ছিলেন।
পুলিশ দ্রুত জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সভাপতি ও সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু ও সাবেক সংসদ সদস্য সেলিম আলতাফ জর্জকে বের করে প্রিজনভ্যানে তোলেন। এজলাস থেকে বের প্রিজনভ্যানে যাবার সময় আদালত চত্বরে একটু দূরে দাঁড়িয়ে থাকা দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে হেসে হাত নেড়ে ইশারা দেন ইনু। এসময় তার একহাতে হাতকড়া ছিল। পাশে থাকা জর্জও হাত তুলে ইশারা দেন। তবে তার দুই হাতেই হাতকড়া ছিল।
আইনজীবী তানজিলুর রহমান বলেন, কোনো আইনে নেই এজলাসে কাঠগড়াতে আসামির হাতে হাতকড়া পরানো অবস্থায় রাখতে হবে। এ নিয়ে বেশ উত্তপ্ত ছিল এজলাস।
জানতে চাইলে কুষ্টিয়া আদালতের পরিদর্শক জহুরুল ইসলাম বলেন,‘দুজনের হাজিরার তারিখ ছিল। একজনের জামিন ধরা হয়েছিল। জামিন না মঞ্জুর হয়েছে। পরে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে।’
হাতকড়া পরিয়ে কাঠগড়ায় তোলার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি আরও বলেন, আমরাতো হাতকড়া পরিয়ে ওভাবে নিয়ে যাই। আদালত যেমন বলবে, আমরা তেমন হুকুম পালন করি। আদালত পরে বলছে হাতকড়া খুলে দিতে আমরা খুলে দিয়েছি। আদালত যেই নিদের্শ দেবে সেটা আমরা শুনব। আদালত নির্দেশ দিয়েছেন আমরা হাতকড়া খুলে দিয়েছি।’
জর্জের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন,‘আমরা খুলতে চেয়েছিলাম, কিন্তু তিনি খুলতে দেননি।’