বেসরকারি ইন্টারন্যাশনাল মেডিকেল কলেজের ব্যাপারে ছয় মাসের ব্যবধানে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় অবস্থান পাল্টিয়েছে। গত জুনে বলেছিল, কলেজে শিক্ষক ও পরিসর (স্পেস) ঘাটতি এবং হাসপাতাল রোগী কম আসাসহ কয়েকটি কারণে কলেজের আসন কমানোর পাশাপাশি শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধ রাখতে হবে। নভেম্বরে কিছু শর্ত জুড়ে দিয়ে বলছে, আসন ঠিক থাকবে, নতুন ভর্তিতে বাধা নেই।

শুধু এই একটি মেডিকেল কলেজের ক্ষেত্রে এমন ঘটছে তা নয়, বছর বছর এমন লুকোচুরি চলছে। প্রায় সব বেসরকারি মেডিকেল কলেজের ক্ষেত্রে এটা দেখা যাচ্ছে। কেউই শর্ত পুরোপুরি মানছে না। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর এবং বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কলেজের (বিএমডিসি) প্রতিনিধিরা কলেজ পরিদর্শন করে প্রতিবেদন জমা দেন। প্রতিবেদনে কলেজগুলোর নানা ধরনের ত্রুটি ও সীমাবদ্ধতা উল্লেখ করা হয়। এগুলো দূর করে শর্ত সাপেক্ষে কলেজ চালুর অনুমতিও দেওয়া হয়। যদিও শর্ত পূরণ না করেই কলেজ চলতে থাকে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, শর্ত না মানাই বেসরকারি মেডিকেলের অভ্যাস।

দেশে বেসরকারি মেডিকেল কলেজ আছে ৭১টি। গত তিন বছরে দুটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজ বন্ধ করে দিয়েছে। এগুলো হলো সাভারের আশুলিয়ায় নাইটিঙ্গেল মেডিকেল কলেজ ও মোহাম্মদপুরের কেয়ার মেডিকেল কলেজ। রাজশাহীর শাহ মখদুম, রাজধানীর আইচি ও নর্দার্ন মেডিকেল কলেজ এবং রংপুর নর্দার্ন—চারটি মেডিকেল কলেজকে অবকাঠামো উন্নতিসহ নানা শর্ত দিয়ে ভর্তি স্থগিত রেখেছে সরকার। ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে ৬৭টি বেসরকারি মেডিকেল কলেজে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হবে।

স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক নাজমুল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘সরকারি বা বেসরকারি মেডিকেল কলেজ খুব কম আছে, যারা আদর্শ অবস্থায় চলছে। কিছু মেডিকেল কলেজের দুর্বলতা সামান্য, কিছু কলেজের মারাত্মক। আমাদের কাজ মেডিকেল শিক্ষাকে এগিয়ে নেওয়া, মান উন্নত করা, মান বজায় রাখা, মেডিকেল কলেজ বন্ধ করা নয়।’

প্রতিবেদনে কলেজগুলোর নানা ধরনের ত্রুটি ও সীমাবদ্ধতা উল্লেখ করা হয়। এগুলো দূর করে শর্ত সাপেক্ষে কলেজ চালুর অনুমতিও দেওয়া হয়। যদিও শর্ত পূরণ না করেই কলেজ চলতে থাকে।বাইরে ফিটফাট

গাজীপুরের গুশুলিয়া এলাকায় ২০০০ সালে ৫০ জন শিক্ষার্থী নিয়ে ইন্টারন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ যাত্রা শুরু করে। এখন কলেজটি বছরে ১৩০ জন শিক্ষার্থী ভর্তি করে।

২৮ জানুয়ারি ইন্টারন্যাশনাল মেডিকেল কলেজে গিয়ে কিছু অবকাঠামো উন্নয়নকাজ চোখে পড়ে। একটি বড় লাইব্রেরি ও একাধিক লেকচার থিয়েটার তৈরির কাজ চোখে পড়ল।

কলেজ চত্বরে একটি বড় পুকুর আছে। কলেজ ভবন, হাসপাতাল ভবন, মিলনায়তন, ছাত্র ও ছাত্রীদের পৃথক আবাসন (হোস্টেল), ইন্টার্ন চিকিৎসকদের জন্য পৃথক হোস্টেল চোখে পড়ল। রয়েছে ছোট একটি খেলার মাঠও।

দুই বছর আগে সরকারি চাকরি থেকে অবসর নেওয়ার পর এই কলেজের অধ্যক্ষের দায়িত্ব নিয়েছেন অধ্যাপক এ এস এম ইকবাল হোসেন চৌধুরী। তিনি বলেন, কলেজ ঠিকঠাকমতো চলছে। প্রয়োজনীয় সংখ্যক শিক্ষক আছে, দিন দিন কলেজের উন্নতির চেষ্টাও চলছে।

তাহলে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কেন ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি বন্ধ এবং শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১৩০ থেকে কমিয়ে ৫০ করতে বলেছিল, এমন প্রশ্নের উত্তরে এ এস এম ইকবাল হোসেন চৌধুরী বলেন, এখন সব ঠিক হয়ে গেছে।

যাঁরা আইন তৈরি করেছেন, আর যাঁরা কলেজের মালিক, তাঁদের কাছে শিক্ষাটা গৌণ হয়ে পড়েছে। এ নিয়ে উন্মুক্ত বিতর্ক ও আলোচনা হওয়া দরকার। তবে এভাবে আর চলতে দেওয়া ঠিক না। এতে ক্ষতি হয়েই চলেছে। রশীদ-ই-মাহবুব, সাবেক সভাপতি, বিএমএকী ঠিক হলো

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা অনুষদ, বিএমডিসি, স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর, মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য শিক্ষা বিভাগ, সরকারি মেডিকেল কলেজের মোট সাতজন প্রতিনিধি ইন্টারন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ পরিদর্শন শেষে গত বছর ৯ জুন মন্ত্রণালয়ে আট দফা সুপারিশসহ একটি প্রতিবেদন জমা দেন।

প্রতিবেদনে বলা হয়, হাসপাতালে রোগী কম থাকে, কলেজ ও হাসপাতালে পরিসর (স্পেস) ঘাটতি আছে, ৩টি লেকচার থিয়েটার ও ৩০টি টিউটোরিয়াল রুমের কমতি আছে, ৬টি বিভাগে ৩৭ জন শিক্ষকের ঘাটতি আছে। সুপারিশে বলা হয়, ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষ এমবিবিএস ভর্তি কার্যক্রম স্থগিত ও আসনসংখ্যা ১৩০ থেকে ৫০ নির্ধারণ করা যেতে পারে। আরও বলা হয়, কলেজটির শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে যেতে হলে ঘাটতি পূরণ করতে হবে।

১৫ অক্টোবর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কলেজের অধ্যক্ষকে চিঠি দিয়ে পরিদর্শক দলের সুপারিশের ব্যাপারে ব্যাখ্যা জানতে চায়। এরপর কলেজ কর্তৃপক্ষ স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগমের সঙ্গে দেখা করে নতুনভাবে কলেজ পরিদর্শনের দাবি জানান।

ওই সময় ইন্টারন্যাশনাল মেডিকেল কলেজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং বেসরকারি মেডিকেল কলেজ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এম এ মবিন খান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের প্রতি অন্যায় করা হয়েছে। আমরা পুনঃ তদন্ত চাই।’

১৯ নভেম্বরে ছয় সদস্যের নতুন একটি দল কলেজটি পরিদর্শনে যায়। দলটি ওই মাসের ২৪ তারিখ নতুন প্রতিবেদন জমা দেয়। প্রতিবেদনে বলা আছে, ৯টি বিভাগে ৪৬ জন শিক্ষকের ঘাটতি আছে, চলমান নির্মাণকাজ শেষ হলেও একাডেমিক ভবনের পরিসরের (স্পেস) ঘাটতি থাকবে প্রায় ১১ হাজার বর্গফুট, হাসপাতালে শয্যার সংখ্যা কম এবং যে শয্যা আছে তার ৪০ শতাংশ ফাঁকা।

প্রতিবেদনের মতামত অংশে বলা হয়েছে, কলেজটির শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে যেতে অনুমোদন দেওয়া যেতে পারে। আরও বলা হয়েছে, ‘এক বছরের মধ্যে ঘাটতিসমূহ পূরণ করা না হলে পরবর্তীতে মেডিকেল কলেজটির অনুমোদন স্থগিত করা হবে।’

গত তিন বছরে দুটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজ বন্ধ করে দিয়েছে সরকার।এমন ঘটেছে বারবার

শর্ত পূরণ না করার ঘটনা ইন্টারন্যাশনাল মেডিকেল কলেজের ক্ষেত্রে আগেও ঘটেছে। বিভিন্ন সময়ে কলেজ পরিদর্শন প্রতিবেদন এবং কলেজ কর্তৃপক্ষকে দেওয়া মন্ত্রণালয়ের চিঠিতে দেখা যায়, কলেজটি নিয়মিতভাবে শর্ত ভঙ্গ করে চলেছে। আবার শর্ত পুরোপুরি পূরণ না করলেও কলেজটি চালিয়ে যাওয়ার বা শিক্ষার্থীর সংখ্যা বাড়ানোর অনুমতি দিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

২০০৬ সালের একটি পরিদর্শন প্রতিবেদন বলছে, কলেজটিতে প্রয়োজনীয় সংখ্যক শিক্ষক নেই, হাসপাতালে পর্যাপ্ত রোগী থাকে না, রোগীর তথ্য ঠিকভাবে রাখা হয় না। চারজনের পরিদর্শক দল দুটি শর্ত পূরণ সাপেক্ষে শিক্ষার্থীদের আসনসংখ্যা ৫০ থেকে বাড়িয়ে ৭০ করার অনুমতি দেয়।

কিন্তু পরের বছর স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিদর্শক দল কলেজে গিয়ে জানতে পারে কর্তৃপক্ষ শর্ত পূরণ করেনি। তখন নতুন শিক্ষার্থী ভর্তি স্থগিত রাখার সুপারিশ করে পরিদর্শক দল। কিন্তু আট মাসের মাথায় সেই স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করে মন্ত্রণালয়। ৭৫ জন শিক্ষার্থী ভর্তি করানোর অনুমতি দেয়।

এভাবে এক–দুই বছর পরপর কলেজটিতে আসনসংখ্যা বাড়তে থাকে। ২০১১ সালে আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্যমন্ত্রী রুহুল হকের সময় কলেজটির আসনসংখ্যা ১০০ এবং ২০১৩ সালে ১২০ করা হয়। এরপর স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক কলেজটির আসনসংখ্যা বাড়িয়ে ১৩০ করেন।

রাজশাহীর শাহ মখদুম, রাজধানীর আইচি ও নর্দার্ন মেডিকেল কলেজ এবং রংপুর নর্দার্নে ভর্তি স্থগিত।প্রায় সব কলেজ চলছে এভাবেই

১৯৮৬ সালে রাজধানীর ধানমন্ডির বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে দেশে বেসরকারি মেডিকেল কলেজের যাত্রা শুরু হয়। ৩৯ বছরেও কলেজটি সরকারের দেওয়া সব শর্ত মানছে না। কলেজটির বিরুদ্ধে অভিযোগ, কলেজটির নামে কোনো জমি নেই, পর্যাপ্ত টিউটোরিয়াল রুম নেই।

বেসরকারি মেডিকেল কলেজ আইনে বলা আছে, কলেজ ও হাসপাতাল হতে হবে নিজস্ব জমিতে, ঢাকা ও ঢাকার বাইরের কলেজে নির্দিষ্ট পরিমাণ পরিসর (স্পেস) থাকতে হবে, শিক্ষক–শিক্ষার্থীর নির্দিষ্ট অনুপাত হবে, ছাত্র ও ছাত্রীদের জন্য পৃথক হোস্টেল থাকতে হবে।

কলেজ বা হাসপাতালের নিজস্ব জায়গা না থাকা, ভবন থাকলেও পরিসর কম, শিক্ষক স্বল্পতা, ছাত্রছাত্রীদের হোস্টেল না থাকা—এগুলো বেসরকারি মেডিকেল কলেজগুলোর সাধারণ সমস্যা। এই সমস্যাগুলো পুরোনো। এসব জানার পরও ২০১১ সালে একটি সভায় তখনকার স্বাস্থ্যমন্ত্রী আ ফ ম রুহুল হক রাজধানীর শ্যামলীর রিং রোড এলাকায় ঢাকা সেন্ট্রাল ইন্টারন্যাশনাল মেডিকেল কলেজের অনুমোদন দেন। শুরু থেকে এ পর্যন্ত কলেজটি অনেক শর্ত পূরণ না করেই বছর পার করছে।

২ ফেব্রুয়ারি ওই হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, একটি গলির মধ্যে বেশ কয়েকটি বাড়িতে কলেজটির শিক্ষা কার্যক্রম চলে। মূল রাস্তায় একটি ভবনের কয়েকটি তলা নিয়ে চলছে হাসপাতাল। দেশি ছাত্রদের জন্য কোনো হোস্টেল নেই। দেশি ছাত্রী এবং বিদেশি ছাত্রীদের হোস্টেল ভাড়া বাড়িতে। কলেজ, হাসপাতাল ও হোস্টেল নিজের জমিতে হবে—এমন শর্তে কলেজের অনুমোদন দেওয়া হয়। কলেজের নামে কয়েক শ কোটি টাকা ঋণও নেওয়া আছে।

২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে ৬৭টি বেসরকারি মেডিকেল কলেজে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হবে।

কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক এ বি এম আবদুল মতিন কলেজের বিষয়ে প্রথম আলোর সঙ্গে কথা বলতে অস্বীকৃতি জানান। তিনি কলেজের চেয়ারম্যান আব্দুল হাই চৌধুরীর সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন। ১০ ফেব্রুয়ারি মুঠোফোনে কলেজের চেয়ারম্যান প্রথম আলোকে বলেন, ‘হাসপাতাল ও কলেজ কিছু নিজস্ব ভবনে, কিছু ভাড়া ভবনে চলছে। সবার কমবেশি সীমাবদ্ধতা আছে, আমাদেরও আছে। আর ঋণের ব্যাপারটি আমরা সমন্বয়ের চেষ্টা করছি।’

যাঁরা আইন তৈরি করেছেন, আর যাঁরা কলেজের মালিক, তাঁদের কাছে শিক্ষাটা গৌণ হয়ে পড়েছে। এ নিয়ে উন্মুক্ত বিতর্ক ও আলোচনা হওয়া দরকার। তবে এভাবে আর চলতে দেওয়া ঠিক না। এতে ক্ষতি হয়েই চলেছে।প্রবীণ চিকিৎসক ও বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি অধ্যাপক রশীদ-ই-মাহবুব

মেডিকেল কলেজগুলো সীমাবদ্ধতার মধ্যে চললে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হন শিক্ষার্থীরা। শিক্ষক–স্বল্পতার কারণে তাঁরা মানসম্পন্ন শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হন। আবার সুসজ্জিত ল্যাবরেটরি অভাব ও হাসপাতালে রোগী দেখার সুযোগ না থাকার কারণে শিক্ষার্থীরা হাতে–কলমে শেখার সুযোগ পান না। ফলে পূর্ণাঙ্গ জ্ঞান ও প্রশিক্ষণ ছাড়াই এমবিবিএস ডিগ্রি নিয়ে প্রতিবছর বহু চিকিৎসক বেসরকারি মেডিকেল থেকে বের হচ্ছেন। অনেকে মনে করেন, চিকিৎসক ও চিকিৎসাব্যবস্থা নিয়ে সাম্প্রতিক সময়ে যে অসন্তোষ ও অভিযোগ, তার একটি কারণ বেসরকারি মেডিকেল কলেজগুলোর অপূর্ণতা, অব্যবস্থাপনা।

প্রবীণ চিকিৎসক ও বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি অধ্যাপক রশীদ-ই-মাহবুব প্রথম আলোকে বলেন, ‘যাঁরা আইন তৈরি করেছেন, আর যাঁরা কলেজের মালিক, তাঁদের কাছে শিক্ষাটা গৌণ হয়ে পড়েছে। এ নিয়ে উন্মুক্ত বিতর্ক ও আলোচনা হওয়া দরকার। তবে এভাবে আর চলতে দেওয়া ঠিক না। এতে ক্ষতি হয়েই চলেছে।’

১৯৮৬ সালে রাজধানীর ধানমন্ডির বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে দেশে বেসরকারি মেডিকেল কলেজের যাত্রা শুরু হয়। ৩৯ বছরেও কলেজটি সরকারের দেওয়া সব শর্ত মানছে না। কলেজটির বিরুদ্ধে অভিযোগ, কলেজটির নামে কোনো জমি নেই, পর্যাপ্ত টিউটোরিয়াল রুম নেই।.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: প রথম আল ক কল জ র ম জন শ ক ষ ব সরক র চ ক ৎসক কল জ চ কল জ প র অন ম কল জ ব ইন ট র ও কল জ

এছাড়াও পড়ুন:

জার্মানিতে ৩ বছরে নাগরিকত্ব পাওয়ার আইন বাতিল হচ্ছে

জার্মানিতে তিন বছরের মধ্যে নাগরিকত্ব পাওয়ার যে বিধান বিদায়ী সরকার চালু করেছিল, তা বাতিলের পথে হাঁটছে নতুন সরকার। সম্প্রতি গঠিত নতুন জোট সরকার তাদের চুক্তিপত্রে বিষয়টি স্পষ্ট করেছে।

শুক্রবার (১১ এপ্রিল) পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউন এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে। 

প্রতিবেদনে বলা হয়,  সদ্য গঠিত রক্ষণশীল খ্রিস্টান ডেমোক্রেটিক ইউনিয়ন (সিডিইউ)/খ্রিস্টান সোশ্যাল ইউনিয়ন (সিএসইউ) এবং মধ্য বামপন্থি সোশ্যাল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এসপিডি) যৌথ জোট সরকারের চুক্তিপত্রে এই পরিকল্পনার উল্লেখ রয়েছে।

আরো পড়ুন:

নাটকীয় ম্যাচে ইতালিকে হারিয়ে প্রথমবার সেমিফাইনালে জার্মানি

জার্মানির নির্বাচনে রক্ষণশীলদের জয়, চ্যান্সেলর হচ্ছেন ফ্রিডরিখ মের্ৎস

গত ২৩ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত মধ্যবর্তী নির্বাচনের পর সরকার গঠনে এই দুই দলের সমঝোতা হয়। জোটের চুক্তি অনুযায়ী, নাগরিকত্ব আইনে পূর্ববর্তী সরকারের আনা কিছু সংস্কার বাতিল করা হবে। বিশেষ করে ওলাফ শলৎসের নেতৃত্বাধীন বিদায়ী সরকারের ২০২৪ সালের জুনে প্রবর্তিত ‘তিন বছরে নাগরিকত্ব’ পাওয়ার সুযোগটি বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে নতুন সরকার।

বিদায়ী চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎসের নেতৃত্বাধীন সরকার বিদেশিদের জন্য নাগরিকত্ব প্রাপ্তি সহজ করতে একাধিক সংস্কার এনেছিল। এর মধ্যে অন্যতম ছিল- যদি কেউ জার্মান সমাজে সফলভাবে একীভূত হয় এবং সি১ লেভেলের ভাষাজ্ঞান অর্জন করে, তাহলে মাত্র তিন বছরের মধ্যেই তাকে নাগরিকত্ব দেওয়া যাবে।

তবে এর তীব্র সমালোচনা করে সিডিইউ/সিএসইউ। তাদের মতে, মাত্র তিন বছরে নাগরিকত্ব দেওয়া হলে সেটি হবে ‘অতি সহজলভ্য’, যা জার্মানির নাগরিকত্বের মর্যাদাকে ক্ষুণ্ন করতে পারে।

যদিও দ্রুত নাগরিকত্ব পাওয়ার নিয়ম বাতিল হচ্ছে, তবে পাঁচ বছর বসবাসের পর নাগরিকত্ব পাওয়ার নিয়মটি বহাল থাকবে। 

এছাড়া বিতর্কিত দ্বৈত নাগরিকত্বও সুবিধাটিও বহাল থাকছে।

২০২৪ সালে আইন সংস্কারের আগে, ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাইরের দেশগুলো থেকে আগত অভিবাসীদের জন্য দ্বৈত নাগরিকত্ব মূলত নিষিদ্ধ ছিল। বিদায়ী ওলাফ শলৎস সরকার সংশোধিত আইনে ‘দ্বৈত নাগরিকত্বের’ অনুমোদন দিয়েছিলেন। এই পরিবর্তনের ফলে নাগরিকত্বের আবেদনের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে, বিশেষ করে জার্মানির বৃহৎ তুর্কি জনসংখ্যার মধ্যে।

সিডিইউ নেতা এবং সম্ভাব্য পরবর্তী চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ মের্জ দ্বৈত নাগরিকত্বের বিরোধীতা করেছিলেন। তবে এসপিডির সঙ্গে জোট আলোচনার অংশ হিসাবে নীতিটি বহাল রাখতে সম্মত হয়েছেন।

নতুন জোট সরকার উগ্রপন্থি মতাদর্শকে সমর্থনকারীদের ‘দ্বৈত নাগরিকত্ব’ প্রত্যাহারের বিষয়টিও উড়িয়ে দিয়েছে।

সিডিইউ/সিএসইউ এর আগে বলেছিল, যদি কোনো দ্বৈত নাগরিক সন্ত্রাসী কার্যক্রমে জড়িত হন, ইহুদিবিদ্বেষী হন বা চরমপন্থী মতাদর্শে বিশ্বাস করেন, তাহলে তার জার্মান নাগরিকত্ব বাতিল করা হবে। তবে এই প্রস্তাবটি এসপিডি এবং অভিবাসী সংগঠনগুলোর ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছিল।

এর পরিবর্তে, নতুন সরকার জার্মানির গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার জন্য হুমকিস্বরূপ অ-নাগরিকদের বহিষ্কার করার জন্য বিকল্প আইনগুলোতে জোর দেবে।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বার্সেলোনা নয়, মেসি মায়ামিতেই থাকছেন
  • জার্মানিতে ৩ বছরে নাগরিকত্ব পাওয়ার আইন বাতিল হচ্ছে
  • ‘গণতান্ত্রিক নাগরিক শক্তি`র আত্মপ্রকাশ
  • মিরাজ বর্ষসেরা, দর্শকের হৃদয়ে জায়গা করে নিলেন ঋতুপর্ণা
  • বর্ষসেরা ক্রীড়াবিদ মিরাজ, দর্শকদের পছন্দে সেরা ঋতুপর্ণা
  • কৃষি গুচ্ছভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা ১২ এপ্রিল
  • রাজউকের সাবেক চেয়ার‍ম্যান সিদ্দিকুরের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানে দুদক
  • কৃষিগুচ্ছে ভর্তি পরীক্ষা শনিবার, কেন্দ্র নিয়ে শিক্ষার্থীদের সতর্কতা
  • শেয়ারহোল্ডারদের নগদ লভ্যাংশ দিল ২ কোম্পানি
  • স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সংশোধিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি, পদ ৪৬টি