৪৪ ফুট দৈর্ঘ্যের নকশিকাঁথা দিয়ে সাজানো হয়েছে আড়ংয়ের ধানমন্ডির নতুন বিক্রয়কেন্দ্র। নিচতলা থেকে চতুর্থ তলা পর্যন্ত এক দেয়ালে সাঁটানো আছে এই নকশিকাঁথা। এ নিয়ে ক্রেতা–দর্শনার্থীদের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ দেখা যাচ্ছে। এটি বাংলাদেশের অন্যতম বড় নকশিকাঁথা বলে অনেকেই বলছেন।

জানা গেছে, ২৫০ জন কারিগর প্রায় ৬ মাস সময় নিয়ে তৈরি করেন ৪৪ ফুট দৈর্ঘ্যের এই নকশিকাঁথা। যা তৈরিতে ব্যবহার করা হয়েছে পুরোনো কাপড়, অব্যবহৃত পুঁতি আর ফেলে দেওয়া অলংকারের টুকরা। বিক্রয়কেন্দ্রটির মূল আকর্ষণ এই নিচতলা থেকে চারতলা পর্যন্ত দেয়ালে লাগানো ‘মহারঙ্গ’ নামের নকশিকাঁথা। সেখানে এই মহারঙ্গের পরিচিত তুলে ধরা হয়েছে।

কাঁথাটির এক অংশে ভেসে উঠেছে গোধূলির আলো, আবার ঠিক এর ওপরই দেখা মেলে পরিচিত নগরীর দৃশ্যপট। একেবারে ওপরের অংশে ফুটে উঠেছে এক বৃদ্ধার আপনমনে তাঁত বোনার দৃশ্য। তাঁর চারপাশে নীল ও সাদার মিশেলে আভা দিচ্ছে মহাজাগতিক রশ্মি। কাঁথাটির প্রতিটি ভাঁজে যেন লুকিয়ে আছে বাঙালির ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও শত বছরের সমৃদ্ধ ইতিহাসের স্পন্দন ও প্রতিধ্বনি।

ঈদ উপলক্ষে গত শুক্রবার উদ্বোধনের পর থেকে ক্রেতা-দর্শনার্থীদের নজর কেড়েছে এই নকশিকাঁথা। প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত নতুন এই বিক্রয়কেন্দ্রে ক্রেতা-দর্শনার্থীরা আসছেন। তাঁদের অনেকেই আগ্রহ নিয়ে এই নকশিকাঁথা দেখছেন।

ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, শুধু কেনাকাটা নয়, নান্দনিক বিক্রয়কেন্দ্র ঘুরে দেখতে এসেছেন অনেকে। বন্ধুদের নিয়ে কেনাকাটা করতে আসা মেডিকেল শিক্ষার্থী তাসফিয়া তারান্নুম লাবণ্য বলেন, ‘নকশিকাঁথাটি দেখে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম বলতে পারবে, আমাদের লোকসংস্কৃতি কতটা জনপ্রিয় ও সমৃদ্ধ।’

শুধু ধানমন্ডি আড়ং নয়; দেশের সব বিক্রয়কেন্দ্রেই দেশীয় কারুপণ্য ও নকশাকে প্রাধান্য দেওয়া হয়। গ্রামবাংলার ইতিহাস-ঐতিহ্যকে তুলে আনা হয়। বিশ্বের অন্যতম বড় বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাকের একটি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান হলো আড়ং।

কেনাকাটার পাশাপাশি ঘুরতেও আসেন অনেকে

৬০ হাজার বর্গফুটের আটতলাবিশিষ্ট বিক্রয়কেন্দ্রটি বিশ্বের সবচেয়ে বড় কারুশিল্পের বিক্রয়কেন্দ্র বলে দাবি করেছে প্রতিষ্ঠানটি। আড়ংয়ের একজন কর্মকর্তা জানান, উদ্বোধনের দিন প্রায় ২৬ হাজার ক্রেতা ও দর্শনার্থী এসেছেন বিক্রয়কেন্দ্রে। তবে ঈদ সামনে রেখে সকালেও ক্রেতাদের ব্যাপক ভিড় লক্ষ করা যায়।

সরকারি চাকরিজীবী সেলিনা আক্তার বলেন, ‘বাংলাদেশের লোকসংস্কৃতি বরাবরই উঠে আসে আড়ংয়ের পণ্যে। এখানে কাপড়ের মান ভালো এবং পোশাক পরে স্বচ্ছন্দ বোধ করি। তাই আড়ংয়ে কেনাকাটা করতে আসি। জায়গা বড় হওয়ায় হাঁটাহাঁটি করে পছন্দমতো পোশাক কেনা যাচ্ছে।’

ভবনজুড়ে দেখা মিলবে ঐতিহ্যবাহী কারুশিল্প, মৃৎশিল্প, সূচিশিল্পের। যার মাধ্যমে বাংলাদেশের গ্রামীণ ইতিহাস ঐতিহ্য উঠে এসেছে। এ ছাড়া আছে তামা ও পুনর্ব্যবহারযোগ্য কাচের ঝুলন্ত শিল্পকর্ম। ভবনটি এখন শুধু বিক্রয়কেন্দ্রই হয়ে ওঠেনি, তুলে ধরেছে মানুষের ঐতিহ্য ও সৃষ্টিশীলতা। প্রায় পাঁচ মাস সময় নিয়ে তৈরি করা হয় ভবনজুড়ে করা শিল্পকর্ম।

আরেক ক্রেতা রাইস আল দীন বলেন, ‘পণ্যের ভিন্নতা বেশি হওয়ায় এখানে এসেছি। ছোট ভাইকে পাঞ্জাবি কিনে দিলাম, ভিডিও কলের মাধ্যমে পরিবারের বাকি সদস্যদের পছন্দের পোশাক কিনেছি।’

কোথায় কী পাওয়া যায়

ভবনের ভূগর্ভস্থ তলায় (বেজমেন্ট) গৃহস্থালি পণ্য; আর প্রথম তলায় আড়ং আর্থ ও ডেইরি পণ্য। দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ তলায় নারীদের জন্য শাড়ি, জুয়েলারি, জুতা, ব্যাগসহ অন্যান্য পণ্যের সমাহার। পঞ্চম তলায় শিশুদের জন্য রংবেরঙের পোশাক ও জুতা। পাশাপাশি এই তলায় রয়েছে শিশুদের খেলার জায়গা (গ্রিন প্লে গ্রাউন্ড)। যেখানে মা, বাবা বা অভিভাবকেরা শিশুদের নিরাপদে রেখে যেন কেনাকাটা করতে পারেন।

এ ছাড়া ষষ্ঠ ও সপ্তম তলায় পাওয়া যাবে পুরুষদের জন্য শার্ট, পাঞ্জাবি, বই ও গাছ। সপ্তম তলায় রয়েছে বাংলা খাবারের রেস্তোরাঁ অরেঞ্জ প্যারট। অবশ্য এখনো তা চালু হয়নি। ভবনটিতে আছে গাড়ি পার্কিংয়ের সুবিধা।

আসন্ন ঈদকে সামনে রেখে ক্রেতাদের জন্য প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ১টা পর্যন্ত খোলা থাকে বিক্রয়কেন্দ্রটি। এ ছাড়া বিক্রয়কেন্দ্রটিতে তাদের উপ-ব্র্যান্ড তাগা, তাগা ম্যান ও হারস্টোরিরও আলাদা স্থান রয়েছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব ক রয়ক ন দ র দ র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

গেইলকে ফোন করা ও বার্তা পাঠানো বারণ

গান শুনতে শুনতে মাঠে ঢুকছেন আরিনা সাবালেঙ্কা। বোঝাই যাচ্ছে, ক্যালিফোর্নিয়ায় ইন্ডিয়ান ওয়েলস ওপেন দারুণ উপভোগ করছেন মেয়েদের টেনিস র‍্যাঙ্কিংয়ের এই শীর্ষ তারকা —ইনস্টাগ্রাম
২০২৫ আইপিএলের উদ্বোধনী ম্যাচ ও ফাইনাল হবে কলকাতায়। আইপিএলের বর্তমান চ্যাম্পিয়নও কলকাতা নাইট রাইডার্স। তাই আজ এই শহরেই এবারের ট্রফি উন্মোচন করা হলো —এক্স
কদিন পরেই পাকিস্তানের দলের সঙ্গে নিউজিল্যান্ড সফরে যাবেন নাসিম শাহ। এর আগে দুই ভাই হুনাইন শাহ ও উবাইদ শাহর সঙ্গে রেস্টুরেন্টে আড্ডা দিলেন তিনি। নাসিমের মতো হুনাইন ও উবাইদও পেসার। ছবিটি পোস্ট করে উবাইদ লিখেছেন, ‘শৈশবের দুষ্টুমি থেকে সারা জীবনের স্মৃতি’—ইনস্টাগ্রাম
প্রেমিকা আরাবেলা শেরবোর্নের সঙ্গে মধুর সময় কাটছে অস্ট্রেলিয়ার বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক মাইকেল ক্লার্কের —ইনস্টাগ্রাম
লর্ডসে আগামী জুনে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনালে মুখোমুখি হবে দক্ষিণ আফ্রিকা ও অস্ট্রেলিয়া। সেই ম্যাচে এনহ্লুম হসপিটালিটি নামের একটি কোম্পানির ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর থাকবেন হার্শেল গিবস। দক্ষিণ আফ্রিকান কিংবদন্তি আজ ছবিটি লর্ডসেই তুলেছেন — ইনস্টাগ্রাম
চোট থেকে পুরোপুরি সেরে না ওঠায় চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে খেলতে পারেননি। তবে মাঠের বাইরে যশপ্রীত বুমরার সময়টা দারুণ কাটছে। কোনো এক অনুষ্ঠানে কালো শেরওয়ানি পরা ছবিটি পোস্ট করে ভারতের তারকা ফাস্ট বোলার লিখেছেন, ‘বিশেষ সন্ধ্যা’ —ইনস্টাগ্রাম
কিংবদন্তি ডিয়েগো ম্যারাডোনার ‘অবহেলাজনিত’ মৃত্যুর বিচার শুরু হয়েছে আজ। আর্জেন্টিনার রাজধানী বুয়েনস এইরেসের আদালতের বাইরে ন্যায়বিচারের দাবিতে ভিড় জমান তাঁর ভক্তরা —রয়টার্স
সমুদ্রতীরে সময়টা দারুণ উপভোগ করছেন ক্রিস গেইল। এমন সময় কেউ তাঁর মুঠোফোন নিয়ে হাজির। হয়তো তিনি গেইলকে দেখাতে চাইলেন, ফোন কতগুলো বার্তা আর কল এসেছে। কিন্তু ‘ইউনিভার্স বস’ আপাতত অন্য দিকে মনোযোগ দিতে চান না। এ কারণেই লিখেছেন, ‘এক সপ্তাহের জন্য সব ধরনের কলা করা ও বার্তা পাঠানো বন্ধ রাখুন। ধন্যবাদ’ —ইনস্টাগ্রাম

সম্পর্কিত নিবন্ধ