প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ক নীতির ফলে অর্থনৈতিক অস্থিরতা তৈরি হওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রে মন্দার আশঙ্কা বাড়ছে। রোববার এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প মন্দা নিয়ে ভবিষ্যদ্বাণী না করলেও শুল্কের কারণে মূল্যস্ফীতি বাড়তে পারে বলে স্বীকার করেছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি সংকুচিত হতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে দেশটির ফেডারেল রিজার্ভ, যা বিনিয়োগকারীদের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। ট্রাম্পের সমর্থকরা মনে করেন, তাঁর নীতি শেষ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের কর্মীদের উপকারে আসবে।

তবে সমালোচকরা বলছেন, শুল্কের অনিশ্চয়তা অর্থনীতিকে অস্থিতিশীল করে তুলতে পারে। এ ছাড়া চীন তাদের কৃষিপণ্যের ওপর নতুন শুল্ক আরোপ করেছে, যা মার্কিন কৃষকদের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে।

নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্পের নতুন করে শুল্ক বৃদ্ধির প্রতিশোধ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের কৃষিপণ্যের ওপর নতুন শুল্ক আরোপ করেছে চীন। দেশটি মুরগি, গম ও ভুট্টার ওপর ১৫ শতাংশ এবং সয়াবিন, গরুর মাংস, শূকরের মাংস ও ফলের ওপর ১০ শতাংশ হারে শুল্ক বসিয়েছে। তবে আগামী ১২ এপ্রিলের মধ্যে আমদানি হওয়া পণ্য নতুন শুল্কের আওতার বাইরে থাকবে। সাম্প্রতিক বাণিজ্য উত্তেজনায় উভয় দেশ পাল্টাপাল্টি শুল্ক আরোপ করলেও সরকারি বিবৃতিতে আলোচনা চালানোর ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। 

বিভিন্ন দেশ ও কাঁচামালের ওপর ট্রাম্প প্রশাসনের শুল্ক বাড়ানোর কারণে খরচ বাড়ায় উদ্বিগ্ন যুক্তরাষ্ট্রের অধিকাংশ ব্যবসায়ী। তবে উল্টো চিত্রও আছে। শুল্ক বাড়ানোয় খুশি ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়াম শিল্পসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা। তারা বলছেন, নতুন করে বাড়ানো শুল্কের কারণে কানাডার সস্তা ইস্পাতের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের তুলনামূলক দামি ইস্পাতশিল্পের প্রতিযোগিতা করা সহজ হবে।

প্রথমে কানাডা ও মেক্সিকোর ওপর কঠোর শুল্ক আরোপ করলেও বাজারে ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার কারণে তা শিথিল করেছেন ট্রাম্প। দ্য গার্ডিয়ান জানিয়েছে, অর্থনৈতিক নীতিতে তাঁর অনিশ্চিত অবস্থান প্রশাসনের ভেতরেই বিরোধিতা তৈরি করেছে। এ ছাড়া সরকারি ব্যয় সংকোচনের পরিকল্পনায়ও পরিবর্তন এনেছেন ট্রাম্প।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: র ওপর

এছাড়াও পড়ুন:

বাপ্পারাজের সংলাপগুলো দীর্ঘদিন পরও কেন জনপ্রিয়তা পাচ্ছে

‘প্রেমের সমাধি ভেঙে, মনের শিকল ছিঁড়ে, পাখি যায় উড়ে যায়’, আজও গানটা জনপ্রিয়। অবসরে, মন খারাপে, প্রিয় মানুষকে হারিয়ে অন্ধকার ঘরে কানে হেডফোন দিয়ে শুনে থাকেন অনেকে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকে এমন কথা শেয়ার করেছেন। অনেকের মতে, গানটির দৃশ্যও মন খারাপের উদ্রেক করে। দৃশ্যটিও দেখে থাকেন অনেকে। যেখানে দেখা যায়, নায়িকার বিয়ে হয়ে গেছে, লঞ্চে করে স্বামীর সঙ্গে শ্বশুরবাড়ি চলে যাচ্ছে সে। অন্যদিকে তাকে হারানোর বেদনায় নদীর কূল ধরে গাইতে গাইতে ছুটছে নায়ক।
গানটা ‘প্রেমের সমাধি’ সিনেমার। পরিচালক ইফতেখার জাহান। ছবির কাহিনি, সংলাপ ও চিত্রনাট্য করেছিলেন দেলোয়ার জাহান ঝন্টু। ১৯৯৬ সালের এ সিনেমায় অভিনয় করেছিলেন বাপ্পারাজ, অমিত হাসান, শাবনাজ, এ টি এম শামসুজ্জামান, আনোয়ার হোসেন প্রমুখ। সেই হিসাবে দুই যুগের বেশি সময় অতিবাহিত হয়েছে। বিশ্বায়ন ও ইন্টারনেটের প্রভাবে বিশ্ব এখন মানুষের হাতের মুঠোয়। ইতিমধ্যে শিল্পাঙ্গন থেকে শুরু করে চলচ্চিত্রাঙ্গন—প্রায় প্রতিটি মাধ্যমেই এসেছে নানা পরিবর্তন। ওটিটি থেকে শুরু করে বিভিন্ন প্ল্যাটফর্ম থেকে পছন্দমতো কনটেন্ট খুঁজে নিচ্ছেন দর্শক। এই যখন পরিস্থিতি, তখন ২৯ বছর আগের একটি সিনেমার সংলাপ নিয়ে হইচই পড়ে যাবে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সিনেমার দৃশ্য ছড়িয়ে পড়বে, এমন আশা করাটা দুরাশাই বটে।

আরও পড়ুননিজেও বুঝতাম, ছ্যাঁকা খাওয়া চরিত্রটাই ক্লিক করবে: বাপ্পারাজ৩ ঘণ্টা আগে

যদিও ‘দুরাশা’ বললাম, তবে এটা কিন্তু সত্যিই ঘটেছে। ‘প্রেমের সমাধি’ সিনেমার ‘প্রেমের সমাধি ভেঙে, মনের শিকল ছিঁড়ে, পাখি যায় উড়ে যায়’ গানের ঠিক আগের দৃশ্যটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সম্প্রতি ব্যাপক আলোচিত হয়েছে। দৃশ্যের বর্ণনা দেওয়ার আগে সিনেমাটি সম্পর্কে সংক্ষেপে বলে নেওয়া যাক। সিনেমার প্রধান দুটি চরিত্র বকুল আর হেনা। তারা দুজন দুজনকে ভালোবাসে। একসময় পড়ালেখার জন্য বকুল শহরে চলে যায়। হেনাকে নিয়মিত চিঠি যদিও লেখে কিন্তু বকুলের বাবা পোস্ট অফিসের পিয়নের সঙ্গে যোগসাজশ করে চিঠিগুলো হেনার কাছে যাতে না পৌঁছায়, সেই বন্দোবস্ত করে। দিন যায়, হেনার বেদনা বাড়ে।

আরও পড়ুনতোমরা যখন ডাকবে আমি আসব১৮ জানুয়ারি ২০১৮

অন্যদিকে হেনার বাবা শহরের এক বড়লোক পরিবারে বিয়ে ঠিক করে তার। আর যেদিন হেনার বিয়ে হয়ে যায়, সেদিনই শহর থেকে ফেরে বকুল। গ্রামে এসেই হেনাদের বাড়িতে যায়। গিয়ে দেখে, বাড়িঘর বিয়েবাড়ির মতো করে সাজানো। তখন হেনার বাবার কাছে সে জিজ্ঞেস করে, ‘চাচা, বাড়িঘর এত সাজানো কেন? আর হেনা কোথায়? চাচা, কথা বলছেন না যে। চুপ করে আছেন কেন?’ জবাবে চাচা বলেন, ‘হেনাকে তুমি ভুলে যাও, হেনার বিয়ে হয়ে গেছে।’ কথাটা শোনামাত্র বকুলের কণ্ঠ ধরে আসে। ধরা গলায় সে বলে, ‘না না, হেনার বিয়ে হতে পারে না। আমি বিশ্বাস করি না, আমি বিশ্বাস করি না।’ পরপরই নদীর কূল ধরে  ‘প্রেমের সমাধি ভেঙে, মনের শিকল ছিঁড়ে, পাখি যায় উড়ে যায়’ গানটি গাইতে গাইতে বকুল ছুটতে থাকে। হেনাকেও চোখের জল ফেলতে দেখা যায়। হেনা চরিত্রে শাবনাজ ও বকুল চরিত্রকে পর্দায় ফুটিয়ে তুলেছেন বাপ্পারাজ।

ওয়েব সিরিজ ‘রক্তঋণ’ দিয়ে ফিরছেন বাপ্পারাজ। ছবি: পরিচালকের সৌজন্যে

সম্পর্কিত নিবন্ধ