হাসিনাসহ ২৩ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দিচ্ছে দুদক
Published: 11th, March 2025 GMT
ক্ষমতার অপব্যবহার ও জালিয়াতি করে রাজউকের আবাসন প্রকল্পে ১০ কাঠা করে ৬০ কাঠার প্লট বরাদ্দ নেওয়ার অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তাঁর পরিবারের সদস্যসহ ২৩ জনের বিরুদ্ধে ছয় মামলার চার্জশিট দিচ্ছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এদিকে শেখ হাসিনা, তাঁর পরিবার ও তাদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের পাচার অর্থ চিহ্নিত করার ক্ষেত্রেও বেশ অগ্রগতি হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক গোয়েন্দা ইউনিট-বিএফআইইউ ও যৌথ তদন্ত দল ইতোমধ্যে পাচার-সংক্রান্ত সুনির্দিষ্ট তথ্য পেয়েছে বলে জানিয়েছে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং।
গতকাল সোমবার কমিশন ওই ছয় মামলার চার্জশিট অনুমোদন দিয়েছে। মামলার বাদীরা শিগগির আদালতে চার্জশিট পেশ করবেন। প্রধান আসামি শেখ হাসিনাসহ তাঁর পরিবারের সদস্যরা পলাতক। দুদকের একটি সূত্র জানিয়েছে, আইন অনুযায়ী তাদের অনুপস্থিতিতে বিচার সম্পন্ন করার ক্ষেত্রে কোনো বাধা নেই। গতকাল দুদক মহাপরিচালক মো.
চার্জশিটে বলা হয়, শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে তাঁর ওপর অর্পিত ক্ষমতার অপব্যবহার করে নিজ মালিকানায় ও তাঁর ছেলে, মেয়ে, বোন, বোনের মেয়ে ও বোনের ছেলের নামে ঢাকা শহরে বাড়ি বা ফ্ল্যাট বা আবাসন সুবিধা থাকার পরও তা হলফনামায় গোপন করেছেন। রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) পূর্বাচল নতুন শহর আবাসন প্রকল্পের বরাদ্দ-সংক্রান্ত আইনবিধি, নীতিমালা ও আইনি পদ্ধতি লঙ্ঘন করেছেন। তাঁর দপ্তরসহ প্রকল্পের বরাদ্দবিষয়ক দায়িত্বপ্রাপ্ত গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় এবং রাজউক কর্মচারীদের প্রভাবিত করেছেন। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্বরত থাকা অবস্থায় ক্ষমতার অপব্যবহার করে ওই প্রকল্পের অতি মূল্যবান কূটনৈতিক এলাকায় ২৭ নম্বর সেক্টরে ১০ কাঠা করে নিজের ও পরিবারের সদস্যদের নামে মোট ৬০ কাঠার প্লট বরাদ্দ নিয়েছেন। প্লটগুলোর দখল বুঝে নিয়ে রেজিস্ট্রিমূলে গ্রহণ করে আসামিরা দণ্ডবিধি ও দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।
শেখ হাসিনা ছাড়াও ছয় মামলায় চার্জশিটভুক্ত আসামিরা হলেন তাঁর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ (পুতুল), বোন শেখ রেহানা, ভাগনি ও দুর্নীতির অভিযোগে পদত্যাগ করা ব্রিটিশ মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিক, আরেক ভাগনি আজমিনা সিদ্দিক ও ভাগনে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি।
গত ১২, ১৩ ও ১৪ জানুয়ারি শেখ হাসিনা ও অন্যদের বিরুদ্ধে মামলাগুলো দায়ের করা হয়েছিল। এর মধ্যে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে করা মামলায় গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় এবং রাজউকের কর্মকর্তাসহ আসামি আটজন। জয়ের বিরুদ্ধে করা মামলায় তাঁর মা শেখ হাসিনাসহ মোট ১৫ জনকে আসামি করা হয়। ছয় মামলার আসামি ছাড়াও চার্জশিটে নতুন যুক্ত হয়েছেন সাবেক প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ ও সাবেক প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সচিব মো. সালাউদ্দিন।
জাতীয় গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের ১৪ আসামির মধ্যে রয়েছেন এই মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব মো. শহীদ উল্লা খন্দকার, অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) কাজী ওয়াছি উদ্দিন, প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম সরকার, সিনিয়র সহকারী সচিব পূরবী গোলদার, রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যান মো. আনিছুর রহমান মিঞা, সাবেক সদস্য (এস্টেট ও ভূমি) মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, সদস্য (প্রশাসন ও অর্থ) কবির আল আসাদ, সদস্য (উন্নয়ন নিয়ন্ত্রণ) তন্ময় দাস, সাবেক সদস্য (এস্টেট ও ভূমি) মো. নুরুল ইসলাম, সাবেক সদস্য (পরিকল্পনা) মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন, সাবেক সদস্য মেজর (অব.) সামসুদ্দীন আহমদ চৌধুরী (ইঞ্জিনিয়ার), পরিচালক (এস্টেট ও ভূমি-২) শেখ শাহিনুল ইসলাম, উপপরিচালক মো. হাফিজুর রহমান ও হাবিবুর রহমান।
চার্জশিটে বলা হয়, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশেষ ক্ষমতা ব্যবহার করে অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে রাজউকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের যোগসাজশে নিজের ও পরিবার সদস্যদের নামে পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পের ছয়টি প্লট বরাদ্দ নিয়েছিলেন।
শেখ হাসিনা ও তাঁর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের বিরুদ্ধে গত ২২ ডিসেম্বর ৩০০ মিলিয়ন ডলার বিদেশে পাচারের অভিযোগ অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয় দুদক। এর আগে শেখ হাসিনা, বোন শেখ রেহানা পরিবারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন মেগা প্রকল্পে ৮০ হাজার কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধানে পাঁচ সদস্যের বিশেষ টিম গঠন করা হয়েছিল। এই টিমকে ৩০০ মিলিয়ন ডলার পাচারের অভিযোগটি অনুসন্ধানের নির্দেশ দেয় কমিশন। প্লট জালিয়াতি মামলা, চার্জশিটের পাশাপাশি ওই সব অভিযোগের অনুসন্ধান চালছে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: স ব ক সদস য প রকল প র পর ব র র ব যবহ র র জউক র মন ত র কর ছ ন ত মন ত বর দ দ র সদস ক ষমত
এছাড়াও পড়ুন:
সিদ্ধিরগঞ্জে বিএনপি নেতার মেয়ের মাদক সেবনের ভিডিও ভাইরাল
সিদ্ধিরগঞ্জের নাসিক ৪নং ওয়ার্ড বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক হারুন আর রশিদের মেয়ের মাদক সেবনের ভিডিও গতকাল রাত থেকেই ভাসছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
এই মাদক সেবনের ভিডিও নিয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ জুড়ে চলছে আলোচনা সমালোচনার ঝড়। স্থানীয়দের মধ্যে এ নিয়ে তীব্র নীন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করছে।
কলেজ পড়ুয়া বিএনপি নেতার মেয়ের মাদক সেবনের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ নেট দুনিয়ায় ইতিমধ্যে ভাইরাল হয়েছে। তবে টিকটক করতে গিয়ে এমন ঘটনা ঘটেছে বলে দাবি তার পরিবারের।
ঘটনাটি ঘটেছে সিদ্ধিরগঞ্জের নাসিক ৪নং ওয়ার্ডের ওয়াপদা কলোনী বৌ-বাজার এলাকায়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া সেই তরুণী নাসিক ৪নং ওয়ার্ড বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মো. হারুণ অর রশিদের মেয়ে।
স্থানীয়রা জানান, বিএনপি নেতা হারুণের মেয়ে পূর্বে থেকেইে উশৃংখলভাবে চলাফেরা করে। গত ৫ আগস্টের পর তার মেয়ে আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।
ছেলেদের সাথে টিকটক করা, মধ্য রাতে আড্ডা দেয়া থেকে শুরু করে মাদক সেবনও করেন বিএনপি নেতা হারুণের মেয়ে। তার এই উশৃংখলতার কারণে তার বিরুদ্ধে কেউ প্রতিবাদ করতে সাহস পায় না।
এদিকে ওই তরুণীর ফেসবুক আইডির সূত্র ধরে তার সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। তবে ওই তরুণী তার ফেসবুকে একটি কমেন্টস করেছে তা হলো, লুকাইতো ভাবে আমারে না জানাইয়া এই ভিডিও টা করা হইছে।
আর যারা যারা পোস্ট করতাছে শেয়ার করতাছে তারা সবাই আমার সাথে তখন বইসা খাইতাছিলো। তরাই তো করছোস ভিডিও তরাও তো ছিলি বলে দাবি ওই তরুনীর।
এদিকে বিএনপি নেতা হারুনের বিরুদ্ধেও রয়েছে বিস্তর অভিযোগ। এলাকায় বালু ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করতে কিশোর গ্যাং, মাদক ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে সব কিছুর শেল্টার দিয়ে থাকেন বিএনপি নেতা হারুণ। বিএনপি নেতা হারুণ নিজেও একজন মাদক সেবী।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপি নেতা হারুণ মুঠোফোনে জানান, তার মেয়ে টিকটক করতে গিয়ে এমন ঘটনা ঘটিয়েছে।