Samakal:
2025-04-10@10:31:53 GMT

চোখের পাতা নেড়েছে সেই শিশুটি

Published: 11th, March 2025 GMT

চোখের পাতা নেড়েছে সেই শিশুটি

মাগুরায় ধর্ষণের শিকার আট বছরের শিশুটির শারীরিক অবস্থার সামান্য উন্নতি হয়েছে। চোখের পাতা নেড়েছে সে। প্রধান উপদেষ্টার ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ মজুমদার গতকাল সোমবার দুপুরে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান। 
এদিকে শিশু ধর্ষণের ঘটনায় মাগুরার আদালতে রোববার রাতে চার আসামির রিমান্ড শুনানি হয়েছে। শিশুটির বোনের শ্বশুর মূল অভিযুক্ত হিটু শেখের সাত দিন, শাশুড়ি, স্বামী ও ভাশুরের পাঁচ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর হয়েছে। চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আবদুল মতিন এ আদেশ দেন। গতকালও মাগুরা আদালত চত্বর ও শহরে বিক্ষোভ করেছে ছাত্র-জনতা। সাত কার্যদিবসের মধ্যে জড়িতদের ফাঁসির দাবি জানিয়েছে তারা। এ ছাড়া ধর্ষকদের পক্ষে কোনো আইনি সহায়তা দেবে না বলে জানিয়েছে মাগুরা জেলা আইনজীবী সমিতি। 
শিশুটি এখন ঢাকা সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের (সিএমএইচ) প্যাডিয়াট্রিক আইসিইউতে লাইফ সাপোর্টে রয়েছে। প্রতিদিন তার প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা এবং সে অনুযায়ী চিকিৎসা চলছে।

শিশুটির শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে গতকাল ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি আজাদ মজুমদার বলেন, প্রধান উপদেষ্টার প্রতিরক্ষাবিষয়ক বিশেষ সহকারী লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.

) আব্দুল হাফিজ শিশুটির বিষয়ে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন। সোমবারও তিনি চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলেছেন। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, শিশুটির শারীরিক অবস্থার খুব সামান্য উন্নতি হয়েছে। হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর প্রথমবারের মতো শিশুটি চোখের পাতা নেড়েছে। তবে শ্বাসরোধের কারণে তার মস্তিষ্কে অক্সিজেন সরবরাহ বিঘ্নিত হয়েছিল। মস্তিষ্কে পানি জমে গিয়েছিল, যেটা অপসারণ করা সম্ভব হয়নি। তার বুকের মধ্যে যে বাতাস জমে ছিল, সেটা দূর করা গেছে। চিকিৎসকরা আশাবাদী দু-এক দিনের মধ্যে শিশুটির অবস্থার আরও উন্নতি হবে।
এদিকে গতকাল জড়িতদের ফাঁসির দাবিতে রোববার মাগুরা আদালত চত্বরের সামনে বিক্ষোভ করে ছাত্র-জনতা। আদালত চত্বরের সামনে অবরোধ করে রাখায় নিরাপত্তা শঙ্কায় দিনে আদালতে আসামি হাজির করেনি পুলিশ। ফলে রাত সাড়ে ১১টার পর চার আসামিকে আদালতে হাজির করে সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়। রাতেই আদালত রিমান্ড শুনানি করেন। 
মাগুরা সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আলাউদ্দিন জানান, মূল অভিযুক্ত হিটু শেখকে সাত দিন এবং তার স্ত্রী জাবেদা বেগম, দুই ছেলে সজীব শেখ ও রাতুল শেখকে পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। আসামিদের পক্ষে কোনো আইনজীবী শুনানিতে অংশ নেননি। 

মাগুরা সদর থানার ওসি আইয়ুব হোসেন সমকালকে বলেন, সোমবারও শহরের বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ করেছে ছাত্র-জনতা। এ অবস্থায় আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নেওয়া হয়নি। তারা কারাগারে আছে। জিজ্ঞাসাবাদের বিষয় নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা আলোচনা করছেন।  
শিশু ধর্ষণে জড়িতদের ফাঁসির দাবিতে গতকালও প্রায় দিনভর আদালত চত্বরসহ মাগুরার বিভিন্ন এলাকায় বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে ছাত্র-জনতা। তারা ধর্ষকদের সাত দিনের মধ্যে ফাঁসির দাবি জানায়। 
সকাল ১০টায় জেলা জজ আদালতের সামনে মানববন্ধন ও সমাবেশ করেছে মাগুরা জেলা আইনজীবী সমিতি। এতে বক্তব্য রাখেন জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট শাহেদ হাসান টগর, জাতীয়তাবাদী আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট রুকনুজ্জামান ও নারী শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনালের পিপি অ্যাডভোকেট মনিরুল ইসলাম মুকুল। বক্তারা এই শিশু ধর্ষণের ঘটনায় দ্রুত সময়ের মধ্যে ধর্ষকদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন। তারা বলেন, আইনজীবীরা ধর্ষকদের পক্ষে কোনো আইনি সহযোগিতা দেবেন না। বরং আসামিদের বিপক্ষে সব ধরনের আইনি সহায়তা দেওয়া হবে। 
মাগুরা শহরতলির নিজনান্দুয়ালী গ্রামে বোনের বাড়ি বেড়াতে গিয়ে ৫ মার্চ রাতে ধর্ষণের শিকার হয়েছে শিশুটি। পরদিন সকাল থেকেই সে অচেতন। 

 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব ক ষ ভ কর ছ ত র জনত আইনজ ব গতক ল অবস থ

এছাড়াও পড়ুন:

‘জয় বাংলা ব্রিগেড তৈরি করে দেশ অস্থিতিশীলের চেষ্টা করছেন তুরিন আফ

‘শেখ হাসিনা তাদের রেখে পালিয়ে গেছে। এখন জয় বাংলা ব্রিগেড তৈরি করে দেশকে অস্থিতিশীল ও সরকারকে উৎখাত করার চেষ্টা করছে তুরিন আফরোজরা। হাসিনাকে ফিরিয়ে আনার প্রচেষ্টা তারা চালিয়ে যাচ্ছে।’

মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) ঢাকার অ্যাডিশনাল চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জাকির হোসাইনের আদালতে রিমান্ড শুনানিকালে এসব কথা বলেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকালে আব্দুল জব্বার নামের এক শিক্ষার্থীকে হত্যাচেষ্টার মামলায় আজ রিমান্ড শুনানি হয়।

সোমবার (৭ এপ্রিল) রাতে রাজধানীর উত্তরার একটি বাসায় অভিযান চালিয়ে তুরিন আফরোজকে গ্রেপ্তার করা হয়। মঙ্গলবার তাকে আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উত্তরা পশ্চিম থানার উপ-পরিদর্শক সুমন মিয়া।

বেলা ১টার দিকে তুরিন আফরোজকে আদালতে হাজির করা হয়। তাকে ঢাকার সিএমএম আদালতের হাজতখানায় রাখা হয়। শুনানিকালে তাকে এজলাসে তোলা হয়।

রাষ্ট্রপক্ষে ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী রিমান্ড মঞ্জুরের পক্ষে শুনানি করেন। তিনি বলেন, ‘তুরিন আফরোজ আলোচিত, বিতর্কিত মানুষ। ফ্যাসিস্ট হাসিনার শাসনামলে হাসিনার পক্ষে মিডিয়াতে তুমুল বক্তব্য দিতেন। হাসিনাকে সমর্থন করে বিরোধীদের আন্দোলন-সংগ্রামের বিরুদ্ধে বক্তব্য দিতেন। ফ্যাসিজম রক্ষা করতে সহযোগিতা করতেন। সুপ্রিম কোর্টে যেসব আইনজীবী একটি কলোনি তৈরিতে সহায়তা ও আজ্ঞাবহ হয়ে কাজ করত, তাদের এক জন তুরিন আফরোজ। তার এ ধরনের বক্তব্য রাখার এবং সহযোগিতার দুটি উদ্দেশ্য ছিল—এক. হাসিনার আনুকূল্য লাভ করে বড় পদ পাওয়া। আরেকটি হলো—পৈত্রিক সম্পত্তি থেকে মা-ভাইকে বঞ্চিত করে দখলে রাখা।’

রাষ্ট্রপক্ষের এ আইনজীবী বলেন, ‘প্রথমটা অর্জন করেছিলেন। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল তৈরি করা হয়েছিল। পুরস্কারস্বরূপ প্রসিকিউটর হিসেবে নিয়োগ পান তুরিন আফরোজ। নিয়োগ পাওয়ার পর তারা আসামিদের বিরুদ্ধে বক্তব্য ও তাদের নিয়ে কটূক্তি করেন। পরে আবার আসামিদের পক্ষে গিয়ে বড় ধরনের আর্থিক সুবিধা নেওয়ারও অভিযোগ আছে। ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটিয়ে প্রসিকিউটর পদ থেকে অব্যাহতি পান। ক্ষমতার অপব্যবহার করে পৈত্রিক সম্পত্তি থেকে মা-ভাইকে বঞ্চিত করে এককভাবে দখলে নেন।’

তিনি বলেন, ‘ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় বিতর্কিত ভূমিকা পালন করায় নীলফামারীর জলঢাকাতেও তার বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টার মামলা হয়েছে। মামলা হলেই কিন্তু সব আসামিকে ধরা হচ্ছে না। যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাদেরই গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। ৫ আগস্টের পর বিভিন্ন জায়গায় মিছিল, মিটিং হয়েছে। হাসিনা তাদের ফেলে রেখে পালিয়ে গেছে। তারা জয় বাংলা ব্রিগেড তৈরি করে দেশকে অস্থিতিশীল ও সরকারকে উৎখাত করার চেষ্টা করছে। যারা বিদেশে পালিয়ে গেছে এবং দেশে যারা অবস্থান করছে, তারা এসব করছে। হাসিনাকে ফিরিয়ে আনার প্রচেষ্টা তারা চালিয়ে যাচ্ছে। তুরিন আফরোজ এর সাথে সম্পৃক্ত। তাকে অবজারভেশনে রাখা হয়। বিভিন্ন সরকারবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। হত্যাচেষ্টা মামলার সাথেও সম্পৃক্ত। তার ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুরের প্রার্থণা করছি।’

তুরিন আফরোজের পক্ষে শুনানি করতে কয়েকজন আইনজীবী আদালতে উপস্থিত হন। তবে তুরিন আফরোজ জানান, তার আইনজীবী আছে। তখন বিচারক জানতে চান, কে আপনার আইনজীবী? তুরিন আফরোজ বলেন, ‘সাইফুল করিম।’ তবে তাকে খুঁজে পাননি তুরিন আফরোজ।

পরে আদালতে বক্তব্য রাখেন তুরিন আফরোজ। এরপর আদালত তার চার দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন।

ঢাকা/মামুন/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সেনাবাহিনীর জন্য আলোচনার দরজা কখনো বন্ধ হয়নি: ইমরান খান
  • আদালতে নিজ আইনজীবীর ওপরে ক্ষোভ ঝাড়লেন হাজী সেলিম 
  • কাঠগড়ায় মেজাজ হারিয়ে চিৎকার-চেঁচামেচি হাজি সেলিমের, অন্যরা হতবাক
  • ডাকাতির পর হত্যা: ১০ জনের ১০ বছর করে কারাদণ্ড
  • তিন দিনের রিমান্ডে ওসি আবুল হাসান, ছিল না নিজের আইনজীবী
  • কাঠগড়ায় মেজাজ হারালেন হাজী সেলিম 
  • ‘কনফ্লিক্ট অব ইন্টারেস্ট’ দেখা দিলে কী হবে, প্রশ্ন শুনানিতে
  • ক্যান্সারের থাবায় মৃত্যুমুখে ইব্রাহিম, দিশেহারা পরিবার
  • পটুয়াখালীতে হত্যা মামলায় ২৩ জনের যাবজ্জীবন
  • ‘জয় বাংলা ব্রিগেড তৈরি করে দেশ অস্থিতিশীলের চেষ্টা করছেন তুরিন আফ