যক্ষ্মার বিরুদ্ধে বৈশ্বিক লড়াইয়ে বড় আঘাত, বাংলাদেশে বন্ধের শঙ্কায় ১৯৬ নির্ণয় কেন্দ্র
Published: 11th, March 2025 GMT
যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা প্রতিষ্ঠান ইউএসএআইডির অনুদান বন্ধ হওয়ায় বিশ্বব্যাপী যক্ষ্মার বিরুদ্ধে লড়াই বড় বাধার মুখে পড়ছে। এ রোগ নির্ণয়ে বিশ্বজুড়ে রয়েছে ১০ হাজারের বেশি স্বাস্থ্যকেন্দ্র। কেবল বাংলাদেশেই আছে ১৯৬টি। গ্রামে-গঞ্জে ছড়িয়ে থাকা এসব কেন্দ্রে উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে যক্ষ্মা নির্ণয় ছাড়াও চিকিৎসা ও গবেষণা করা হয়। ইউএসএআইডির অর্থায়নে চলা এসব প্রতিষ্ঠান বন্ধের শঙ্কায় রয়েছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, বিশ্বব্যাপী যক্ষ্মা নিরাময় কেন্দ্রগুলো বন্ধ হলে স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ওপর বড় প্রভাব পড়তে পারে; বাধাগ্রস্ত হবে বৈশ্বিক যক্ষ্মা মোকাবিলা কার্যক্রম।
সোমবার দ্য গার্ডিয়ান অনলাইনের প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। এতে বলা হয়, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বিশ্বব্যাপী চলমান ইউএসএআইডির অধিকাংশ কর্মসূচি আনুষ্ঠানিকভাবে বাতিলের ঘোষণা দিয়েছেন। সামাজিক মাধ্যম এক্সে তিনি লেখেন, পর্যালোচনা করতে আগামী ছয় সপ্তাহের জন্য ইউএসএআইডির ৮৩ শতাংশ কার্যক্রম বাতিল করা হয়েছে। এর মধ্যে বাতিল হয়েছে ৫ হাজার ২০০টির বেশি চুক্তি, যেগুলো শত বিলিয়ন ডলার ব্যয় হওয়ার কথা ছিল।
ইউএসএআইডির অর্থে বিশ্বের নানা দেশে যক্ষ্মা নিরাময় কেন্দ্র পরিচালিত হয়ে আসছে। অর্থায়ন বন্ধের কারণে জটিল এ রোগের বিরুদ্ধে লড়াই মারাত্মকভাবে বাধার মুখে পড়বে। সুইজারল্যান্ডের অলাভজনক প্রতিষ্ঠান স্টপ টিবি পার্টনারশিপের প্রধান ডা.
গত মাসে (ফেব্রুয়ারি) বিশ্বব্যাপী কেন্দ্রগুলোতে সহায়তা বন্ধের বিষয়ে সতর্কবার্তা পাঠানো হয়। গত সপ্তাহে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা জানায়, দীর্ঘদিন ধরে যুক্তরাষ্ট্র দরিদ্র দেশগুলোকে প্রতিবছর যক্ষ্মা মোকাবিলায় ২০ কোটি থেকে ২৫ কোটি ডলার সহায়তা দিয়ে আসছিল। এ সময় সংস্থাটি তহবিল বন্ধের বিষয়েও সতর্ক করে বলে, এমনটা করলে যক্ষ্মা মোকাবিলার কয়েক দশকের চেষ্টা জলে পড়বে।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর বলেছে, তাদের কৌশল এখন এই যে, ‘আমাদের প্রত্যেক ডলার ব্যয়, প্রত্যেক তহবিল ও প্রত্যেক নীতি যা আমরা অনুসরণ করি, তা যুক্তরাষ্ট্রকে নিরাপদ, শক্তিশালী এবং আরও সমৃদ্ধ করে তুলবে।’ ডা. লুসিকা দিতিউ বলছেন, ‘যক্ষ্মা প্রতিরোধ বন্ধ করলে এর কিছুই হবে না। প্রথমত, নিশ্চিতভাবেই এটি আমাদের কাউকেই নিরাপদ করে না। কারণ যক্ষ্মা বায়ুবাহিত। আপনি সীমান্তে এটি থামাতে পারবেন না। এটি বাতাসের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়বে। যতক্ষণ আপনি শ্বাস নেবেন, ততক্ষণ আপনি এটি পাবেন। তবে কেবল সাধারণ যক্ষ্মা নয়, ওষুধ-প্রতিরোধী যক্ষ্মা এবং চরম ওষুধ-প্রতিরোধী যক্ষ্মাও রয়েছে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ইউএসএআইড ইউএসএআইড র বন ধ র
এছাড়াও পড়ুন:
ইউএসএআইডির ৮৩ শতাংশ কর্মসূচি বাতিল করছে ট্রাম্প প্রশাসন
যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থার (ইউএসএআইডি) ৮৩ শতাংশ কর্মসূচি বাতিল করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। সোমবার এক্স (সাবেক টুইটার) পোস্টে তিনি এ তথ্য জানান।
গত ২০ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ক্ষমতায় বসেই তিনি ইউএসএআইডির ওপর খড়্গহস্ত হন। তিনি সংস্থাটি ভেঙে দিতে চান। ইউএসএআইডিতে কাটছাঁট পদক্ষেপের একটা বড় অংশ তদারক করছেন বিশ্বের শীর্ষ ধনী ইলন মাস্ক।
মার্কো রুবিও সোমবার বলেন, ‘৬ সপ্তাহের পর্যালোচনার পর আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে ইউএসএআইডির ৮৩ শতাংশ কর্মসূচি বাতিল করছি। এ সংক্রান্ত যে ৫ হাজার ২০০টি চুক্তি এখন বাতিল হলো, সেগুলোতে কয়েক দশক ধরে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার ব্যয় হয়েছে। যেগুলো অনেক ক্ষেত্রেই আমেরিকার মূল জাতীয় স্বার্থের পরিপন্থী ছিল বা ক্ষতি করেছে।’
ইউএসএআইডির মাধ্যমে বিশ্বে হাজার হাজার কোটি ডলারের সহায়তা দিয়ে থাকে যুক্তরাষ্ট্র। এর সহায়তা বন্ধের ফলে বিভিন্ন দেশে দরিদ্র জনগোষ্ঠী ক্ষতির মুখে পড়বে বলে মনে করেন অনেকেই।
১৯৬১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডি ইউএসএআইডি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। সংস্থাটিতে প্রায় ১০ হাজার কর্মকর্তা–কর্মচারী রয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের মোট বিদেশি সহায়তার পরিমাণ ৬৮ বিলিয়ন ডলার। এর মধ্যে শুধু ইউএসএআইডির জন্য প্রায় ৪০ বিলিয়ন ডলার বরাদ্দ।
আরও পড়ুনইউএসএআইডির মহাপরিদর্শক বরখাস্ত১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫আরও পড়ুনইউএসএআইডি বন্ধে তৎপর ট্রাম্প–মাস্ক: ‘এটি আমাদের শত্রুদের জন্য উপহার’০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫