প্রকাশ্যে হত্যার প্ররোচনার অভিযোগে ড. এনায়েতুল্লাহ আব্বাসীর বিচার দাবি করে বিবৃতি দিয়েছেন বিশিষ্টজন। সোমবার কবি ও দার্শনিক ফরহাদ মজহার, বুদ্ধিজীবী সলিমুল্লাহ খানসহ ২২৩ লেখক, সাংবাদিক, আলেম, সুফি, গবেষক, শিক্ষক ও সাংবাদিক বিবৃতিতে সই করেন। 

বিবৃতিদাতাদের মধ্যে আছেন– সাংবাদিক কাজী জেসিন, উন্নয়ন গবেষক আসীফ মুনীর খান, লেখক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ফাহমিদুল হক, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক সুমন সাজ্জাদ, চলচ্চিত্র নির্মাতা অমিতাভ রেজা চৌধুরী, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের অধ্যাপক রায়হান রাইন, মানবাধিকারকর্মী এলিজা খান, কথাসাহিত্যিক ও অনুবাদক জিয়া হাশান, ঢাকার বকশীবাজারের খানকাহ ফকির জহুর আল ক্বাদরীর পীরসাহেব ফকির শাহ সাঈদ আনওয়ার মোবারকী আল ক্বাদরী, বিশ্ব সুফিবাদ সর্বজনীন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান শাহ সুফি শামসুজ্জামান চৌধুরী (সজিব), লেখক ও গবেষক সহুল আহমদ, জুলাই সংগ্রাম পরিষদের মুখপাত্র আজহারুল হক লিংকন, শৈলকুপা সম্মিলিত খামারি পরিষদের রাজনীতিক মুখপাত্র তানজীর আলম রবিন, ড.

মাওলানা মুজিবুর রহমান আল মাদানী, মুফতি ইমরান মাহমুদ জিহাদী, শাহ সুফি মারুফ নুরী আল সুরেশ্বরী, শাহ সুফি মুস্তাক আহমাদ, শাহ সুফি গোলাম এ মোস্তফা আল জাহাঙ্গীর, সুফি মাইনুল কবীর চিশতি, লেখক-সাংবাদিক আবিদ আজম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মাসি অনুষদের সহযোগী অধ্যাপক ড. যোবায়ের আল মাহমুদ, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয় কমিটির সদস্য কনক রহমান প্রমুখ।

বিবৃতিতে বলা হয়, এনায়েতুল্লাহ আব্বাসী সম্প্রতি ‘শাতিমে রাসুল’ [নবী (সা.) অবমাননাকারী] ও মুরতাদের (ধর্মদ্রোহী) শাস্তির নামে নিজ হাতে হত্যার অধিকার দাবি করেছেন। শুক্রবার জুমার নামাজের পর জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে ‘তৌহিদি ছাত্র-জনতা’র ব্যানারে এক সমাবেশে তিনি বলেন, ‘আর মিছিল নয়, এবার শরিয়াহ আদালতে মুরতাদের শাস্তি ফাঁসি আমরা নিজ হাতে কার্যকর করব।’ বক্তব্যে তিনি যাদের হত্যা করবেন বলে সংকল্প প্রকাশ করেছেন, তাদের মধ্যে আছেন বিশিষ্ট দার্শনিক ফরহাদ মজহার, সলিমুল্লাহ খান, লেখক-গবেষক রাখাল রাহা এবং কবি সোহেল হাসান গালিব।

বিবৃতিতে বলা হয়, আব্বাসীর হত্যার ঘোষণা দেশের সংবিধান ও আইন অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য গুরুতর অপরাধ এবং ইসলামের মূলনীতি, কোরআনের শিক্ষা, ন্যায়বিচারের আদর্শ ও আধুনিক রাষ্ট্রবিধানের পরিপন্থি। চরম উগ্রবাদী আব্বাসী তাঁর ঘোষণায় দেশের কবি, লেখক, দার্শনিক বুদ্ধিজীবীদের হত্যার জন্য অনুসারী লেলিয়ে দিয়েছেন।

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

ধর্ষণের বিচার দাবিতে জাবির সাংবাদিকতা বিভাগের মানববন্ধন

দেশের বিভিন্ন স্থানে ধর্ষণের ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও অপরাধীদের দ্রুত সময়ের মধ্যে সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।

আজ রোববার দুপুর দেড়টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার সংলগ্ন সড়কে এ মানববন্ধন করেন তারা। এতে বিভাগটির প্রায় অর্ধশত শিক্ষক-শিক্ষার্থী অংশ নেন।

মানবন্ধনে তারা বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার দেশে নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে৷ সারাদেশে একের পর এক ধর্ষণের মতো ঘটনা ঘটে চলছে। সাধারণ মানুষ বিশেষত নারী ও শিশুরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। এ অবস্থায় দেশে নিরাপত্তা নিশ্চিতের পাশাপাশি ধর্ষণের ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান তারা।

সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী সানজিদা খানম বলেন, ‘একজন নারী হিসেবে ধর্ষণের মতো কর্মকাণ্ড মোটেও কাম্য নয় এবং আমরা এটি সমর্থন করি না৷ মাগুরায় একটি শিশু ধর্ষণের পর গত রাতে গাজীপুরেও ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে৷ সবমিলিয়ে দেশের অবস্থা এখন ভয়ানক৷ শিশু থেকে বয়স্ক কেউই এখন নিরাপদ না৷ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে অতিদ্রুত সময়ের মধ্যে দোষীদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক বিচার করতে হবে।’

চলমান ধর্ষণকাণ্ডে অভিযুক্তদের বিচার না হওয়া পর্যন্ত ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দিয়ে একই বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী হিরা খাতুন বলেন, ‘দেশে চলমান ধর্ষণ, নিপীড়ন ও নির্যাতনের বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে আমরা ক্লাস–পরীক্ষা বর্জন করেছি। ধর্ষণ একটি ঘৃণ্য অপরাধ, যা ভুক্তভোগীকে চরম ক্ষতির মুখে ফেলে দেয়। আট বছর বয়সী শিশুর সঙ্গে যে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে, আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। আইনের যথাযথ প্রয়োগ ও সমাজের সম্মিলিত প্রয়োগে এখনই সময় ধর্ষকের বিরুদ্ধে কার্যকরী প্রতিরোধ গড়ে তোলার।’

সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক উজ্জ্বল কুমার মণ্ডল বলেন, ‘দেশের কোথাও নারীরা আসলে নিরাপত্তা পাচ্ছে না, এমনকি শিশুরাও ছাড় পাচ্ছে না৷ ফলে ধর্ষণকাণ্ডের মতো ঘটনাগুলো প্রতিনিয়ত ঘটছে৷ মূলত বিচারহীনতার কারণে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি হচ্ছে৷ সরকারের কাছে আমরা জোর দাবি জানাই, এ ধরনের আর একটি ঘটনাও যেন না ঘটে এবং যে ঘটনাগুলো ঘটেছে এর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে৷' 

এদিকে ধর্ষণ ও নারীর প্রতি সহিংসতার বিরুদ্ধে বেলা ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারের পাদদেশে মানবন্ধন করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক। এতে সংহতি জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ও নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা অংশ নেন৷

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় খেলাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ, আহত ২০
  • ধর্ষণের বিচার দাবিতে জাবির সাংবাদিকতা বিভাগের মানববন্ধন
  • ধর্ষণের বিচার দাবিতে জাবির সাংবাদিকতা বিভাগের মানবন্ধন
  • ধর্ষকের শাস্তির দাবিতে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের