ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের প্রস্তুতি চলছে
Published: 11th, March 2025 GMT
নির্বাচন কমিশন আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন করার সময়সীমা অতিক্রম করতে চায় না বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীন। তিনি বলেছেন, এই সময়সীমা যাতে পার না হয়, সে জন্য ইসি সর্বাত্মক প্রস্তুতি নিচ্ছে। এ ক্ষেত্রে ডিসেম্বরে নির্বাচন করতে হলে অক্টোবরেই তপশিল ঘোষণা করতে হবে।
গতকাল সোমবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন ভবনে ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুকের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন সিইসি। এর আগে ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে ঘণ্টাব্যাপী বৈঠকে অংশ নেন তিনি।
বৈঠকে আলোচনার বিষয় নিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার সাংবাদিকদের বলেন, জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি সম্পর্কে জানতে চাওয়ার পাশাপাশি বাংলাদেশের গণতন্ত্রের পথে উত্তরণে তারা ইসিকে সহায়তা করতে চান। পর্যবেক্ষক, ভোটার তালিকা, দল নিবন্ধন ও কেনাকাটার বিষয়ে ব্রিটিশ হাইকমিশনারকে অবহিত করা হয়েছে।
নাসির উদ্দীন বলেন, তারা জাতীয় নির্বাচনে আমাদের প্রস্তুতি সম্পর্কে জানতে চান। এই গণতান্ত্রিক উত্তরণে তারা আমাদের সহায়তা করতে চান। আমরা ভোটার ও দলের নিবন্ধনের প্রস্তুতি সম্পর্কে জানিয়েছি। আমরা খুব শিগগির কেনাকাটায় যাব। আমরা পর্যবেক্ষক নীতি পুনর্বিবেচনা করছি। পর্যবেক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া আমরা সম্পন্ন করব।
তিনি আরও বলেন, যেহেতু একটা সময়সীমা আছে, খুব সম্ভবত ডিসেম্বর। সেটা মাথায় রেখে আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি। ডিসেম্বরে নির্বাচন, তাই অক্টোবরেই তপশিল ঘোষণা করতে হবে। সময়সীমা যেন আমরা অতিক্রম না করি, সেভাবেই প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে বলে হাইকমিশনারকে জানানো হয়েছে।
কী ধরনের সহায়তা আপনারা চেয়েছেন– এমন প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, নির্বাচনে দলগুলোর এজেন্টরা থাকেন। দলের কর্মী বলে তাদের এজেন্ট হিসেবে নিয়োগ দেয়, অথচ তিনি নির্বাচনের নিয়মের কিছুই জানেন না। এখানে একটা প্রশিক্ষণের প্রয়োজন। বিদেশি পর্যবেক্ষকরা আসার পর দেখা যায়, তারা আমাদের নির্বাচনের পদ্ধতি সম্পর্কে জানেন না, আইনকানুন জানেন না। পর্যবেক্ষকদের প্রশিক্ষণের কথা আমরা জানিয়েছি।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আগামী জাতীয় নির্বাচনে প্রক্সি ভোট দেওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। এতে জাতীয় নির্বাচনের সময় যারা প্রবাসে থাকবেন, তাদের পক্ষ থেকে অন্য কেউ ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন।
নতুন রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন শুরুর প্রশ্নে সিইসি বলেন, ‘এই ঘোষণাটা তো প্রধান উপদেষ্টা নিজেই দিয়েছেন। তিনি ট্রেনের হুইসেল বাজিয়ে দিয়েছেন যে নির্বাচন ডিসেম্বরে অথবা জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিত হবে।’
পরে ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক সাংবাদিকদের বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে আমার একটি অত্যন্ত ফলপ্রসূ বৈঠক হয়েছে। এটি তার এবং তার টিম যে কাজগুলো করছে, সে সম্পর্কে জানার একটি সুযোগ। যুক্তরাজ্য বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন আয়োজনের পরিবেশ তৈরিতে সংস্কার প্রক্রিয়ায় ঐকমত্য গঠনে সহায়ক ভূমিকা রাখছে।’
এনআইডিতে একাধিক স্ত্রীর নাম সংযুক্ত করার চিন্তা
জাতীয় পরিচয়পত্রে (এনআইডি) একাধিক স্ত্রীর নাম সংযুক্ত করার চিন্তা করা হচ্ছে। গতকাল জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক এ এস এম হুমায়ুন কবীর সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, আমাদের কাছে প্রচুর সংশোধনের আবেদন আসছে। অনেক সময় দ্বিতীয় স্ত্রীরা এসে তাদের নাম ডেটাবেজে অন্তর্ভুক্ত করতে বলেন। দুই নম্বর ফরমে একাধিক স্ত্রী যদি কারও থাকে, তার নামটা আগেই সংরক্ষণ করে নিই। তাহলে দেখা যাবে, ভবিষ্যতে ওই সমস্যা আর থাকবে না। এ জন্য দুই নম্বর ফরমে এটা রাখা যায় কিনা, তা নিয়ে আলোচনা করেছি।
.
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের বিশেষ তহবিলের মেয়াদ বাড়াল বাংলাদেশ ব্যাংক
পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের বিশেষ তহবিলের মেয়াদ ২০২৬ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়িয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এই তহবিলের মেয়াদ গত ফেব্রুয়ারিতে শেষ হয়েছে। পুঁজিবাজারের পরিস্থিতি উন্নয়নে তথা আর্থিক খাতের সার্বিক স্থিতিশীলতার স্বার্থে বিশেষ তহবিলের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) বাংলাদেশ ব্যাংকের ডিপার্টমেন্ট অব অফ সাইট সুপারভিশন থেকে এ সংক্রান্ত একটি সার্কুলার জারি করেছে।
সার্কুলারে বলা হয়েছে, তফসিলি ব্যাংকগুলো পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের জন্য ২০০ কোটি টাকার বিশেষ তহবিল গঠন এবং এই তহবিল হতে বিনিয়োগের বিষয়ে অনুসরণীয় নীতিমালা প্রদান করা হয়। এ তহবিলের মেয়াদ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ পর্যন্ত নির্ধারিত হয়। তবে ২০২১ সালে এক সার্কুলার অনুযায়ী এ তহবিলের আওতায় বেসরকারি উদ্যোক্তার নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে বিনিয়োগের জন্য স্পেশাল পারপাস ভেহিকলের ইস্যুকৃত গ্রীন সুকুক বন্ডে বিনিয়োগের মেয়াদ আগামী ৩১ ডিসেম্বর ২০২৮ পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়। এমন পরিস্থিতিতে দেশের পুঁজিবাজারে বিরাজমান অস্থির অবস্থার প্রেক্ষাপটে পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন অংশীজন ও বিনিয়োগকারী ব্যাংকগুলোর মতামত এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের নিজস্ব পর্যালোচনায় পরিস্থিতি উন্নয়নে তথা আর্থিক খাতের সার্বিক স্থিতিশীলতার স্বার্থে বিশেষ তহবিলের মেয়াদ নিম্নোক্ত শর্তাধীনে আগামী ৩১ ডিসেম্বর ২০২৬ পর্যন্ত বৃদ্ধি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
আরো পড়ুন:
তিন পার্বত্য অঞ্চলে ব্যাংক বন্ধ ১৩ এপ্রিল
বাধ্যতামূলক ছুটিতে ইসলামী ব্যাংকের এমডি
বর্ধিত মেয়াদের মধ্যে বিশেষ তহবিলের বিনিয়োগ স্থিতি ক্রমান্বয়ে হ্রাসকল্পে সংশ্লিষ্ট বিনিয়োগকারী ব্যাংক কর্তৃক ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদ অনুমোদিত একটি সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা এ সার্কুলার জারির ৩০ দিনের মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডিপার্টমেন্ট অব অফ সাইট সুপারভিশনে দাখিল করতে হবে। এই কর্মপরিকল্পনা যথা সময়ে যথাযথভাবে বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে। ২০২৬ সালের ৩১ ডিসেম্বর মেয়াদপূর্তীতে এ তহবিলের অবশিষ্ট বিনিয়োগ (যদি থাকে) ব্যাংক কোম্পানী আইন, ১৯৯১ এর ২৬ ক ধারা অনুসারে সলো এবং কনসোলিডেটেড উভয় ভিত্তিতে পুঁজিবাজার বিনিয়োগ কোষের অন্তর্ভুক্ত হিসেবে বিবেচিত হবে। আবশ্যিকভাবে টোটাল ইনভেস্টমেন্ট ইন ক্যাপিটাল মার্কেট নামে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ সংক্রান্ত বিবরণীতে রিপোর্ট করতে হবে।
বিশেষ তহবিলের মেয়াদের সাথে সামঞ্জস্য রেখে-বাংলাদেশ ব্যাংক হতে রেপো সুবিধার মাধ্যমে অর্থ সংগ্রহের ক্ষেত্রে এই সার্কুলারের সময়সীমা ১৩ জানুয়ারি ২০২৫ এর স্থলে ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৬ হবে। বাংলাদেশ ব্যাংক হতে গৃহীত রেপো সুবিধা পুনঃনবায়নের ক্ষেত্রে এই সার্কুলারের সময়সীমা ৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ এর স্থলে ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৬ হবে। বিশেষ তহবিলের আওতায় গঠিত ব্যাংকের নিজস্ব পোর্টফোলিওর বাজারভিত্তিক পুনঃমূল্যায়নের ক্ষেত্রে উক্ত সার্কুলারের সময়সীমা ফেব্রুয়ারি ২০২৫ এর স্থলে ৩১ ডিসেম্বর ২০২৬ হবে। এই সার্কুলারে বর্ণিত বিশেষ তহবিলের আওতায় ব্যাংকের সাবসিডিয়ারী কোম্পানির নিজস্ব পোর্টফোলিও গঠনের জন্য প্রদান করা চলমান ও আবর্তনশীল ঋণ সীমার সর্বোচ্চ মেয়াদ ৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ এর স্থলে ৩০ নভেম্বর ২০২৬ এবং এই পোর্টফোলিওর বাজার ভিত্তিক পুনঃমূল্যায়ন সংক্রান্ত সময়সীমা ফেব্রুয়ারি ২০২৫ এর স্থলে ৩১ ডিসেম্বর ২০২৬ হবে।
ঢাকা/এনএফ/এসবি