গাইবান্ধায় ‘৬ পার্সেন্ট’ ঘুষ চেয়ে ভাইরাল পৌরসভার সেই প্রকৌশলীকে শোকজ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার গাইবান্ধা পৌরসভার উপসহকারী প্রকৌশলী (সিভিল) শফিউল ইসলামের ঘুষ চাওয়ার অডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এর পরই শুরু হয় তুমুল সমালোচনা। 

১০ মিনিট ১৬ সেকেন্ডের অডিওতে শোনা যায়, প্রকল্পের বরাদ্দ অনুযায়ী এক ব্যক্তির কাছে তিনি ৬ শতাংশ ঘুষের অর্থ দাবি করছেন। ঘুষ কম দিতে চাইলে প্রকৌশলী বলেন, একটি টাকাও কম দেওয়া যাবে না। কম দিলে বিল পাস করা যাবে না। ওই অডিওতে ঘুষ লেনদেন সংক্রান্ত বিভিন্ন কথা বলতে শোনা যায়। অডিওটি ধারণ করেন ফিরোজ কবির নামে ভুক্তভোগী ঠিকাদার।

১৫ জানুয়ারি ওই প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য এলজিআরডি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টাকে ঘুষ চাওয়ার অডিওসহ অভিযোগ দেন ফিরোজ কবির। তবে তখন এটি ভাইরাল করা হয়নি। অভিযোগের অনুলিপি গাইবান্ধা জেলা প্রশাসককেও দেন তিনি। এরই পরিপ্রেক্ষিতে গত ৫ ফেব্রুয়ারি সরেজমিন তদন্ত করেন গাইবান্ধার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আল মামুন। পরে এক মাস পার হলেও তিনি প্রতিবেদন জমা দেননি। এ বিষয়ে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আল মামুন বলেন, ‘বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত থাকায় তদন্ত কিছুটা বিলম্বিত হয়েছে। শিগগিরই প্রতিবেদন দাখিল করা হবে। তদন্তাধীন বিষয়ে এখনই কিছু বলা যাবে না।’

উপদেষ্টা বরাবর দেওয়া অভিযোগে বলা হয়, আওয়ামী লীগের আশীর্বাদপুষ্ট প্রকৌশলী শফিউল ইসলাম প্রায় ১৩ বছর ধরে গাইবান্ধা পৌরসভা কার্যালয়ে চাকরি করছেন। র্দীঘদিন থেকে অনিয়ম করলেও ভয়ে তাঁর বিরুদ্ধে কেউ ব্যবস্থা নিতে পারেননি। ওই প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে ঘুষ বাণিজ্য ছাড়াও দুর্ব্যবহার, অনিয়ম-দুর্নীতির আরও অভিযোগ রয়েছে। প্রকল্পের বরাদ্দ টাকার ৬ শতাংশ ঘুষ দিয়ে ফাইল ছাড় করতে হয়। 

আবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়, যোগদানের পর থেকে তিনি পৌরসভার নকশা অনুমোদনের দায়িত্ব পালন করছেন। বাড়ি নির্মাণের নকশা অনুমোদনে তিনি চার থেকে পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত ঘুষ নিতেন। টাকা না দিলে সেবাগ্রহীতাদের নানাভাবে হয়রানি করতেন। এসব অবৈধভাবে টাকা আয় করে অঢেল সম্পদের মালিক হয়েছেন। জেলা ও ঢাকা শহরে জমিসহ বাড়ি কিনেছেন তিনি। 

ঠিকাদার ফিরোজ কবির দাবি করেন, ‘আমিও ওই প্রকৌশলীকে মোটা অংকের টাকা দিয়ে বিল তুলতে বাধ্য হয়েছি। কেউ প্রতিবাদ করলে তাঁর কাজে হয়রানি করতেন। এমনকি একটি সড়কের কাজ দুই থেকে তিনবার করিয়ে নিতেন। অতিষ্ঠ হয়ে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।’  

এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত প্রকৌশলী শফিউল ইসলামের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। সোমবার গাইবান্ধা পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী রেজাউল ইসলাম বলেন, পৌর প্রশাসক ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সাধারণ) হেদায়েতুল ইসলাম অভিযুক্ত প্রকৌশলী শফিউল ইসলামকে শোকজ করেছেন। এ ব্যাপারে তিন দিনের মধ্যে জবাব চাওয়া হয়েছে। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: প রসভ র ল ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

গণঅভ্যুত্থানে হত্যা: ফেনী পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর গ্রেপ্তার

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় ফেনী পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর খালেদ খান পাঠানকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তারের পর আজ মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) বিকেলে তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

পুলিশ জানায়, সোমবার (১৪ এপ্রিল) সন্ধ্যায় সৌদি আরব থেকে দেশে ফেরার পর ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর রাতেই তাকে ফেনী মডেল থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।

ফেনী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সামসুজ্জামান জানান, গত বছরের ৪ আগস্ট ফেনীতে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় সহিংসতা ও হত্যাকাণ্ড ঘটে, সেই মামলায় খালেদ খান পাঠান এজাহারনামীয় আসামি। তথ্যের ভিত্তিতে বিমানবন্দর থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। আজ মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) বিকেলে আদালতে সোপর্দ করা হলে বিচারক তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

আরো পড়ুন:

দুদকের মামলায় এভিয়েন্টের নুরুল আমিনের ৮ বছরের দণ্ড

থাইল্যান্ডের নারীকে ধর্ষণ ও মারধরের অভিযোগে মামলা, অভিযুক্ত গ্রেপ্তার

গত ৪ আগস্টের আন্দোলনে ফেনীর মহিপালে ছাত্র ও জনসাধারণের ওপর আওয়ামী লীগের  হামলায় ৯ শিক্ষার্থী নিহত হয়। অনেকে আহত হয়। এ সব হত্যার একাধিক মামলায় খালেদ খান পাঠান এজাহারনামীয় আসামি। 

ঢাকা/সাহাব/বকুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ