ছোট থেকে সবারই পছন্দের খাবার হয়ে উঠেছে ফাস্টফুড। কেউ কেউ নিয়মিত এ ধরনের খাবার খান। কিন্তু গবেষণা বলছে, ঘন ঘন ফাস্টফুড খেলে স্বাস্থ্যের ঝুঁকি তৈরি করতে পারে, বিশেষ করে কিডনিস্বাস্থ্যে বেশি প্রভাব ফেলে। চলুন জেনে নেওয়া যাক অতিরিক্ত ফাস্টফুড খাওয়া কীভাবে শরীরের ওপর প্রভাব ফেলে। 
উচ্চ সোডিয়াম গ্রহণ: ফাস্টফুড জাতীয় খাবারে সোডিয়ামের পরিমাণ বেশি থাকে, যা উচ্চ রক্তচাপ বাড়িয়ে দেয় এবং কিডনির ওপর চাপ সৃষ্টি করতে পারে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই অভ্যাস কিডনির কার্যকারিতা ব্যাহত করতে পারে এবং কিডনি রোগের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
অস্বাস্থ্যকর চর্বি: অনেক ফাস্টফুড আইটেমে পাওয়া ট্রান্সফ্যাট এবং স্যাচুরেটেড ফ্যাট শরীরে প্রদাহ এবং অক্সিডেটিভ চাপ বাড়ায়। দীর্ঘমেয়াদে এসব খাবার কিডনির ক্ষতি করে।
অতিরিক্ত চিনির ব্যবহার: ফাস্টফুড খাবারের সঙ্গে প্রায়ই চিনিযুক্ত পানীয় এবং মিষ্টিজাতীয় খাবার খাওয়া হয়, যা ওজন বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ইনসুলিন প্রতিরোধ ক্ষমতা এবং ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। এসবই  কিডনির স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর।
ফাইবার এবং পুষ্টির অভাব: ফাস্টফুডে সাধারণত ফাইবার, ভিটামিন এবং খনিজের মতো প্রয়োজনীয় পুষ্টি কম থাকে, যা কিডনির কার্যকারিতার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। পুষ্টি ছাড়া এসব খাবার কিডনিতে পাথর এবং অন্যান্য কিডনি-সম্পর্কিত সমস্যা  বাড়াতে পারে।
ডিহাইড্রেশন: অনেক ফাস্টফুডে বিকল্প লবণের পরিমাণ বেশি এবং পানির পরিমাণ কম থাকে, যা শরীরে ডিহাইড্রেশন তৈরি করতে পারে। এর ফলে কিডনিতে চাপ সৃষ্টি করে এবং কিডনিতে পাথর ও মূত্রনালির সংক্রমণ বাড়াতে পারে। 
স্থূলতা: নিয়মিত ফাস্টফুড খাওয়ার সঙ্গে ওজন বৃদ্ধি এবং স্থূলতার সম্পর্ক রয়েছে। উভয়ই কিডনি রোগ এবং অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যার ঝুঁকির কারণ।
ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বৃদ্ধি: ফাস্টফুডে থাকা উচ্চ ক্যালোরি, উচ্চ চিনির উপাদান টাইপ টু ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ায়। এর ফলে কিডনি রোগের ঝুঁকিও বাড়ে। 
সামগ্রিক স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব: ফাস্টফুডে ব্যবহৃত বিভিন্ন উপকরণ শুধু কিডনির স্বাস্থ্যকে প্রভাবিত করে না বরং হৃদরোগ, স্ট্রোক এবং ক্যান্সারের মতো অন্যান্য স্বাস্থ্যঝুঁকিও বাড়ায়। এসব রোগ কিডনির কার্যকারিতাকে পরোক্ষভাবে প্রভাবিত করতে পারে।
সুস্থ থাকতে তাই যতটা সম্ভব ফাস্টফুড এড়িয়ে চলুন এবং খাদ্যতালিকায় স্বাস্থ্যকর খাবার রাখুন। 
[সহকারী রেজিস্ট্রার (মেডিসিন), বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ, ফরিদপুর]

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ক ডন

এছাড়াও পড়ুন:

এসএসসি পরীক্ষা চলাকালে কেন্দ্রে বিএনপি নেতার ঘোরাঘুরির ভিডিও

চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি জাফতনগর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি নুর উদ্দিন খানের বিরুদ্ধে এসএসসি পরীক্ষা চলাকালে পরীক্ষাকেন্দ্রে প্রবেশের অভিযোগ উঠেছে। একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, আজ বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা ১৫ মিনিটের দিকে উপজেলার জাহানপুর আমজাদ আলী আবদুল হাদি ইনস্টিটিউশন কেন্দ্র থেকে তিনি বের হচ্ছেন।

আজ বাংলা প্রথম পত্র দিয়ে এবারের এসএসসি পরীক্ষা শুরু হয়েছে। পরীক্ষাকেন্দ্রে প্রবেশের বাধ্যবাধকতার বিষয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান ইলিয়াছ উদ্দিন আহাম্মদ প্রথম আলোকে জানান, পরীক্ষা চলাকালে নির্দিষ্ট কিছু ব্যক্তি ছাড়া কেউই পরীক্ষাকেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারবেন না। এ ক্ষেত্রে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, ম্যাজিস্ট্রেট, শিক্ষা বোর্ডের ভিজিল্যান্স দলের সদস্যরা কেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারবেন।

পরীক্ষা চলাকালে কেন্দ্রে প্রবেশের বিষয়ে জানতে চাইলে নুর উদ্দিন খান বলেন, ‘আমার ভাতিজি ওই কেন্দ্রে পরীক্ষা দিচ্ছে। তাকে পৌঁছে দিতে পরীক্ষা শুরুর আগে কেন্দ্রে গিয়েছিলাম। আমি সকাল সাড়ে ৯টার দিকে গিয়েছিলাম।’

ভিডিওতে ১২টা ১৫ মিনিটের দিকে বের হওয়ার বিষয়ে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, ‘আমি ১২টার দিকে কেন্দ্রের বাইরে ছিলাম। ভেতরে ঢুকিনি। বাইরে থেকে কুশল বিনিময় করেছি। কিন্তু রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা তথ্য ছড়াচ্ছে।’

প্রত্যক্ষদর্শীদের একজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, বিএনপি নেতা নুর উদ্দিন খান পরীক্ষা শুরুর পর থেকে অনেকক্ষণ ঘোরাঘুরি করেন। কেন্দ্র সচিবের কক্ষেও যান।

এ বিষয়ে কেন্দ্র সচিব মফিজুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘নুর উদ্দিন খান পরীক্ষা শুরুর আগে কেন্দ্রে ঢুকেছিলেন। পরে আমি বুঝিয়ে–শুনিয়ে বের করে দিয়েছি।’ কেন কেন্দ্রে প্রবেশ করেছেন—এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘কথা তো এইটাই…। আজকে প্রথম দিন তো এমনি গার্ডিয়ান (অভিভাবক) কিছু তো ঢুকছে। ওদের সঙ্গে তাঁকেও (নুর উদ্দিন খান) দেখলাম। পরে আমি বুঝিয়ে বের করে দিয়েছি।’ তাঁর কোনো আত্মীয় পরীক্ষা দিচ্ছেন কি না, এমন প্রশ্নে কেন্দ্র সচিব জানান, তাঁর জানামতে নুর উদ্দিন খানের কোনো ছেলে–মেয়ে, ভাতিজা, ভাতিজি পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে না।

তবে পরীক্ষা চলাকালে নুর উদ্দিন খান কেন্দ্রে ছিলেন বলে নিশ্চিত হয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, সিসিটিভি ফুটেজ দেখে নুর উদ্দিন খানের উপস্থিতি নিশ্চিত হওয়া গেছে। পরীক্ষা চলাকালে তিনি কোনোভাবেই কেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারেন না। এ জন্য তাঁকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসককেও বিষয়টি জানানো হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ