ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আহত ব্যক্তিদের সঙ্গে জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন কেন্দ্রের (পঙ্গু হাসপাতাল) কর্মচারীদের মারামারির ঘটনা ঘটেছে। সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে হাসপাতালের সামনে এ ঘটনা ঘটে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন। এর জেরে বেলা সাড়ে ১১টা থেকে বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত প্রায় ছয় ঘণ্টা হাসপাতালের জরুরি বিভাগে সেবা বন্ধ ছিল। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েন হাসপাতালটিতে চিকিৎসা নিতে আসা মানুষ।

মারামারির ঘটনার পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সকাল থেকে পঙ্গু হাসপাতালে সেনাবাহিনী ও পুলিশ সদস্যদের উপস্থিতি ছিল। বিকেলে হাসপাতালের পরিচালকের সঙ্গে বৈঠক করেন অভ্যুত্থানে আহতরা ব্যক্তিরা। তারপর বিকেল সাড়ে ৫টা থেকে জরুরি বিভাগে টিকিট বিক্রি এবং চিকিৎসাসেবা শুরু হয়।

পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে হাসপাতালের কয়েকজন কর্মী বলেছেন, গত কয়েক দিন ধরে হাসপাতালের কর্মীদের সঙ্গে অভ্যুত্থানে আহতদের দ্বন্দ্ব চলছে। এর জেরে রোববার রাতে ব্লাডব্যাংকের এক কর্মীকে মারধর করেন আহত কয়েকজন ব্যক্তি। এ ঘটনার প্রতিবাদে সোমবার সকালে কর্মীরা হাসপাতালের সামনে অবস্থান নেন। তখন তাঁদের ওপর হামলা করা হয়।

তবে গণ-অভ্যুত্থানে আহত ব্যক্তিরা বলেছেন, আন্দোলনে আহত একজনের জন্য রক্ত নিতে অন্য আহত ব্যক্তিরা রোববার রাতে ব্লাডব্যাংকে যান। তখন তাঁদের রক্ত দেওয়া হয়নি। দালাল চক্রের মাধ্যমে ঘুষ দিয়ে রক্ত সংগ্রহ করতে বলা হয়। এ নিয়ে তর্কের এক পর্যায়ে আন্দোলনে আহত একজনকে মারধর করা হয়। সকালে ফিজিওথেরাপি বিভাগে চিকিৎসা নিতে গেলেও আহত একজনকে মারধর করেন হাসপাতালের কর্মীরা। এর জেরে মারামারির ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় তাঁদের অন্তত পাঁচজন আহত হয়েছেন।

আন্দোলনে আহতদের পক্ষে কোরবান শেখ হিল্লোল নামের একজন প্রথম আলোকে বলেন, পঙ্গু হাসপাতালে দালাল সিন্ডিকেট সক্রিয়। এসব দালাল নির্মূলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে বারবার বলা হয়েছে। কিন্তু তারা কর্ণপাত করছে না। রোববার রাতে রক্ত সংগ্রহ করতে গেলে সেখানেও দালাল চক্রের খপ্পরে পড়তে হয়। এ নিয়ে কথা বলতে গেলে আহত ব্যক্তিদের ওপর হামলা করা হয়। সোমবার সকালে বহিরাগতদের নিয়ে এসে আহতদের ওপর আবারও হামলা করেন হাসপাতালের কর্মীরা।

পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মো.

ইবনে মিজান প্রথম আলোকে বলেন, পঙ্গু হাসপাতালের কর্মী ও আন্দোলনে আহতদের মধ্যে মারামারির পর হাসপাতালের পরিচালকসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে বৈঠক করা হয়েছে। এ ধরনের ঘটনা এড়াতে উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।

যা বললেন হাসপাতালের পরিচালক

আন্দোলনে আহত ব্যক্তিদের সঙ্গে পঙ্গু হাসপাতালের কর্মীদের মারামারির ঘটনায় দিনভর পঙ্গু হাসপাতালে উত্তেজনা ছিল। মারামারির ঘটনায় একজন আনসার সদস্যও গুরুতর আহত হয়েছেন। তিনি শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

এ ছাড়া প্রায় ছয় ঘণ্টা জরুরি বিভাগ বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়েন চিকিৎসা নিতে আসা লোকজন। দিনভর অনেক রোগী হাসপাতালে এসে জরুরি চিকিৎসা পাননি। বিকেলে নরসিংদী থেকে দুই বছরের শিশুকে নিয়ে জরুরি বিভাগের সামনে কয়েকজনকে বসে থাকতে দেখা যায়। ওই শিশুর পরিবারের সদস্য মো. ইয়াসিন জানান, তিন ঘণ্টা ধরে শিশুটিকে নিয়ে হাসপাতালে বসে আছেন তাঁরা। শিশুটি কাঁদতে কাঁদতে ঘুমিয়ে পড়ছে। আবার জেগে কান্না করছে। হাসপাতালের কেউ তাঁদের সহায়তা করছেন না।

পরে বিকেল ৫টায় আন্দোলনে আহতদের সঙ্গে বৈঠকের পর হাসপাতালের পরিচালক মো. আবুল কেনান সাংবাদিকদের বলেন, গতকাল (রোববার) রাতে ব্লাডব্যাংকে রক্ত সংগ্রহ করাকে কেন্দ্র করে একটি উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি হয়। জুলাই অভ্যুত্থানে আহত কয়েকজনের সঙ্গে হাসপাতালের কর্মীদের ভুল–বোঝাবুঝি হয়। এতে হাতাহাতির ঘটনাও ঘটে। এই পরিস্থিতিতে সকালে কর্মীদের মধ্যে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি হয়। এর জেরে মারামারি হয়েছে, যা দুঃখজনক। এ ঘটনায় যাঁরা আহত হয়েছেন, তাঁদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হবে।

হাসপাতালে বিশৃঙ্খলা ও মারামারির ঘটনায় যাঁরা জড়িত তাঁদের বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করা হবে জানিয়ে হাসপাতালের পরিচালক বলেন, এখানে যে ঘটনা ঘটেছে, এখনো পরিপূর্ণভাবে তথ্য সংগ্রহ করা সম্ভব হয়নি। সিসিটিভি ফুটেজ এবং অন্যান্য তথ্য সংগ্রহের পর কেউ যদি দায়ী থাকে, হাসপাতালের কর্মী হলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। সবকিছু পর্যবেক্ষণ করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে। আগামী অন্তত ২৪ ঘণ্টা সবাইকে ধৈর্য ধরার অনুরোধ করেন তিনি।

গণ-অভ্যুত্থানে আহত ব্যক্তিদের দাবি—বহিরাগতরা তাঁদের ওপর হামলা করেছে। এ বিষয়ে আবুল কেনান বলেন, ‘আমরা এখানে অবরুদ্ধ একটা অবস্থার মধ্যে ছিলাম। বাইরের অবস্থা সম্পর্কে আমরা জ্ঞাত নই। ক্লোজড সার্কিট (সিসি) ক্যামেরার ফুটেজ এবং অন্যান্য তথ্যের ভিত্তিতে সেটি বলতে পারব।’

হাসপাতালে সিন্ডিকেটের বিষয়ে পরিচালক বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহতসহ সকলের সহায়তা চাইব, প্রতিষ্ঠানটি দালালমুক্ত হোক। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে অনুরোধ করব কীভাবে এই প্রতিষ্ঠানকে দালালমুক্ত করা যায়, সহায়তা করুন।’

পরিচালক জানান, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় আহত হয়ে এখন পঙ্গু হাসপাতালে ১০৬ জন ভর্তি আছেন। এখন পর্যন্ত এই হাসপাতালে ৮৯১ জন চিকিৎসা নিয়েছেন।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ম র ম র র ঘটন পর স থ ত দ র ওপর আহতদ র এর জ র এ ঘটন ঘটন য়

এছাড়াও পড়ুন:

চট্টগ্রামে আহতের তালিকা নিয়ে বৈষম্যের অভিযোগ

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় চট্টগ্রাম নগরীর নিউমার্কেট মোড়ে সংঘর্ষে আহত হন মো. ফাহিম। ছাত্রলীগ ও যুবলীগের সঙ্গে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়েছে সেখানে। হাত ও পায়ে আঘাত পান ফাহিম। হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফেরেন। চিকিৎসকরা বলেছেন, ‘সামান্য আহত’। শারীরিক যাবতীয় বিষয় বিবেচনা করে তাঁর নাম ‘সি’ ক্যাটেগরিভুক্ত করেছে প্রশাসন। তবে এটি মানতে নারাজ তিনি।

ফাহিমের দাবি, ‘হামলায় তিনি গুরুতর আহত হয়েছেন। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পায়ের লিগামেন্ট।’ তাই তিনি বাড়তি সুবিধা পেতে ‘এ’ ক্যাটেগরিতে নাম তালিকাভুক্ত করার দাবি জানিয়েছেন প্রশাসনের কাছে। এ জন্য নানা পরীক্ষা করে গুরুতর আহত হওয়ার বিষয় প্রমাণের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। পরিচিত কয়েকজন সমন্বয়ক ও সহসমন্বয়ক দিয়ে দায়িত্বশীলদের কাছে করাচ্ছেন তদবির।

শুধু ফাহিম নন, জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে আঘাত পাওয়া অনেকেই চাচ্ছেন ‘এ’ কিংবা ‘বি’ ক্যাটেগরির সুবিধা। আন্দোলনে আহতদের তিন ক্যাটেগরিতে ভাগ করা হয়েছে। বাড়তি সুবিধা পেতে ‘সি’ ক্যাটেগরির কেউ কেউ নিজ উদ্যোগে করাচ্ছেন পরীক্ষা-নিরীক্ষা, দেখাচ্ছেন ডাক্তারও। বিষয়টি নিয়ে চাপে আছে প্রশাসন। তবে শত কৌশল কিংবা চাপ প্রয়োগ করে কেউ অনৈতিকভাবে কোনো তালিকায় ঢুকতে পারবে না বলে জানিয়েছেন দায়িত্বশীলরা।

চট্টগ্রামে আন্দোলনে আহতদের তালিকা করা, জমা দেওয়া কাগজপত্র বাছাইসহ যাবতীয় বিষয় তদারকি করছে জেলা প্রশাসন, সিভিল সার্জন কার্যালয়, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালসহ কয়েকটি দপ্তর। জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, আহতদের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হতে আবেদন পড়েছে সাড়ে ৫০০-এর বেশি। চিকিৎসা-সংক্রান্ত কাগজপত্র যাচাই করে এর মধ্যে ‘এ’ ক্যাটেগরিভুক্ত করা হয়েছে পাঁচজনকে। ‘বি’ ক্যাটেগরিভুক্ত ৪৩ জন এবং ৫০৭ জন তালিকাভুক্ত হয়েছেন ‘সি’ ক্যাটেগরিতে। ক্যাটেগরিতে বৈষম্য হয়েছে বলে অভিযোগ করছেন আহতদের অনেকেই।

কয়েকটি দপ্তরে গিয়ে দেখা গেছে, আহত বেশ কয়েকজন চিকিৎসা-সংক্রান্ত কাগজপত্র নিয়ে এক কর্মকর্তার কক্ষ থেকে আরেক কর্মকর্তার কক্ষে ছুটছেন। জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ে দেখা হয় শরীফুল ইসলামের সঙ্গে। আন্দোলনে আহত শরীফুল আছেন ‘সি’ ক্যাটেগরিতে। টানা কয়েকদিন এখানে এসেছেন তিনি। তাঁর দাবি, আন্দোলনে গিয়ে একাধিকবার গুরুতর আহত হয়েছেন। গ্রেড নিয়ে তাঁর সঙ্গে অন্যায় করা হয়েছে। তিনি ‘এ’ কিংবা ‘বি’ গ্রেডে নাম তালিকাভুক্ত করাতে চাচ্ছেন।

শরীফুল বলেন, ‘আন্দোলনের সময় নগরের নিউমার্কেট ও দুই নম্বর গেটে আমার ওপর কয়েক দফায় হামলা চালায় ছাত্রলীগ, যুবলীগের নেতাকর্মীরা। হাত, পা, মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাত পেয়েছি। এখনও ভালোভাবে হাঁটতে পারি না।’ তিনি আরও বলেন, ‘বেশ কয়েক কর্মকর্তার সঙ্গে দেখা করেছি। তাদের বলেছি, ডাক্তার আমার এক পায়ের লিগামেন্ট ছিঁড়ে যাওয়ার কথা বলেছেন। কিন্তু টাকা না থাকায় এমআরআই পরীক্ষা করাতে পারিনি। কর্মকর্তারা বলেছেন, লিগামেন্ট ছিঁড়ে যাওয়ার বিষয়টি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে প্রমাণ করতে হবে। তারপর ক্যাটেগরি সংশোধনের বিষয়টি বিবেচনা করবেন তারা।’

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ও গঠিত কমিটির সদস্য সচিব ডা. মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, “আমাদের পাঁচ সদস্যের টিম অত্যন্ত সততা ও স্বচ্ছতার সঙ্গে যাবতীয় তথ্য-উপাত্ত যাচাই থেকে শুরু করে সব কাজ করছি। এর প্রধান লক্ষ্য প্রকৃত আহতরা যাতে তালিকায় সঠিক ক্যাটেগরিভুক্ত হন ও কোনো সুবিধাবাদী যেন সুযোগ নিতে না পারে। ডাক্তারি সার্টিফিকেটসহ প্রয়োজনীয় সব কাগজপত্র একাধিকবার খতিয়ে দেখে এরই মধ্যে সাড়ে ৫০০-এর অধিক আহতকে ক্যাটেগরিভুক্ত করা হয়েছে। ‘সি’ ক্যাটেগরির অনেকেই ‘এ’ বা ‘বি’ ক্যাটেগরিভুক্ত হতে চেষ্টা করছেন। বিষয়টি নিয়ে আমরা বিব্রত।” এখনও অনেকেই তালিকাভুক্ত হতে আবেদন করছেন বলে জানান তিনি।

কমিটিতে থাকা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘অনেকের চিকিৎসা-সংক্রান্ত কাগজপত্র দেখে আমাদের মনে হয়েছে, সামান্য আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছেন। বিষয়টি চিকিৎসকরাও কাগজপত্রে উল্লেখ করেছেন। তার পরও তা মানতে নারাজ তারা। ক্যাটেগরি সংশোধন করতে তারা নানাভাবে চাপ প্রয়োগ করছেন।’ চমেক হাসপাতালের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, ‘আহতদের অনেকেই গুরুতর আঘাত পেয়েছেন, অনেক মুমূর্ষু ছিলেন– এমন উল্লেখ সংবলিত সার্টিফিকেট পেতে নানাভাবে চেষ্টা করছেন। কেউ কেউ অন্যকে দিয়ে তদবিরও করছেন।’

‘এ’ ক্যাটেগরিভুক্তদের এককালীন ৫ লাখ টাকা, ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে ২ লাখ, ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরে ৩ লাখ টাকা দেওয়া হবে। এ ছাড়া মাসিক ২০ হাজার টাকা ভাতা পাবেন। ‘বি’ ক্যাটেগরিভুক্তরা এককালীন ৩ লাখ টাকা, ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে ১ লাখ টাকা, ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরে ২ লাখ টাকা পাবেন। তারা মাসিক ১৫ হাজার টাকা ভাতা পাবেন। ‘সি’ ক্যাটেগরিভুক্তরা এককালীন ১ লাখ টাকা, মাসিক ১০ হাজার টাকা ভাতা পাবেন। 

আন্দোলনের সময় গুলিবিদ্ধ ইসমাইল হোসেনের স্ত্রী কলি আক্তার বলেন, “আন্দোলনে গিয়ে আমার স্বামীর ডান হাত ভেঙেছে। আট মাস ধরে তিনি শয্যাশয়ী। এমন অবস্থায় বাচ্চাদের নিয়ে চলতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। অথচ আমার স্বামীকে দেওয়া হয়েছে ‘সি’ ক্যাটেগরি।” আহত রিয়াদ সুলতানা বলেন, ‘সাহস নিয়ে লাগাতার আন্দোলনে অংশ নিয়েছিলাম। অথচ আজ কেন আমাদের এর কাছে ওর কাছে যেতে হবে? আহতদের যাবতীয় বিষয় দেখভালের জন্য যাদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, তারা এখন নিজেদের আখের গোছাতে ব্যস্ত। কে কোন কমিটিতে কী পদ বাগিয়ে নেবেন, সেটিই তাদের এখন বড় মিশন।’

আহত ও তাদের পরিবারের সদস্যদের অনেকে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, সহযোগিতা নিতে গেলে আগে সমন্বয়কদের কাছ থেকে অনুমতি নিতে হয়। চিকিৎসা নিতে গেলে সমন্বয়কদের কাছ থেকে স্বাক্ষর নিয়ে আসতে বলা হয়। চোখ নষ্ট হওয়ার মতো গুরুতর আহত বেশ কয়েকজনকে ‘সি’ ক্যাটেগরিতে রাখা হয়েছে। যাদের সঙ্গে সমন্বয়ক কিংবা সহসমন্বয়কদের সখ্য আছে, তাদেরই ভালো সুবিধা দেওয়া হচ্ছে।

চট্টগ্রামে আন্দোলনে আহতদের অধিকাংশই চিকিৎসা নেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে। হাসপাতালের তথ্যমতে, এ পর্যন্ত সাড়ে ছয় শতাধিক মানুষ চিকিৎসা নিয়েছেন। শহীদ হয়েছেন ১১ জন। এর মধ্যে পাঁচজনকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়। অন্যদের মৃত্যু হয় চিকিৎসাধীন অবস্থায়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সন্তান হত্যার বিচারের আগে মা হিসেবে কোনো নির্বাচন আশা করব না
  • পঙ্গু হাসপাতালের কর্মচারীদের সঙ্গে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহতদের মারামারি
  • নিটোরে কর্মীদের সঙ্গে জুলাই আহতদের মারামারি
  • নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে
  • রণক্ষেত্র রণভূমি, ১৮ গুলিবিদ্ধসহ আহত ৩০
  • জুলাই আন্দোলনে শহীদ ও আহতদের সহায়তার জন্য অধিদপ্তর হচ্ছে
  • চট্টগ্রামে আহতের তালিকা নিয়ে বৈষম্যের অভিযোগ
  • জুলাই অভ্যুত্থান নিয়ে ৩০০ প্রামাণ্যচিত্র তৈরি হবে, হবে জাদুঘরও