রাত ১টা। বসন্তের রাতেও কেন যেন বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে। নীরব নিশ্চুপ চারপাশ। ঘুমিয়ে গেছে কর্মমুখর শহর। থেমে গেছে সব কোলাহল। তবুও রাজ্যের হতাশা নিয়ে জেগে আছে ঊর্মিলা।
মুক্তি যখন দিলেই তখন এত দেরিতে কেন মুক্তি দিলে? এমন মুক্তি তো আমি চাইনি– যে মুক্তি আমায় শান্তি দেয়নি একদণ্ড, দেয়নি মনের খুশিতে সুনীল আকাশে স্বাধীনভাবে ডানা মেলে উড়ে চলার অধিকার। বরং তুমি আমায় বন্দি করে রাখ বুকের প্রকোষ্ঠে, না পাওয়ার বেদনায় যখন গভীর রাতে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদবে তখন না হয় আমি ব্যথা হয়ে ঝরব সাড়ে পাঁচ প্রহর। আলো আঁধারিয়া চিলেকোঠা রুমের আবছা আলোয় টেবিল ল্যাম্পের উষ্ণ তাপে শখের ডায়েরিতে এই কয়েক লাইন লিখতেই খানিকটা হাঁপিয়ে উঠল ঊর্মিলা।
আজ সেই দিন যেদিন একে অপরের কাছাকাছি এসেছিল ঊর্মিলা আর রাজন। একটা নির্লিপ্ত শীতের বিকেলে টিএসসিতে প্রথম দেখা হয়েছিল। তারপর কত স্বপ্ন কত আশা আর হাজারো কমিটমেন্টের ঘেরাটোপে ছুটে চলা। অতঃপর তিন মাস সংসারজীবনের ইতি ঘটিয়ে দু’জনের মুক্তি। আজ এই নিশুতি রাতে সেসব ভাবতে গিয়ে ছলছল করে উঠছে ঊর্মিলার চোখ। হাতের অপর পিঠে চোখটা খানিক মুছে আবারও ডায়েরির বুকে স্মৃতির পশরা সাজিয়ে বসল সে।
মুক্তির স্বাদ আমার কাছে মহার্ঘ্য অমৃত, তবু তো গর্ব করে বলতে পারি কেউ আমায় ভালোবেসেছিল খুব গোপনে। মুক্তির স্বাদ দিতে পারেনি। এ মুক্তি তো আমি চাইনি। কভু চাইনি এমন স্বাধীনতা। এক প্রহরে তোমার যত্ন নিয়ে না হয় বেড়ে উঠব তোমার মতো করে। আরেক প্রহরে না হয় ছুঁইয়ে দিও আমার আঙুল, সেখানে না হয় আমি অটুট বন্ধনের স্বাদ খুঁজে নেব। বাকি সাড়ে তিন প্রহর তোলা থাক তোমার প্রতিটি শ্বাস-প্রশ্বাসে, রক্তকণিকায় কিংবা প্রতিটি চোখের পলকে। আষ্টেপৃষ্ঠে বেঁধে রাখ আমায় তোমার অস্তিত্বজুড়ে, বেঁচে থাকুক আমার প্রথম প্রেম।
তুমি কি জান– তোমার জৌলুসহীন মুক্তি আমায় কপটতা শেখায় কিন্তু প্রেম শেখাতে পারেনি কোনোদিন। পারনি নিঃস্বার্থভাবে আমায় একটু ছুঁইয়ে দিতে কিংবা ওই রক্তগোলাপ অধরে আলতো একটা চুম্বন দিতে। মুক্তি দিয়েও আমায় অদৃশ্য শিকলে কেন বন্দি করে রাখলে? মুক্ত করা প্রেমে এত জ্বালা, এত বিষাদ থাকে কেন? তুমি কি তা বলতে পার? জানি পারবে না যুক্তিতে মুক্তি মিললেও, আদতে মুক্তির কোনোদিন মুক্তি মেলেনি।
আমার কিন্তু সেটা জানা ছিল না। সে তো হৃদয়ের তোমার মুক্ত করে দেওয়া প্রেম আজকাল বড্ড স্বার্থবাদী হয়ে গেছে.
সুহৃদ ঢাকা
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: প রহর
এছাড়াও পড়ুন:
‘বরবাদ’ দিয়ে বিশ্ববাজারে সিনেমা পরিবেশনায় শাকিবের এসকে ফিল্মস
আন্তর্জাতিক পরিসরে সিনেমা পরিবেশনা শুরু করল দেশ সেরা চিত্রনায়ক শাকিব খানের প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান এসকে ফিল্মস বা শাকিব খান ফিল্মস।
বাংলাদেশের স্বনামধন্য এই প্রযোজনা হাউজটি সিনেমা নির্মাণের পাশাপাশি এখন থেকে নিয়মিত নর্থ আমেরিকা (এসকে ফিল্মস ইউএসএ) এবং গলফে (এসকে ফিল্মস ইউএই) সিনেমা পরিবেশনা করবে।
৯ এপ্রিল (নিউ ইয়র্কের স্থানীয় সময়) সন্ধ্যায় জ্যাকসন হাইটসের একটি রেস্তোরাঁয় এসকে ফিল্মস ইউএসএ আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন এসকে ফিল্মস ইউএসএ-এর সার্বিক তত্ত্বাবধায়ক বদরুদ্দোজা সাগর, ফারজানা আক্তারসহ অনেকে।
আরো পড়ুন:
তামান্নার নতুন আইটেম গানের শুটিংয়ের ভিডিও ফাঁস
শাবনূরের ঝটিকা সফরের কারণ কী?
এসকে ফিল্মস ইউএসএ সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, আগামী ১৮ এপ্রিল যুক্তরাষ্ট্র ও ১৯ এপ্রিল কানাডায় ‘বরবাদ’ মুক্তির মাধ্যমে এসকে ফিল্মস ইউএসএ আন্তার্জাতিকভাবে ফিল্ম ডিসট্রিবিউশন শুরু করবে।
মধ্যপ্রাচ্যেও কাজ শুরু করেছে প্রতিষ্ঠানটি। ‘হিরো দ্য সুপারস্টার’, ‘পাসওয়ার্ড’, ‘বীর’ সিনেমার প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান এসকে ফিল্মস জানায়, অচিরেই মধ্যপ্রাচ্য, ইউরোপ, অস্ট্রেলিয়াতে এসকে ফিল্মস ফিল্ম ডিসট্রিবিউশন শুরু করবে। ইতোমধ্যে প্রাথমিক প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।
বদরুদ্দোজা সাগর বলেন, “বড় পরিসরে বাংলা সিনেমাকে বিশ্বের কাছে পৌঁছে দিবে এসকে ফিল্মস ইন্টারন্যাশনাল। সেই ধারাবাহিকতায় এসকে ফিল্মস ইন্টারন্যাশনালি ফিল্ম ডিসট্রিবিউশনের উদ্যোগ নিয়েছে। আশা করি, এই উদ্যোগ বাংলা সিনেমার জন্য সুফল বয়ে আনবে এবং বিশ্বময় বাংলা সিনেমার জয়যাত্রা অব্যাহত রাখবে।”
ঈদুল ফিতরে বাংলাদেশের ১২০টি সিনেমা হলে মুক্তির পর সারাদেশে ব্যাপক আলোচনার তৈরি করেছে ‘বরবাদ’। মুক্তির ১০দিন পেরিয়ে গেলেও এখনো দর্শকদের আগ্রহ কমেনি। সিনেপ্লেক্স, মাল্টিপ্লেক্স থেকে সিঙ্গেল স্ক্রিন; সবখানে দৈনিক হাউজফুল যাচ্ছে। বাংলাদেশের দর্শকদের উল্লাস আগ্রহী করেছে যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডা প্রবাসী বাঙালিদের। শাকিব খানের ‘প্রিয়তমা’, ‘রাজকুমার’, ‘তুফান’ দেখে মুগ্ধ হওয়া প্রবাসী দর্শকরা এখন ‘বরবাদ’ সিনেমার জন্য অপেক্ষা করছেন।
বদরুদ্দোজা সাগর বলেন, “যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা প্রবাসীরা ‘বরবাদ’ দেখার জন্য অনেক আগ্রহী। এসকে ফিল্মস ইউএসএ এসব দর্শকদের আগ্রহকে সম্মান জানিয়ে ১৮ এপ্রিল যুক্তরাষ্ট্র ও ১৯ এপ্রিল কানাডায় ‘বরবাদ’ আনুষ্ঠানিকভাবে আন্তর্জাতিক পরিসরে মুক্তি দিচ্ছে।”
যেসব স্টেটে বাঙালি কমিউনিটি রয়েছে, সেসব স্থানের থিয়েটারে প্রদর্শিত হবে ‘বরবাদ’। প্রথম সপ্তাহে ৩৫-৪০টি থিয়েটারে সিনেমাটি মুক্তি পাবে বলে জানিয়েছেন বদরুদ্দোজা সাগর।
১৮ এপ্রিল থেকে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন শহরে ‘বরবাদ’ সিনেমা প্রদর্শিত হবে। এগুলো হলো— নিউ ইর্য়ক, বোস্টন, ভার্জিনিয়া, ওয়াশিংটন ডিসি, আটলান্টা, মিশিগান, সানফ্রান্সিসকো, লস অ্যাঞ্জেলেস, ম্যারিল্যান্ড, বাফেলো, ফিলাডেলফিয়া। ১৯ এপ্রিল কানাডার বাঙালি জনবসতিপূর্ণ মন্ট্রিয়াল, অটোয়া এবং টরন্টো শহরে দেখা যাবে ‘বরবাদ’।
মেহেদি হাসান হৃদয় পরিচালিত ‘বরবাদ’ সিনেমায় শাকিব খানের বিপরীতে অভিনয় করেছেন ইধিকা পাল। তা ছাড়াও অভিনয় করেছন মিশা সওদাগর, ফজলুর রহমান বাবু, শহীদুজ্জামান সেলিম, যীশু সেনগুপ্ত, শ্যাম ভট্টাচার্য, মানব সাচদেভ প্রমুখ। এছাড়া আইটেম গানে পারফর্ম করেছেন ওপার বাংলার অভিনেত্রী নুসরাত জাহান। রিয়েল এনার্জি প্রোডাকশনের ব্যানারে নির্মিত হয়েছে সিনেমাটি।
ঢাকা/রাহাত/শান্ত