Samakal:
2025-04-15@18:01:31 GMT

কৃষ্ণচূড়ার মতো স্বপ্নগুলো

Published: 10th, March 2025 GMT

কৃষ্ণচূড়ার মতো স্বপ্নগুলো

প্রতিশ্রুতি 
গোলাম সরোয়ার 

আমি স্বপ্ন দেখি শ্রেণিহীন পৃথিবীর,
কল্পনায় চলে যাই শৃঙ্খলহীন সমাজে, 
জানি হবে মুক্তি, হবে যুক্তির জয়। 
হবে না অস্ত্রের লড়াই, বৈষম্যের খেলা
হবে না সাম্প্রদায়িক হিংসা, 
কোনো ভাই-বোন বর্ণবাদের শিকার হবে না, 
ধর্ষিত হবে না আমার কোনো বোন, 
নিপীড়িত হবে না আমার কোনো ভাই, 
শৃঙ্খলের নামে পড়বে না শিকল, 
বিনা দোষে ফাঁসির কাষ্ঠে ঝুলবে না, 
খাদ্যের জন্য কোনো মা কাঁদবে না, 
কোনো প্রৌঢ় অসহায় ভাববে না। 
শোষকের দ্বারা শোষিত হবে না, 
আর কোনো শিশু উদ্বাস্তু হবে না, 
পথে-প্রান্তরে উলঙ্গ হয়ে ঘুরবে না কেউ, 
জন্ম নেবে না শরণার্থী শিবিরে, 
শুনবে না অভাব আর অনটনের গল্প, 
ঈদের চাঁদের অপেক্ষায় চেয়ে থাকবে না, 
বড় হবে না অন্যের আশ্রয়ে, 
ফিরে আসবে আবার সজীবতা–
কেটে যাবে সব নির্জনতা।

 

আধপোড়া এক চাঁদ 
শাহজালাল সুজন

রাতের তারায় চেয়ে দেখি
আধপোড়া এক চাঁদ,
দিনের আলোয় অমাবস্যা
পাতছে যেন ফাঁদ।

শিয়াল হাঁকে দিনদুপুরে
নাহি তাদের ভয়,
মানুষগুলো গর্তে ঢুকে
করছে নীতির ক্ষয়।

জরাজীর্ণ ব্যাধির দেহে
দেখায় পেশি বল,
সুঠামদেহী বাঁচার তরে
করছে নানান ছল।

বাঘ ও মহিষ খায় যে বসে
এক ঘাটেতে জল,
আবেগ ছকে অঙ্ক কষে 
বিবেক পায়না ফল।

স্বার্থে ঘেরা যুগের আয়নায়
প্রশ্নবিদ্ধ হই,
সাদা পাতায় কালো ভরা
লাভ কি খুলে বই?

 

রঙিন স্পন্দন 
তাসনিম মীম

রুক্ষতা কাটিয়ে এলো নতুন পল্লব
কুঁড়ি ও ফুলের মেলা, 
চারিদিকে রঙিন বসন্তের শোভা। 
গাছে গাছে নতুন পাতা
শিমুল পলাশের লাল আভা,
জীবনের স্পন্দন, প্রকৃতির নবজাগরণ
গান ও কবিতার মোড়ক উন্মোচন
কাঙ্ক্ষিত স্বপ্নের যেন পুনরুজ্জীবন। 


রং, গন্ধ, সুর আর স্পর্শ, বসন্ত যেন
জীবনের সবটুকু আনন্দের এক মহামিলনক্ষেত্র।
কৃষ্ণচূড়ার মতো স্বপ্নগুলো হয়ে উঠুক রঙিন 
কোকিলের সুরের মতো প্রতিটা জীবন হোক
সুরেলা– এটাই বসন্তের প্রতি আমার বন্দনা।

 

একাকিত্ব 
নকুল শর্ম্মা

সৃষ্টির গল্পরা হারিয়ে ফেলে সব কাহিনি 
আঁশটে গন্ধে দৌড়াচ্ছে অস্থির সময়, 
যেখানে তোমার উপস্থিতি নেই বহুকাল ধরে।
বৃথা চিৎকারে কেঁপে উঠে আকাশ
ম্লান হয়ে আসে তোমাকে 
পাওয়ার অদম্য স্পৃহা, 
কুয়াশার কোলে প্রহর কাটায় একাকিত্ব হৃদয় 
সময়ের তলানিতে পড়ে থাকে প্রশ্নবান স্মৃতি। 
কোলাহল থামে না 
নিস্তব্ধতার মিনার জাগে বৈভবে
টুকরো টুকরো হয়ে যায় গল্পের সংলাপ, 
ঔদ্ধত্য তীরন্দাজের অশনিসংকেত 
দক্ষযজ্ঞের বার্তায় অন্য এক কাহিনির জন্ম।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

ঘর ঠান্ডায় ইনডোর প্লান্ট

গরমকালে আমাদের ঘর যেন একেকটা ওভেনে পরিণত হয়। ফ্যান চালিয়ে উপকার মেলে না। এসি বা কুলারের ওপর নির্ভর করতে হয় দিনের বেশির ভাগ সময়। ভাবুন তো, যদি এমন কিছু প্রাকৃতিক উপায় থাকে, যা ঘরকে ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে– তাও কোনো বিদ্যুৎ বা মেশিন ছাড়াই? 
হ্যাঁ, প্রকৃতির কাছে আছে এমন কিছু দারুণ সমাধান। কিছু ইনডোর প্লান্ট আছে, যেগুলো শুধু ঘরের শোভা বাড়ায় না, বরং তাপমাত্রা কমিয়ে আনতে সাহায্য করে, বাতাস পরিষ্কার করে আর আপনার মন-মেজাজও ঠান্ডা রাখে। 
কেন ইনডোর প্লান্ট ঘর ঠান্ডা রাখে? 
গাছ বা পাতার মাধ্যমে পানি ছাড়ে, যাকে বলে বাষ্পমোচন (ট্রান্সপিরেশন)। এই জলীয় বাষ্প বাতাসে ছড়িয়ে পড়ে এবং ঘরের গরম তাপ শোষণ করে। ফলে ঘর একটু ঠান্ডা ঠান্ডা লাগে। বড় পাতার গাছগুলো আবার সূর্যের আলো আটকে দেয়। ফলে সরাসরি রোদ ঘরে ঢুকে গরম করতে পারে না। শুধু তাই নয়, কয়েকটা গাছ একসঙ্গে রাখলে ঘরের আর্দ্রতা ও তাপমাত্রার একটা প্রাকৃতিক ভারসাম্য তৈরি করে। 
কোন গাছগুলো ইনডোরে লাগানো সবচেয়ে ভালো?
ঘর ঠান্ডা রাখতে পারে এমন অনেক ইনডোর গাছ আছে। আজ আমরা এমন কিছু গাছ নিয়ে বলব, যেগুলো বাংলাদেশে সহজে পাওয়া যায় এবং সহজে ঘরে রাখা যায়।  
স্নেক প্লান্ট 
অল্প আলো আর কম পানিতে দিব্যি বেঁচে থাকতে পারে এ গাছ। যারা ব্যস্ত জীবনে নিয়মিত গাছের খেয়াল রাখতে পারেন না, তাদের জন্য আদর্শ। বিশেষ করে রাতেও অক্সিজেন ছাড়ে বলে শোবার ঘরে রাখার জন্য দারুণ। এ ছাড়া বাতাসের ক্ষতিকর উপাদান যেমন ফরমালডিহাইড শোষণ করে। 
পিস লিলি
নরম পাতার এ গাছটি ঘরে ঠান্ডা ভাব আনে বাষ্পমোচনের মাধ্যমে। এর সাদা ফুল ঘরে এনে দেয় প্রশান্তি ও সৌন্দর্যের ছোঁয়া। বাতাস পরিষ্কারে কার্যকর এবং ঘরের ভেতরের বাতাসকে আর্দ্র রাখে, যা গরমে খুব উপকারী। 
আরবিকা পাম
সবুজ পাতায় ঘেরা এ গাছ শুধু চোখে শান্তি দেয় না, বাতাসে আর্দ্রতাও বাড়ায়। হালকা বাতাসে পাতাগুলো দুলে যেন প্রকৃতির স্পর্শ এনে দেয়। এটি বিভিন্ন টক্সিন শোষণ করে ঘরের বাতাস বিশুদ্ধ রাখে এবং সহজে মানিয়ে যায় ঘরের কোনায় বা জানালার পাশে। 
স্পাইডার প্লান্ট 
এই গাছ দ্রুত বড় হয়, তাপ শোষণ করে ঘরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে। একে মা গাছ বলা হয়। কারণ, এর শরীর থেকে ছোট ছোট চারা জন্ম নেয়, যেগুলো আবার নতুন করে লাগানো যায়। খুব বেশি যত্ন ছাড়া বেড়ে ওঠে এবং ঘরের বাতাসে থাকা কার্বন মনোঅক্সাইড ও ফরমালডিহাইড দূর করে। 
অ্যালোভেরা 
ঔষধি গাছ হিসেবে বেশি পরিচিত হলেও, অ্যালোভেরা ইনডোর ঠান্ডা রাখতে দারুণ কাজে দেয়। পাতার ভেতরের জেল আমাদের ত্বকের যত্নে যেমন ব্যবহার হয়, তেমনি পাতাগুলো গরম তাপ শুষে ঘরের পরিবেশ ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে।  
রাবার প্লান্ট 
বড় আকারের মোটা পাতায় সূর্যের আলো আটকে দিতে পারে এ গাছ। তাই রোদ থেকে আসা অতিরিক্ত উত্তাপ কিছুটা কমে যায়। পাশাপাশি ঘরের ভেতর দারুণ এক সবুজ পরিবেশ তৈরি করে। কম আলো ও মাঝারি পানির চাহিদা থাকায় এর যত্ন নেওয়া সহজ। 
জেড প্লান্ট 
ছোট আকৃতির এ গাছটি টেবিল বা জানালার ধারে রাখলে জায়গা কম লাগে অথচ সৌন্দর্য বাড়ে অনেকগুণ। খুব কম পানি লাগে এবং পরিবেশে হালকা ঠান্ডা ভাব ধরে রাখতে সাহায্য করে।  
ইনডোর গাছের যত্নের কিছু সহজ টিপস 
আলো বুঝে গাছ রাখুন: যেসব গাছ রোদ পছন্দ করে (যেমন অ্যালোভেরা, আরবিকা পাম) সেগুলো দক্ষিণ দিকে রাখুন। কম আলো সহ্য করতে পারে এমন গাছ (যেমন স্নেক প্লান্ট, স্পাইডার প্লান্ট) উত্তরমুখী স্থানে রাখাই ভালো। 
পানি দিন বুঝেশুনে: সব গাছে প্রতিদিন পানি দেওয়ার দরকার নেই। মাটি শুকিয়ে গেলে পানি দিন। অতিরিক্ত পানি দিলে গাছের শিকড় পচে যেতে পারে। 
মাটি ও সার: জৈব সার ব্যবহার করলে গাছ ভালো বেড়ে ওঠে। বছরে ২-৩ বার সার দিতে পারেন। 
পাতা পরিষ্কার রাখুন: পাতায় ধুলো জমে গেলে গাছ ঠিকভাবে শ্বাস নিতে পারে না। তাই মাঝে মধ্যে নরম কাপড় দিয়ে পাতাগুলো মুছে দিন। v

সম্পর্কিত নিবন্ধ