পাম্প জব্দের শোধ নিতে কাঁধে হাঁস মারার দায়
Published: 10th, March 2025 GMT
তাহিরপুরের টাঙ্গুয়ার হাওরে তিন শতাধিক হাঁসের মৃত্যু হয়েছে। সাম্প্রতিক এ ঘটনায় টাঙ্গুয়ার হাওর গ্রাম উন্নয়ন কমিটির কোষাধ্যক্ষ আবুল কালামের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছে থানায়।
গত ৮ মার্চ হাওরের চটান্নিয়া বিলে বিষক্রিয়ায় তিন শতাধিক হাঁসের মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় সোমবার তাহিরপুর থানায় অভিযোগ দেন উপজেলার রামসিংহপুরের খামারি কাজল মিয়া। এতে আবুল কালামসহ ১১ জনকে অভিযুক্ত করা হয়। কাজলের দাবি, বিষ ছিটিয়ে হাওরে মাছ শিকার করা হয়েছে। পরে সেখানে গেলে বিষক্রিয়ায় হাঁসগুলোর মৃত্যু হয়।
এদিকে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে, ওই ঘটনার সঙ্গে আবুল কালামের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। তাঁর কাঁধে এই দায় চাপানো হয়েছে অন্য ঘটনার জের ধরে, প্রতিহিংসার বশে।
পূর্ববর্তী ঘটনার অনুসন্ধানে জানা যায়, চটান্নিয়া বিল সেচে মাছ ধরার অভিযোগ রয়েছে খামারি কাজল মিয়ার বিরুদ্ধে। এ তথ্য নিশ্চিত করেছে উপজেলা নির্বাহী অফিস। এ নিয়ে কোষাধ্যক্ষ আবুল কালামের অভিযোগের পর ৪ মার্চ ইউএনও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এ সময় কাজল মিয়ার সেচ পাম্পটি জব্দ করে গোলাবাড়ি ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া হয়।
এর তিন দিন পর বিলে মরা হাঁসের খবর পেয়ে সেখানে যান ইউএনও। এ সময় তিনি ক্ষতিগ্রস্তকে অভিযোগ দায়ের করার পরামর্শ দেন। এ ঘটনায় কাজল
মিয়া গ্রাম উন্নয়ন কমিটির কোষাধ্যক্ষ আবুল কালামসহ ১১ জনের নাম উল্লেখ করে থানায় লিখিত অভিযোগ দেন।
কালামের বিরুদ্ধে দায়ের করা অভিযোগ মিথ্যা দাবি করে ক্ষোভ জানিয়েছেন গ্রাম উন্নয়ন কমিটির নেতারা। তারা বলছেন, পাম্প জব্দের জের ধরেই হাঁস মরার ঘটনায় আবুল কালামকে ফাঁসানো হচ্ছে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ইউএনও আবুল হাসেম বলেন, টাঙ্গুয়ার হাওরে কাজল মিয়ার একটি সেচ পাম্প জব্দ করা হয়েছিল। এ ব্যাপারে অভিযোগ করেছিলেন কোষাধ্যক্ষ আবুল কালাম। প্রতিহিংসার জেরে কালামকে হাঁস মারার ঘটনায় অভিযুক্ত করেছেন কাজল মিয়া।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ঘটন য়
এছাড়াও পড়ুন:
সরাইলে ২ পক্ষের সংঘর্ষ, ইউএনও-ওসিসহ আহত অর্ধশতাধিক
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে পূর্ববিরোধের জের ধরে গ্রামের দুই পক্ষের সংঘর্ষে ইউএনও, ওসিসহ অর্ধশতাধিক আহত হয়েছেন। সংঘর্ষ চলাকালে বসতবাড়ি ও দোকানপাটে ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে।
উপজেলার নোয়াগাঁও ইউনিয়নের তেরকান্দা গ্রামে গতকাল সোমবার (৭ এপ্রিল) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা থেকে রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত এবং আজ মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) সকাল ৬টা থেকে সকাল সাড়ে ৯টা পর্যন্ত এসব ঘটনা ঘটে। পুলিশ এ ঘটনায় চারজনকে আটক করেছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, তেরকান্দা গ্রামের আমীর আলীর বংশ এবং চান্দের বংশের লোকজনের মধ্যে কয়েক মাস ধরে বিরোধ চলে আসছে। এর মধ্যে এক সপ্তাহ আগে চান্দের বংশের শাহনেওয়াজ নামের এক তরুণের সিএনজিচালিত একটি অটোরিকশা চুরি হয়। এ জন্য চান্দের বংশের লোকজন আমীর আলীকে দায়ী করেন। এর জের ধরে গতকাল সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে উভয় পক্ষের লোকজন দা, বল্লম, লাঠিসোঁটা ও ইটপাটকেল নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন।
খবর পেয়ে গতকাল রাতে ঘটনাস্থলে যান ইউএনও মোশাররফ হোসাইন, থানার ওসি রফিকুল হাসানসহ পুলিশের একটি দল। রাত সাড়ে আটটার দিকে ইউএনও, ওসি এবং সরাইল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) কবীর হোসেন, সহকারী উপরিদর্শক (এএসআই) কামরুজ্জামান চৌধুরী, এএসআই আলা উদ্দীন, পুলিশ সদস্য আবদুল কুদ্দুস ও মশিউর রহমান ইটের আঘাতে আহত হন।
তাঁরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছেন। পুলিশ রাতে চারজনকে আটক করে।
ওই ঘটনার জের ধরে আজ সকাল সাড়ে ছয়টার দিকে উভয় পক্ষের লোকজন ফের সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এসময় আমীর আলীর পক্ষের লোকজন চান্দের বংশের অন্তত ১০টি বতসবাড়ি ও একটি দোকান ভাঙচুর ও লুটপাট করে।
এছাড়া শাহজাহান মিয়ার বসতবাড়িতে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয় একটি ঘর। সরাইল থানার পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ব্যর্থ হয়। পরে জেলা সদর থেকে অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়।
সংঘর্ষে গুরুতর আহত আলী মিয়া (৪০) ও কানু মিয়াকে (৫৫) ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। তিনি চান্দের বংশের পক্ষের। আহত অন্যরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নিয়েছেন।
আমীর আলীর বংশের আমির আলি ও চাঁন্দের বংশের শাহনেওয়াজ এর মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিলেও রিসিভ করেননি।
সরাইল থানার ওসি রফিকুল হাসান বলেন, “গতকাল রাতের ঘটনায় আমরা ইটের আঘাতে ব্যথা পেয়েছি। ঘটনার সঙ্গে জড়িত চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। গ্রামের অবস্থা শান্ত রয়েছে। গ্রামে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।”
সরাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোশাররফ হোসাইন বলেন, “সংঘর্ষের ঘটনা শুনে না গিয়ে পারলাম না। রাতের অন্ধকারে ইটের আঘাত পেয়েছি। দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে এমনটি হতেই পারে। তবে সবাইকে ধৈর্য ধরতে হবে। কথায় কথায় সংঘর্ষে জড়ানো যাবে না। আমি চাই এখানে শান্ত পরিবেশ বিরাজ করুক।”
ঢাকা/রুবেল/এস