পাবনার সাঁথিয়া উপজেলায় আমিরুল ইসলাম মাস্টার (৪২) নামে এক যুবলীগ নেতাকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে আওয়ামী লীগ কর্মীদের বিরুদ্ধে।

সোমবার (১০ মার্চ) রাত ৮টার দিকে উপজেলার গৌরীগ্রাম ইউনিয়নের চকপাটা উত্তরপাড়ায় ঘটনাটি ঘটে। সাঁথিয়া থানার ওসি সাইদুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। 

নিহত আমিরুল ইসলাম উপজেলার ক্ষেতুপাড়া ইউনিয়নের ক্ষেতুপাড়া গ্রামের লোহাই প্রামাণিকের ছেলে। তিনি ক্ষেতুপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী ছিলেন। তিনি উপজেলা যুবলীগের প্রস্তাবিত কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন বলে জানা গেছে।

আরো পড়ুন:

কুমারখালীতে ২ এএসআই হত্যা মামলার প্রধান আসামি গ্রেপ্তার 

বানিয়াচংয়ে নয় হত্যা মামলায় আ.

লীগ নেতা গ্রেপ্তার

নিহতের পরিবার, প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ক্ষেতুপাড়া এলাকার আওয়ামী লীগ কর্মী খালেক, ইমু ও মিঠুর সঙ্গে নিহত আমিরুলের পূর্ব বিরোধ ছিল। সেই বিরোধের জেরে আজ রাত ৮টার দিকে আমিরুলের ভাই আশরাফকে ধরে মারধর করেন অভিযুক্তরা। খবর পয়ে আমিরুল সেখানে গেলে অভিযুক্তরা তাকে সিএনজি চালিত অটোরিকশায় তুলে কিছু দূরে নিয়ে কুপিয়ে জখম করে পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে সাঁথিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক আমিরুলকে মৃত ঘোষণা করেন। 

সাঁথিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইদুর রহমান জানান, “আমরা ঘটনাস্থলে আছি। ঘটনার বিস্তারিত জানার চেষ্টা করছি। পরে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানানো যাবে।”

ঢাকা/শাহীন/মাসুদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর য বল গ আওয় ম ল গ অভ য গ আম র ল উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

মশিউর সিকিউরিটিজের অর্থ আত্মসাৎ, শাস্তির দাবি বিনিয়োগকারীদের

মশিউর সিকিউরিটিজ লিমিটেডের প্রতারণার ফাঁদে পড়ে পুঁজি হারিয়েছেন বিনিয়োগকারী ফারহানা জাফরিন। তিনি মশিউর সিকিউরিটিজের মাধ্যমে শেয়ার কেনাবেচার জন্য এক কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছিলেন। সেই বিনিয়োগের একটি টাকাও ফেরত পাননি জাফরিন। তার মতো অনেক বিনিয়োগকারী মশিউর সিকিউরিটিজের প্রতারণার শিকার হয়ে কোটি টাকা হারিয়েছেন।

নিঃস্ব বিনিয়োগকারীরা তাদের বিনিয়োগকৃত অর্থ ফেরতে চেয়ে প্রধান উপদেষ্টা, অর্থ উপদেষ্টাসহ সংশ্লিষ্ট সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। পাশাপাশি প্রতারক প্রতিষ্ঠানসহ ডিএসই ও বিএসইসির দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তার শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তারা।

বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) রাজধানীর বিজয়নগরে ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্ট ফোরামের (সিএমজেএফ) কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বিনিয়োগকারীরা এসব অভিযোগ করেন।

আরো পড়ুন:

আইন লঙ্ঘন করা দুই ব্রোকারেজ হাউজকে জরিমানা

পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের বিশেষ তহবিলের মেয়াদ বাড়াল বাংলাদেশ ব্যাংক

সংবাদ সম্মেলন লিখিত বক্তব্যে বিনিয়োগকারীরা বলেন, ‘আমরা ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীরা এখানে সমবেত হয়েছি মশিউর চিকিউরিটিজ (ডিএসই মেম্বার ১৩৪) এর দুর্নীতির বিষয়ে আপনাদের অবহিত করতে। প্রতিষ্ঠানটি যেভাবে গ্রাহকে ধোকা দিয়েছে তা আমরা এখন পেশ করব। মশিউর সিকিউরিটিজের অর্থ আত্মসাৎ এর উদ্দেশ্যে ক্লায়েন্টের শেয়ার বিক্রি করে এবং অনুমোদনহীন ব্যাক অফিস সফটওয়্যার ব্যবহার করে ক্লায়েন্টের মেইলে জাল পোর্টফলিও পাঠায়, যা মূল পোর্টফোলিওর অনুরূপ। যাতে করে গ্রাহক বুঝতে না পারে তার পোর্টফোলিওতে থাকা শেয়ার বিক্রি হয়েছে। পরবর্তীতে তারা টাকা আত্মসাৎ করে। আমরা জানি শেয়ার বিক্রি কিংবা ক্রয় করলে সিডিবিএল হতে কনফার্মেশন মেসেজ আসে। এক্ষেত্রে গ্রাহকের মোবাইল নম্বর পরিবর্তন করে নিজেদের মোবাইল নম্বর চালিয়ে দেয় মশিউর সিকিউরিটিজ। এভাবে প্রতিষ্ঠানটি জালিয়াতির আশ্রয় নেয়।’

এছাড়া রেকর্ড ডেটের আগে বেশি দামে যে পরিমাণ শেয়ার বিক্রি করে রেকর্ড ডেটের পর সেই পরিমাণ শেয়ার কিনে রেখে দিত। যাতে বিনিয়োগকারী বুঝতে না পারে। ফলে বিনিয়োগকারী লভ্যাংশ পেত না এবং বিক্রি ও ক্রয়ের মূল্য পার্থকের টাকা হিসাব থেকে সরিয়ে নিত। নিরব দীর্ঘমেয়াদী প্রবাসী বিনিয়োগকারীদের সাথে তারা এ ধরনের প্রতারণার কাজ করেছে। অনেক ক্ষেত্রে গ্রাহকের পোর্টফোলিয়তে রক্ষিত নগদ টাকা গ্রাহককে ফেরত না দিয়ে নিজেরা আত্মসাৎ করেছে।’

সংবাদ সম্মেলনে বিনিয়োগকারীরা আরো বলেন, ‘মানুষের সারা জীবনের সঞ্চয় মশিউর সিকিউরিটি নিয়ন্ত্রণ সংস্থার নাকের ডগা দিয়ে নিয়ে যাবে যা দুঃখজনক এবং স্পর্শকাতর। নিয়ন্ত্রণ সংস্থা বিনিয়োগকারীদের অর্থের নিরাপত্তা দিতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ। নিয়ন্ত্রণ সংস্থার দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের সহায়তায় মশিউর সিকিউরিটিজ এ ধরনের কাজ করেছে। দীর্ঘদিন গ্রাহকের অর্থ ও শেয়ারের প্রকৃত তথ্য প্রতিষ্ঠানটি আড়াল করার মাধ্যমে ১৬১ কোটি টাকা আত্মসাৎ করে।’

‘আমরা সরকারের প্রধান উপদেষ্টা, অর্থ উপদেষ্টাসহ সংশ্লিষ্ট সবার মনযোগ আকর্ষণ করছি। এ ধরনের প্রতিষ্ঠিত প্রতারকের হাত থেকে আমাদের অর্থ উদ্ধারে সহযোগিতা চাই এবং প্রতারকের দৃষ্টান্তমূলক শান্তি চাই।’

‘বিষয়টি নিয়ন্ত্রণ সংস্থাকে জানানো হলে তারা তদন্তের নামে কালক্ষেপণ করেছে। এখন পর্যন্ত দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি হয়নি। ইতোমধ্যে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনকে (বিএসইসি) এ বিষয়টি লিখিতভাবে জানানো হয়েছে।’

বিনিয়োগকারী ফারহানা জাফরিন বলেন, “আমি চাকরি জীবনের সব জমানো পুঁজি মশিউর সিকিউরিটিজে রেখে আজ নিঃস্ব। আমি একটি টাকাও ফেরত পাইনি।”

আবু মাসুদ নামে একজন বিনিয়োগকারী বলেন, “আমি ৩৬ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেছি। আমাদের পোর্টফলিও এক রকম দেখাতো, আর তাদের অন্য সার্ভারে আরেক রকম পোর্টফলিও হিসাব রাখতো। যার কারণে আমরা সঠিক তথ্য পেতাম না। তারা আমাদের নম্বরের জায়গায় তাদের নিজেদের নম্বর দিয়ে সিডিবিএলে তথ্য পাঠিয়েছেন। যার কারণে আমরা সিডিবিএল থেকে কোনো তথ্য পেতাম না।”

শাহজাহান আলী বলেন, “মশিউর সিকিউরিটিজ আমাকে ৪০ লাখ ১৫ হাজার ৯০০ টাকার চেক দিয়েছে। কিন্তু টাকা তুলতে গিয়ে দেখি চেক ডিজ ওনার হয়। যার ফলে আমরা আর টাকা পাইনি। মশিউর সিকিউরিটিজের প্রতারণার জন্য আমরা নিয়ন্ত্রক সংস্থার হস্তক্ষেপ কামনা করছি।”

এদিকে এ বিষয়ে মশিউর সিকিউরিটিজ লিমিটেড কর্তৃপক্ষের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

ঢাকা/এনটি/এসবি

সম্পর্কিত নিবন্ধ