ভাসমান নৌযানে ‘পণ্যের গুদাম’, অভিযানে কোস্ট গার্ড
Published: 10th, March 2025 GMT
নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টির উদ্দেশে নৌযানে পণ্য মজুদ রেখে ‘ভাসমান গুদাম’ হিসেবে ব্যবহার করছেন কিছু অসাধু ব্যবসায়ী। রমজানে এসব পণ্য অতিরিক্ত দামে বিক্রি করাই তাদের লক্ষ্য। তবে বিষয়টি জানতে পেরে এরই মধ্যে অভিযানে নেমেছে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড। ঢাকা থেকে চাঁদপুর পর্যন্ত নৌপথের বিভিন্ন পয়েন্টে লাইটারেজ জাহাজসহ পণ্যবাহী অন্যান্য নৌযানে তল্লাশি করা হচ্ছে।
কোস্ট গার্ডের ঢাকা অঞ্চলের স্টাফ অফিসার (অপারেশন) লেফটেন্যান্ট কমান্ডার তাকিউল আহসান সমকালকে বলেন, ঈদ সামনে রেখে যাত্রী ও পণ্যবাহী নৌযানের নিরাপত্তায় চলছে বিশেষ টহল। চাঁদপুর ও নারায়ণগঞ্জের পাগলা স্টেশনের দ্রুতগতির ১৮টি স্পিড বোট দিন-রাত নৌপথে টহল দিচ্ছে। বিশেষ করে এ সময়ে নৌযানে ভাসমান গুদাম বানানোর অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। এভাবে মজুদ করে কোনো পণ্যের দাম যেন বাড়াতে না পারে, সেজন্য অভিযান চালানো হচ্ছে।
সোমবার সরেজমিন দেখা যায়, ঢাকা–চাঁদপুর নৌপথে টহল দিচ্ছে কোস্ট গার্ডের দ্রুতগতির কিছু নৌযান। সন্দেহজনক বাল্কহেড ও লাইটারেজ জাহাজকে সংকেত দিয়ে থামানো হচ্ছে। এরপর চালানো হচ্ছে তল্লাশি। আবার কেউ সংকেত অমান্য করলে টহলে থাকা স্পিড বোটগুলো গতি বাড়িয়ে দলবদ্ধভাবে সংশ্লিষ্ট নৌযানকে চারপাশ থেকে ঘিরে ফেলছে। তখন থামতে বাধ্য হচ্ছে সেই নৌযান।
কোস্ট গার্ড সূত্র বলছে, চলতি বছরের ১১ ফেব্রুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত ১ হাজার ৮৫টি বাণিজ্যিক ও লাইটারেজ জাহাজে যৌথ অভিযান চালানো হয়েছে। এ ধরনের অভিযানের মাধ্যমে রমজান মাসে অন্যান্য খাদ্যপণ্যের মতো ভোজ্য তেলের সংকট ও দাম কমে যাবে বলে আশা তাদের।
কোস্ট গার্ডের এক কর্মকর্তা জানান, চাঁদপুরের হাইমচরে গত বছরের ডিসেম্বরে সারবাহী জাহাজে সাতজনকে হত্যার মতো ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোয় ২৪ ঘণ্টা টহল দেওয়া হচ্ছে। দেশের সমুদ্র বন্দর, বহির্নোঙরে অবস্থানরত বৈদেশিক বাণিজ্যিক জাহাজ ও অভ্যন্তরীণ রুটের নৌযানের সার্বিক নিরাপত্তা দিচ্ছে কোস্ট গার্ড। অভ্যন্তরীন রুটের নৌযানগুলোর নিয়মিত রেজিস্ট্রেশন, ফিটনেস ইত্যাদি যাচাই-বাছাইয়ের মাধ্যমে বিআইডব্লিউটিএ এবং নৌ পরিবহণ মন্ত্রণালয়কে সহায়তা করছে তারা। বহির্নোঙ্গরে ছিঁচকে চুরি, ডাকাতি, চাঁদাবাজি, মাদক পাচার ও বাণিজ্যিক জাহাজে অবৈধভাবে পণ্য কেনাবেচা বন্ধে বছরব্যাপী সাঁড়াশি অভিযান চালানো হচ্ছে। চোরাই মালপত্র বিক্রির স্থানে নিয়মিত যৌথ অভিযান ও ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার মাধ্যমে এসব অপরাধ শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনা হয়েছে। এ ছাড়া কোষ্ট গার্ড সুন্দরবন ও সেন্টমার্টিনে পর্যটকবাহী জাহাজের নিরাপত্তায় কাজ করছে। সুন্দরবনের গহিনে পর্যটকদের জরুরি সেবা এবং অসুস্থ পর্যটকদের দ্রুত হাসপাতালে পাঠানোর মাধ্যমে সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
এদিকে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ খাদ্যসামগ্রী ও ভোজ্য তেলবাহী জাহাজকে নোঙ্গর এলাকায় ৭২ ঘন্টার বেশি অবস্থানের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। এসব জাহাজ যেন দ্রুত গন্তব্যস্থলে পৌঁছাতে পারে তা নিশ্চিত করতে কোস্ট গার্ড নজরদারি অব্যাহত রেখেছে। সুনীল অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করার লক্ষ্যে সমুদ্র, উপকূলীয় ও নদী তীরবর্তী অঞ্চলে সার্বক্ষণিক নজরদারি করা হচ্ছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: অভ য ন
এছাড়াও পড়ুন:
সাজেক যাওয়ার পথে ৮ পর্যটককে অপহরণের ঘটনায় নারীসহ গ্রেপ্তার ৪
খাগড়াছড়িতে পর্যটক অপহরণের ঘটনায় এক নারীসহ ৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল রোববার রাতে দীঘিনালা উপজেলার চিটিং টিলা এলাকায় অভিযান চালিয়ে অপহরণকারীদের গ্রেপ্তার করা হয়।
রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার নন্দনপুরের বাসিন্দা মো. খলিলুর রহমান ৮ বন্ধু মিলে সাজেক ঘোরার জন্য ২ মার্চ খাগড়াছড়ির উদ্দেশে রওনা হন। ৩ মার্চ তাঁরা যাত্রা করেন খাগড়াছড়ি থেকে সাজেকের পথে। সকাল সাড়ে ১০টায় দীঘিনালার ৯ মাইল এলাকায় পৌঁছালে অপহরণকারী মো. বেলাল ও আজিবুর রহমান তাঁদের গাড়ির গতিরোধ করে একটি আমবাগানের নিয়ে যান। এরপর আটকে রেখে মুক্তিপণ দাবি করেন।
দীঘিনালা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জাকারিয়া বলেন, পর্যটকদের সারা রাত আটকে রেখে ২০ লাখ টাকা মুক্তিপণ চায় বেলাল ও আজিজুর। অভিযুক্তরা অপহরণের শিকার পর্যটকদের কাছ থেকে ৭ লাখ ২০ হাজার টাকা মুক্তিপণ আদায় করেন। বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবে এই টাকা জমা হওয়ার বিষয়টি পুলিশ জানতে পেরে রোববার রাতে দীঘিনালার চিটিং টিলায় অভিযান শুরু করে। অভিযানে মো. বেলাল, আজিবুর রহমান, মো. সহিদুল, সুফিয়া বেগমকে চিটিং টিলার বিভিন্ন জায়গা থেকে আটক করা হয়। এ ঘটনায় গ্রেপ্তার ৪ জনসহ ৮ জনের নাম উল্লেখ করে অপহরণের শিকার মো. খলিলুর রহমান দীঘিনালা থানায় একটি মামলা করেন।
ওসি বলেন, গ্রেপ্তার চারজন অপহরণের দায় প্রাথমিকভাবে স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছে। আজ সোমবার দুপুরে আটকদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।