দেশে ২০২৪ সালে ৫১৬ কন্যাশিশু ও নারী ধর্ষণের শিকার হন। এ বছর প্রথম দুই মাসেই (জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি) ৯৭ কন্যাশিশু ও নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। সোমবার এক মতবিনিময় সভায় নারী ও কন্যা নির্যাতন এবং সামাজিক অনাচার প্রতিরোধ জাতীয় কমিটির আহ্বায়ক, মহিলা পরিষদ সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম এ তথ্য জানান। ১৬টি জাতীয় পত্রিকা এবং বিভিন্ন অনলাইন পোর্টাল থেকে নেওয়া তথ্য অনুযায়ী এ সংখ্যা পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

রাজধানীর সেগুনবাগিচার আনোয়ারা বেগম-মুনিরা খান মিলনায়তনে ‘ঢাকায় নারী ও কন্যার প্রতি সহিংসতার বর্তমান পরিস্থিতি ও করণীয়’ বিষয়ে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় নারী ও কন্যার প্রতি বর্তমান ক্রমবর্ধমান সহিংতার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে এসব সহিংসতা বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান বক্তারা। 

সভাপতির বক্তব্যে ডা.

ফওজিয়া মোসলেম বলেন, ‘বর্তমানে নারী ও কন্যাশিশুর প্রতি নির্যাতনের মাত্রা বেড়ে গেছে এবং এ ব্যাপারে বিশেষ প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বর্তমানে যে পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে, তা গ্রহণযোগ্য নয়। এই পরিস্থিতিতে আমাদের কী করণীয়, তা নির্ধারণ করতেই এ সভা। যেহেতু নারী দুর্বল, তাই সবাই তার প্রতি ক্ষমতা প্রদর্শন করে। বিশেষ বিশেষ পরিস্থিতিতে নারী ও কন্যার প্রতি সহিংসতা বেড়ে যায়। ফলে নারী ও কন্যার প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধ কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে হবে।’

মহিলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু বলেন, ‘অনেক আইন হওয়ার পর নারীর প্রতি সহিংসতা কিছুটা পরিবর্তন হয়েছিল। কিন্তু এই সময় হঠাৎ পরিস্থিতি বেশি খারাপ হলো। এই পরিস্থিতিতে রাষ্ট্রের কার্যকর উদ্যোগ ও পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন।’ 

সভায় বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্বিবদ্যালয়ের উইমেন ও জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. তানিয়া হক, লেখক ও গবেষক মফিদুল হক, সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী এস এম এ সবুর,  মুক্তিযোদ্ধা ও তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ মাহবুব জামান, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অমিত দাশ গুপ্ত, আইনজীবী আমিনুল ইসলাম, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ডিন ড. আরসাদ চৌধুরী, মনোরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. শাহিদা চৌধুরী, ঢাবির গণিত বিভাগের অধ্যাপক ড. চন্দ্রনাথ পোদ্দার, নারী সাংবাদিক কেন্দ্রের সভাপতি নাসিমুন আরা হক মিনু, এএলআরডি কর্মকর্তা সানজিদা খান প্রমুখ। 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: পর স থ ত

এছাড়াও পড়ুন:

শেখ হাসিনার আমলেই চাকরি থেকে বঞ্চিত হয়েছি: আদালতকে তুরিন

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সাবেক প্রসিকিউটর ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ আদালতে বলেছেন, ‘‘বলা হচ্ছে, আমি ফ্যাসিস্ট হাসিনাকে সাপোর্ট করেছি। অথচ তার আমলেই চাকরি থেকে বঞ্চিত হয়েছি। ৬ বছর ধরে বঞ্চিত। বুঝলাম না, আমি কোন পক্ষের লোক।’’

মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) ঢাকার অ্যাডিশনাল চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জাকির হোসাইনের আদালতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আব্দুল জব্বার নামে এক শিক্ষার্থীকে হত্যাচেষ্টা মামলায় রিমান্ড শুনানিতে এসব দাবি করেন তুরিন আফরোজ।

এর আগে, সোমবার রাতে উত্তরার একটি বাসায় অভিযান চালিয়ে তুরিনকে গ্রেপ্তার করা হয়। মঙ্গলবার তাকে আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উত্তরা পশ্চিম থানার সাব-ইন্সপেক্টর সুমন মিয়া।

বেলা ১টার দিকে তুরিন আফরোজকে আদালতে হাজির করা হয়েছে। তাকে ঢাকার সিএমএম আদালতের হাজতখানায় রাখা হয়। শুনানিকালে তাকে এজলাসে তোলা হয়।

রাষ্ট্রপক্ষে ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী রিমান্ড মঞ্জুরের পক্ষে শুনানি করেন। তুরিন আফরোজের পক্ষে শুনানি করতে কয়েকজন আইনজীবী আদালতে উপস্থিত হন। তবে তুরিন আফরোজ জানান, তার আইনজীবী আছে। তখন বিচারক জানতে চান, কে আপনার আইনজীবী। তুরিন আফরোজ বলেন, ‘‘সাইফুল করিম।’’ তবে তাকে খুঁজে পাননি তুরিন আফরোজ।

তখন তুরিন আফরোজ বলেন, ‘‘মাননীয় আদালত, আমি আপনার অনুমতি নিয়ে কথা বলতে চাই।’’ আদালত তাকে অনুমতি দেন। তখন বিচারককে উদ্দেশ করে তুরিন আফরোজ বলেন, ‘‘আমি দুই, তিন, পাঁচ মিনিট, কতটুকু সময়ে শেষ করব বললে ভালো হয়।’’ আদালত বলেন, ‘‘বলেন আপনি।’’

তখন তুরিন আফরোজ বলেন, ‘‘গত ৪ তারিখে আমার বিরুদ্ধে নীলফামারীতে মামলা। পরদিন ৫ আগস্ট ঢাকায় মামলা।’’

তখন আদালত বলেন, ‘‘ঢাকায় মামলা হয়েছে ২৭ মার্চ। ঘটনা ৫ আগস্টের। নীলফামারীর তথ্য এখানে নেই।’’ তুরিন আফরোজ বলেন, ‘‘আচ্ছা, যাই হোক।’’

তিনি বলেন, ‘‘আমার লার্নেড ফ্রেন্ড (রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী) সাংঘর্ষিক কথা বলেছেন। নীলফামারীতে ৪ আগস্ট এবং ঢাকায় ৫ আগস্টের ঘটনায় মামলা। মামলাগুলো ফেব্রিকেটেড। ৫ আগস্টের আগে পুরো সময় কোথায় ছিলাম সব ডকুমেন্ট দিতে পারব। এ সময় আমার টিউমারের অপারেশন হয়।’’

তুরিন আফরোজ বলেন, ‘‘গত চার বছর আমি মিডিয়াতে কিছু বলিনি, লিখিনি। বলা হচ্ছে, ফ্যাসিস্ট হাসিনাকে সাপোর্ট করেছি। ফ্যাসিস্ট হাসিনাকে সাপোর্ট করলাম। আবার তার আমলেই চাকরি থেকে বঞ্চিত হয়েছি। ৬ বছর ধরে চাকরি থেকে বঞ্চিত। বুঝলাম না আমি কোন পক্ষের লোক।’’

তিনি বলেন, ‘‘আমি আইনের প্রতি আস্থাশীল। কেউ আইনের ঊর্ধ্বে না। তদন্ত কর্মকর্তা ১০ দিনের রিমান্ড চেয়েছেন। আপনি ২০ দিন দিলেও দিয়ে দেন। কারণ আমি জানি, আমি কোনো অন্যায় করিনি। আমি ন্যায়বিচার পাব।’’

পরে আদালত তার চার দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন।

জানা যায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শেষ দিন ৫ আগস্ট দুপুর ১২টার দিকে আবদুল জব্বার উত্তরা পশ্চিম থানাধীন ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের ওপর বিএনএস সেন্টারের সামনে গুলিবিদ্ধ হন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নেন তিনি। গত ২৭ মার্চ উত্তরা পশ্চিম থানায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৫০ জনের নাম উল্লেখ করে এবং ১০০/১৫০ জনকে অজ্ঞাতনামা মামলাটি দায়ের করেন। এজাহারনামীয় ৩০ নং আসামি তুরিন আফরোজ।

ঢাকা/মামুন/এনএইচ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সেনাবাহিনীর জন্য আলোচনার দরজা কখনো বন্ধ হয়নি: ইমরান খান
  • আদালতে নিজ আইনজীবীর ওপরে ক্ষোভ ঝাড়লেন হাজী সেলিম 
  • কাঠগড়ায় মেজাজ হারিয়ে চিৎকার-চেঁচামেচি হাজি সেলিমের, অন্যরা হতবাক
  • ডাকাতির পর হত্যা: ১০ জনের ১০ বছর করে কারাদণ্ড
  • তিন দিনের রিমান্ডে ওসি আবুল হাসান, ছিল না নিজের আইনজীবী
  • কাঠগড়ায় মেজাজ হারালেন হাজী সেলিম 
  • ‘কনফ্লিক্ট অব ইন্টারেস্ট’ দেখা দিলে কী হবে, প্রশ্ন শুনানিতে
  • পটুয়াখালীতে হত্যা মামলায় ২৩ জনের যাবজ্জীবন
  • ‘জয় বাংলা ব্রিগেড তৈরি করে দেশ অস্থিতিশীলের চেষ্টা করছেন তুরিন আফ
  • শেখ হাসিনার আমলেই চাকরি থেকে বঞ্চিত হয়েছি: আদালতকে তুরিন