বরিশালে আগ্নেয়াস্ত্রসহ পাঁচ ডাকাত গ্রেপ্তার
Published: 10th, March 2025 GMT
কাটা রাইফেল, ম্যাগজিন, তাজা গুলি, ধারালো অস্ত্রসহ মুলদীতে পাঁচ ডাকাতকে গ্রেপ্তার হয়েছে। সোমবার জয়ন্তী নদীর চরকালেখান ইউনিয়নের পূর্ব বানিমর্দন এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
মুলাদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাকির হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, নাজিরপুর নৌ পুলিশ ডাকাত দলকে গ্রেপ্তার করে। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় ২ দিন আগে ডাকাতি করা ১টি ভেকু মেশিন, ১টি পল্টুন।
গ্রেপ্তার হওয়া ডাকাতরা হলো- গৌরনদী উপজেলার কান্ডপাশা গ্রামের ইদ্রিস ফকির, বাবুগঞ্জের আগরপুরের চর ফতেপুর গ্রামের ফিরোজ আকন, নতুন চর জাহাপুর গ্রামের সায়েম বেপারী, বরিশাল নগরীর ২৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাশিপুর এলাকার মো.
মহিউদ্দিন যুবলীগ কর্মী হিসেবে পরিচিত ও সাবেক সিটি মেয়র সাদিক আবদুল্লাহর অনুসারী বলেও জানায় পুলিশ।
নাজিরপুর নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক খন্দকার শফিকুল ইসলাম জানান, সোমবার ভোরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জয়ন্তী নদীর বানিমর্দন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে পুলিশ। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে দুষ্কৃতকারীরা ডাকাতি করা ইঞ্জিনচালিত ট্রলার, পল্টুন ও ভেকু ফেলে পালানোর চেষ্টার সময় স্থানীয়দের সহায়তায় পাঁচ ডাকাতকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারদের কাছ থেকে ১টি কাটা রাইফেল, ম্যাগজিন, পাঁচ রাউন্ড তাজা গুলি, ধারালো অস্ত্র, ডাকাতি করা ইঞ্জিন চালিত ট্রলার, ভেকু, পল্টুনসহ বিভিন্ন সরঞ্জামাদি উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের পর গ্রেপ্তারদের সোমবার বিকেলে থানায় সোপর্দ করা হয়েছে।
গ্রেপ্তারদের বরাত দিয়ে নৌ-পুলিশের একটি সূত্রে জানা গেছে, গত ৮ মার্চ বিকেলে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে বাবুগঞ্জ উপজেলার কেদারপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নূরে আলমের ইটভাটা থেকে পল্টুন ও ভেকু ছিনিয়ে নেয় ডাকাতরা। পরে ওই ভেকু ও পল্টুন কালকিনির কয়ারিয়া ইউনিয়নের জনৈক নূর মোহাম্মাদ মোল্লার ইট ভাটায় রাখা হয়।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
ব্যতিক্রমী একাডেমিক ক্যালেন্ডারে সেশনজট মুক্ত খুবি
ভর্তি পরীক্ষা তুমুল প্রতিযোগিতায় উত্তীর্ণ হয়ে শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে শুরু হয় স্বপ্নের পথচলা। কিন্তু সেই স্বপ্ন সেশনজটের কবলে পড়ে অনেক সময়ই রূপ নেয় দুঃস্বপ্নে। সেশনজট শুধু একজন শিক্ষার্থীর শিক্ষা জীবনেই বিঘ্ন ঘটায় না, বরং এর প্রভাব পড়ে তার ব্যক্তিগত, পারিবারিক ও আর্থ-সামাজিক জীবনেও।
নির্ধারিত সময়ের মধ্যে শিক্ষা জীবন শেষ না হওয়ায় অনেক শিক্ষার্থী কর্মজীবনে প্রবেশ করতে দেরি করে ফেলেন। ফলে বাড়ে মানসিক চাপ, আর্থিক অসন্তোষ, এমনকি আত্মহননের মতো চূড়ান্ত পরিণতির দিকেও ঠেলে দেয় অনেককে।
তবে এ বাস্তবতায় এক ভিন্নচিত্র খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে (খুবি)। দেশের অন্যান্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় যেখানে সেশনজটে নাকাল, সেখানে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় সময়মতো শিক্ষা কার্যক্রম সম্পন্ন করে হয়ে উঠেছে শিক্ষার্থীদের কাছে এক স্বপ্নের প্রতিষ্ঠান।
২০২৪ সালের জুলাই গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে যেখানে অনেক বিশ্ববিদ্যালয় তাদের একাডেমিক কর্মকাণ্ড স্বাভাবিক করতে পারেনি, সেখানে খুবি নির্ধারিত সময়ে মধ্যেই তার একাডেমিক ক্যালেন্ডার অনুযায়ী সব কার্যক্রম সফলভাবে সম্পন্ন করেছে। এর পেছনে রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি সুপরিকল্পিত ও বাস্তবভিত্তিক কেন্দ্রীয় একাডেমিক ক্যালেন্ডার।
আরো পড়ুন:
খুবিতে ভর্তি পরীক্ষা শুরু বৃহস্পতিবার
হল না খোলায় ক্যাম্পাসে অবস্থানের ঘোষণা কুয়েট শিক্ষার্থীদের
প্রতিটি ডিসিপ্লিন সে ক্যালেন্ডার অনুসরণ করে নির্ধারিত সময়েই ক্লাস, পরীক্ষা সম্পন্ন করছে। এই পরিকল্পিত ও সুশৃঙ্খল একাডেমিক ক্যালেন্ডার শুধু শিক্ষার্থীদের জন্য নয়, বরং দেশের উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থার জন্যও একটি রোল মডেল হয়ে উঠেছে।
অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় যেখানে ছাত্র রাজনীতির কারণে একাডেমিক কার্যক্রম বিঘ্নিত হয়। সেখানে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ। এই নীতিমালাও একাডেমিক ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে সহায়ক হয়েছে বলে মনে করেন শিক্ষার্থীরা।
প্রিন্ট মেকিং ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থী খাইরুন নাহার বলেন, “বাংলাদেশে সময় নষ্ট করাটা যেন শিক্ষা জীবনের অংশ হয়ে গেছে। কিন্তু খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে বুঝেছি, সময়ের মধ্যে থেকে স্নাতক শেষ করাও সম্ভব। এটা আমার জীবনের গতি বদলে দিয়েছে।”
বাংলা ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থী মিরাজুল ইসলাম বলেন, “আমার পরিবার সবসময় ভেবেছে আমি কত বছর বিশ্ববিদ্যালয়ে কাটাব। কিন্তু এখানে এসে দেখেছি সময়মতোই সব শেষ হয়। পরিবারের দুশ্চিন্তাও কমেছে।”
সয়েল, ওয়াটার অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থী মালাচেং রাখাইন বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হবার আগে সেশনজট নিয়ে অনেক ভয় ছিল। কিন্তু এখানে এসে বুঝেছি, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যালেন্ডার বাস্তবেই কার্যকর।”
বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থী তান্না তাবরিজ জিমহা বলেন, “আমরা নির্দিষ্ট সময়েই সব কোর্স শেষ করতে পারি। এতে করে স্কিল ডেভেলপমেন্টের জন্যও বাড়তি সময় পাওয়া যায়, যা অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে খুব কম হয়।”
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. এসএম মাহবুবুর রহমান বলেন, “খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় শুরু থেকেই কেন্দ্রীয়ভাবে একাডেমিক ক্যালেন্ডার পরিচালনা করে। কোনো ডিসিপ্লিন আলাদা করে নিজের মতো করে সময় নির্ধারণ করতে পারে না। ফলে সার্বিক একাডেমিক কার্যক্রমে সুশৃঙ্খলতা বজায় থাকে।”
তিনি বলেন, “আমরা শুরু থেকেই শিক্ষার্থীদের জন্য সেশনজটমুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করতে চেয়েছি। এর ফলে শিক্ষার্থীরা নির্ধারিত সময়ে স্নাতক সম্পন্ন করতে পারে এবং কর্মজীবনে দ্রুত প্রবেশ করতে পারে। এর ইতিবাচক প্রভাব দেখা যাচ্ছে সমাজ ও পরিবারেও।”
ঢাকা/হাসিব/মেহেদী